leadT1ad

কাল থেকে বন্ধ ইলিশ আহরণ

ইলিশ ধরায় খরচ ৮৩০ টাকা, ভোক্তার গুনতে হয় অন্তত ২ হাজার

নৌকায় ইলিশ ধরার পর ভোক্তার হাত পর্যন্ত পৌঁছতে একটি ইলিশ চার থেকে ছয়বার হাতবদল হয়। আর প্রতিবারই ৬০ শতাংশের মতো দাম বেড়ে যায়। অর্থাৎ যদি ৪ বার হাতবদল হয়, তাহলে মাছের দাম বেড়ে যায় ২৪০ শতাংশ পর্যন্ত। আর যদি ৬ বার হয় তাহলে তা বাড়ে ৩৬০ শতাংশ।

ইলিশ ধরায় খরচ ৮৩০ টাকা, ভোক্তার গুনতে হয় অন্তত ২ হাজার। স্ট্রিম গ্রাফিক

নিম্নচাপের প্রভাবে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। এখানকার মাছের বাজারে তাই ভিড় অন্যদিনের চেয়ে একটু কম। এক হাতে ছাতা অন্য হাতে বড় দুটি পলিথিনের ব্যাগে সাতটি ইলিশ মাছ নিয়ে মাছের বাজার থেকে বের হচ্ছেন ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার (৫০)।

এক্স-ট্রেইল নিশান গাড়িতে মাছগুলো তুলতে তুলতে আব্দুল জব্বার জানালেন মোট ২৭ হাজার টাকায় এসব মাছ কিনেছেন তিনি। এক কেজির বেশি ওজনের এসব ইলিশের দাম পড়েছে কেজিতে প্রায় চার হাজার।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মাছ নিয়ে গাড়িতে ওঠার সময় আবদুল জব্বার বললেন, ‘অনেক দরদাম করেছি। এরচেয়ে কম পাওয়া যায়নি। সতেজ ইলিশ। এর আগেও এখান থেকে মাছ কিনেছি। দাম একটু বাড়তির দিকে।’

আবদুল জব্বারের সঙ্গে আলাপ সেরে মাছ বাজারে ঢুকে দেখা গেল, সারি সারি নানা ধরনের মাছের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। বাজারের একপাশে এক বিক্রেতা ২ কেজি ৪০০ গ্রামের একটি ইলিশ ওজন করলেন। তারপর মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘প্রতি কেজি সাড়ে চার হাজার টাকা। আপনি যদি নেন, তাহলে কিছুটা কম রাখতে পারব।’

‘দাম তো অনেক চাচ্ছেন’, মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘কিছু করার নেই ভাই। আমাদেরও যে খুব লাভ হয়, তা না। যেই দামে কিনি, তার চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি পেলেই ছেড়ে দিচ্ছি।’

দোকানিদেরও যদি লাভ না হয় তাহলে ইলিশের আসল লাভ কোথায় যায়? এমন প্রশ্নের উত্তর মিলেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) এক প্রতিবেদনে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রলাণয়ের বাণিজ্য নীতি বিভাগের উপপ্রধান মাহমুদুল হাসান কমিশনের নিকট এ সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। পরে ২৮ সেপ্টেম্বর কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

ভোক্তারা ইলিশ কিনছেন গড়ে কেজিতে ২ হাজার টাকারও বেশি দামে, সরেজমিনে বাজার পরিদর্শন এবং ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তাহলে মাছ ধরা এবং ভোক্তার পাতে আসা মাছের দামের ব্যবধান অন্তত ১২ শ টাকা।

দামের ব্যবধান কত

কমিশনের সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, নৌকায় ইলিশ ধরার পর ভোক্তার হাত পর্যন্ত পৌঁছতে একটি ইলিশ চার থেকে ছয়বার হাতবদল হয়। আর প্রতিবারই ৬০ শতাংশের মতো দাম বেড়ে যায়। অর্থাৎ যদি ৪ বার হাতবদল হয়, তাহলে মাছের দাম বেড়ে যায় ২৪০ শতাংশ পর্যন্ত। আর যদি ৬ বার হয় তাহলে তা বাড়ে ৩৬০ শতাংশ।

যদিও ইলিশ ধরতে গিয়ে জেলেদের প্রতি কেজিতে খরচ হয় গড়ে ৪৮৬ দশমিক ৫৩ টাকা। অবশ্য আকারভেদে নৌকায় ইলিশ ধরার খরচেও কমবেশি আছে। কমিশনের হিসেবে, ছোট নৌকায় মাছ ধরার ক্ষেত্রে খরচ পড়ে ৪৮৩ দশমিক ৮৭ টাকা। মাঝারি নৌকায় ৫০৪ দশমিক ০৩ টাকা আর বড় নৌকা বা ট্রলারে এই খরচ হয় ৪৭১ দশমিক ৬৯ টাকা।

চলতি বছরের জুনের মাঝামাঝি সময়ে সারা দেশের জাটকা ইলিশ আহরণের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর আশা করা হয়েছিল বাজারে ইলিশের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পাবে। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই ও আগস্ট মাসে ইলিশ আহরণ ২০২৪ সালের তুলনায় যথাক্রমে ৩৩ দশমিক ২০ শতাংশ এবং ৪৭ দশমিক ৩১ শতাংশ কম হয়েছে। ফরিদা আখতার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

অবশ্য খরচ এখানেই শেষ হয়ে যায় না। মাছ ধরার এই প্রক্রিয়ার খরচ হয় দুই ধাপে। প্রথম ধাপের এই খরচের সঙ্গে যুক্ত হয় আর্থিক ব্যয়, উৎপাদকের মুনাফা, আড়ত কমিশন, সংরক্ষণ ব্যয়, ফরিয়া ও পাইকারের মুনাফা এবং খুচরা বিক্রেতার মুনাফাসহ খরচ আরও বেড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে গড় ব্যয় দাঁড়ায় ৮৩০ টাকা।

কিন্তু ভোক্তারা ইলিশ কিনছেন গড়ে কেজিতে ২ হাজার টাকারও বেশি দামে, সরেজমিনে বাজার পরিদর্শন এবং ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তাহলে মাছ ধরা এবং ভোক্তার পাতে আসা মাছের দামের ব্যবধান অন্তত ১২ শ টাকা। যদিও চলতি বছরে বাজারে প্রতিকেজি ইলিশের দাম ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে ট্যারিফ কমিশনে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইলিশের দামের এই বিশাল ব্যবধানেরও তথ্য উঠে এসেছে ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনটিতে।

ইলিশ আহরণের সম্ভাব্য যে খরচ হয়, স্থানীয় বাজারে বিক্রয়মূল্য তার চেয়ে অনেক বেশি। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, ইলিশ আহরণের ক্ষেত্রে যেসব দাদন ব্যবসায়ী জেলেদের পেছনে বিনিয়োগ করে থাকেন, তারা উৎপাদনসংশ্লিষ্ট মাছঘাটে সর্বনিম্ন ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন দরসীমা) নির্ধারণ করে দেন।

দাদনের ফাঁদে বাড়ে ইলিশের দাম

কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, নৌকার যাবতীয় ব্যয় নদীঘাটে (মাছঘাটে) থাকা আড়তদার বহন করে; ফলে তারা মোট মাছ বিক্রি থেকে ৭ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন নেয়। এরপর নদীঘাটে তারা মাছ সংগ্রহ করে মাছের ভিত্তিমূল্য (বেসপ্রাইস) নির্ধারণ করে তা নিলাম করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে। এরপর ভোক্তারা বাজার থেকে তা ক্রয় করে।

ইলিশ মাছ উৎপাদনের ব্যয় দুই ভাগে বিভক্ত। প্রথম ধাপ মাছ আহরণ পর্যন্ত, যেখানে মাঝির খরচ, নৌকার খরচ, জাল খরচ ও জ্বালানি তেলের খরচ অন্তর্ভুক্ত। দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে আহরণ পরবর্তীতে।

ইলিশ আহরণের সম্ভাব্য যে খরচ হয়, স্থানীয় বাজারে বিক্রয়মূল্য তার চেয়ে অনেক বেশি। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, ইলিশ আহরণের ক্ষেত্রে যেসব দাদন ব্যবসায়ী জেলেদের পেছনে বিনিয়োগ করে থাকেন, তারা উৎপাদনসংশ্লিষ্ট মাছঘাটে সর্বনিম্ন ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন দরসীমা) নির্ধারণ করে দেন।

এর ফলে ফ্লোর প্রাইসের নিচে নিলাম সম্ভব না হওয়ায় মাছের মূল্য বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের ফ্লোর প্রাইস নিরুৎসাহিতকরণের জন্য ইলিশের আকার অনুযায়ী সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করলে দাদন ব্যবসায়ীর উচ্চমূল্যে ফ্লোর প্রাইসে প্রভাব কমে যাবে।

নদীদূষণ, ভরাট এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ইলিশের প্রজনন ও বিচরণ ক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়।

দাম বাড়ার আর যেসব কারণ

দেশে-বিদেশে ইলিশের ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বাজারে অনেক সময় পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকে না বলে ট্যারিফ কমিশনের সমীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই ঘাটতি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ইলিশের ভরা মৌসুমে মাছ কম দামে কিনে কোল্ড স্টোরেজে মজুদ করে রাখে। পরে সরবরাহ কমে এলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়।

সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, মাছ ধরা থেকে শুরু করে ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং পরিবহন ব্যয় বেড়েছে, যা চূড়ান্ত মূল্যের ওপর প্রভাব ফেলে। জেলেদের মজুরি, ট্রলারের রক্ষণাবেক্ষণ, জাল মেরামত, বরফ ও অন্যান্য উপকরণের খরচ বেড়ে যাওয়ায় মাছ আহরণের সামগ্রিক ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।

বছর ঘোরে আর ইলিশের দাম বেড়ে সাধারণের নাগালের বাইরে চলে যায়। বিটিটিসি'র গ্রাফিক
বছর ঘোরে আর ইলিশের দাম বেড়ে সাধারণের নাগালের বাইরে চলে যায়। বিটিটিসি'র গ্রাফিক

নদীদূষণ, ভরাট এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ইলিশের প্রজনন ও বিচরণ ক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন অবৈধ জালের (বাদা/বেন্তি/নেট জাল) নির্বিচার ব্যবহার জাটকা নিধন করছে, যা ভবিষ্যৎ ইলিশ উৎপাদনকে বাধাগ্রস্ত করছে।

ইলিশ জেলেদের কাছ থেকে ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত একাধিক মধ্যস্বত্বভোগীর হাত বদলের কারণে চূড়ান্ত মূল্য বহুগুণ বেড়ে যায়। সরকার কঠোর নীতি অবলম্বন করলেও প্রক্রিয়াজাতকৃত মাছ রপ্তানি হয়। সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী দেশে প্রায় ১,২ শ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয়ায় অভ্যন্তরে সরবরাহের ওপর চাপ পড়েছে।

সাড়ে ৭০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের ইলিশের দাম ২০২৫ সালের জুলাইয়ে ছিল ২ শ থেকে ২৬ শ টাকা পর্যন্ত। আগের বছরে একই সময়ে দাম ছিল ১২ শ থেকে ১৪ শ টাকা।

গত বছরের তুলনায় দাম অন্তত ৬০০ টাকা বেশি

ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গেল বছরের জুলাইয়ে যে ইলিশটির দাম ছিল ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, চলতি বছরের একই সময়ে সেটির দাম বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। সাধারণভাবে চার থেকে ছয় স্তরে ইলিশ মাছ ভোক্তার হাতে পৌঁছায়। প্রতিটি স্তরে ৫৯ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত দাম বেড়ে যায়।

সাগরের মোহনা ও গভীর সমুদ্র থেকেই বেশির ভাগ ইলিশ ধরা হয়। ডিম পড়ার মৌসুমে সমুদ্র থেকে নদীর মোহনায় মিঠাপানিতে আসে মাছের রাজা ইলিশ। পদ্মা-মেঘনা-তেতুলিয়া, কীর্তনখোলাসহ বিভিন্ন নদীতে ইলিশ মাছ পাওয়া যায়।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও ঢাকা মহানগরীর বাজারদর অনুসারে, দেড় কেজি থেকে তার ওপরে ইলিশের দর ২০২৫ সালের জুলাই-আগস্টে ২৮ শ থেকে ৩ হাজার টাকা রেকর্ড করা হয়েছে। যেখানে ২০২৪ সালের একই সময়ে এই দর ছিল ২ হাজার থেকে ২২ শ ৫০ টাকা ও ১৮ শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত।

এক থেকে দেড় কেজি ইলিশের দাম জুলাই-আগস্ট ২০২৫ সালে ২৫ শ থেকে ২৬ শ টাকা থাকলেও, ২০২৪ সালের একই সময়ে দাম ছিল ১৮ শ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে ও ১৬ শ থেকে ১৮ শ টাকা পর্যন্ত।

সাড়ে ৭০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের ইলিশের দাম ২০২৫ সালের জুলাইয়ে ছিল ২ শ থেকে ২৬ শ টাকা পর্যন্ত। আগের বছরে একই সময়ে দাম ছিল ১২ শ থেকে ১৪ শ টাকা।

মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই ও আগস্ট মাসে ইলিশ আহরণ ২০২৪ সালের তুলনায় যথাক্রমে ৩৩ দশমিক ২০ শতাংশ এবং ৪৭ দশমিক ৩১ শতাংশ কম হয়েছে।

এবার কম ইলিশের উৎপাদন

মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কয়েক বছর ধরে ইলিশের সরবরাহ ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ার পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা কমেছে। এ বছর চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার জেলার সবচেয়ে বড় মাছের আড়ত থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিগত সময়ের তুলনায় গেল জুলাই পর্যন্ত নদীতে ইলিশ মাছের সরবরাহ দুই-তৃতীয়াংশ কমেছে।

চলতি বছর ইলিশ উৎপাদন আরও কমে গেছে বলে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। গত ২৯ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, চলতি বছরের জুনের মাঝামাঝি সময়ে সারা দেশের জাটকা ইলিশ আহরণের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর আশা করা হয়েছিল বাজারে ইলিশের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পাবে। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই ও আগস্ট মাসে ইলিশ আহরণ ২০২৪ সালের তুলনায় যথাক্রমে ৩৩ দশমিক ২০ শতাংশ এবং ৪৭ দশমিক ৩১ শতাংশ কম হয়েছে। এই দুই মাসে মোট আহরণ হয়েছে ৩৫ হাজার ৯ শ ৯৩ দশমিক ৫০ মেট্রিক টন, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ২২ হাজার ৯ শ ৪১ দশমিক ৭৮ মেট্রিক টন (৩৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ) কম।

২০০৮-০৯ সাল থেকে প্রতিবছরের মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের মোহনায় ইলিশসহ সব মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়। অক্টোবরেও ২২ দিন বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া মে-জুলাইয়ে ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকে। ফলে ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মাছের সরবরাহ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে যায়।

ইলিশ ধরা হয় যেভাবে

দেশের সর্বোচ্চ পরিমাণ ইলিশ মাছ পাওয়া যায় ভোলা জেলায়। মাছ প্রাপ্তির পরিমাণ অনুযায়ী বরগুনা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, বরিশাল, কক্সবাজার, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলাগুলোতে মাছ ধরা হয়। এই জেলার বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে জেলেরা মাছ শিকারের জন্য ছোট, মাঝারি ও বড় ট্রলার ব্যবহার করে থাকে।

ট্রলারের মাছ সাধারণত নদীর ঘাটে (স্থানীয়ভাবে মাছঘাট) নিয়ে যাওয়া হয় বিক্রির জন্য। সেখান থেকে দাদন দেওয়া আড়তদাররা জেলেদের কাছ থেকে মাছ সংগ্রহ করে নিলামের মাধ্যমে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে। এরপর ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে যায়।

কাল থেকে বন্ধ ইলিশ আহরণ

২০০৮-০৯ সাল থেকে প্রতিবছরের মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের মোহনায় ইলিশসহ সব মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়। অক্টোবরেও ২২ দিন বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া মে-জুলাইয়ে ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকে। ফলে ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মাছের সরবরাহ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে যায়।

২৯ সেপ্টেম্বরের ওই সংবাদ ব্রিফিংয়ে ফরিদা আখতার জানান, ইলিশের ডিম ছাড়া ও প্রজননের জন্য এ বছর ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন মা ইলিশ রক্ষায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত