প্রচারণার শুরুতেই অনলাইন অপপ্রচার ও সাইবার বুলিংকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা। অন্যদিকে, শিক্ষার্থীরা এই প্যানেলের শক্তি ও দুর্বলতা দুটোই খুঁজে পাচ্ছেন। সব মিলিয়ে ছাত্রদলের এবারের ডাকসু যাত্রা কতটা সম্ভাবনাময় হবে—তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে ক্যাম্পাসজুড়ে।
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাস আবারও সরগরম। নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলও। জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক আদর্শকে সামনে রেখে প্যানেল ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।
তবে প্রচারণার শুরুতেই অনলাইন অপপ্রচার ও সাইবার বুলিংকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন প্যানেলের প্রার্থীরা। অন্যদিকে, অতীতের আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের সমর্থন চাইছেন তাঁরা।
শিক্ষার্থীদের মাঝেও এই প্যানেল নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। প্রার্থীরা বলছেন, অতীত-বর্তমান ও ভবিষ্যতের সমন্বয়েই তাঁরা শিক্ষার্থীদের ভোট চান। অন্যদিকে, শিক্ষার্থীরা প্যানেলটির শক্তি ও দুর্বলতা—দুটি দিকই খুঁজে পাচ্ছেন। সব মিলিয়ে ছাত্রদলের এবারের ডাকসু যাত্রার সম্ভাবনা ও সংকটগুলো নিয়েই এই পর্যালোচনা।
প্যানেলের মতাদর্শ
প্যানেলের এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদি মায়েদ স্ট্রিমকে বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী মতাদর্শকে ধারণ করে আমরা কাজ করব। আমাদের জন্য জাতীয়তাবাদের সঙ্গে গণতন্ত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের যতগুলো গণতান্ত্রিক আন্দোলন আছে, সবগুলো আন্দোলনের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান বজায় রেখে রাজনীতি করাই আমাদের মতাদর্শ…বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদ। সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রই হচ্ছে আমাদের মতাদর্শ।’
বড় বাধা সাইবার বুলিং
ডাকসু নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্যানেলটির ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান স্ট্রিমকে বলেন, ‘এই নির্বাচনে আমার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সাইবার বুলিং। রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে একটি গোষ্ঠী প্রতিনিয়ত অনলাইনে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে আমি বিশ্বাস করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যথেষ্ট পরিপক্ব। তাঁরা এসব মিথ্যা প্রচারণা উপেক্ষা করে সঠিকভাবে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এসব ভুয়া প্রচারণা থেকে দূরে রাখা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।’
একই কথা বলেন তানভীর আল হাদি মায়েদও। তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন অনলাইন গ্রুপ ব্যবহার করে তাঁদের বিরুদ্ধে মব তৈরির চেষ্টা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা কেন ভোট দেবেন এই প্যানেলকে
শিক্ষার্থীরা কেন এই প্যানেলকে ভোট দেবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তানভীর আল হাদি মায়েদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমাদের ভোট দেবে আমাদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চিন্তা–সবকিছুর সমন্বয় করেই। আমাদের অতীত যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, সব নির্যাতন সহ্য করেই গত দীর্ঘ দেড় দশকের বেশি সময় ধরে আমরা শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম। তার পাশাপাশি আমাদের প্যানেলে যারা আছেন, তাঁরা শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হওয়ার সময় থেকেই গণতন্ত্রের জন্য কাজ করে গিয়েছেন। গত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আমাদের প্যানেলের কর্মীরা সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখেছেন।’
শিক্ষার্থীদের চোখে প্যানেলের শক্তি ও দুর্বলতার জায়গা
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল শাফি স্ট্রিমকে বলেন, ‘যেহেতু ছাত্রদল অনেক বড় একটা সংগঠন, সারা বাংলাদেশব্যাপী তাদের নেতাকর্মী আছে। ফলে শুরুর দিকে তাদের মধ্যে অনেক বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। তবে ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল অনেক ক্ষেত্রেই এগুলা মিনিমাইজ করার চেষ্টা করতেছে। তাদের নিজেদের জায়গা থেকে যতটুকু করা সম্ভব। আপনারা জানেন যে, ৫ আগস্টে আবিদ ভাইয়ের অবদান ছিল। এ ছাড়াও জিএস ক্যান্ডিডেট তানভীর হামি ভাইও বেশ কিছু কাজ করছে বিগত এক বছরে।’
মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান স্ট্রিমকে বলেন, ‘হামিম ও আবিদ ভাইয়েরা খুব এফিশিয়েন্টলি নেগেটিভিটিকে ডিল করতেছে। এটা প্যানেলের স্ট্রেন্থ বলবো না, এটা হচ্ছে ওদের ইন্ডিভিজুয়াল ক্যান্ডিডেটদের স্ট্রেন্থ। এটা ওদের অনেক বড় একটা স্ট্রেন্থ, আমার কাছে যেটা মনে হয়। আর উইকনেস যেটা বলব, সেটা হচ্ছে—ওরা এখনও ম্যাসিভলি স্টুডেন্টদের কাছে পৌঁছাইতে পারতেছে না।’
কী আছে ইশতেহারে
১. শিক্ষা ও গবেষণাকে প্রাধান্য দিয়ে নিরাপদ ক্যাম্পাস
রাজনৈতিক নিপীড়নমূলক ‘গেস্টরুম-গণরুম’ সংস্কৃতি ও সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার কথা বলা হয়েছে। র্যাগিং ও শিক্ষার্থী হয়রানি প্রতিরোধে ডাকসুর অধীনে একটি স্বাধীন সাপোর্ট সেল ও ২৪/৭ হেল্পলাইন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বাড়াতে সিসিটিভি স্থাপন ও হলগুলোতে অছাত্রদের অবস্থান নির্মূল করার পাশাপাশি নতুন হল নির্মাণ করে প্রথম দিন থেকেই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আবাসন নিশ্চিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
২. নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস ও সক্ষমতা বৃদ্ধি
নারী শিক্ষার্থীদের পোশাকের স্বাধীনতা, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি হলে স্যানিটারি প্যাড ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন, মেডিকেল সেন্টারে সার্বক্ষণিক নারী চিকিৎসকের উপস্থিতি ও হলগুলোতে রাতে প্রবেশের সময়সীমা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাশাপাশি, নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।
৩. মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের সহায়তা
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন করে সার্বক্ষণিক ডাক্তার, অ্যাম্বুলেন্স ও বিনামূল্যে জরুরি ঔষধের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। সকল শিক্ষার্থীর জন্য স্বাস্থ্য বীমা ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় টিএসসিতে একটি 'মেন্টাল ওয়েলবিয়িং সেন্টার' গড়ে তোলা; এ ছাড়া বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য র্যাম্প নির্মাণ ও ব্রেইলের মতো সহায়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
৪. কারিকুলাম, অবকাঠামো ও গবেষণার মানোন্নয়ন
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে কারিকুলাম পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিকে ডিজিটালাইজড করা, ইন্টার্নশিপের সুযোগ বৃদ্ধি ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। গবেষণায় উৎসাহ দিতে এমফিল ও পিএইচডি গবেষকদের জন্য মাসিক ভাতা বৃদ্ধি করা হবে।
৫. পরিবহন ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন
ক্যাম্পাসে ব্যাটারিচালিত শাটল সার্ভিস চালু, বাসের ট্রিপ সংখ্যা বাড়ানো, পুরো ক্যাম্পাসকে গ্রিন, ইয়েলো ও রেড জোনে ভাগ করে যান চলাচল ও বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা এবং শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য জিপিএস ট্র্যাকারসহ একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করার কথা বলা হয়েছে, যার মাধ্যমে বাসের লাইভ অবস্থান জানা যাবে।
৬. হয়রানিমুক্ত প্রশাসনিক সেবা ও ক্যাম্পাসভিত্তিক কর্মসংস্থান
রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করে সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট উত্তোলনের মতো সেবাগুলো হয়রানিমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য মেধাভিত্তিক বৃত্তি, সহজলভ্য শিক্ষা ঋণ এবং লাইব্রেরি, ক্যাফেটেরিয়ার মতো জায়গায় পার্ট-টাইম চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
৭. তরুণদের গঠনমূলক কাজে সম্পৃক্তকরণ এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বৃদ্ধি
নিয়মিত আন্তবিভাগ ও আন্তহল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন এবং কেন্দ্রীয় জিমনেশিয়ামের আধুনিকায়ন, মাদকের সিন্ডিকেট দমন, বিতর্ক, সঙ্গীত ও নাটকের মতো সুস্থ বিনোদনমূলক কার্যক্রম আয়োজন এবং সব সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের জন্য বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো হবে।
৮. শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল সুবিধা ও সাইবার নিরাপত্তা
শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইলের স্টোরেজ ও মেয়াদ বাড়ানো এবং বিনামূল্যে ক্লাউড স্টোরেজ সুবিধা দেওয়া হবে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, গ্রাফিক্স ডিজাইনের মতো ডিজিটাল দক্ষতার ওপর প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে। তা ছাড়া সাইবার বুলিং প্রতিরোধে একটি বিশেষ সেল গঠন এবং ডিজিটাল লিটারেসি নিয়ে কর্মশালা পরিচালনার পরিকল্পনাও রয়েছে।
৯. পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রাণীবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরি
কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখা এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে সবুজায়ন বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সব অবকাঠামো পরিবেশবান্ধব করে নির্মাণ নিশ্চিত করা হবে। তা ছাড়া ক্যাম্পাসকে প্রাণীবান্ধব করে গড়ে তুলতে এখানকার পশু-পাখিদের জন্য খাবার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
১০. কার্যকর ডাকসু এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি
অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারে নিয়মিত ডাকসু নির্বাচন অন্তর্ভুক্ত করে একে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যকর করা হবে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে একাডেমিক বিনিময় প্রোগ্রাম ও যৌথ গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের ফান্ড প্রদান করার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থী হিসেবে কারা রয়েছেন-
গত ২০ আগস্ট ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলটি ঘোষণা করা হয়। এই প্যানেল থেকে বিভিন্ন পদে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন-
১। সহসভাপতি- আবিদুল ইসলাম খান, ২০১৫-১৬ সেশন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, শেখ মুজিবুর রহমান হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
২। সাধারণ সম্পাদক- শেখ তানভীর বারী হামিম, ২০১৮-১৯ সেশন, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ, কবি জসীম উদদীন হল, কবি জসীমউদ্দীন হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক।
৩। সহসাধারণ সম্পাদক- তানভীর আল হাদি মায়েদ, ২০১৮-১৯ সেশন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বিজয় একাত্তর হল, বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক।
৪। মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক- আরিফুল ইসলাম, ২০১৭-১৮ সেশন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, সূর্যসেন হল।
৫। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক- এহসানুল ইসলাম, ২০১৭-১৮ সেশন, তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল।
৬। কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক- চেমন ফারিয়া ইসলাম মেঘলা, ২০১৮-১৯ সেশন, সংগীত বিভাগ, রোকেয়া হল।
৭। আন্তর্জাতিক সম্পাদক- মেহেদী হাসান, ২০১৭-১৮ সেশন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, বিজয় একাত্তর হল।
৮। সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক- আবু হায়াত মোঃ জুলফিকার (জেসান), ২০১৬-১৭ সেশন, প্রিন্ট মেকিং বিভাগ, স্যার এ এফ রহমান হল।
৯। গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক- জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজিদা আহমেদ তন্বীর সম্মানে এই পদটি শূন্য রেখে তাঁকে সমর্থন দিয়েছে ছাত্রদল
১০। ত্রীড়া সম্পাদক- চিমচিম্যা চাকমা, ২০২৪-২৫ সেশন, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, জগন্নাথ হল।
১১। ছাত্র পরিবহন সম্পাদক- সাইফ উল্লাহ, ২০৭১-১৮ সেশন, জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল।
১২। ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক- আরকানুল ইসলাম রূপক, ২০১৮-১৯ সেশন, ফিন্যান্স বিভাগ, বিজয় একাত্তর হল।
১৩। স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক- আনোয়ার হোসাইন, ২০১৭-১৮ সেশন, সংগীত বিভাগ, বিজয় একাত্তর হল।
১৪। মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক- মেহেদী হাসান মুন্না, ২০২০-২১ সেশন, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ, স্যার এ এফ রহমান হল।
১৫। সমাজসেবা সম্পাদক- সৈয়দ ইমাম হাসান, ২০১৭-১৮ সেশন, লোকপ্রশাসন বিভাগ, শেখ মুজিবুর রহমান হল।
এ ছাড়া সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন-
১। জারিফ রহমান, ২০১৬-১৭ সেশন, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, স্যার এ এফ রহমান হল।
২। মাহমুদুল হাসান, ২০১৯-২০ সেশন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল।
৩। নাহিদ হাসান, ২০১৭-১৮ সেশন, টিভি ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগ, স্যার এ এফ রহমান হল।
৪। হাসিবুর রহমান সাকিব, ২০১৭-১৮ সেশন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, বিজয় একাত্তর হল।
৫। শামীম রানা, ২০১৭-১৮ সেশন, ইতিহাস বিভাগ, বিজয় একাত্তর হল।
৬। ইয়াসিন আরাফাত আলিফ, ২০১৮-১৯ সেশন, জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ, কবি জসীম উদদীন হল।
৭। মুনইম হাসান অরুপ, ২০১৮-১৯ সেশন, ফিন্যান্স বিভাগ, কবি জসীম উদদীন হল।
৮। রঞ্জন রায়, ২০১৮-১৯ সেশন, পালি এন্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগ, জগন্নাথ হল।
৯। সোয়াইব ইসলাম ওমি, ২০১৯-২০ সেশন, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল।
১০। মেহেরুন্নেছা কেয়া, ২০১৯-২০ সেশন, দর্শন বিভাগ, রোকেয়া হল।
১১। ইবনু আহমেদ, ২০১৯-২০ সেশন, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ, সূর্যসেন হল।
১২। সামসুল হক আনান, ২০২০-২১ সেশন, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল।
১৩। নিত্যানন্দ পাল, ২০২২-২৩ সেশন, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ হল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাস আবারও সরগরম। নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলও। জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক আদর্শকে সামনে রেখে প্যানেল ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।
তবে প্রচারণার শুরুতেই অনলাইন অপপ্রচার ও সাইবার বুলিংকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন প্যানেলের প্রার্থীরা। অন্যদিকে, অতীতের আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের সমর্থন চাইছেন তাঁরা।
শিক্ষার্থীদের মাঝেও এই প্যানেল নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। প্রার্থীরা বলছেন, অতীত-বর্তমান ও ভবিষ্যতের সমন্বয়েই তাঁরা শিক্ষার্থীদের ভোট চান। অন্যদিকে, শিক্ষার্থীরা প্যানেলটির শক্তি ও দুর্বলতা—দুটি দিকই খুঁজে পাচ্ছেন। সব মিলিয়ে ছাত্রদলের এবারের ডাকসু যাত্রার সম্ভাবনা ও সংকটগুলো নিয়েই এই পর্যালোচনা।
প্যানেলের মতাদর্শ
প্যানেলের এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদি মায়েদ স্ট্রিমকে বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী মতাদর্শকে ধারণ করে আমরা কাজ করব। আমাদের জন্য জাতীয়তাবাদের সঙ্গে গণতন্ত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের যতগুলো গণতান্ত্রিক আন্দোলন আছে, সবগুলো আন্দোলনের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান বজায় রেখে রাজনীতি করাই আমাদের মতাদর্শ…বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদ। সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রই হচ্ছে আমাদের মতাদর্শ।’
বড় বাধা সাইবার বুলিং
ডাকসু নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্যানেলটির ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান স্ট্রিমকে বলেন, ‘এই নির্বাচনে আমার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সাইবার বুলিং। রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে একটি গোষ্ঠী প্রতিনিয়ত অনলাইনে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে আমি বিশ্বাস করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যথেষ্ট পরিপক্ব। তাঁরা এসব মিথ্যা প্রচারণা উপেক্ষা করে সঠিকভাবে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এসব ভুয়া প্রচারণা থেকে দূরে রাখা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।’
একই কথা বলেন তানভীর আল হাদি মায়েদও। তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন অনলাইন গ্রুপ ব্যবহার করে তাঁদের বিরুদ্ধে মব তৈরির চেষ্টা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা কেন ভোট দেবেন এই প্যানেলকে
শিক্ষার্থীরা কেন এই প্যানেলকে ভোট দেবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তানভীর আল হাদি মায়েদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমাদের ভোট দেবে আমাদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চিন্তা–সবকিছুর সমন্বয় করেই। আমাদের অতীত যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, সব নির্যাতন সহ্য করেই গত দীর্ঘ দেড় দশকের বেশি সময় ধরে আমরা শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম। তার পাশাপাশি আমাদের প্যানেলে যারা আছেন, তাঁরা শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হওয়ার সময় থেকেই গণতন্ত্রের জন্য কাজ করে গিয়েছেন। গত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আমাদের প্যানেলের কর্মীরা সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখেছেন।’
শিক্ষার্থীদের চোখে প্যানেলের শক্তি ও দুর্বলতার জায়গা
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল শাফি স্ট্রিমকে বলেন, ‘যেহেতু ছাত্রদল অনেক বড় একটা সংগঠন, সারা বাংলাদেশব্যাপী তাদের নেতাকর্মী আছে। ফলে শুরুর দিকে তাদের মধ্যে অনেক বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। তবে ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল অনেক ক্ষেত্রেই এগুলা মিনিমাইজ করার চেষ্টা করতেছে। তাদের নিজেদের জায়গা থেকে যতটুকু করা সম্ভব। আপনারা জানেন যে, ৫ আগস্টে আবিদ ভাইয়ের অবদান ছিল। এ ছাড়াও জিএস ক্যান্ডিডেট তানভীর হামি ভাইও বেশ কিছু কাজ করছে বিগত এক বছরে।’
মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান স্ট্রিমকে বলেন, ‘হামিম ও আবিদ ভাইয়েরা খুব এফিশিয়েন্টলি নেগেটিভিটিকে ডিল করতেছে। এটা প্যানেলের স্ট্রেন্থ বলবো না, এটা হচ্ছে ওদের ইন্ডিভিজুয়াল ক্যান্ডিডেটদের স্ট্রেন্থ। এটা ওদের অনেক বড় একটা স্ট্রেন্থ, আমার কাছে যেটা মনে হয়। আর উইকনেস যেটা বলব, সেটা হচ্ছে—ওরা এখনও ম্যাসিভলি স্টুডেন্টদের কাছে পৌঁছাইতে পারতেছে না।’
কী আছে ইশতেহারে
১. শিক্ষা ও গবেষণাকে প্রাধান্য দিয়ে নিরাপদ ক্যাম্পাস
রাজনৈতিক নিপীড়নমূলক ‘গেস্টরুম-গণরুম’ সংস্কৃতি ও সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার কথা বলা হয়েছে। র্যাগিং ও শিক্ষার্থী হয়রানি প্রতিরোধে ডাকসুর অধীনে একটি স্বাধীন সাপোর্ট সেল ও ২৪/৭ হেল্পলাইন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বাড়াতে সিসিটিভি স্থাপন ও হলগুলোতে অছাত্রদের অবস্থান নির্মূল করার পাশাপাশি নতুন হল নির্মাণ করে প্রথম দিন থেকেই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আবাসন নিশ্চিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
২. নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস ও সক্ষমতা বৃদ্ধি
নারী শিক্ষার্থীদের পোশাকের স্বাধীনতা, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি হলে স্যানিটারি প্যাড ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন, মেডিকেল সেন্টারে সার্বক্ষণিক নারী চিকিৎসকের উপস্থিতি ও হলগুলোতে রাতে প্রবেশের সময়সীমা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাশাপাশি, নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।
৩. মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের সহায়তা
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন করে সার্বক্ষণিক ডাক্তার, অ্যাম্বুলেন্স ও বিনামূল্যে জরুরি ঔষধের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। সকল শিক্ষার্থীর জন্য স্বাস্থ্য বীমা ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় টিএসসিতে একটি 'মেন্টাল ওয়েলবিয়িং সেন্টার' গড়ে তোলা; এ ছাড়া বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য র্যাম্প নির্মাণ ও ব্রেইলের মতো সহায়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
৪. কারিকুলাম, অবকাঠামো ও গবেষণার মানোন্নয়ন
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে কারিকুলাম পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিকে ডিজিটালাইজড করা, ইন্টার্নশিপের সুযোগ বৃদ্ধি ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। গবেষণায় উৎসাহ দিতে এমফিল ও পিএইচডি গবেষকদের জন্য মাসিক ভাতা বৃদ্ধি করা হবে।
৫. পরিবহন ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন
ক্যাম্পাসে ব্যাটারিচালিত শাটল সার্ভিস চালু, বাসের ট্রিপ সংখ্যা বাড়ানো, পুরো ক্যাম্পাসকে গ্রিন, ইয়েলো ও রেড জোনে ভাগ করে যান চলাচল ও বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা এবং শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য জিপিএস ট্র্যাকারসহ একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করার কথা বলা হয়েছে, যার মাধ্যমে বাসের লাইভ অবস্থান জানা যাবে।
৬. হয়রানিমুক্ত প্রশাসনিক সেবা ও ক্যাম্পাসভিত্তিক কর্মসংস্থান
রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করে সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট উত্তোলনের মতো সেবাগুলো হয়রানিমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য মেধাভিত্তিক বৃত্তি, সহজলভ্য শিক্ষা ঋণ এবং লাইব্রেরি, ক্যাফেটেরিয়ার মতো জায়গায় পার্ট-টাইম চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
৭. তরুণদের গঠনমূলক কাজে সম্পৃক্তকরণ এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বৃদ্ধি
নিয়মিত আন্তবিভাগ ও আন্তহল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন এবং কেন্দ্রীয় জিমনেশিয়ামের আধুনিকায়ন, মাদকের সিন্ডিকেট দমন, বিতর্ক, সঙ্গীত ও নাটকের মতো সুস্থ বিনোদনমূলক কার্যক্রম আয়োজন এবং সব সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের জন্য বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো হবে।
৮. শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল সুবিধা ও সাইবার নিরাপত্তা
শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইলের স্টোরেজ ও মেয়াদ বাড়ানো এবং বিনামূল্যে ক্লাউড স্টোরেজ সুবিধা দেওয়া হবে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, গ্রাফিক্স ডিজাইনের মতো ডিজিটাল দক্ষতার ওপর প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে। তা ছাড়া সাইবার বুলিং প্রতিরোধে একটি বিশেষ সেল গঠন এবং ডিজিটাল লিটারেসি নিয়ে কর্মশালা পরিচালনার পরিকল্পনাও রয়েছে।
৯. পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রাণীবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরি
কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখা এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে সবুজায়ন বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সব অবকাঠামো পরিবেশবান্ধব করে নির্মাণ নিশ্চিত করা হবে। তা ছাড়া ক্যাম্পাসকে প্রাণীবান্ধব করে গড়ে তুলতে এখানকার পশু-পাখিদের জন্য খাবার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
১০. কার্যকর ডাকসু এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি
অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারে নিয়মিত ডাকসু নির্বাচন অন্তর্ভুক্ত করে একে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যকর করা হবে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে একাডেমিক বিনিময় প্রোগ্রাম ও যৌথ গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের ফান্ড প্রদান করার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থী হিসেবে কারা রয়েছেন-
গত ২০ আগস্ট ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলটি ঘোষণা করা হয়। এই প্যানেল থেকে বিভিন্ন পদে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন-
১। সহসভাপতি- আবিদুল ইসলাম খান, ২০১৫-১৬ সেশন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, শেখ মুজিবুর রহমান হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
২। সাধারণ সম্পাদক- শেখ তানভীর বারী হামিম, ২০১৮-১৯ সেশন, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ, কবি জসীম উদদীন হল, কবি জসীমউদ্দীন হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক।
৩। সহসাধারণ সম্পাদক- তানভীর আল হাদি মায়েদ, ২০১৮-১৯ সেশন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বিজয় একাত্তর হল, বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক।
৪। মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক- আরিফুল ইসলাম, ২০১৭-১৮ সেশন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, সূর্যসেন হল।
৫। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক- এহসানুল ইসলাম, ২০১৭-১৮ সেশন, তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল।
৬। কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক- চেমন ফারিয়া ইসলাম মেঘলা, ২০১৮-১৯ সেশন, সংগীত বিভাগ, রোকেয়া হল।
৭। আন্তর্জাতিক সম্পাদক- মেহেদী হাসান, ২০১৭-১৮ সেশন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, বিজয় একাত্তর হল।
৮। সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক- আবু হায়াত মোঃ জুলফিকার (জেসান), ২০১৬-১৭ সেশন, প্রিন্ট মেকিং বিভাগ, স্যার এ এফ রহমান হল।
৯। গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক- জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজিদা আহমেদ তন্বীর সম্মানে এই পদটি শূন্য রেখে তাঁকে সমর্থন দিয়েছে ছাত্রদল
১০। ত্রীড়া সম্পাদক- চিমচিম্যা চাকমা, ২০২৪-২৫ সেশন, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, জগন্নাথ হল।
১১। ছাত্র পরিবহন সম্পাদক- সাইফ উল্লাহ, ২০৭১-১৮ সেশন, জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল।
১২। ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক- আরকানুল ইসলাম রূপক, ২০১৮-১৯ সেশন, ফিন্যান্স বিভাগ, বিজয় একাত্তর হল।
১৩। স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক- আনোয়ার হোসাইন, ২০১৭-১৮ সেশন, সংগীত বিভাগ, বিজয় একাত্তর হল।
১৪। মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক- মেহেদী হাসান মুন্না, ২০২০-২১ সেশন, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ, স্যার এ এফ রহমান হল।
১৫। সমাজসেবা সম্পাদক- সৈয়দ ইমাম হাসান, ২০১৭-১৮ সেশন, লোকপ্রশাসন বিভাগ, শেখ মুজিবুর রহমান হল।
এ ছাড়া সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন-
১। জারিফ রহমান, ২০১৬-১৭ সেশন, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, স্যার এ এফ রহমান হল।
২। মাহমুদুল হাসান, ২০১৯-২০ সেশন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল।
৩। নাহিদ হাসান, ২০১৭-১৮ সেশন, টিভি ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগ, স্যার এ এফ রহমান হল।
৪। হাসিবুর রহমান সাকিব, ২০১৭-১৮ সেশন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, বিজয় একাত্তর হল।
৫। শামীম রানা, ২০১৭-১৮ সেশন, ইতিহাস বিভাগ, বিজয় একাত্তর হল।
৬। ইয়াসিন আরাফাত আলিফ, ২০১৮-১৯ সেশন, জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ, কবি জসীম উদদীন হল।
৭। মুনইম হাসান অরুপ, ২০১৮-১৯ সেশন, ফিন্যান্স বিভাগ, কবি জসীম উদদীন হল।
৮। রঞ্জন রায়, ২০১৮-১৯ সেশন, পালি এন্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগ, জগন্নাথ হল।
৯। সোয়াইব ইসলাম ওমি, ২০১৯-২০ সেশন, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল।
১০। মেহেরুন্নেছা কেয়া, ২০১৯-২০ সেশন, দর্শন বিভাগ, রোকেয়া হল।
১১। ইবনু আহমেদ, ২০১৯-২০ সেশন, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ, সূর্যসেন হল।
১২। সামসুল হক আনান, ২০২০-২১ সেশন, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল।
১৩। নিত্যানন্দ পাল, ২০২২-২৩ সেশন, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ হল।
ডাকসু, জাকসু ও রাকসু নির্বাচন বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে এবং ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ খুলে দেবে। একইসঙ্গে এটি জাতীয় গণতন্ত্রের পূর্বাভাস, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং প্রান্তিক কণ্ঠকে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
১ ঘণ্টা আগেঘৃণা ও সহিংসতাকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করতে দেশের প্রতিটি নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
৫ ঘণ্টা আগেআগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের কীভাবে ভোট দেবেন, সে বিষয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
৫ ঘণ্টা আগেরাজশাহীতে পবায় পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতেই মাইকে স্লোগান দিয়ে এক ‘পীরের’ খানকা শরিফ ভাঙচুর করেছে ‘বিক্ষুব্ধ লোকজন’।
৫ ঘণ্টা আগে