leadT1ad

মুন্সিগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আবারও দলীয় কর্মী নিহত

মুন্সিগঞ্জ সদরের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে জেলা বিএনপির সদস্য আতিক মল্লিক ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অহিদ মোল্লার সঙ্গে সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক উজির আলী ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন মোল্লা গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল দলীয় কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে। সোমবার সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে আশ্রয় ও সঙ্গে নিয়ে হামলার অভিযোগ করেছে।

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
মুন্সিগঞ্জ

প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ৫৮
সংঘর্ষের প্রতীকী ছবি। স্ট্রিম গ্রাফিক

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দিতে আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে আরিফ মীর (৩৫) নামে দলীয় একজন কর্মী নিহত হয়েছেন। একই সময় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে আরও দুজন। আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল ৬টার দিকে উপজেলার চরাঞ্চল মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের চরডুমুরিয়া গ্রামে সংঘর্ষে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

নিহত আরিফ মীর চরডুমুরিয়া গ্রামের মৃত খবির মীরের ছেলে। গুলিবিদ্ধ ইমরান মীর (২২) ও আহত মো. ফারুককে (২২) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর আগে ২ নভেম্বর রাতে বিএনপির এই দুই গ্রুপের বিরোধে গুলিতে খুন হন মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বেহেরকান্দি গ্রামের বিএনপির কর্মী তুহিন দেওয়ান (২২)।

মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে জেলা বিএনপির সদস্য আতিক মল্লিক ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অহিদ মোল্লার সঙ্গে সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক উজির আলী ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন মোল্লা গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল দলীয় কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে। উভয় পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে আশ্রয় ও সঙ্গে নিয়ে হামলার অভিযোগ করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে বিএনপির আতিক-অহিদ গ্রুপের সঙ্গে উজির-আওলাদ হোসেন মোল্লা গ্রুপের লোকজন রবিবার রাতের বিভিন্ন সময় চরডুমুরিয়া গ্রামে মূর্হুমুহু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায়। পরে আজ সোমবার সকালে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ। এ সময় আতিক-অহিদ গ্রুপের লোকজনের সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর ও খাইরুদ্দিন গ্রুপে লোকজন সংঘর্ষে অংশ নেয়।

সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধসহ আহত তিনজন আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আনা হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুলিবিদ্ধ আরিফ মীরকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত বিএনপি কর্মী আরিফ মীরের স্ত্রী পারুল বেগম বলেন, ‘রাতভর ককটেল ফাটাইছে গ্রামে। সকাল হতেই সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। আমার স্বামী বাড়ি থেকে বের হলেই আতিক-অহিদ গ্রুপের ইউসুফ-খাইরুদ্দিনসহ ৬-৭ জন তাঁকে গুলি করে। এতে আমার স্বামী মারা যান।’

সংঘর্ষের বিষয়ে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন মোল্লা বলেন, ‘আতিক মল্লিক বিএনপি করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের লালন পালন করে আসছেন। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর, ইউসুফ ও খাইরুদ্দিনের নেতৃত্বে ভোরে আমার লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এ সময় আরিফ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। পরে হামলা করে আমার সব লোকজনকে গ্রাম ছাড়া করেছে। অনেক বাড়িঘরে লুটপাট চালিয়েছে।’ আবারও হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করেন তিনি।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন দাবি করে জেলা বিএনপির সদস্য আতিক মল্লিক বলেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে আমি কোনো ভাবেই জড়িত না। আজকে যারা ঘটনা ঘটাইছে, এটা তাদের দায়। উজির-আওলাদ গ্রুপের লোকজন আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে মিলে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রামছাড়া করে। তারপর একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে আসছে।’

সংঘর্ষের পর এলাকায় পুলিশের অভিযান চলছে জানিয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম স্ট্রিমকে বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত