স্ট্রিম ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার ঘোষণা করেন যে ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা ‘বন্ধ’ করা হয়েছে। এর ফলে ক্যারিবীয় অঞ্চলে কয়েক মাস ধরে চলা সামরিক প্রস্তুতিকে কেন্দ্র করে ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
ভেনেজুয়েলা অভিযোগ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ঔপনিবেশিক হুমকি তৈরি করছে। দেশের লাখো মানুষ এ কারণে উদ্বিগ্ন। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো আগেই বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হস্তক্ষেপের অজুহাত তৈরি করতে মিথ্যা অভিযোগ সাজাচ্ছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভেনেজুয়েলা নিয়মিত সামরিক মহড়া চালিয়েছে এবং সম্ভাব্য হামলার মোকাবিলায় বড় ধরনের সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন সেপ্টেম্বরের শুরুতে সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকায় হামলা চালানোর পর থেকে দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে বিপুল নৌবহর মোতায়েন করেছে। ওয়াশিংটন এ পর্যন্ত প্রমাণ দিতে পারেনি যে সেই নৌকাগুলো মাদক পরিবহনে যুক্ত ছিল। এই হামলাগুলোতে অন্তত ৮৩ জন নিহত হয়েছে।
গত সপ্তাহে মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার মধ্যে পরিচিত ‘কার্টেল দে লস সোলেস’ বা ‘কার্টেল অব দ্য সানস’–কে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে।
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, তারা মাদকবিরোধী অভিযান চালানোর অংশ হিসেবে ভেনেজুয়েলাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র এভাবে বেআইনি উপায়ে মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার ভিত্তি তৈরি করছে।
তাহলে আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা কি ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হামলার পূর্বাভাস? যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান কি আইনগতভাবে বৈধ হতে পারে? মাদুরোর প্রতি ট্রাম্পের কঠোর নীতির পেছনে কারণ কী?
যুক্তরাষ্ট্র কি ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে
দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প ভেনেজুয়েলা-বিরোধী বক্তব্য আরও তীব্র করেন। তিনি কারাকাসকে মাদক পাচার ও ভেনেজুয়েলা থেকে অভিবাসী প্রবাহের জন্য দায়ী করেন।
দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি তার পূর্বসূরি জো বাইডেনের দেওয়া ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি সুবিধা বাতিল করেন। ভেনেজুয়েলা থেকে তেল কিনে এমন দেশগুলোর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। মাদুরোর গ্রেপ্তারে পুরস্কারের অর্থ দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৫০ মিলিয়ন ডলার ঘোষণা করেন এবং তাকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী নেতা’ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প জানান যে তিনি ভেনেজুয়েলায় সিআইএ–কে গোপন অভিযান পরিচালনার অনুমতি দিয়েছেন। পাশাপাশি তার প্রশাসন বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড, আরও যুদ্ধজাহাজ, হাজারো সৈন্য ও এফ–৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান ক্যারিবীয় অঞ্চলে পাঠায়।
গত বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে স্থল হামলা খুব দ্রুত শুরু হতে পারে।
উত্তেজনার মধ্যে সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস ও দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার আগে ট্রাম্প নাকি মাদুরোর সঙ্গে কথা বলেছেন।
২৫ নভেম্বর এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকেরা তাকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি কি মাদুরোর সঙ্গে কথা বলবেন? ট্রাম্প বলেন, ‘আমি কথা বলতে পারি। দেখা যাক। আমরা বিষয়টি বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে আলোচনা করছি।’
সাংবাদিকেরা জানতে চান, বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতার সঙ্গে কথা বলার কারণ কী? ট্রাম্প বলেন, ‘যদি আমরা জীবন বাঁচাতে পারি, সহজ পথে সমাধান করতে পারি, তাহলে তা ভালো। আর কঠিন পথে করতে হলে, সেটাও আমরা করব।’
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপ কি আইনগতভাবে বৈধ
ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচকেরা বলছেন, এসব সামরিক অভিযান যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। মানবাধিকার পর্যবেক্ষক ও আইন বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, নৌকা ধ্বংসের ঘটনায় যা ঘটেছে তা ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ নাকি সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকার সব যাত্রীকে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
হেগসেথ এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি প্রতিবেদনে বলা তথ্যকে ‘ভুয়া খবর’ ও ‘মনগড়া ও উসকানিমূলক’ বলে অভিহিত করেন। তার দাবি, উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের মর্যাদা নষ্ট করা। তিনি বলেন, ক্যারিবীয় অঞ্চলে পরিচালিত হামলাগুলো ‘আইনসিদ্ধ’।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস শনিবার ঘটনাটির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। রিপাবলিকান সিনেটর র্যান্ড পল অক্টোবরে ফক্স নিউজকে জানান, তিনি এই ঘটনাকে এখনই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলবেন।
মার্কিন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্রুস ফেইন এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, ট্রাম্প সংবিধানবহির্ভূতভাবে কাজ করছেন এবং হত্যা ঘটাচ্ছেন। তার মতে, সামরিক হামলার অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা কেবল কংগ্রেসের। এক্ষেত্রে ট্রাম্পের নির্বাহী নির্দেশের কোনো বৈধতা নেই। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প কল্পনার জগতে ভেনেজুয়েলাকে শত্রু হিসেবে দেখাচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্র যখন কার্টেল দে লস সোলেস–কে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং এটিকে ভেনেজুয়েলা রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলছে, তখন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধকে দুই দেশের সংঘাত হিসেবে নয় বরং একটি সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান হিসেবে দেখাতে চাইছে, যার জন্য কংগ্রেসের অনুমতি প্রয়োজন হয় না।

ভেনেজুয়েলা কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে
কারাকাস ঘোষণা করেছে যে ট্রাম্পের নির্দেশ কার্যত ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা ও আশপাশের অঞ্চল বন্ধ করে দিয়েছে।
ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ট্রাম্পের মন্তব্য ভেনেজুয়েলার আকাশসীমার সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
এটি ভেনেজুয়েলা জনগণের বিরুদ্ধে অবৈধ, অযৌক্তিক এবং যুক্তিহীন আগ্রাসনের আরেকটি দৃষ্টান্ত বলে তারা উল্লেখ করেছে।
এদিকে, জুলাইয়ের নির্বাচনে মাদুরোর জয়কে ওয়াশিংটন স্বীকৃতি দেয়নি। এর মাঝেই মাদুরো নিয়মিত রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে উপস্থিত হয়ে যুদ্ধের বিরোধিতা করছেন এবং শান্তির পক্ষে কথা করছেন।
স্প্যানিশ ও ইংরেজি মিশিয়ে তিনি ঘোষণা দেন—‘যুদ্ধ চাই না... হ্যাঁ শান্তি চাই, চিরকাল।’
১৫ নভেম্বর তিনি সমর্থকদের সমাবেশে গানশিল্পী জন লেননের শান্তির গান ইমাজিন-এর উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘শান্তির জন্য সবকিছু করো, যেমন জন লেনন বলেছিলেন। ইমাজিন অল দ্য পিপল।’
দু দিন পর তিনি যুদ্ধ বা বলপ্রয়োগের হুমকির নিন্দা করেন। মাদুরো বলেন, ‘সংলাপ, আহ্বান—হ্যাঁ। শান্তি—হ্যাঁ। যুদ্ধ—না। কখনো না।’
কিন্তু উত্তেজনা বাড়তে থাকায় তিনি গত সপ্তাহে যেকোনো ‘সাম্রাজ্যবাদী হুমকি’ থেকে দেশ রক্ষার অঙ্গীকার করেন।
ফুয়ের্তে তিউনা সামরিক একাডেমিতে সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণকালে তিনি পূর্ণ সামরিক পোশাকে ছিলেন। সেসময় তিনি জাতীয় নায়ক সিমন বলিভারের তলোয়ার উঁচিয়ে ধরেন।
ট্রাম্পের মাদুরোবিরোধী কঠোর নীতির পেছনে কারণ কী
পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক গবেষকেরা বলছেন, ভেনেজুয়েলার বিশাল তেলভাণ্ডার এবং পশ্চিম গোলার্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তার—এই দুই বিষয় ট্রাম্প প্রশাসনের আগ্রাসী নীতিকে চালিত করছে।
লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি গবেষক সালভাদর সান্তিনো রেগিলমে বলেন, ওয়াশিংটন চায় ভেনেজুয়েলা চীন, রাশিয়া বা ইরানের বদলে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থের সঙ্গে সমন্বিত হোক।
১৯৭০-এর দশকে ভেনেজুয়েলা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের শীতল যুদ্ধকালীন নির্ভরযোগ্য মিত্র। কিন্তু ১৯৯৮ সালে হুগো শাভেজ নির্বাচিত হওয়ার পর সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়।
২০০২ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার পর শাভেজ যুক্তরাষ্ট্রের মাদকবিরোধী সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করেন এবং মার্কিন সামরিক উপদেষ্টাদের বহিষ্কার করেন।
তিনি তেল খাত জাতীয়করণ করে এক্সনমোবিল ও কনোকোফিলিপসকে দেশ ছাড়তেও বাধ্য করেন। তবে শেভরন এখনো ভেনেজুয়েলায় কার্যক্রম চালায়।
শাভেজ লাতিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার সমালোচনা করেন। তিনি কিউবা ও বলিভিয়ার মতো বামপন্থী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেন এবং রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক বন্ধন গড়ে তোলেন।
২০১৩ সালে মাদুরো ক্ষমতা গ্রহণের পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদেই মাদুরোর বিরোধীদের সমর্থন করেন এবং ২০১৯ সালে বিরোধী নেতা হুয়ান গুইদোকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেন।
রেগিলমের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত ‘মাদকবিরোধী যুদ্ধ’ আসলে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন মাদুরোর রাষ্ট্রকে অপরাধী চক্র হিসেবে উপস্থাপন করছে। এর উদ্দেশ্য কেবল সরকার নয়, বরং সম্পূর্ণ রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক কাঠামোকেই অগ্রহণযোগ্য দেখানো।
আইনজীবী ও রিপাবলিকান কৌশলবিদ আদোলফো ফ্রাংকো আল জাজিরাকে বলেন, ট্রাম্প পরবর্তী পরিকল্পনা স্পষ্ট না করলেও তার লক্ষ্য স্পষ্টতই সরকার পরিবর্তন।
তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সামনে সব বিকল্প খোলা। আমার অভিজ্ঞতা বলে, লক্ষ্য হলো মাদুরোকে সরে যেতে বাধ্য করা—শান্তিপূর্ণভাবে হলে ভালো, যদিও তা কঠিন কাজ।’
তার মতে আলোচনা কঠিন, কারণ যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে এমন সামরিক সংকেত পাঠিয়েছে যা দেখায় তারা ভেনেজুয়েলার পরিবর্তন নিয়ে সিরিয়াস।
তিনি বলেন, ‘মাদুরো ক্ষমতায় থেকে আগের মতো সম্পর্ক চলবে—এমন কিছুর কোনো সম্ভাবনা নেই।’
ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী কি ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রধান উৎস
ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলাকে ‘মাদক-সন্ত্রাসী’ নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত বলে প্রচার করছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর মূল কারণ হয়ে দাঁড়ানো ফেন্টানিল সংকটের সঙ্গে কারাকাসের সম্পর্ক প্রায় নেই।
মার্কিন ডিইএ ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের তথ্য অনুসারে, মেক্সিকোর সিনালোয়া ও জালিস্কো নিউ জেনারেশন কার্টেলই প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র। এরা চীন থেকে আনা রাসায়নিক ব্যবহার করে সিন্থেটিক ওপিওইড তৈরি করে।
ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রগামী মাদকের উল্লেখযোগ্য ট্রানজিট রুটও নয়। অধিকাংশ মাদক বৈধ স্থলবন্দর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে এবং তা দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত দিয়েই আসে।
ক্যারিবীয় অঞ্চলের যে সমুদ্রপথে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনী অভিযান চালাচ্ছে, সেগুলো মূল প্রবেশপথ নয়। কোকেনের ক্ষেত্রে ভেনেজুয়েলা একটি পারগমনকেন্দ্র হলেও এটি প্রধান উৎপাদক বা নিয়ন্ত্রক নয়।
বিশ্বে কোকেন চাষে শীর্ষ দেশ রয়ে গেছে কলম্বিয়া। ভেনেজুয়েলা হয়ে যেসব কোকেন যায়, তার বেশিরভাগই ইউরোপে পৌঁছায়।
২০২০ সালের মার্চে যুক্তরাষ্ট্র অনুমান করে যে প্রতি বছর প্রায় ২০০–২৫০ টন কোকেন ভেনেজুয়েলা হয়ে পাচার হয়। এটি বৈশ্বিক উৎপাদনের মাত্র ১৩ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার ঘোষণা করেন যে ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা ‘বন্ধ’ করা হয়েছে। এর ফলে ক্যারিবীয় অঞ্চলে কয়েক মাস ধরে চলা সামরিক প্রস্তুতিকে কেন্দ্র করে ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
ভেনেজুয়েলা অভিযোগ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ঔপনিবেশিক হুমকি তৈরি করছে। দেশের লাখো মানুষ এ কারণে উদ্বিগ্ন। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো আগেই বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হস্তক্ষেপের অজুহাত তৈরি করতে মিথ্যা অভিযোগ সাজাচ্ছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভেনেজুয়েলা নিয়মিত সামরিক মহড়া চালিয়েছে এবং সম্ভাব্য হামলার মোকাবিলায় বড় ধরনের সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন সেপ্টেম্বরের শুরুতে সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকায় হামলা চালানোর পর থেকে দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে বিপুল নৌবহর মোতায়েন করেছে। ওয়াশিংটন এ পর্যন্ত প্রমাণ দিতে পারেনি যে সেই নৌকাগুলো মাদক পরিবহনে যুক্ত ছিল। এই হামলাগুলোতে অন্তত ৮৩ জন নিহত হয়েছে।
গত সপ্তাহে মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার মধ্যে পরিচিত ‘কার্টেল দে লস সোলেস’ বা ‘কার্টেল অব দ্য সানস’–কে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে।
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, তারা মাদকবিরোধী অভিযান চালানোর অংশ হিসেবে ভেনেজুয়েলাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র এভাবে বেআইনি উপায়ে মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার ভিত্তি তৈরি করছে।
তাহলে আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা কি ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হামলার পূর্বাভাস? যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান কি আইনগতভাবে বৈধ হতে পারে? মাদুরোর প্রতি ট্রাম্পের কঠোর নীতির পেছনে কারণ কী?
যুক্তরাষ্ট্র কি ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে
দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প ভেনেজুয়েলা-বিরোধী বক্তব্য আরও তীব্র করেন। তিনি কারাকাসকে মাদক পাচার ও ভেনেজুয়েলা থেকে অভিবাসী প্রবাহের জন্য দায়ী করেন।
দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি তার পূর্বসূরি জো বাইডেনের দেওয়া ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি সুবিধা বাতিল করেন। ভেনেজুয়েলা থেকে তেল কিনে এমন দেশগুলোর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। মাদুরোর গ্রেপ্তারে পুরস্কারের অর্থ দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৫০ মিলিয়ন ডলার ঘোষণা করেন এবং তাকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী নেতা’ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প জানান যে তিনি ভেনেজুয়েলায় সিআইএ–কে গোপন অভিযান পরিচালনার অনুমতি দিয়েছেন। পাশাপাশি তার প্রশাসন বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড, আরও যুদ্ধজাহাজ, হাজারো সৈন্য ও এফ–৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান ক্যারিবীয় অঞ্চলে পাঠায়।
গত বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে স্থল হামলা খুব দ্রুত শুরু হতে পারে।
উত্তেজনার মধ্যে সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস ও দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার আগে ট্রাম্প নাকি মাদুরোর সঙ্গে কথা বলেছেন।
২৫ নভেম্বর এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকেরা তাকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি কি মাদুরোর সঙ্গে কথা বলবেন? ট্রাম্প বলেন, ‘আমি কথা বলতে পারি। দেখা যাক। আমরা বিষয়টি বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে আলোচনা করছি।’
সাংবাদিকেরা জানতে চান, বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতার সঙ্গে কথা বলার কারণ কী? ট্রাম্প বলেন, ‘যদি আমরা জীবন বাঁচাতে পারি, সহজ পথে সমাধান করতে পারি, তাহলে তা ভালো। আর কঠিন পথে করতে হলে, সেটাও আমরা করব।’
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপ কি আইনগতভাবে বৈধ
ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচকেরা বলছেন, এসব সামরিক অভিযান যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। মানবাধিকার পর্যবেক্ষক ও আইন বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, নৌকা ধ্বংসের ঘটনায় যা ঘটেছে তা ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ নাকি সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকার সব যাত্রীকে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
হেগসেথ এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি প্রতিবেদনে বলা তথ্যকে ‘ভুয়া খবর’ ও ‘মনগড়া ও উসকানিমূলক’ বলে অভিহিত করেন। তার দাবি, উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের মর্যাদা নষ্ট করা। তিনি বলেন, ক্যারিবীয় অঞ্চলে পরিচালিত হামলাগুলো ‘আইনসিদ্ধ’।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস শনিবার ঘটনাটির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। রিপাবলিকান সিনেটর র্যান্ড পল অক্টোবরে ফক্স নিউজকে জানান, তিনি এই ঘটনাকে এখনই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলবেন।
মার্কিন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্রুস ফেইন এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, ট্রাম্প সংবিধানবহির্ভূতভাবে কাজ করছেন এবং হত্যা ঘটাচ্ছেন। তার মতে, সামরিক হামলার অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা কেবল কংগ্রেসের। এক্ষেত্রে ট্রাম্পের নির্বাহী নির্দেশের কোনো বৈধতা নেই। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প কল্পনার জগতে ভেনেজুয়েলাকে শত্রু হিসেবে দেখাচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্র যখন কার্টেল দে লস সোলেস–কে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং এটিকে ভেনেজুয়েলা রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলছে, তখন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধকে দুই দেশের সংঘাত হিসেবে নয় বরং একটি সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান হিসেবে দেখাতে চাইছে, যার জন্য কংগ্রেসের অনুমতি প্রয়োজন হয় না।

ভেনেজুয়েলা কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে
কারাকাস ঘোষণা করেছে যে ট্রাম্পের নির্দেশ কার্যত ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা ও আশপাশের অঞ্চল বন্ধ করে দিয়েছে।
ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ট্রাম্পের মন্তব্য ভেনেজুয়েলার আকাশসীমার সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
এটি ভেনেজুয়েলা জনগণের বিরুদ্ধে অবৈধ, অযৌক্তিক এবং যুক্তিহীন আগ্রাসনের আরেকটি দৃষ্টান্ত বলে তারা উল্লেখ করেছে।
এদিকে, জুলাইয়ের নির্বাচনে মাদুরোর জয়কে ওয়াশিংটন স্বীকৃতি দেয়নি। এর মাঝেই মাদুরো নিয়মিত রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে উপস্থিত হয়ে যুদ্ধের বিরোধিতা করছেন এবং শান্তির পক্ষে কথা করছেন।
স্প্যানিশ ও ইংরেজি মিশিয়ে তিনি ঘোষণা দেন—‘যুদ্ধ চাই না... হ্যাঁ শান্তি চাই, চিরকাল।’
১৫ নভেম্বর তিনি সমর্থকদের সমাবেশে গানশিল্পী জন লেননের শান্তির গান ইমাজিন-এর উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘শান্তির জন্য সবকিছু করো, যেমন জন লেনন বলেছিলেন। ইমাজিন অল দ্য পিপল।’
দু দিন পর তিনি যুদ্ধ বা বলপ্রয়োগের হুমকির নিন্দা করেন। মাদুরো বলেন, ‘সংলাপ, আহ্বান—হ্যাঁ। শান্তি—হ্যাঁ। যুদ্ধ—না। কখনো না।’
কিন্তু উত্তেজনা বাড়তে থাকায় তিনি গত সপ্তাহে যেকোনো ‘সাম্রাজ্যবাদী হুমকি’ থেকে দেশ রক্ষার অঙ্গীকার করেন।
ফুয়ের্তে তিউনা সামরিক একাডেমিতে সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণকালে তিনি পূর্ণ সামরিক পোশাকে ছিলেন। সেসময় তিনি জাতীয় নায়ক সিমন বলিভারের তলোয়ার উঁচিয়ে ধরেন।
ট্রাম্পের মাদুরোবিরোধী কঠোর নীতির পেছনে কারণ কী
পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক গবেষকেরা বলছেন, ভেনেজুয়েলার বিশাল তেলভাণ্ডার এবং পশ্চিম গোলার্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তার—এই দুই বিষয় ট্রাম্প প্রশাসনের আগ্রাসী নীতিকে চালিত করছে।
লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি গবেষক সালভাদর সান্তিনো রেগিলমে বলেন, ওয়াশিংটন চায় ভেনেজুয়েলা চীন, রাশিয়া বা ইরানের বদলে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থের সঙ্গে সমন্বিত হোক।
১৯৭০-এর দশকে ভেনেজুয়েলা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের শীতল যুদ্ধকালীন নির্ভরযোগ্য মিত্র। কিন্তু ১৯৯৮ সালে হুগো শাভেজ নির্বাচিত হওয়ার পর সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়।
২০০২ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার পর শাভেজ যুক্তরাষ্ট্রের মাদকবিরোধী সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করেন এবং মার্কিন সামরিক উপদেষ্টাদের বহিষ্কার করেন।
তিনি তেল খাত জাতীয়করণ করে এক্সনমোবিল ও কনোকোফিলিপসকে দেশ ছাড়তেও বাধ্য করেন। তবে শেভরন এখনো ভেনেজুয়েলায় কার্যক্রম চালায়।
শাভেজ লাতিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার সমালোচনা করেন। তিনি কিউবা ও বলিভিয়ার মতো বামপন্থী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেন এবং রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক বন্ধন গড়ে তোলেন।
২০১৩ সালে মাদুরো ক্ষমতা গ্রহণের পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদেই মাদুরোর বিরোধীদের সমর্থন করেন এবং ২০১৯ সালে বিরোধী নেতা হুয়ান গুইদোকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেন।
রেগিলমের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত ‘মাদকবিরোধী যুদ্ধ’ আসলে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন মাদুরোর রাষ্ট্রকে অপরাধী চক্র হিসেবে উপস্থাপন করছে। এর উদ্দেশ্য কেবল সরকার নয়, বরং সম্পূর্ণ রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক কাঠামোকেই অগ্রহণযোগ্য দেখানো।
আইনজীবী ও রিপাবলিকান কৌশলবিদ আদোলফো ফ্রাংকো আল জাজিরাকে বলেন, ট্রাম্প পরবর্তী পরিকল্পনা স্পষ্ট না করলেও তার লক্ষ্য স্পষ্টতই সরকার পরিবর্তন।
তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সামনে সব বিকল্প খোলা। আমার অভিজ্ঞতা বলে, লক্ষ্য হলো মাদুরোকে সরে যেতে বাধ্য করা—শান্তিপূর্ণভাবে হলে ভালো, যদিও তা কঠিন কাজ।’
তার মতে আলোচনা কঠিন, কারণ যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে এমন সামরিক সংকেত পাঠিয়েছে যা দেখায় তারা ভেনেজুয়েলার পরিবর্তন নিয়ে সিরিয়াস।
তিনি বলেন, ‘মাদুরো ক্ষমতায় থেকে আগের মতো সম্পর্ক চলবে—এমন কিছুর কোনো সম্ভাবনা নেই।’
ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী কি ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রধান উৎস
ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলাকে ‘মাদক-সন্ত্রাসী’ নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত বলে প্রচার করছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর মূল কারণ হয়ে দাঁড়ানো ফেন্টানিল সংকটের সঙ্গে কারাকাসের সম্পর্ক প্রায় নেই।
মার্কিন ডিইএ ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের তথ্য অনুসারে, মেক্সিকোর সিনালোয়া ও জালিস্কো নিউ জেনারেশন কার্টেলই প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র। এরা চীন থেকে আনা রাসায়নিক ব্যবহার করে সিন্থেটিক ওপিওইড তৈরি করে।
ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রগামী মাদকের উল্লেখযোগ্য ট্রানজিট রুটও নয়। অধিকাংশ মাদক বৈধ স্থলবন্দর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে এবং তা দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত দিয়েই আসে।
ক্যারিবীয় অঞ্চলের যে সমুদ্রপথে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনী অভিযান চালাচ্ছে, সেগুলো মূল প্রবেশপথ নয়। কোকেনের ক্ষেত্রে ভেনেজুয়েলা একটি পারগমনকেন্দ্র হলেও এটি প্রধান উৎপাদক বা নিয়ন্ত্রক নয়।
বিশ্বে কোকেন চাষে শীর্ষ দেশ রয়ে গেছে কলম্বিয়া। ভেনেজুয়েলা হয়ে যেসব কোকেন যায়, তার বেশিরভাগই ইউরোপে পৌঁছায়।
২০২০ সালের মার্চে যুক্তরাষ্ট্র অনুমান করে যে প্রতি বছর প্রায় ২০০–২৫০ টন কোকেন ভেনেজুয়েলা হয়ে পাচার হয়। এটি বৈশ্বিক উৎপাদনের মাত্র ১৩ শতাংশ।

জাপানের উত্তর-পূর্ব উপকূলে শক্তিশালী ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পের পর ওই এলাকায় সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগে
পর্যটকদের কাছে হিমালয় এবং কাঠমাণ্ডু আকর্ষণীয় স্থানের শীর্ষে। কিন্তু বন্যপ্রাণীতে ভরপুর, জাতীয় পার্ক এবং দৃষ্টিনন্দন অতিথিশালাসমৃদ্ধ নেপালের তেরাই নিম্নাঞ্চল সম্পর্কে পর্যটকরা খুব একটা জানে না।
৬ ঘণ্টা আগে
গত জানুয়ারিতে চীন জানায় যে তাদের পণ্য ও সেবাখাতে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে—যা বিশ্বে কোনো দেশের জন্য প্রথম অভিজ্ঞতা। কিন্তু ২০২৫ সালের প্রথম ১১ মাসে চীন সেই সীমাও অতিক্রম করেছে। সোমবার প্রকাশিত কাস্টমস তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর পর্যন্ত চীনের মোট বাণিজ্য উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৮
৭ ঘণ্টা আগে
সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫৩ বছরের শাসনের পতনের এক বছর পূর্ণ হলো আজ। গত বছর এই দিনে বাশার আল-আসাদের পতনের মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় প্রায় ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধেরও সমাপ্তি ঘটে। আহমদ আল-শারা (সাবেক আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি) নেতৃত্বাধীন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) অন্তর্বর্তী সরকার এখন দেশ পরিচালনা করছে।
১০ ঘণ্টা আগে