leadT1ad

মনোনয়ন ঘিরে দলের ভেতর গ্রুপিং

ময়মনসিংহে জামায়াত নেতা জসীম উদ্দিনের সদস্যপদ স্থগিত

পদ স্থগিত হওয়া জামায়াত নেতা অধ্যাপক জসীম উদ্দিন ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসন থেকে দলীয় মনোনয়নে তিন দফা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে প্রতিবারই পরাজিত হন। পরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন সংগঠনে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি। গত শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ফুলবাড়িয়ায় বিক্ষোভ থেকে জসীম উদ্দিনকে সংদস নির্বাচনে প্রার্থী করার দাবি তোলা হয়।

স্ট্রিম সংবাদদাতা
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ জেলা জামায়াত ইসলামীর আমীর অধ্যাপক জসীম উদ্দিন। সংগৃহীত ছবি

লোক দিয়ে নিজের পক্ষ মিছিল করানোসহ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দলে ভেতর গ্রুপিং করার অভিযোগে ময়মনসিংহ জেলা জামায়াত ইসলামীর আমীর অধ্যাপক জসীম উদ্দিনের সদস্যপদ স্থগিত করেছে দলটি। দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশে তাঁর সাংগঠনিক কার্যক্রম ও সদস্যপদ (রুকনিয়াত) স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা মোজাম্মেল হক আকন্দ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে তাঁর সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, অধ্যাপক জসিম উদ্দিনের সামগ্রিক তৎপরতায় দলের সুনাম, ঐতিহ্য ও শৃঙ্খলা ক্ষুন্ন হচ্ছে। এটা গঠনতন্ত্রের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

পদ স্থগিত হওয়া জামায়াত নেতা অধ্যাপক জসীম উদ্দিন ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসন থেকে দলীয় মনোনয়নে তিন দফা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে প্রতিবারই পরাজিত হন। পরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন সংগঠনে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলীয় কর্মকাণ্ডে জসীম উদ্দিন নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে ২০২২ সাল থেকে কেন্দ্রের নির্দেশে ফুলবাড়িয়া উপজেলায় গণসংযোগ শুরু করেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ কামরুল হাসান মিলন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়নও পেয়েছেন।

এ দিকে জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দলের ভেতরে একটি অংশ আবারও অধ্যাপক জসীম উদ্দিনকে সামনে এনে সক্রিয় করে তোলে। এতে দলের মধ্যে গ্রুপিং স্পষ্ট হয়ে ওঠে। স্থানীয় জামায়াত ও শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু নেতা-কর্মী তাঁকে ঘিরে অবস্থান নেন। গত শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ফুলবাড়িয়ায় ‘ফুলবাড়িয়া ঐক্যবদ্ধ জনতা’র ব্যানারে এক বিক্ষোভ মিছিলও হয়। সেখানে অধ্যাপক জসীম উদ্দিনকে সংদস নির্বাচনে প্রার্থী করার দাবি তোলা হয়। এতে দলের ভেতরের বিভক্তি প্রকাশ্যে চলে আসে।

তবে জসীম উদ্দিন দাবি করেন তিনি ওই মিছিলের সঙ্গে জড়িত নন। তিনি বলেন ‘গত শনিবার আমার পক্ষ থেকে কোনো মিছিল হয়নি। যেহেতু ওই মিছিলে জামায়াত-শিবিরের অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিল সেটি জামায়াত-শিবিরের আড়ালে কিছু হয়েছে বলে মনে করি না। আমাকে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল করার জন্য ষড়যন্ত্র করেও কোনো মহল ওই মিছিলটি করাতে পারে।’

জসীম উদ্দিনের সদস্যপদ স্থগিতের তথ্য নিশ্চিত করে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোজাম্মেল হক আকন্দ বলেন, ‘ব্যক্তিবিশেষ বা গোষ্ঠীর ঊর্ধ্বে থেকেও আমরা শৃঙ্খলা রক্ষা করেছি। ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।’

ফুলবাড়িয়া উপজেলা জামায়াতের আমীর ফজলুল হক শামীম বলেন, ‘অধ্যাপক জসিম উদ্দিনের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিতের বিষয়ে জেলার চিঠি আমরা হাতে পেয়েছি।’

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে জসীম উদ্দিন বলেন, ‘আমি সংগঠনের সুনামহানিকর বা গঠনতন্ত্রবিরোধী কোনো কাজ করিনি। কারণ, এ রকম কোনো কাজ করলে সাংগঠনিক কার্যক্রম ও সদস্যপদ (রুকনিয়াত) স্থগিত হওয়ার আগেই শোকজ পেতাম। কিন্তু সংগঠন থেকে আমি কোনো শোকজ পাইনি।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত