leadT1ad

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা

এক অভিযোগে হাসিনা-কামালের সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চায় প্রসিকিউশন

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনের হত্যা মামলার প্রথম চার্জশিট। ছবি: বাসস

জুলাই গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে একটি অভিযোগে দেওয়া আমৃত্যু কারাদণ্ড নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে প্রসিকিউশন। এই সাজা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।

ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বলেন, ‘গত ১৭ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন। আমরা রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি হাতে পেয়েছি। রায়ে একটি অভিযোগে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও, অপর একটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আমরা রায়টি পর্যবেক্ষণ করছি এবং আমৃত্যু কারাদণ্ডের ওই অংশটি চ্যালেঞ্জ করে সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চাওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যেই আপিল করতে হয়, তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তারা আপিল করবেন বলে জানান তিনি।

এর আগে গত ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন। রায়ে শেখ হাসিনা ও কামালকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের দেশে থাকা সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার ৯ দিন পর ট্রাইব্যুনাল পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে।

মামলায় প্রসিকিউশন পাঁচটি অভিযোগ আনলেও রায়ে ট্রাইব্যুনাল দুটি অভিযোগে মোট ছয়টি ঘটনা চিহ্নিত করেন। প্রথম অভিযোগে তিনটি ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। প্রথমত, ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ বলে উসকানিমূলক বক্তব্য। দ্বিতীয়ত, একই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসি মাকসুদ কামালের সঙ্গে ফোনালাপে আন্দোলনকারীদের দমনের নির্দেশ ও অধস্তনদের বাধা না দেওয়া। তৃতীয়ত, এরই ধারাবাহিকতায় রংপুরে পুলিশি গুলিতে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হওয়া। এই অভিযোগেই ট্রাইব্যুনাল আসামিদের আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন, যা বাড়াতে আপিল করবে প্রসিকিউশন।

অন্যদিকে, দ্বিতীয় অভিযোগেও তিনটি ঘটনা প্রমাণিত হয়েছে। ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে শেখ হাসিনার ফোনালাপে ড্রোনের মাধ্যমে অবস্থান নির্ণয় করে হেলিকপ্টার ও মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ। যার ফলে ৫ আগস্ট চানখারপুলে ছয়জন আন্দোলনকারীকে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনা ঘটে। এই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। বাজেয়াপ্তকৃত সম্পদ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে বিতরণের জন্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে দণ্ডপ্রাপ্তরা বা রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করতে পারবে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত