leadT1ad

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাবিতে উপ-উপাচার্যকে আটকে রেখে বিক্ষোভ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ

সংঘর্ষের এক পর্যায়ে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারের গলা চেপে ধরেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্ট্রিম প্রতিবেদকস্ট্রিম সংবাদদাতা
ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

পোষ্য কোটা পুনর্বহালকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেল পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারের গলা চেপে ধরেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সালাহউদ্দিন আম্মার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘জুলাইয়ের পর আবার মাইর খাওয়া শুরু হলো। রাবি প্রশাসন গায়ে হাত তুলল, গলা চেপে ধরল। কোনো অভিযোগ দিব না, তদন্ত কমিটিও গঠন করব না। শুধু পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিল করবে।’

বিকেলের দিকে অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারী জুবেরী ভবনে ঢুকতে গেলে সালাহউদ্দিন আম্মারসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাঁদের বাধা দেন। তখনই বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা ধস্তাধস্তিতে রূপ নেয়।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনসহ কয়েকজন কর্মচারীকে জুবেরী ভবনে আটকে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এ বিষয়ে কোনো মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা নিজেদের অবস্থান ত্যাগ করবেন না।

জুবেরী ভবনে সহ-উপাচার্য মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে যতই ভাত না খেয়ে রাখুক, যতই বাসায় ঢুকতে না দিক, আমি একক কোনো সমাধান দেওয়ার এখতিয়ার রাখি না। সমাধান বডিতে বসে দেওয়া লাগবে। আমি কেন অবরুদ্ধ হলাম, সেটা আমার জানা নাই।’

সালাহউদ্দিন আম্মারের ফেসবুক পোস্ট। ফেসবুক থেকে নেওয়া
সালাহউদ্দিন আম্মারের ফেসবুক পোস্ট। ফেসবুক থেকে নেওয়া

ধস্তাধস্তির বিষয়ে প্রক্টর মাহবুবর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা হাত ধরে আমাদের ঠেকানোর চেষ্টা করে। ওই মুহূর্তে আমরা সবাই স্যারসহ (উপ-উপাচার্য) ঢুকে যাওয়ার (জুবেরী ভবনে) চেষ্টা করি। তখনই এরকম একটা পরিস্থিতি (ধস্তাধস্তি) তৈরি হয় যে, হয়তো আমরা ধাক্কা দিয়েছি বা স্যার ধাক্কা দিয়েছে। ওরা বলছে যে আমাদের কোনো কর্মকর্তা নাকি ওদেরকে মেরেছে।’

এ সময় তাঁর ঘড়ি ও টাকা চুরি হয় উল্লেখ করে প্রক্টর বলেন, ‘কিন্তু আনফরচুনেট যে আমার হাতের ঘড়ি নাই। আমার পকেটে ১০ হাজার টাকা ছিল। আমি দেখছি যে আমার টাকাও নাই। তাহলে আমি কি শিক্ষার্থী পড়ালাম? এই শিক্ষার্থী পড়াচ্ছি আমরা?’

প্রক্টর আরও বলেন, ‘আমি শিক্ষক হিসেবে একটা ছাত্রের হাত ধরতে পারি। কিন্তু কোনো শিক্ষার্থী প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরকে টেনে ধরবে, তাঁকে ঢুকতে দেবে না—এটা আমি মনে করি ডেফিনেটলি শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা।’

এর আগে গতকাল শুক্রবার থেকে রাবির এক শিক্ষার্থী কাফনের কাপড় গায়ে আমরণ অনশন শুরু করলে, সেখানে আরও অন্তত ৮ জন শিক্ষার্থী যোগ দেন। অনশনকারীদের অভিযোগ, প্রশাসন রাকসু নির্বাচনের ব্যস্ততার সুযোগে গোপনে পোষ্যকোটা ফিরিয়ে এনেছে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভর্তি কমিটির সভায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য শর্তসাপেক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় (পোষ্যকোটা) ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সেদিন রাতেই এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এই কর্মসূচিতে রাজনৈতিক দলসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

Ad 300x250

সম্পর্কিত