leadT1ad

৫২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন চবির ৯ শিক্ষার্থী

সম্প্রতি স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগে তুলে সাত দফা দাবিতে অনশনের ঘোষণা দেয় ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থী’। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয়ের সামনে অনশন শুরু করেন ৯ শিক্ষার্থীরা।

স্ট্রিম সংবাদদাতা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চবিতে শুক্রবার শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান উপাচার্য। স্ট্রিম ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে করা অনশন ৫২ ঘণ্টার পর ভেঙেছেন ৯ শিক্ষার্থী। উপাচার্যের আশ্বাসে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে অনশন স্থগিত করেন তারা।

এর আগে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয়ের সামনে ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থী’ ব্যানারে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ঘটনায় চবি প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগে তুলে সাত দফা দাবিতে এই অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। তাঁদের দাবি-দাওয়া নিয়ে রোববার আলোচনা করে দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ইয়াহ্ইয়া আখতার।

অনশনকারী শিক্ষার্থীরা হলেন চবির বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ওমর সমুদ্র ও সুদর্শন চাকমা, সঙ্গীত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ঈশা দে ও জশদ জাকির, স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের রাম্রা সাইন মারমা, ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আহমেদ মুগ্ধ ও নাঈম শাহজান, মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সুমাইয়া শিকদার এবং বাংলা বিভাগের ২০১৮–১৯ শিক্ষাবর্ষের ধ্রুব বড়ুয়া।

শিক্ষার্থীরা দুই দিনের বেশি সময় ধরে অনশন করা পর শুক্রবার দুপুরের পর ভিসি অধ্যাপক ইয়াহ্ইয়া আখতার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে যান। তারপর দাবি দাওয়া পূরণের আশ্বাস দিয়ে জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান শিক্ষার্থীদের।

কর্মসূচি স্থগিত করার বিষয়ে অনশনকারী শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র বলেন, ‘আমরা দুই দিনের বেশি সময় ধরে অনশন করছি। আজ উপাচার্য স্যার আমাদের দেখতে এসে আমাদের দাবি দাওয়া নিয়ে রোববার আলোচনা করে দাবি পূরণ করার আশ্বাস দিয়েছেন। তাই আমরা স্যারের কথায় আস্থা রেখে অনশন স্থগিত করেছি।’

চবিতে শুক্রবার শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান উপাচার্য। স্ট্রিম ছবি
চবিতে শুক্রবার শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান উপাচার্য। স্ট্রিম ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা দুই দিন ধরে অনশন করছেন। তাঁদের শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে চলে যাচ্ছে। আমরা তাঁদের দাবি দাওয়া নিয়ে রোববারে আলোচনা করব। তারপর বাকি সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবির মধ্যে আছে সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা করতে হবে। নিরাপত্তাহীন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য অবিলম্বে মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসনের ব্যবস্থা ও আবাসনচ্যুত শিক্ষার্থীদের মালামাল উদ্ধারে নিতে হবে কার্যকর উদ্যোগ। উদ্ভুত পরিস্থিতিকে ঘিরে চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকেই।

এ ছাড়া সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার মাধ্যমে বন্ধ করতে হবে নিরাপরাধ এলাকাবাসীদের হয়রানি। বৈপরীত্যমূলক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে উভয়পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন করে ন্যূনতম তিন মাস পর পর সভার আয়োজন করতে হবে। সিন্ডিকেটে গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করা। উদ্ভুত পরিস্থিতির দায় নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে ৩০ আগস্ট রাতে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে এক নারী শিক্ষার্থীকে স্থানীয় এক দারোয়ানের মারধরের ঘটনা কেন্দ্র করে। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে আটক করতে গেলে জোবরা গ্রামে স্থানীয়দের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা আলোচনায় বসতে গেলে তারাও হামলার শিকার হন। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ প্রায় ৭ শতাধিক মানুষ আহত হয়।

Ad 300x250

সম্পর্কিত