ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে করা পূর্বাচল প্লট জালিয়াতির তিন মামলায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এস্টেট ও ভূমি বিভাগের সাবেক সদস্য খুরশিদ আলমকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার মূল অভিযুক্ত শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং দুই মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক। এ ছাড়া রাজউক ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে। মামলায় শেখ পরিবারের সদস্যরা পলাতক থাকলেও, তাঁদের সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তারা আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হচ্ছেন।
আজ রোববার (২ নভেম্বর) ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল আলম এই আদেশ দেন। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর অন্য একটি মামলায় আত্মসমর্পণ করলে খুরশীদ আলমকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
সকালে খুরশীদ আলমকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তিন মামলার অভিযোগপত্রের বিষয়গুলো তাঁকে পড়ে শোনান। এ সময় খুরশীদ আলম আদালতের কাছে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আমি নির্দোষ। আমি আপনার কাছে ন্যায়বিচার চাই।’
তাঁর বক্তব্য শেষে বিচারক মামলায় সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শুরু করেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জানিয়েছেন, মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৯ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।
দুদকের অভিযোগ অনুযায়ী, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনে ছয়টি ১০ কাঠার প্লট অবৈধভাবে বরাদ্দ নেন। বিধি অনুযায়ী এসব প্লট বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও রাজউকের কতিপয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশে তাঁরা এই জালিয়াতি করেন।
এই দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মোট ছয়টি মামলা দায়ের করে। গত ৩১ জুলাই এই মামলাগুলোতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা পলাতক থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। মামলার নথি অনুযায়ী, মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এই ছয়টি মামলারই আসামি।