leadT1ad

নীলফামারীতে অসময়ের বৃষ্টিতে ধান ও শীতের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
নীলফামারী

বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় মাঠে আধপাকা ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। স্ট্রিম ছবি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নীলফামারীতে টানা চার দিনের বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় চলতি মৌসুমের আমন ধান ও শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মাঠে আধপাকা ধানগাছ নুয়ে পড়েছে, ডগা ফেটে গেছে, অনেক খেত তলিয়ে গেছে পানিতে। কৃষকেরা বলছেন, বছরের পরিশ্রম এক নিমিষে মাটিতে মিশে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ মৌসুমে জেলায় প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। বিশেষ করে ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিচু জমিগুলোতে ধান হেলে পড়েছে, কিছু এলাকায় পানিতেও ডুবে গেছে। এতে ধানের গোড়া পচে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এদিকে, আমন কাটার পর শীতকালীন ফসল হিসেবে ৫ হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমিতে সবজির বীজ বপন করেছেন কৃষকেরা। উঁচু জমিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউসহ নানা সবজির চাষ করা হলেও বৃষ্টির পানিতে অনেক খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রংপুর কৃষি অঞ্চলের নীলফামারীসহ আরও পাঁচটি জেলায় ৪২ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে মোট ১১ লাখ ১৯ হাজার ৮৯৩ টন শীতকালীন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। টানা বৃষ্টিতে সেই লক্ষ্যমাত্রা এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

খেতে পানি জমে থাকায় শিকড় পচে গাছ মারা যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। স্ট্রিম ছবি
খেতে পানি জমে থাকায় শিকড় পচে গাছ মারা যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। স্ট্রিম ছবি

ডিমলা উপজেলার কৃষক আছাদুল হক বলেন, ‘ধান পাকার পথে ছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সব গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। এখন পানি না নামলে ফলন ঘরে তোলা কঠিন হবে।’

আরেক কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বছরের পর বছর ধরে এই ফসলের জন্য অপেক্ষা করি। কিন্তু ঝড়ে ধানগাছ নুয়ে পড়ে যাওয়ায় সব পরিশ্রম বৃথা যেতে বসেছে।’

শুধু ধান নয়, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, মরিচ, পেঁয়াজ ও আলুসহ শীতকালীন সবজিও ক্ষতির মুখে পড়েছে। খেতে পানি জমে থাকায় শিকড় পচে গাছ মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনজুর রহমান বলেন, ‘নিম্নচাপের প্রভাবে জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া হয়েছে। কিছু এলাকায় ধান ও সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা কৃষকদের দ্রুত পানি নিষ্কাশন, নুয়ে পড়া ধানগাছ বাঁধা এবং জমিতে অতিরিক্ত পানি না জমতে দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। আবহাওয়া অনুকূলে এলে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব।’

জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শুরু করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে দ্রুত প্রণোদনা ও পুনর্বাসনের জন্য রিপোর্ট প্রণয়ন করা হবে।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত