leadT1ad

পেঁয়াজ নিচ্ছে না বাংলাদেশ, বিপাকে ভারত

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক

প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৩৮
ভারত সরকারের বারবার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ও বিধিনিষেধ আরোপের ফলে দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম তলানিতে। রপ্তানি বাণিজ্যেও ভয়াবহ স্থবিরতা নেমে এসেছে। ভারত সরকারের কর্মকর্তারা এই পরিস্থিতিতে হতবাক হলেও রপ্তানিকারকরা এর জন্য বাংলাদেশের স্বনির্ভর হওয়া এবং বিকল্প বাজার হিসেবে পাকিস্তান ও চীন থেকে সংগ্রহকে দায়ী করছেন।

ভারত সরকারের বারবার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ও বিধিনিষেধ আরোপের ফলে দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস বিশেষজ্ঞদের বরাতে বলেছে, একসময় ভারত থেকে রপ্তানি হওয়া পেঁয়াজের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের গন্তব্য ছিল বাংলাদেশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত বাংলাদেশে ৭ লাখ ২৪ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানি করেছিল, যা তাদের মোট রপ্তানির ৪২ শতাংশ। অথচ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গত ছয় মাসে ভারত থেকে মাত্র ১২ হাজার ৯০০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে বাংলাদেশ। যদিও বর্তমানে ঢাকার বাজারে পেঁয়াজের দাম ভারতের স্থানীয় বাজারের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি। তবুও ভারত থেকে আমদানির পরিমাণ নগণ্য।

ভারতের হর্টিকালচার প্রোডিউস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এইচপিইএ) সাবেক প্রধান অজিত শাহ বলেন, আমরা আমাদের গুণমানের জন্য অতিরিক্ত দাম নিতে পারতাম। কিন্তু যখন আমরা দীর্ঘদিন বাজারে ছিলাম না, তখন আমাদের গ্রাহকরা বিকল্প সরবরাহকারী খুঁজে নিয়েছে। এখন তারা আর গুণমান তুলনা করে না বরং আমাদের প্রতিযোগীদের সঙ্গে দামের তুলনা করে। মূলত ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভারতের বিভিন্ন মেয়াদে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, ভারতের রপ্তানিকারকদের অভিযোগ, ভারতীয় পেঁয়াজের উন্নত মানের বীজ অবৈধভাবে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও চীনে পাচার হচ্ছে। এই বীজ ব্যবহার করেই প্রতিবেশী দেশগুলো পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে।

বোর্ড অব ট্রেডের গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য পাশা প্যাটেল বলেন, আমরা কেবল আমাদের ঐতিহ্যবাহী অনেক ক্রেতাকে হারাইনি, তারা ভারতীয় পেঁয়াজের বীজ ব্যবহার করে পেঁয়াজে স্বাবলম্বী হতেও শুরু করেছে।

এইচপিইএর সহসভাপতি বিকাশ সিং জানান, ভারতীয় পেঁয়াজ বীজের উচ্চ চাহিদা রয়েছে চীন ও পাকিস্তানে, যা ভারতীয় কৃষকদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শুধু বাংলাদেশ নয়, সৌদি আরবের মতো বড় বাজারও হারিয়েছে ভারত। ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারত সৌদি আরবে ৫৭ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানি করেছিল, যা চলতি অর্থবছরে মাত্র ২২৩ টনে নেমে এসেছে। সৌদি আরব এখন ইয়েমেন ও ইরান থেকে কম দামে পেঁয়াজ কিনছে এবং তাদের স্থানীয় উৎপাদনও বাড়িয়েছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশের আমদানি কমার পেছনে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করলেও, ব্যবসায়ীরা মনে করছেন ঘন ঘন রপ্তানি নীতি পরিবর্তন এবং অভ্যন্তরীণ বাজার সুরক্ষার দোহাই দিয়ে রপ্তানি বন্ধ রাখার দীর্ঘমেয়াদি মাশুল এখন গুনতে হচ্ছে ভারতকে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত