leadT1ad

ভিডিও ভাইরাল

তানোরে শিক্ষককে মারধরের পর কোচিং সেন্টার বন্ধ করলেন কয়েকজন

ভুক্তভোগী শিক্ষক রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, ‘আমরা কয়েকজন মিলে কোচিং সেন্টারটি চালাতাম। মুন্ডুমালায় আরও কয়েকটি কোচিং সেন্টার থাকলেও আমাদেরটি ভালো চলত। সে জন্য ষড়যন্ত্র করে আমাদের কোচিং সেন্টারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
রাজশাহী
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ০৫
তানোরে কোচিং সেন্টারে শিক্ষককে মারধর। ভিডিও থেকে নেওয়া ছবি

রাজশাহীর তানোরে একটি কোচিং সেন্টারে গিয়ে শিক্ষককে মারধরের পর প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়েছেন কয়েকজন যুবক। ইতিমধ্যে শিক্ষককে চড়-থাপ্পড়ের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। মারধর করা ওই যুবকেরা আগে আওয়ামী যুবলীগ করলেও বর্তমানে যুবদলের নেতা পরিচয় দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী।

কোচিং সেন্টারের ছাত্রীদের হোয়াটসঅ্যাপে আপত্তিকর বার্তা পাঠান অভিযোগে ওই শিক্ষককে মারধর করা হয়। তবে স্থানীয় ফাঁড়ির পুলিশ অভিযোগের কোনো প্রমাণ পায়নি। প্রতিযোগী কোচিং সেন্টারগুলোর ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এর সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহ ভুক্তভোগীর।

এর আগে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) তানোরের মুন্ডুমালা বাজারে অবস্থিত অ্যাডভান্স কোচিং সেন্টারে শিক্ষককে মারধরের ঘটনাটি ঘটে। সোমবার (১৩ অক্টোবর) এর একটি ভিডিও ফুটে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, কোচিংয়ের শিক্ষক রোকনুজ্জামান রোকন তাঁর চেয়ারে বসে আছেন। তখন কয়েকজন যুবক তাঁকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করছেন। এক পর্যায়ে মো. শাকিব নামের এক যুবক তাঁকে একাধিক চড়-থাপ্পড় মারেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুন্ডুমালা বাজারে অবস্থিত অ্যাডভান্স কোচিং সেন্টারে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শতাধিক শিক্ষার্থীদের কোচিং করানো হতো। ভুক্তভোগী শিক্ষক রোকনুজ্জামান রোকন মুন্ডুমালা পৌরসভার মোহাম্মদপুর মহল্লার বাসিন্দা। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী ও কোচিং সেন্টারটির পরিচালক। ঘটনার পর থেকে কোচিং সেন্টারটি বন্ধ রয়েছে। এদিকে অভিযুক্ত শাকিবের বাড়ি একই পৌর এলাকার কাদিপুর মহল্লায়। ঘটনার পর থেকে তিনি এলাকায় নেই।

ভুক্তভোগী শিক্ষক রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, ‘আমরা কয়েকজন মিলে কোচিং সেন্টারটি চালাতাম। মুন্ডুমালায় আরও কয়েকটি কোচিং সেন্টার থাকলেও আমাদেরটি ভালো চলত। সে জন্য ষড়যন্ত্র করে আমাদের কোচিং সেন্টারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’

ছাত্রীদের হোয়াটসঅ্যাপে আপত্তিকর ম্যাসেজ দেওয়ার কোনো প্রমাণ নেই দাবি করে শিক্ষক রোকন বলেন, ‘এই ছেলেগুলো আগে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ করত। ৫ আগস্টের পর তারা বিএনপি-যুবদল হয়ে গেছে। তারা মব সৃষ্টি করে আমাকে মারধর করে এবং কোচিং সেন্টারটি বন্ধ করে দেয়।’ তিনি দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। তাহলে মারধরের সময় তো মেয়েরাও থাকত।

রোকনুজ্জামান বলেন, ‘যখন আমাকে মারধর করা হয় তখনও তিনজন শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছিলেন। তাঁরা মুন্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয়। পুলিশ এসে আমাকে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। এখন আমি আমার ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে মামলা-মোকদ্দমা করতে যাইনি। ভয়ে কোচিং সেন্টারও খুলতে পারছি না।’

মুন্ডুমালা পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘রোকনুজ্জামান আমার পরিচিত। তাঁকে ভালোই মনে হয়। কেন এ ঘটনা ঘটল তা জানি না। যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিএনপি বা যুবদলে কোনো পদ নেই। এমনিই তারা উঠাবসা করতে পারে।’

কথা বলার জন্য অভিযুক্ত শাকিবকে কয়েক দফা ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাঁর বাবা মো. ভুট্টু বলেন, ‘ঘটনার ব্যাপারে লোকের মুখে শুনছি। কি হয়েছে সঠিক বলতে পারছি না। যারা ঘটনাস্থলে গিয়েছিল তারাই বলতে পারবে। আমার ছেলে তো নাই। সে রাজশাহীতে আছে।’

মুন্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ কমলেস হেমব্রম বলেন, ‘রোকনুজ্জামান মব জাস্টিসের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল। পুলিশ গিয়ে তাঁকে নিরাপদে বের করে এনেছে। আপাতত কোচিং সেন্টার বন্ধ আছে। তবে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তার সত্যতা আমরা পাইনি। এ ব্যাপারে কোনোপক্ষ অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত