leadT1ad

রাতে পুলিশ দেখে পালান যুবক, ভোরে ধানখেতে মিলল রক্তাক্ত মরদেহ

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
ময়মনসিংহ

প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ৩৪
হালুয়াঘাটে আবু সাদাদের মরদের উদ্ধারের খবরে ভিড় করে লোকজন। স্ট্রিম ছবি

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দায়ের করা মামলার আসামি আবু সাদাদ সায়েম (৫০) নামে এক গৃহশিক্ষক পুলিশের গ্রেপ্তার এড়াতে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন। কিন্তু আজ শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে বাড়ির পাশের একটি ধানখেত থেকে তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এই ঘটনায় নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছে, পুলিশের সহযোগিতায় প্রতিপক্ষের লোকজন পরিকল্পিতভাবে আবু সাদাদকে হত্যা করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কৈচাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মাইজপাড়া গ্রামে। নিহত আবু সাদাদ এলাকায় শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাঁর বাবার সঙ্গে চাচা মোজাম্মেল হোসেনের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে গত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুই পরিবারের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মোজাম্মেল হোসেনের পরিবার আবু সাদাদসহ আটজনের বিরুদ্ধে হালুয়াঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করে।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হালুয়াঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক মিয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে আসামি ধরতে দক্ষিণ মাইজপাড়া গ্রামে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আবু সাদাদ বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পুলিশ তাঁকে না পেয়ে ফিরে আসে।

তবে রাতে পুলিশ চলে গেলেও আবু সাদাদ আর বাড়িতে না ফেরায় স্বজনেরা তাঁর খোঁজ শুরু করেন। পরে আজ শুক্রবার ভোরে বাড়ির পাশের একটি ধানখেতে তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত আবু সাদাদের ছোট ভাই জসিম উদ্দিন বলেন, ‘পুলিশের সহযোগিতায় বাদী পক্ষের লোকজন পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করে ধানখেতে ফেলে রেখে যায়। অথচ কোনো আসামি ধরবে না বলে পুলিশ আমাদের কাছ থেকে টাকাও নিয়েছিল। আমরা ভাই হত্যার বিচার চাই।’

হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘নিহতের শরীরে ফোলা জখম, ছিলে যাওয়া এবং কামড়ের মতো দাগ রয়েছে। তবে গুরুতর কোনো আঘাত আমরা পাইনি।’ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন আসামি ধরতে যায়, তখন নিহতের বাবাকে সঙ্গেই নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আবু সাদাদকে ঘরে না পাওয়ায় পুলিশ চলে আসে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেব।’

এদিকে, আবু সাদাদের মৃত্যুর পর থেকে তাঁর চাচা মোজাম্মেল হোসেনের পরিবারের সদস্যরা গ্রাম থেকে গা-ঢাকা দিয়েছেন।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত