লক্ষ্মীপুরে একই পরিবারের ৭ জনের মৃত্যু
স্ট্রিম সংবাদদাতা
পাশাপাশি ছয়টি নতুন কবর। বৃষ্টিতে যেন ভেঙে না পড়ে, তাই পলিথিন দিয়ে ঢাকা। কবরের সামনে দাঁড়িয়ে একেক জনের নাম ধরে ডাকছিলেন লিপি আক্তার। কিন্তু কারও সাড়া মেলে না। আদরের ছোট বোন ও ভাগনিকে ডাকতে ডাকতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। তাঁর কান্না ছড়িয়ে পড়ে পাশে দাঁড়ানো আরও কয়েকজন নারীর মধ্যে। সবাই আঁচলে মুখে ঢাকেন। গোরস্তানে কান্না করতে নেই। দোয়া করতে হয়। তারপরও কান্না থামে না তাদের।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চৌপল্লী কাশারি বাড়ির কবরস্থানে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা যায়। বুধবার ওমান প্রবাসী মো. বাহার উদ্দিনকে এয়ারপোর্টে আনতে গিয়ে নোয়াখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন একই পরিবারের সাতজন। তাঁরা উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী এলাকার বাসিন্দা।
আড়াই বছর পর ওমান থেকে লক্ষ্মীপুরে ফিরছিলেন মো. বাহার উদ্দিন। তাঁকে আনতে একটি মাইক্রোবাস নিয়ে এয়ারপোর্টে গিয়েছিলেন পরিবারের ১১ জন। ফেরার পথে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব বাজারের অদূরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে মাইক্রোবাসটি। লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে প্রায় ৩০ ফুট গভীর খালে পড়ে গাড়িটি। এতে মারা যান একই পরিবারের সাতজন।
নিহতদের মধ্যে আছেন প্রবাসী বাহার উদ্দিনের স্ত্রী কবিতা আক্তার (২৪), দুবছরের মেয়ে মীম আক্তার, ভাবি লাবনী আক্তার (২৫), ভাতিজি রেশমা আক্তার (৯) ও লামিয়া ইসলাম (৮), মা মোরশেদা বেগম (৫০) এবং নানী ফয়জুন নেছা (৭০)।
নিহতদের মধ্যে বৃদ্ধা ফয়জুন নেছার মরদেহ তাঁর বাড়ি উপজেলার হাজিরপাড়া গ্রামে কবর দেওয়া হয়েছে। বাকিদের বুধবার বিকেলে জানাজা শেষে চৌপল্লী কাশারিবাড়ীর কবরস্থানে পাশাপাশি কবর দেওয়া হয়েছে। এখন পরিবারের সদস্যরা কাঁদতে কাঁদতে সেই কবরস্থানে যান, চোখ মুছতে মুছতে ফেরেন।
দুর্ঘটনার পর বাহার উদ্দিন চেষ্টা করেছিলেন গাড়িতে থাকা সবাইকে বাঁচাতে। উদ্ধার করেছিলেন কয়েকজনকে। কিন্তু বাকিরা কেউ কাউকে ছেড়ে বের হতে চাননি। সন্তানকে আগলে ছিলেন তাঁরা বুকের সঙ্গে। পানিতে ডুবে মৃত্যু হয় সবার। স্বজনদের বাঁচাতে না পারার হতাশা তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে বাহারকে।
বাহার উদ্দিন বলেন, ‘আমি একটি ছোট গ্লাস খুলে বাইরই আসার পর আমার ওয়াইফরে টানি। সে তার বাইচ্চারে ধরে রাখছে। আমি বড় ভাবিরে টানি, সে তার বাইচ্চারে ধরে রাখছে। মেজু ভাবী বাইরই আইছে, তার বাইচ্চা ভেতরে রই গেছে। আমার মা’রে টানতেছি। মা তার মা’রে ধরে রাখছে। এই ছয়জনরে আর বাইর করতে পারি নাই। গাড়িতে যখন একটু পানি ঢুকছে, গাড়ি আস্তে করে তলায় গেছে।’ বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
দুর্ঘটনার পর গাড়ি থেকে বের হতে পেরেছিলেন প্রবাসী বাহার উদ্দিন, তাঁর বাবা আব্দুর রহিম, শ্বশুর ইস্কান্দার মীর্জা, ভাবি সুইটি আক্তার ও শ্যালক রিয়াজ হোসেন।
আব্দুর রহিম ও ইস্কান্দার মির্জা অভিযোগ করেন, এলাকা থেকে ভাড়া নেওয়া গাড়িটির চালক এনায়েত আকবরের বয়স খুব কম। গাড়ি চালাতেও অভিজ্ঞ নন। দুর্ঘটনার পর গাড়ির দরজা খুলে দিতে বললেও তিনি তা করেনি। গাড়ির দরজার কাঁচ নামিয়ে নিজে বের হয়ে গেছেন। গাড়িতে আটকে থাকা কাউকেই উদ্ধারের চেষ্টাও করেননি।
বাহার উদ্দিন বলেন, ‘রাস্তায় তারে কয়েকবার কোথাও থেমে ঘুমিয়ে নিতে বলা হইছে। সে রাজি হয় নাই। নোয়াখালীতে আসার পর খালি রাস্তায় গাড়ি খালের মধ্যে ফালাই দিছে। পানিতে পড়ার পর গাড়ি নৌকার মতো ভাসতেছে। আমি সবাইকে ধরে রাখছি। ড্রাইভারকে বলছি, ‘গাড়ির লক খুইলা দাও। দরজা খোলার সাথে সাথে একজন এক জায়গা দিয়ে বেরিয়ে যাবে, কোনো সমস্যা নাই। সে গাড়ির গ্লাস খুলে নিজের বাইরই গেছে!’
আব্দুর রহিম বলেন, ‘চালক ঘুম চোখে গাড়ি চালানোর কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সে আমাদের পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় রেখে পালায়ে গেছে।‘ চালককে এখনো পুলিশ আটক করতে পারেনি।
পরিবারের সাত সদস্যের মৃত্যুর খবরে প্রবাস থেকে বাড়ি ফিরছেন বাহার উদ্দিনের দুই ভাই। বৃহস্পতিবার তাঁরা বাড়ি পৌঁছানোর পর চালক ও গাড়ি মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে জানান আব্দুর রহিম।
দুর্ঘটনা কবলিত মাইক্রোবাসের মালিক একই এলাকার বাসিন্দা মো. রাসেল। তাঁর গাড়িটি দুই বছর যাবৎ চালাচ্ছেন উপজেলার হাজিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা এনায়েত আকবর। ফোনে তিনি স্ট্রিমকে বলেন, দুর্ঘটনার পর চালক আকবর সেখানে ২০-৪০ মিনিট পর্যন্ত ছিলেন। তাঁকে সবাই দোষারোপ করায় তিনি পালিয়ে যান।
চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করবে বলে জানিয়েছে। তাঁরা মামলা না করলে আমরা করব। ঘটনার পর থেকেই চালক পলাতক। তাঁকে আটকের চেষ্টা চলছে।’
পাশাপাশি ছয়টি নতুন কবর। বৃষ্টিতে যেন ভেঙে না পড়ে, তাই পলিথিন দিয়ে ঢাকা। কবরের সামনে দাঁড়িয়ে একেক জনের নাম ধরে ডাকছিলেন লিপি আক্তার। কিন্তু কারও সাড়া মেলে না। আদরের ছোট বোন ও ভাগনিকে ডাকতে ডাকতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। তাঁর কান্না ছড়িয়ে পড়ে পাশে দাঁড়ানো আরও কয়েকজন নারীর মধ্যে। সবাই আঁচলে মুখে ঢাকেন। গোরস্তানে কান্না করতে নেই। দোয়া করতে হয়। তারপরও কান্না থামে না তাদের।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চৌপল্লী কাশারি বাড়ির কবরস্থানে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা যায়। বুধবার ওমান প্রবাসী মো. বাহার উদ্দিনকে এয়ারপোর্টে আনতে গিয়ে নোয়াখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন একই পরিবারের সাতজন। তাঁরা উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী এলাকার বাসিন্দা।
আড়াই বছর পর ওমান থেকে লক্ষ্মীপুরে ফিরছিলেন মো. বাহার উদ্দিন। তাঁকে আনতে একটি মাইক্রোবাস নিয়ে এয়ারপোর্টে গিয়েছিলেন পরিবারের ১১ জন। ফেরার পথে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব বাজারের অদূরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে মাইক্রোবাসটি। লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে প্রায় ৩০ ফুট গভীর খালে পড়ে গাড়িটি। এতে মারা যান একই পরিবারের সাতজন।
নিহতদের মধ্যে আছেন প্রবাসী বাহার উদ্দিনের স্ত্রী কবিতা আক্তার (২৪), দুবছরের মেয়ে মীম আক্তার, ভাবি লাবনী আক্তার (২৫), ভাতিজি রেশমা আক্তার (৯) ও লামিয়া ইসলাম (৮), মা মোরশেদা বেগম (৫০) এবং নানী ফয়জুন নেছা (৭০)।
নিহতদের মধ্যে বৃদ্ধা ফয়জুন নেছার মরদেহ তাঁর বাড়ি উপজেলার হাজিরপাড়া গ্রামে কবর দেওয়া হয়েছে। বাকিদের বুধবার বিকেলে জানাজা শেষে চৌপল্লী কাশারিবাড়ীর কবরস্থানে পাশাপাশি কবর দেওয়া হয়েছে। এখন পরিবারের সদস্যরা কাঁদতে কাঁদতে সেই কবরস্থানে যান, চোখ মুছতে মুছতে ফেরেন।
দুর্ঘটনার পর বাহার উদ্দিন চেষ্টা করেছিলেন গাড়িতে থাকা সবাইকে বাঁচাতে। উদ্ধার করেছিলেন কয়েকজনকে। কিন্তু বাকিরা কেউ কাউকে ছেড়ে বের হতে চাননি। সন্তানকে আগলে ছিলেন তাঁরা বুকের সঙ্গে। পানিতে ডুবে মৃত্যু হয় সবার। স্বজনদের বাঁচাতে না পারার হতাশা তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে বাহারকে।
বাহার উদ্দিন বলেন, ‘আমি একটি ছোট গ্লাস খুলে বাইরই আসার পর আমার ওয়াইফরে টানি। সে তার বাইচ্চারে ধরে রাখছে। আমি বড় ভাবিরে টানি, সে তার বাইচ্চারে ধরে রাখছে। মেজু ভাবী বাইরই আইছে, তার বাইচ্চা ভেতরে রই গেছে। আমার মা’রে টানতেছি। মা তার মা’রে ধরে রাখছে। এই ছয়জনরে আর বাইর করতে পারি নাই। গাড়িতে যখন একটু পানি ঢুকছে, গাড়ি আস্তে করে তলায় গেছে।’ বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
দুর্ঘটনার পর গাড়ি থেকে বের হতে পেরেছিলেন প্রবাসী বাহার উদ্দিন, তাঁর বাবা আব্দুর রহিম, শ্বশুর ইস্কান্দার মীর্জা, ভাবি সুইটি আক্তার ও শ্যালক রিয়াজ হোসেন।
আব্দুর রহিম ও ইস্কান্দার মির্জা অভিযোগ করেন, এলাকা থেকে ভাড়া নেওয়া গাড়িটির চালক এনায়েত আকবরের বয়স খুব কম। গাড়ি চালাতেও অভিজ্ঞ নন। দুর্ঘটনার পর গাড়ির দরজা খুলে দিতে বললেও তিনি তা করেনি। গাড়ির দরজার কাঁচ নামিয়ে নিজে বের হয়ে গেছেন। গাড়িতে আটকে থাকা কাউকেই উদ্ধারের চেষ্টাও করেননি।
বাহার উদ্দিন বলেন, ‘রাস্তায় তারে কয়েকবার কোথাও থেমে ঘুমিয়ে নিতে বলা হইছে। সে রাজি হয় নাই। নোয়াখালীতে আসার পর খালি রাস্তায় গাড়ি খালের মধ্যে ফালাই দিছে। পানিতে পড়ার পর গাড়ি নৌকার মতো ভাসতেছে। আমি সবাইকে ধরে রাখছি। ড্রাইভারকে বলছি, ‘গাড়ির লক খুইলা দাও। দরজা খোলার সাথে সাথে একজন এক জায়গা দিয়ে বেরিয়ে যাবে, কোনো সমস্যা নাই। সে গাড়ির গ্লাস খুলে নিজের বাইরই গেছে!’
আব্দুর রহিম বলেন, ‘চালক ঘুম চোখে গাড়ি চালানোর কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সে আমাদের পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় রেখে পালায়ে গেছে।‘ চালককে এখনো পুলিশ আটক করতে পারেনি।
পরিবারের সাত সদস্যের মৃত্যুর খবরে প্রবাস থেকে বাড়ি ফিরছেন বাহার উদ্দিনের দুই ভাই। বৃহস্পতিবার তাঁরা বাড়ি পৌঁছানোর পর চালক ও গাড়ি মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে জানান আব্দুর রহিম।
দুর্ঘটনা কবলিত মাইক্রোবাসের মালিক একই এলাকার বাসিন্দা মো. রাসেল। তাঁর গাড়িটি দুই বছর যাবৎ চালাচ্ছেন উপজেলার হাজিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা এনায়েত আকবর। ফোনে তিনি স্ট্রিমকে বলেন, দুর্ঘটনার পর চালক আকবর সেখানে ২০-৪০ মিনিট পর্যন্ত ছিলেন। তাঁকে সবাই দোষারোপ করায় তিনি পালিয়ে যান।
চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করবে বলে জানিয়েছে। তাঁরা মামলা না করলে আমরা করব। ঘটনার পর থেকেই চালক পলাতক। তাঁকে আটকের চেষ্টা চলছে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতার দায় স্বীকার করার আহ্বান জানিয়েছেন ৩২ বিশিষ্ট নাগরিক। পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে দলটির রাজনৈতিক তৎপরতা নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
৩ ঘণ্টা আগেদায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে হবিগঞ্জ কোর্ট পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সবুজ চন্দ ও কনস্টেবল উজ্জ্বল মিয়াকে ক্লোজড করেছে কর্তৃপক্ষ।
৪ ঘণ্টা আগেনির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু আজ থেকে। দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রথম ও প্রধান কাজ হচ্ছে নির্বাচন সুন্দরভাবে করা।
৫ ঘণ্টা আগেবৈঠকের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আমাদের দায়িত্বের প্রথম অধ্যায় শেষ হয়েছে। আজ থেকে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু। এই অধ্যায়ে প্রথম ও প্রধান কাজ হচ্ছে, নির্বাচন সুন্দরভাবে করা। এছাড়া সংস্কার ও বিচারের বিষয়ও রয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগে