leadT1ad

১৫ বছরে আওয়ামী সন্ত্রাসে নিহতদের তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশ

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতকালে চব্বিশের জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আগে আওয়ামী লীগ ও এর সংগঠনের দলীয় সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের তালিকা করে প্রতিটি ঘটনা তদন্তের অনুরোধ জানায় শহীদ আবরার ফাহাদের পরিবার।

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৫, ১৫: ৩৭
বৃহস্পতিবার যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে শহীদ আবরার ফাহাদের পরিবার। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আগের ১৫ বছরে ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য সংগঠনের সন্ত্রাসী হামলা ও তৎকালীন আওয়ামী সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নিহত ব্যক্তিদের তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় শহীদ বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ ও মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতকালে চব্বিশের জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আগে আওয়ামী লীগ ও এর সংগঠনের দলীয় সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের তালিকা করে প্রতিটি ঘটনা তদন্তের অনুরোধ জানান শহীদ আবরার ফাহাদের পরিবার।

এ সময় আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার বিচারকাজ দ্রুত সম্পাদন করতে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিতে প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ।

মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ বলেন, ‘দেশের জন্য কথা বলার কারণে তাঁকে (আবরার ফাহাদ) সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। আমার ছেলে দেশের স্বার্থে কথা বলেছিল, অসম পানি বণ্টনের বিরুদ্ধে বলেছিল।’

আবরার ফাহাদের বাবা আরও বলেন, ‘তাঁর মা এখনো ছেলের জন্য আর্তনাদ করেন। আর কোনো মা-কে যেন সন্তান হারানোর কষ্ট পেতে না হয়, আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়।’

সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আরও শিক্ষার্থীবান্ধব করতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ জানিয়ে আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বলেন, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনো শিক্ষার্থীবান্ধব নয়। পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাব, সরঞ্জাম ও অন্যান্য ব্যবস্থার সংকট রয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। আমরা চাই এ সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষার্থীবান্ধব করতে পদক্ষেপ নেবে।

পাশাপাশি, বুয়েটে র‍্যাগিং বন্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতেও অনুরোধ জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার সম্পন্ন হবেই। চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের আগে আওয়ামী লীগ ও এর সংগঠনের দলীয় সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের তালিকা করে প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করা হবে। পাশাপাশি তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর করা হত্যাকাণ্ডগুলোরও তদন্তকাজ চলছে। সরকার ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগে নির্মম নির্যাতনে শহীদ হন আবরার ফাহাদ। হত্যাকাণ্ডের দুই দিন আগে ৫ অক্টোবর ফেসবুকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ও ভারতের আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন আবরার ফাহাদ। তাঁর হত্যাকাণ্ডের পর অনেকেই দাবি করেন, মূলত ওই পোস্টের কারণেই আবরার ফাহাদকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। পরে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও আন্দোলনে ‘ভারতীয় আগ্রাসনের বিরোধিতা’র প্রতীক হয়ে ওঠেন শহীদ আবরার ফাহাদ।

Ad 300x250

সম্পর্কিত