আহমেদ আল আমীন
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬-এর বিতর্কিত ৫৭ (২) ধারায় করা একটি মামলায় ২০২১ সালে রায় দেন রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল। ২০১৩ সালের মামলাটির ওই রায়ে তিন আসামিকে কারাদণ্ড দেওয়া হয় ১০ বছর করে। তাঁদের মধ্যে মো. খোকন নামের একজন এখনও জেল খাটছেন। অথচ ২০১৮ সালেই অধ্যাদেশটির ৫৭ ধারাসহ আরও কয়েকটি ধারা বাতিল করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা লঙ্ঘনের অভিযোগের কারণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের মতো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনও বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। ২০২৩ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম বদলে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ করে সরকার। এরপর বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসে সাইবার নিরাপত্তা আইনও বাতিল করে। তবে ‘কালো আইন’ নামে পরিচিতি পাওয়া এই আইনগুলোর অধীনে হওয়া অনেক মামলা ও দণ্ড এখনও বাতিল হয়নি।
যদিও দায়িত্ব নেওয়ার পর গত বছরের ৮ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এবং ১৯ নভেম্বর সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা ও সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের সঙ্গে সঙ্গে আইনগুলোর অধীনে হওয়া ‘স্পিচ অফেন্স’ (মুক্তমত প্রকাশ) সম্পর্কিত মামলাগুলো একসঙ্গে প্রত্যাহার হয়ে যাবে। একই সঙ্গে এসব মামলায় কেউ গ্রেপ্তার হয়ে থাকলে তিনি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি পাবেন।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের সময়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় আলোচিত কিছু মামলা বাতিল হলেও অধিকাংশই এখনও রয়ে গেছে। সাজা বাতিল না হওয়ায় কারাগারেও আছেন কেউ কেউ। কিছু মামলায় বাতিল হওয়া ধারা ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের সঙ্গে স্ট্রিমের পক্ষ থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তাঁর মোবাইল নম্বরে কল করার পাশাপাশি বার্তাও পাঠানো হয়। তবে তিনি কল ধরেননি, মেসেজের জবাবও দেননি।
পরে আইন সচিবের চলতি দায়িত্বে থাকা লিয়াকত আলী মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি স্ট্রিম বলেন, ‘এটা তো সরকারের নীতি নির্ধারক পর্যায়ের বিষয়। এসব মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে আমার কাছে তথ্য নেই।’
খোকনের স্বজনেরা জানান, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর পাবনার আতাইকুলা থানায় মামলাটি করে পুলিশ। এজাহারে বলা হয়, বনগ্রামের বাবলু চন্দ্র সাহার ছেলে রাজিব সাহা ফেসবুকে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে পোস্ট দেন। এ নিয়ে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা রাজিবের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ এর ৫৭ (২) ধারা সংশোধিত ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০১৩’ এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ এর ৮(৩), (৪) ধারায় মামলাটি করা হয়।
তাঁদের অভিযোগ, ফেসবুকে বিতর্কিত পোস্টটি দিয়েছিলেন রাজিব সাহা। অথচ তাঁর নামই অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয় পুলিশ। এর পরিবর্তে রাজিবের পোস্টে প্রতিবাদ করা ব্যক্তিদের মধ্যে দলীয় বিবেচনায় ১০ জনকে আসামি করা হয়, যাদের সবাই বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মী। আদালতে ১৫ সাক্ষীর প্রায় সবাই ঘটনার জন্য দায়ী হিসেবে রাজীব সাহার নাম উল্লেখও করেন। তবে আদালত রাজীবের পোস্টের প্রতিবাদকারী আমিমুল এহসান, জহিরুল ইসলাম ও মো. খোকনকে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় ১০ বছর করে কারাদণ্ডসহ এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। ওই মামলায় দীর্ঘ কারাভোগের পর আমিমুল ও জহিরুল পরে জামিনে মুক্তি পেলেও খোকন এখনও কারাগারে রয়েছেন।
এ বিষয়ে খোকনের ভগ্নিপতি মাসুদ রানা খান স্ট্রিমকে বলেন, খোকনের পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে তাঁকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এ মামলায় জড়ানো হয়। গ্রেপ্তারের পর বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হতে পারেন–এই ভয়ে দীর্ঘদিন তিনি পালিয়ে ছিলেন। তবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেই রায়ের পরে তিনি আদালতের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
মাসুদ রানা জানান, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ওই ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলার বাদী রাজিব সাহার বাবা বাবলু সাহা চন্দ্র। সম্প্রতি তিনি আদালতে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, খোকন এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন না।
এদিকে, আইসিটি আইনের বাতিল হওয়া ধারা এখনও ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের অভিযোগে ২০১৫ সালের ১৫ জুলাই এক পরীক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। পরদিন তাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ডেমরা থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই সময় জাতীয় পরিচয়পত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্রে আসামির বয়স ১৮ বছরের কম হলেও প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে পুলিশ অভিযোগপত্র দেয়। এ নিয়ে একাধিক আবেদন নাকচের পর অবশেষে গত বছরের জানুয়ারিতে মামলাটি শিশু আদালতে পাঠাতে নির্দেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। নতুন করে তদন্তও শুরু হয়। তবে ওই শিক্ষার্থীর আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার অভিযোগ করেন, বাতিল হলেও আইসিটি আইনেরই ৫৭ ধারা অনুযায়ী অভিযোগপত্র দেওয়ার জন্য কাজ চলছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার বলেন, আইসিটিসহ আলোচিত ওই তিন আইনের মাধ্যমে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মানুষের বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকার ব্যাপকভাবে হরণ করা হয়। এ নিয়ে সচেতন মহলে তীব্র সমালোচনা ও আপত্তির মুখে পরে সরকার এসব আইন বাতিল করে। কিন্তু এসব আইনে হওয়া মামলায় আসামিদের সাজা বহাল রয়েছে। এটা অমানবিক। আইনগুলোতে অসঙ্গতি ছিল বলেই তা বাতিল হয়েছে। তাই এর অধীনে দেওয়া সাজা বাতিল করে আসামিদের খালাস দেওয়া উচিত।
সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী জামিল আখতার এলাহী বলেন, আইন বাতিলের পরে এসব মামলায় অমানবিকভাবে ও অযৌক্তিকভাবে আসামিরা সাজা ভোগ করছে। এ ক্ষেত্রে আসামিদের সাজা বাতিল করা উচিত। এ ছাড়া বর্তমান সরকার সাইবার জগতে সংঘটিত অপরাধের বিচারের জন্য ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৫’ জারি করেছে। সেখানেও যদি মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার মতো কোনো বিতর্কিত বিষয় বা ধারা থাকে, তাও বাতিল করতে হবে।
উল্লেখ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩-এর অধীনে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত দেশের আটটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে ৫ হাজার ৮১৮টি মামলা চলমান ছিল। এর মধ্যে ‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত মামলা ছিল ১ হাজার ৩৪০টি।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, এসব মামলার ২০১৯-২৪ সাল পর্যন্ত সাইবার ট্রাইব্যুনালে হওয়া মাত্র ৪১০টি মামলা এখন পর্যন্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬-এর বিতর্কিত ৫৭ (২) ধারায় করা একটি মামলায় ২০২১ সালে রায় দেন রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল। ২০১৩ সালের মামলাটির ওই রায়ে তিন আসামিকে কারাদণ্ড দেওয়া হয় ১০ বছর করে। তাঁদের মধ্যে মো. খোকন নামের একজন এখনও জেল খাটছেন। অথচ ২০১৮ সালেই অধ্যাদেশটির ৫৭ ধারাসহ আরও কয়েকটি ধারা বাতিল করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা লঙ্ঘনের অভিযোগের কারণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের মতো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনও বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। ২০২৩ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম বদলে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ করে সরকার। এরপর বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসে সাইবার নিরাপত্তা আইনও বাতিল করে। তবে ‘কালো আইন’ নামে পরিচিতি পাওয়া এই আইনগুলোর অধীনে হওয়া অনেক মামলা ও দণ্ড এখনও বাতিল হয়নি।
যদিও দায়িত্ব নেওয়ার পর গত বছরের ৮ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এবং ১৯ নভেম্বর সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা ও সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের সঙ্গে সঙ্গে আইনগুলোর অধীনে হওয়া ‘স্পিচ অফেন্স’ (মুক্তমত প্রকাশ) সম্পর্কিত মামলাগুলো একসঙ্গে প্রত্যাহার হয়ে যাবে। একই সঙ্গে এসব মামলায় কেউ গ্রেপ্তার হয়ে থাকলে তিনি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি পাবেন।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের সময়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় আলোচিত কিছু মামলা বাতিল হলেও অধিকাংশই এখনও রয়ে গেছে। সাজা বাতিল না হওয়ায় কারাগারেও আছেন কেউ কেউ। কিছু মামলায় বাতিল হওয়া ধারা ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের সঙ্গে স্ট্রিমের পক্ষ থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তাঁর মোবাইল নম্বরে কল করার পাশাপাশি বার্তাও পাঠানো হয়। তবে তিনি কল ধরেননি, মেসেজের জবাবও দেননি।
পরে আইন সচিবের চলতি দায়িত্বে থাকা লিয়াকত আলী মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি স্ট্রিম বলেন, ‘এটা তো সরকারের নীতি নির্ধারক পর্যায়ের বিষয়। এসব মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে আমার কাছে তথ্য নেই।’
খোকনের স্বজনেরা জানান, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর পাবনার আতাইকুলা থানায় মামলাটি করে পুলিশ। এজাহারে বলা হয়, বনগ্রামের বাবলু চন্দ্র সাহার ছেলে রাজিব সাহা ফেসবুকে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে পোস্ট দেন। এ নিয়ে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা রাজিবের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ এর ৫৭ (২) ধারা সংশোধিত ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০১৩’ এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ এর ৮(৩), (৪) ধারায় মামলাটি করা হয়।
তাঁদের অভিযোগ, ফেসবুকে বিতর্কিত পোস্টটি দিয়েছিলেন রাজিব সাহা। অথচ তাঁর নামই অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয় পুলিশ। এর পরিবর্তে রাজিবের পোস্টে প্রতিবাদ করা ব্যক্তিদের মধ্যে দলীয় বিবেচনায় ১০ জনকে আসামি করা হয়, যাদের সবাই বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মী। আদালতে ১৫ সাক্ষীর প্রায় সবাই ঘটনার জন্য দায়ী হিসেবে রাজীব সাহার নাম উল্লেখও করেন। তবে আদালত রাজীবের পোস্টের প্রতিবাদকারী আমিমুল এহসান, জহিরুল ইসলাম ও মো. খোকনকে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় ১০ বছর করে কারাদণ্ডসহ এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। ওই মামলায় দীর্ঘ কারাভোগের পর আমিমুল ও জহিরুল পরে জামিনে মুক্তি পেলেও খোকন এখনও কারাগারে রয়েছেন।
এ বিষয়ে খোকনের ভগ্নিপতি মাসুদ রানা খান স্ট্রিমকে বলেন, খোকনের পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে তাঁকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এ মামলায় জড়ানো হয়। গ্রেপ্তারের পর বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হতে পারেন–এই ভয়ে দীর্ঘদিন তিনি পালিয়ে ছিলেন। তবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেই রায়ের পরে তিনি আদালতের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
মাসুদ রানা জানান, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ওই ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলার বাদী রাজিব সাহার বাবা বাবলু সাহা চন্দ্র। সম্প্রতি তিনি আদালতে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, খোকন এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন না।
এদিকে, আইসিটি আইনের বাতিল হওয়া ধারা এখনও ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের অভিযোগে ২০১৫ সালের ১৫ জুলাই এক পরীক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। পরদিন তাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ডেমরা থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই সময় জাতীয় পরিচয়পত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্রে আসামির বয়স ১৮ বছরের কম হলেও প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে পুলিশ অভিযোগপত্র দেয়। এ নিয়ে একাধিক আবেদন নাকচের পর অবশেষে গত বছরের জানুয়ারিতে মামলাটি শিশু আদালতে পাঠাতে নির্দেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। নতুন করে তদন্তও শুরু হয়। তবে ওই শিক্ষার্থীর আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার অভিযোগ করেন, বাতিল হলেও আইসিটি আইনেরই ৫৭ ধারা অনুযায়ী অভিযোগপত্র দেওয়ার জন্য কাজ চলছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার বলেন, আইসিটিসহ আলোচিত ওই তিন আইনের মাধ্যমে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মানুষের বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকার ব্যাপকভাবে হরণ করা হয়। এ নিয়ে সচেতন মহলে তীব্র সমালোচনা ও আপত্তির মুখে পরে সরকার এসব আইন বাতিল করে। কিন্তু এসব আইনে হওয়া মামলায় আসামিদের সাজা বহাল রয়েছে। এটা অমানবিক। আইনগুলোতে অসঙ্গতি ছিল বলেই তা বাতিল হয়েছে। তাই এর অধীনে দেওয়া সাজা বাতিল করে আসামিদের খালাস দেওয়া উচিত।
সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী জামিল আখতার এলাহী বলেন, আইন বাতিলের পরে এসব মামলায় অমানবিকভাবে ও অযৌক্তিকভাবে আসামিরা সাজা ভোগ করছে। এ ক্ষেত্রে আসামিদের সাজা বাতিল করা উচিত। এ ছাড়া বর্তমান সরকার সাইবার জগতে সংঘটিত অপরাধের বিচারের জন্য ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৫’ জারি করেছে। সেখানেও যদি মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার মতো কোনো বিতর্কিত বিষয় বা ধারা থাকে, তাও বাতিল করতে হবে।
উল্লেখ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩-এর অধীনে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত দেশের আটটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে ৫ হাজার ৮১৮টি মামলা চলমান ছিল। এর মধ্যে ‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত মামলা ছিল ১ হাজার ৩৪০টি।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, এসব মামলার ২০১৯-২৪ সাল পর্যন্ত সাইবার ট্রাইব্যুনালে হওয়া মাত্র ৪১০টি মামলা এখন পর্যন্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে।
গাজা উপত্যকায় ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা বহনকারী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলাকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটকে দেওয়ায় ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
২৮ মিনিট আগেনিম্নচাপের প্রভাবে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। এখানকার মাছের বাজারে তাই ভিড় অন্যদিনের চেয়ে একটু কম। এক হাতে ছাতা অন্য হাতে বড় দুটি পলিথিনের ব্যাগে সাতটি ইলিশ মাছ নিয়ে মাছের বাজার থেকে বের হচ্ছেন ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার (৫০)।
১ ঘণ্টা আগেরাজধানীর বাজারে আবারও বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সরবরাহ ব্যাহতের অজুহাতে সবজি, মাছ, মাংস—সবকিছুর দামই অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় প্রতিটি সবজি কেজিপ্রতি মূল্য ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেগাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত রূপনাথপুর গ্রামে পাওনাদার এক হাজার টাকার জন্য বৃদ্ধের ঘরের টিন খুলে নিয়ে যাওয়া অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ওই বৃদ্ধের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।
১ ঘণ্টা আগে