leadT1ad

মন্ত্রী-এমপিরা কারাগারে থাকতে পারলে সেনা কর্মকর্তারা নয় কেন, প্রশ্ন গুমের শিকার হাসিনুর রহমানের

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ২৮
সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান। সংগৃহীত ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলার আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তবে তাঁদের ঢাকা সেনানিবাস এলাকায় ঘোষিত সাবজেলে রাখার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গুমের শিকার সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান। তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাবজেল সৃষ্টি করেছেন, আমি এর বিপক্ষে। কোনো বৈষম্য চলবে না কারও সঙ্গে। আইজিপি, মন্ত্রী-এমপি এবং অন্যান্য লোকেরা যদি দেশের নিয়ম-মাফিক কারাগারে থাকতে পারে, এনাদের একই জায়গায় থাকতে হবে। বৈষম্য করে বিচার হয় না।’

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কিছু প্রস্তাবনার কথা তুলে ধরেন গুমের শিকার ব্যক্তিদের সংগঠন ইউনাইটেড ফর দ্য ভিকটিমস অব এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সেসের (ইউভিইডি)। সংগঠনটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে ছিলেন গুমের শিকার সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমানও।

তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী অপরাধী না। বাহিনীর গুটিকয়েক অসৎ, বিপথগামী সদস্য শেখ হাসিনার প্ররোচণায় এই অপকর্মগুলো করেছেন। আমাদের এ বিষয়ে পরিষ্কার হতে হবে। শুধু আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার জন্য আজকে সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য বিপথগামী হয়েছেন।’

‘আমরা ইনসাফ চাই। এই বিচার এই আয়নাঘর আছে, এটা প্রকাশ হয় ২০২২ সালে। কিন্তু (সেনাবাহিনীর) কেউ এ নিয়ে কোনো কথা বলেননি। কোনো জেনারেলও কথা বলেননি, উচিত ছিল’, বলেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।

সেনাবাহিনীর এই সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে সহায়তার জন্য সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানকে ধন্যবাদ জানান হাসিনুর রহমান। তবে এই বিচার চলাকালে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের সাবজেলে রাখার তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, ‘আমি তো মনে করি, আয়নাঘরে রেখে তাঁদের বিচার করা উচিত। তবে আমি দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছেন। আমি প্রচন্ড ঘৃণা করি, উনি মানে কোন কাতারের মধ্যে পড়েন আমি জানি না। ওনাকে ডিভিশন দেওয়া হবে অফিসারদের ডিভিশন নিয়ে থাকবেন। ওখানে কি আইজিপি নাই, তিনি নাকি আইজিপির উদ্ধে। আমি মানে হতাশ।

গুমের মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ভুমিকার প্রশংসা করেন সেনাবাহিনীর সাবেক এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আমাদের তাজুল ভাই (চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম) বা আইসিটি চরম ভালো কাজ করেছেন। এটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। যে সাহসী ভূমিকা... একটা সংশয় ছিল, সেটার এন্ড হইছে।’

তবে অভিযুক্ত সেনাকর্মকর্তাদের ক্যান্টনমেন্টে রেখে কোনো তথ্য পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন হাসিনুর রহমান। তিনি বলেন, ‘অনেকে বলতেছেন আমি শুনছি, এদের অনেকেই নিরপরাধ। কিন্তু তদন্তের সময় তাঁদের কেউ কথা বলেননি। এই অফিসারদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, কিন্তু কথা বলেনি। এখন যদি ক্যান্টনমেন্টে থাকে, একই কাজ করবে (নিশ্চুপ থাকবে)। আমরা আমি এর ঘোর-বিরোধী।’

প্রয়োজন হলে গুমের ঘটনার পুনর্তদন্ত করতে হবে, কিন্তু সেটা এই কর্মকর্তাদের কারাগারে রেখে দাবি করেন সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে এসি রুমে রেখে, কাটা চামুচ-প্লেটে... এটা রাখা কোনোভাবেই সম্ভব না। বৈষম্য হলে আমরা ন্যায়বিচার পাবো না। দেশের যারাই এর সঙ্গে যারাই জড়িত, ন্যায়বিচার করতে হবে।’

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত