leadT1ad

র‍্যাবের হাজতখানায় হত্যা মামলার আসামির ঝুলন্ত মরদেহ

স্ট্রিম সংবাদদাতা
সিলেট
প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ০৩
স্ট্রিম গ্রাফিক

সিলেটে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-৯) হাজতখানা থেকে হত্যা মামলার এক আসামির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাব বলছে, তিনি গলায় কম্বল পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

গত ১১ সেপ্টেম্বর আদালতে যাওয়ার পথে নওগাঁ সদর উপজেলার কাঁঠালতলীতে স্ত্রী জুথি খাতুনকে (২২) ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন তানভীর ও তার সহযোগীরা। নিহত জুথি খাতুন সদর উপজেলার আনন্দনগর মৃধাপাড়ার ঝুন্টু প্রামাণিকের মেয়ে। আর তানভীর গাজীপুরের কাশিমপুর উপজেলার সারদাগঞ্জ এলাকার বাবুল চৌধুরীর ছেলে। স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে রেখেছিল র‍্যাব।

রোববার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সোমবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) কেএম শহিদুল ইসলাম সোহাগ।

তানভীরকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল

র‌্যাব ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গাজীপুরের তানভীরের সঙ্গে প্রায় এক বছর আগে জুথি খাতুনের (২২) বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর জুথি জানতে পারেন স্বামীর আরেক স্ত্রী আছেন। এ নিয়ে কলহ শুরু হলে জুথি বাবার বাড়িতে চলে যান। পরে আদালতে মামলা করেন তিনি।

গত ১১ সেপ্টেম্বর মামলার শুনানি ছিল। ওইদিন সকালে আদালতে যাওয়ার পথে নওগাঁর কাঁঠালতলী মোড়ে তানভীর ও তার সহযোগীরা জুথিকে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ জুথির লাশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার সূত্রে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৯-সিলেট এবং র‌্যাব-৫-রাজশাহীর যৌথ দল অভিযান চালিয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জৈন্তাপুর থানার চৈলাখেল নিজপাট এলাকায় বোনের বাড়ি থেকে তানভীরকে গ্রেপ্তার করে।

সিলেট থেকে নওগাঁ নেওয়ার কথা ছিল তানভীরকে

কেএম শহিদুল ইসলাম সোহাগ জানান, তানভীরকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নওগাঁ থানার পুলিশকে জানানো হয়েছিল। সিলেট থেকে তানভীরকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গ্রেপ্তারের পরদিন সকালে হাজত-সংলগ্ন শৌচাগারে ভেন্টিলেটরের রডে কম্বল দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তাঁকে পাওয়া যায়।

পরে তানভীরের পরিবারের সদস্য, গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) ও থানার পুলিশের উপস্থিতিতে লাশটি নামানো হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে ওইদিনই পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ আছে

তানভীর চৌধুরী সোহাগের ‘আত্মহত্যা’র ঘটনার ভিডিও ধরা পড়েছে হাজতের ক্লোজড সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরায়। র‌্যাবের কাছে এই ফুটেজ সংরক্ষিত আছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেএম শহিদুল ইসলাম সোহাগ ফুটেজের বিবরণ দিয়ে বলেন, ‘আমাদের কার্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গেছে, কম্বল গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এটি তার পরিবার, জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা দেখেছেন। পরে নিহতের স্বজন, পুলিশ, চিকিৎসক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে ঝুলন্ত লাশ নামিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেটের ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।’

সোমবার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিকেলে স্বজনরা লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। এ ঘটনায় সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত