leadT1ad

দ্বিতীয় প্রজন্মের অটোমেটেড মিউটেশন সিস্টেম চালু, কমবে ‘হিউম্যান টাচ’

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৫
ছবি: ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

দেশে ভূমিসেবা আরও সহজ ও জনবান্ধব করতে দ্বিতীয় প্রজন্মের ‘অটোমেটেড মিউটেশন সিস্টেম ২.১’ চালু করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। নতুন এই ডিজিটাল ব্যবস্থায় নামজারি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেবা পেতে নাগরিকদের সরাসরি অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হবে কম। ‘ভূমি’ নামের ইন্টিগ্রেটেড মোবাইল অ্যাপ চালুর মাধ্যমে হাতের মুঠোয় মিলবে ভূমিসেবা, আর কমে আসবে দুর্নীতি, সময়ক্ষেপণ ও হয়রানি।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর ভূমি ভবনের সেমিনার হলে ‘অটোমেটেড মিউটেশন সিস্টেম ২.১ ও ভূমিসেবার ইন্ট্রিগ্রেটেড মোবাইল অ্যাপ ‘ভূমি’ উদ্বোধন করেন ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। এদিন ভূমিসেবা সিস্টেমে জয়পুরহাট জেলার শতভাগ খতিয়ান ও হোল্ডিং এর নির্ভুল তথ্য উন্মুক্ত করা হয়। অনুষ্ঠানে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তাদের ভূমিসেবার বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘পুরস্কার ২০২৫’ দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, ‘ভূমি মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ; নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক স্থিতিশীলতার অন্যতম ভিত্তি। তাই দেশের উন্নয়নে সুষ্ঠু ভূমি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্য নিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় জনবান্ধব অটোমেটেড ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। অটোমেটেড মিউটেশন সিস্টেম ২.১ চালুর মাধ্যমে সেবায় হিউম্যান টাচ আরও কমবে। নামজারির জন্য নাগরিকদের মাত্র একবার উপজেলা ভূমি অফিসে যেতে হবে। এতে জালিয়াতি করে নামজারি ও ভূমি হস্তান্তর প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে ‘ভূমি’ অ্যাপ, যার মাধ্যমে ভূমিসেবা এখন হাতের মুঠোয়। নাগরিকরা অ্যাপের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান, দাখিলা সংগ্রহ, নামজারির ফি প্রদান, ডিসিআর ও খতিয়ান সংগ্রহ, খতিয়ানের সার্টিফায়েড কপি ও মৌজা ম্যাপ পেতে পারবেন। পরবর্তীতে অন্যান্য সেবাও অ্যাপের মাধ্যমে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

ভূমি উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রযুক্তির সঙ্গে যত বেশি সম্পৃক্ততা বাড়বে, নাগরিকদের ভোগান্তি তত কমবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীর ওপর নির্ভরতা অনেক হ্রাস পাবে। অটোমেটেড মিউটেশন সিস্টেম ২.১ ব্যবস্থায় নামজারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পূর্ববর্তী মালিকের খতিয়ান থেকে জমি কর্তন হয়ে নতুন মালিকের খতিয়ানে যুক্ত হবে। এতে তথ্য গোপন করে একই জমি একাধিকবার বিক্রির সুযোগ বন্ধ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নামজারির সঙ্গে সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে হোল্ডিং তৈরি হবে এবং ভূমি মালিক অ্যাপসের মাধ্যমে ঘরে বসে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করা যাবে। এতে দুর্নীতি ও হয়রানি কমে আসবে।’

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যন্ত্রের পেছনের মানুষের মানসিকতা, সেই মানসিকতাই জনবান্ধব সেবা নিশ্চিত করবে বলে মনে করেন ভূমি উপদেষ্টা। তিনি জানান, ‘সারাদেশে ভূমিসেবা সিস্টেমে শতভাগ খতিয়ান ও হোল্ডিং এন্ট্রি এবং ভুল সংশোধনের কাজ ইউএনডিপি বাংলাদেশের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। চলতি বছর ১৩ আগস্ট ফেনীতে এ কার্যক্রম উদ্বোধন হয়। আট জেলায় পাইলট কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে। পর্যায়ক্রমে তা সারাদেশে বাস্তবায়িত হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘ভূমি অ্যাপ নিজে ব্যবহার করতে হবে এবং জনগণকে ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। সফটওয়্যার যেন নাগরিকবান্ধব হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি ডেটা সুরক্ষায় সার্ভার নিরাপদ রাখার ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি। দিনশেষে তিনি ‘পেপারলেস’ ভূমি ব্যবস্থাপনার স্বপ্নের কথা বলেন।’

অনুষ্ঠানে ভূমি মন্ত্রণালয় কর্মকৃতি-ভিত্তিক মূল্যায়ন করে আট বিভাগের আটজন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, আটজন সার্ভেয়ার, সাতজন কানুনগো, নয়জন সহকারী কমিশনার (ভূমি), আটজন রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর, আটজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), আটজন জেলা প্রশাসক ও দুইজন বিভাগীয় কমিশনারকে সনদ ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) এ জেড এম সালাহউদ্দিন নাগরী ও ইউএনডিপি বাংলাদেশের সিনিয়র প্রোগ্রাম অ্যাডভাইজার (গভর্নেন্স) ড্রাগন পপভিক।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত