leadT1ad

রাকসু নির্বাচন পেছানোর দাবি স্বতন্ত্র ও ছাত্রদলের, শিবির চায় নির্ধারিত সময়েই

স্ট্রিম সংবাদদাতা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৫
স্ট্রিম কোলাজ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ‘পোষ্যকোটা পুনর্বহাল’ ও ‘শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায়’ বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরি অচল। কমপ্লিট শাটডাউন, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবস্থান কর্মসূচি এবং শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির কারণে রাকসু নির্বাচন ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, নির্বাচনের প্রাণ হলো শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ। কিন্তু বর্তমানে পোষ্যকোটা ইস্যুতে ক্যাম্পাসে যে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে, সেখানে শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যেই বাসায় চলে গেছে। পুরো শাটডাউন, পূজার ছুটি এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নির্বাচনের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তারা আরও বলেন, আমরা চাই শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে রাকসু নির্বাচন। কিন্তু ক্যাম্পাসকে অচল রেখে কোনোভাবে নির্বাচন সম্ভব নয়। এটি রাকসু নির্বাচন বানচালের স্পষ্ট ষড়যন্ত্র।

স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনের কাছে ৫ দফা দাবি তুলে ধরেছেন। দাবিগুলো হলো—

১. রাকসু নির্বাচন হতে হবে এবং কোনোভাবে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। তবে ক্যাম্পাস শাটডাউন, ক্লাস অফ রেখে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস বিমুখ রেখে কোনোভাবে রাকসু নির্বাচন হতে পারে না;

২. সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু রাকসু নির্বাচন হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অতি দ্রুত পোষ্য কোটা ইস্যু মীমাংসা করে ক্যাম্পাসের স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে;

৩. লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রেখে রাকসু নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। আমরা কোনোভাবে আমাদের প্রাণের রাকসু নির্বাচনকে একতরফা নির্বাচন হতে দিতে চাই না;

৪. ক্যাম্পাসের অস্থিতিশীল পরিবেশ, কমপ্লিট শাটডাউন, পূজার ছুটি সবকিছু বিবেচনা করে রাকসু নির্বাচন কমিশনারকে পরবর্তী পদক্ষেপ অতি দ্রুত নিতে হবে;

৫. কোনোভাবে রাকসু নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত হতে দেওয়া হবে না এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ স্থিতিশীল করে রাকসু নির্বাচন হতে দিতে হবে।

এদিকে সোমবার দুপুরের দিকে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, রাবিতে পুরো ক্যাম্পাসে প্রশাসনিক অফিস তালাবদ্ধ রয়েছে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অবস্থান ও মানববন্ধন করছেন। শিক্ষকরা তাদের লাঞ্ছনার ঘটনায় সরাসরি বিচার দাবি করছেন। অন্যদিকে কমপ্লিট শাটডাউন ও পূজার ছুটির কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দলে দলে বাড়ি চলে যাচ্ছে। ফলে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া রাকসু নির্বাচন এখন স্থগিত বা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ছাত্রদল মনোনীত ভিপি পদপ্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবীর বলেন, ‘আমরা সবসময় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। গত ৪৮ ঘণ্টা আগের উৎসবমুখর পরিবেশ এবং ভোটার ও পদপ্রার্থীদের আনাগোনা এখন অনেকটাই স্থবির হয়ে গিয়েছে। ভোটার নেই বললেই চলে। বেশিরভাগ স্টুডেন্ট বাড়িতে চলে গেছেন। আমরা চাই, সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতিতে ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হোক। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যদি ভোটারদের উপস্থিতির কথা বিবেচনা করেন, তাহলে আমি তাঁদের বলবো শিক্ষার্থীদের পালস বোঝার চেষ্টা করেন। আমরা চাই, নির্বাচনটা দুর্গাপূজার পরেই হোক।’

তবে শিবির মনোনীত প্যানেল ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট‘ সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে জানায়, তাঁরা নির্ধারিত সময়েই রাকসু নির্বাচন চায়।

এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশন এফ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ক্যাম্পাসের উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে বিকাল ৫টায় আমাদের একটি মিটিং রয়েছে, প্রার্থীদের দাবিগুলো যদি যৌক্তিক হয় সেগুলো বিবেচনায় রেখে রায় হবে।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত