leadT1ad

৮ দফা দাবিতে ঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার

সরকারের পক্ষ থেকে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা বৈঠকে বলেন, ‘পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দাবিগুলো যৌক্তিক পর্যায়ে বিবেচনা করা হবে। মালিকেরা আমাদের কথায় আশ্বস্ত হয়েছেন, তাই ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন।’

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২৫, ২১: ০৩
৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ সংশোধন, বাণিজ্যিক মোটরযানের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি এবং কর–সংক্রান্ত ছাড়সহ আট দফা দাবিতে ঘোষিত ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে পরিবহন মালিক–শ্রমিক সংগঠনগুলো। আগামী মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৬টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলার কথা ছিল।

আজ রোববার (১০ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে সরকারের সঙ্গে পরিবহন মালিক–শ্রমিক সংগঠনগুলোর বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন, সড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব এহছানুল হক, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলমসহ বাস–ট্রাকসহ বিভিন্ন পরিবহনের শীর্ষ নেতারা।

বৈঠক শেষে শ্রমিক নেতা অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, ‘সরকারকে জিম্মি করে কোনো দাবি আদায় করা উচিত নয়। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে আমাদের যুক্তিসঙ্গত দাবিগুলো আমলে নেওয়া হয়েছে। তাই আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

সরকারের পক্ষ থেকে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা বৈঠকে বলেন, ‘পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দাবিগুলো যৌক্তিক পর্যায়ে বিবেচনা করা হবে। মালিকেরা আমাদের কথায় আশ্বস্ত হয়েছেন, তাই ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন।’

পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের আট দফা দাবি

প্রথমত, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৯৮ ও ১০৫ ধারাসহ কিছু সুপারিশকৃত ধারা সংশোধনের দাবি জানানো হয়েছে। সংগঠনগুলোর মতে, এসব ধারা বাস্তব প্রয়োগে মালিক ও চালকদের ওপর অযৌক্তিক চাপ সৃষ্টি করছে, যা পরিবহন খাতে সংকট বাড়াচ্ছে।

দ্বিতীয়ত, বাণিজ্যিক মোটরযানের ইকোনমিক লাইফ ২০ ও ২৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের যুক্তি, বর্তমান সময়ে প্রযুক্তি ও রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতির উন্নতির কারণে গাড়ি দীর্ঘদিন ব্যবহারযোগ্য থাকে, ফলে পুরোনো গাড়ি হঠাৎ বাতিল করলে পরিবহন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তৃতীয়ত, দাবি করা হয়েছে, সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ২০ ও ২৫ বছরের পুরোনো গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান স্থগিত রাখতে হবে। মালিক-শ্রমিকদের মতে, এই অভিযান তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ না করলে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং চালক-শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়বেন।

চতুর্থ দাবি হিসেবে, বাজেটে আরোপিত দ্বিগুণ অগ্রিম আয়কর (প্রিজাম্পটিভ ইনকাম ট্যাক্স) প্রত্যাহার করে আগের হার বহাল রাখার কথা বলা হয়েছে। তাঁদের দাবি, দ্বিগুণ কর আরোপ পরিবহন মালিকদের জন্য অতিরিক্ত আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছে, যা ভাড়ার ওপরও প্রভাব ফেলছে।

পঞ্চমত, রিকন্ডিশন বাণিজ্যিক গাড়ি আমদানির মেয়াদ ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১২ বছর করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সংগঠনগুলোর যুক্তি, এটি বাস্তবায়িত হলে পরিবহন ব্যবসায় নতুন গাড়ি আনার খরচ কমবে এবং বাজারে সাশ্রয়ী দামে গাড়ি পাওয়া যাবে।

ষষ্ঠ দাবি হলো—দুর্ঘটনায় জব্দ হওয়া গাড়ি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মালিকের জিম্মায় ফিরিয়ে দেওয়ার বিধান কার্যকর করা। মালিকদের অভিযোগ, বর্তমানে দুর্ঘটনার পর গাড়ি দীর্ঘদিন থানায় আটক থাকায় ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়।

সপ্তমত, মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের জন্য স্ক্র্যাপ নীতিমালা প্রণয়নের দাবি করা হয়েছে। তাঁদের মতে, পরিকল্পিত স্ক্র্যাপিং নীতি চালু হলে পুরোনো যানবাহন পর্যায়ক্রমে সরানো সম্ভব হবে এবং নতুন যানবাহন ব্যবহারের সুযোগ বাড়বে।

অষ্টম ও শেষ দাবি হিসেবে, মহাসড়কে অটোরিকশা, টেম্পো ও অনুমোদনবিহীন হালকা যানবাহনের পৃথক লেন নিশ্চিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে ড্রাইভিং লাইসেন্স দ্রুত সরবরাহ এবং শ্রমিক ফেডারেশনের ১২ দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।

এর আগে, গত ২৭ জুলাই জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ এ আট দফা দাবি ঘোষণা করে এবং ১২ আগস্ট থেকে ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দেয়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সমাধানের আশ্বাস পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত ধর্মঘট কর্মসূচি প্রত্যাহার করল সংগঠনটি।

Ad 300x250

জুলাই হত্যার বিচারে ‘ক্যাঙারু কোর্ট’-এর পুনরাবৃত্তি হবে না: প্রেস সচিব

শিবির উপস্থিত থাকায় উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক থেকে ওয়াক আউট বামপন্থীদের একাংশের

এনসিপিসহ নতুন ১৬ দল নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিক যাচাইয়ে উত্তীর্ণ

ছাত্রদলের কমিটিতে ছাত্রলীগ কর্মী, পদে আছেন হত্যা মামলার আসামিও

উৎসবের ছোঁয়া লাগলেও অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময় বাংলাদেশের জন্য এখনো কঠিন

সম্পর্কিত