leadT1ad

প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে এইচবিএম ইকবালের নামে জিডি, তদন্তে আদালতে আবেদন

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ১৯
এইচবিএম ইকবাল। সংগৃহীত ছবি

প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে জীবননাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা এইচবিএম ইকবালের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে দেড় মাস আগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হলেও সম্প্রতি জানাজানি হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগটি তদন্তের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

ব্যাংকের দুই শীর্ষ কর্মকর্তাসহ তিনজনের প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বনানী থানায় জিডিটি করেন শাহেদ সেকান্দার নামে একজন। অবশ্য প্রিমিয়ার ব্যাংকের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য উল্লেখ করেননি।

জিডিতে শাহেদ সেকান্দার উল্লেখ করেন, প্রিমিয়ার ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এইচবিএম ইকবাল নিজের মোবাইল নম্বর থেকে গত ১২ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা ৮ মিনিটে তাঁর (শাহেদ) হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল করে প্রায় ৩১ মিনিট কথা বলেন। এরপর রাত ১০টা ৪৭ মিনিটে আবার কল করে ২ মিনিট কথা বলেন।

তিনি অভিযোগ করেন, কথোপকথনে এইচবিএম ইকবাল তাঁর মালিকানাধীন ৪২ কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে ‘ইকবাল সেন্টার’ নামে ভবনে প্রিমিয়ার ব্যাংক এবং প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিসের প্রধান কার্যালয়ের ভাড়া এবং গুলশান-১ এ অবস্থিত ‘হোটেল রেনেসাঁ’ ভবনের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় প্রিমিয়ার ব্যাংকের গুলশান শাখার ভাড়া ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে পরিশোধ করতে বলেন। না হলে ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান ডা. আরিফুর রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবু জাফরের ‘মারাত্মক সমস্যা’ হবে। মোহাম্মদ আবু জাফরের বাড়ি ‘গায়েব করে’ দেওয়ার হুমকিও দেন। এ ছাড়া ব্যাংকের বিদ্যুৎ এ পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি ‘যেকোনো সময় যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে’ বলে জানান। এইচবিএম ইকবাল আরও বলেন, ‘তাঁদের (চেয়ারম্যান ও এমডি) কিছু হলে তিনি দায়ী থাকবেন না। তাঁরা নিজ দায়িত্বে অফিসে আসবেন।’

শাহেদ সেকান্দারের অভিযোগ, পরদিন ১৩ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা ৫৭ মিনিটে এইচবিএম ইকবাল পুনরায় তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে করে করে হুমকি দেন। এইচবিএম ইকবাল বলেন, ‘আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে সম্পূর্ণ ভাড়ার টাকা পরিশোধ না করলে বর্তমান চেয়ারম্যান ডা. আরিফুর রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবু জাফরের জীবননাশসহ মঙ্গলবার থেকে যেকোনো ধরনের সহিংস ঘটনার জন্য প্রস্তুত থাকতে।’

এদিকে বনানী থানায় জিডি করলেও শাহেদ সেকান্দার প্রিমিয়ার ব্যাংকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কোনো তথ্য জিডিতে দেননি। বর্তমান ঠিকানা উল্লেখ করেছেন ইকবাল সেন্টার। বিষয়টি নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি। প্রথম দফায় মোবাইল কল রিসিভ করলেও কথা না বলে সংযোগ কেটে দেন। তারপর আর কল ধরেননি। পরে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে প্রশ্ন পাঠালেও এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো জবাব দেননি।

একইভাবে এইচবিএম ইকবালের মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হয়। তিনি সাড়া না দেওয়ায় হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন পাঠানো হয়। তবে তিনিও এর জবাব দেননি।

বিষয়টি নিয়ে বনানী থানায় যোগাযোগ করা হলে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, এ ধরনের একটি জিডি তদন্তের অনুমতি চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তবে এখনও অনুমতি মেলেনি।

বনানী থানার ওসি রাসেল সরোয়ার এ বিষয়ে স্ট্রিমকে বলেন, ‘অভিযোগকারীর জিডির কপি আমরা পেয়েছি। তদন্তের অনুমতির জন্য আদালতে পাঠিয়েছি। আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পরেই তদন্ত শুরু করব।’

জিডিটির তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক তারেক হাসান বলেন, জিডিটি তদন্তের অনুমতি চেয়ে গত ২৫ অক্টোবর আদালতে পাঠানো হয়। এখনও অনুমতি পাওয়া যায়নি। তবে বাদীর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে এইচএম ইকবালের কল করার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। অবশ্য কী কথা বলেছেন সেটি জানা যায়নি।

হোয়াটসঅ্যাপের কল রেকর্ড বিশ্লেষণের প্রযুক্তিগত সুবিধা থানা পুলিশের আছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এই প্রযুক্তি সাইবার বিভাগে রয়েছে। আদালতের অনুমতি পাওয়া গেলে সব বিষয়ে তদন্ত করা হবে।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত