রুশ তেল কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
স্ট্রিম ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার দুটি বৃহত্তম তেল কোম্পানি—রসনেফট ও লুকঅয়েলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম প্রায় ৫ শতাংশ বেড়ে গেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, বৈশ্বিক মানদণ্ড ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ইউরোপীয় লেনদেনে প্রায় ৩.৩৯ ডলার বা ৫.৪ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৬৫.৯৮ ডলারে পৌঁছায়। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দামও ৩.৩১ ডলার বা ৫.৭ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৬১.৮১ ডলার হয়।
তেলের দামে এই উল্লম্ফন মূলত সরবরাহ কমে যাওয়ার আশঙ্কাকে প্রতিফলিত করছে। কারণ রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানিকারক দেশ, যা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পর থেকে এশীয় বাজারে তেল বিক্রি বাড়িয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে রাশিয়া গড়িমসি করছে, এমন অভিযোগ এনে বুধবার যুক্তরাষ্ট্র এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ বুধবার রাতে ঘোষিত নিষেধাজ্ঞায় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা রোসনেফট ও লুকয়েলের সব সম্পদ জব্দ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমেরিকান কোম্পানি ও নাগরিকদের এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র বিদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে, যারা রোসনেফট ও লুকয়েলের সঙ্গে লেনদেন করে। এর আওতায় চীন, ভারত ও তুরস্কের সেই ব্যাংকগুলোও পড়তে পারে, যারা রুশ তেল বিক্রিতে সহায়তা করে।
ট্রাম্প বলেছেন, ‘এই ব্যাপক নিষেধাজ্ঞাগুলো মস্কোকে আলোচনার টেবিলে আনতে জারি করা হয়েছে। আশা করি যুদ্ধ দ্রুত শেষ হবে—পুতিন ও জেলেনস্কি দুজনই যুক্তিযুক্ত আচরণ করবেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট রাশিয়াকে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, প্রয়োজন হলে ওয়াশিংটন আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে। এই পদক্ষেপ এসেছে শান্তি আলোচনার স্থবিরতা ও ইউক্রেনের অবকাঠামোয় রাশিয়ার নতুন হামলার খবরে।
নিষেধাজ্ঞার ঘোষণায় বিশ্ববাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ডয়েচে ব্যাংকের বিশ্লেষকদের মতে, এটি জুলাইয়ের পর তেলের সবচেয়ে বড় মূল্যবৃদ্ধি। লন্ডন ও নিউইয়র্কের ব্যবসায়ীরা সরবরাহ পূর্বাভাস নতুন করে মূল্যায়ন করছেন। রোসনেফট ও লুকঅয়েল মিলিয়ে রাশিয়ার মোট তেল উৎপাদনের ৪০ শতাংশেরও বেশি সরবরাহ করে, যা দিনে প্রায় ৫০ লাখ ব্যারেল।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে রাশিয়া এতদিন ‘শ্যাডো ফ্লিট’ ও কম দামে তেল বিক্রির মাধ্যমে বাজারে টিকে ছিল। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা এই বিকল্প ব্যবস্থাকেও বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
২০২২ সালের আক্রমণের পর থেকে রাশিয়ার বৃহত্তম তেল ক্রেতা ভারত তাৎক্ষণিক উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজসহ ভারতীয় রিফাইনারিগুলো জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তি এড়াতে রাশিয়ান তেল আমদানি ‘কঠোরভাবে কমাবে বা স্থগিত করবে।’
ভারতীয় তেল মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘দেশীয় চাহিদা বাড়ার সময়ে এটি আমাদের জ্বালানি নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে।’
আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল রুশ তেল আমদানির কারণে। ফলে নয়াদিল্লি এখন সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বিকল্প উৎসের সন্ধান করছে।
ইউরোপ দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বৃহস্পতিবার মিলিতভাবে রাশিয়ার তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি নিষিদ্ধ করে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। যুক্তরাজ্য আগেই উভয় কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। তবে হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার মতো স্থলবেষ্টিত দেশগুলো সাময়িক ছাড় পাচ্ছে।
ইইউ পররাষ্ট্রনীতি প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, ‘আমরা সেই ফাঁকগুলো বন্ধ করছি, যা এতদিন পুতিনের যুদ্ধযন্ত্রকে সচল রেখেছে।’
তেলের দাম বৃদ্ধি বিশ্ববাজারে জ্বালানির শেয়ারবাজারকে উর্ধ্বমুখী করেছে, তবে ভোক্তা নির্ভর অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা বাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসোলিন ফিউচার ৩ শতাংশ বেড়েছে, যা আগামী কয়েক সপ্তাহে প্রতি গ্যালনে ১০-১৫ সেন্ট বাড়াতে পারে বলে জেপি মরগ্যান জানিয়েছে।
এশিয়ায়, বিশেষ করে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায়, সরকারগুলো গৃহস্থালি খরচ সামাল দিতে জরুরি ভর্তুকি দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে।
কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপের সময় ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ডেমোক্র্যাট সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন সিএনএনে বলেন, ‘এটি মূলত আসন্ন নির্বাচনের আগে শক্তি প্রদর্শনের প্রচেষ্টা।’
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ’ আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, মস্কো এখন ব্রিকস সহযোগীদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করবে।
এই নিষেধাজ্ঞা পশ্চিমা দেশগুলোর রাশিয়া নীতিতে নতুন কঠোরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা আবারও তীব্র হতে পারে।
ব্লুমবার্গএনইএফের বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, যদি দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে কার্যকর হয়, তাহলে বছরের শেষ নাগাদ ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ৭০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। তবে রাশিয়া পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখালে দাম আবারও অস্থির হতে পারে।
মাসের শুরুতে ট্রাম্পের সতর্কবার্তার জবাবে ক্রেমলিন জানায়, রাশিয়ার অর্থনীতি ধসে পড়বে—এ দাবি ভিত্তিহীন। তাদের মতে, দেশটির পর্যাপ্ত বৈদেশিক মজুত ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা রয়েছে, যা প্রেসিডেন্ট পুতিনের লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে।
রাশিয়া চাইলে অপরিশোধিত তেল রপ্তানি বন্ধ করতে পারে। তবে এতে চীনসহ তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্ররা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর মূল লক্ষ্য—রুশ রাজস্ব ও যুদ্ধ তহবিল কমিয়ে আনা—আংশিকভাবে সফল হবে।
অন্য বিকল্প হিসেবে রাশিয়া সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, প্যালাডিয়াম বা টাইটানিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্য রপ্তানি বন্ধ করতে পারে। তবে তাতে রাশিয়ার নিজস্ব অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আরেকটি সম্ভাবনা হলো, চীনের সঙ্গে রেয়ার আর্থ বা বিরল ধাতু খাতে সহযোগিতা বাড়ানো। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম বিরল ধাতু মজুতের দেশ। চীনের সঙ্গে এ ক্ষেত্রে অংশীদারত্ব গড়লে, বেইজিংয়ের আধিপত্য ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টায় বাধা তৈরি হবে।
রাশিয়ার পশ্চিমা তেল কোম্পানিগুলোর ওপরও কিছুটা চাপ সৃষ্টির ক্ষমতা রয়েছে। কৃষ্ণসাগরের রপ্তানি রুট কাস্পিয়ান পাইপলাইন কনসোর্টিয়ামের নিয়ন্ত্রণে রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই পাইপলাইন মূলত কাজাখস্তানের তেল পরিবহন করে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই কোম্পানি—শেভরন ও এক্সনমোবিল—অংশীদার।
তবে এই রপ্তানি সীমিত করলে কাজাখস্তানও ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যে দেশের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক রয়েছে।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান, ব্লুমবার্গ, সিএনএন, আল-জাজিরা
যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার দুটি বৃহত্তম তেল কোম্পানি—রসনেফট ও লুকঅয়েলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম প্রায় ৫ শতাংশ বেড়ে গেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, বৈশ্বিক মানদণ্ড ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ইউরোপীয় লেনদেনে প্রায় ৩.৩৯ ডলার বা ৫.৪ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৬৫.৯৮ ডলারে পৌঁছায়। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দামও ৩.৩১ ডলার বা ৫.৭ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৬১.৮১ ডলার হয়।
তেলের দামে এই উল্লম্ফন মূলত সরবরাহ কমে যাওয়ার আশঙ্কাকে প্রতিফলিত করছে। কারণ রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানিকারক দেশ, যা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পর থেকে এশীয় বাজারে তেল বিক্রি বাড়িয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে রাশিয়া গড়িমসি করছে, এমন অভিযোগ এনে বুধবার যুক্তরাষ্ট্র এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ বুধবার রাতে ঘোষিত নিষেধাজ্ঞায় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা রোসনেফট ও লুকয়েলের সব সম্পদ জব্দ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমেরিকান কোম্পানি ও নাগরিকদের এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র বিদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে, যারা রোসনেফট ও লুকয়েলের সঙ্গে লেনদেন করে। এর আওতায় চীন, ভারত ও তুরস্কের সেই ব্যাংকগুলোও পড়তে পারে, যারা রুশ তেল বিক্রিতে সহায়তা করে।
ট্রাম্প বলেছেন, ‘এই ব্যাপক নিষেধাজ্ঞাগুলো মস্কোকে আলোচনার টেবিলে আনতে জারি করা হয়েছে। আশা করি যুদ্ধ দ্রুত শেষ হবে—পুতিন ও জেলেনস্কি দুজনই যুক্তিযুক্ত আচরণ করবেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট রাশিয়াকে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, প্রয়োজন হলে ওয়াশিংটন আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে। এই পদক্ষেপ এসেছে শান্তি আলোচনার স্থবিরতা ও ইউক্রেনের অবকাঠামোয় রাশিয়ার নতুন হামলার খবরে।
নিষেধাজ্ঞার ঘোষণায় বিশ্ববাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ডয়েচে ব্যাংকের বিশ্লেষকদের মতে, এটি জুলাইয়ের পর তেলের সবচেয়ে বড় মূল্যবৃদ্ধি। লন্ডন ও নিউইয়র্কের ব্যবসায়ীরা সরবরাহ পূর্বাভাস নতুন করে মূল্যায়ন করছেন। রোসনেফট ও লুকঅয়েল মিলিয়ে রাশিয়ার মোট তেল উৎপাদনের ৪০ শতাংশেরও বেশি সরবরাহ করে, যা দিনে প্রায় ৫০ লাখ ব্যারেল।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে রাশিয়া এতদিন ‘শ্যাডো ফ্লিট’ ও কম দামে তেল বিক্রির মাধ্যমে বাজারে টিকে ছিল। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা এই বিকল্প ব্যবস্থাকেও বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
২০২২ সালের আক্রমণের পর থেকে রাশিয়ার বৃহত্তম তেল ক্রেতা ভারত তাৎক্ষণিক উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজসহ ভারতীয় রিফাইনারিগুলো জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তি এড়াতে রাশিয়ান তেল আমদানি ‘কঠোরভাবে কমাবে বা স্থগিত করবে।’
ভারতীয় তেল মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘দেশীয় চাহিদা বাড়ার সময়ে এটি আমাদের জ্বালানি নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে।’
আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল রুশ তেল আমদানির কারণে। ফলে নয়াদিল্লি এখন সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বিকল্প উৎসের সন্ধান করছে।
ইউরোপ দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বৃহস্পতিবার মিলিতভাবে রাশিয়ার তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি নিষিদ্ধ করে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। যুক্তরাজ্য আগেই উভয় কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। তবে হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার মতো স্থলবেষ্টিত দেশগুলো সাময়িক ছাড় পাচ্ছে।
ইইউ পররাষ্ট্রনীতি প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, ‘আমরা সেই ফাঁকগুলো বন্ধ করছি, যা এতদিন পুতিনের যুদ্ধযন্ত্রকে সচল রেখেছে।’
তেলের দাম বৃদ্ধি বিশ্ববাজারে জ্বালানির শেয়ারবাজারকে উর্ধ্বমুখী করেছে, তবে ভোক্তা নির্ভর অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা বাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসোলিন ফিউচার ৩ শতাংশ বেড়েছে, যা আগামী কয়েক সপ্তাহে প্রতি গ্যালনে ১০-১৫ সেন্ট বাড়াতে পারে বলে জেপি মরগ্যান জানিয়েছে।
এশিয়ায়, বিশেষ করে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায়, সরকারগুলো গৃহস্থালি খরচ সামাল দিতে জরুরি ভর্তুকি দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে।
কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপের সময় ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ডেমোক্র্যাট সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন সিএনএনে বলেন, ‘এটি মূলত আসন্ন নির্বাচনের আগে শক্তি প্রদর্শনের প্রচেষ্টা।’
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ’ আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, মস্কো এখন ব্রিকস সহযোগীদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করবে।
এই নিষেধাজ্ঞা পশ্চিমা দেশগুলোর রাশিয়া নীতিতে নতুন কঠোরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা আবারও তীব্র হতে পারে।
ব্লুমবার্গএনইএফের বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, যদি দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে কার্যকর হয়, তাহলে বছরের শেষ নাগাদ ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ৭০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। তবে রাশিয়া পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখালে দাম আবারও অস্থির হতে পারে।
মাসের শুরুতে ট্রাম্পের সতর্কবার্তার জবাবে ক্রেমলিন জানায়, রাশিয়ার অর্থনীতি ধসে পড়বে—এ দাবি ভিত্তিহীন। তাদের মতে, দেশটির পর্যাপ্ত বৈদেশিক মজুত ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা রয়েছে, যা প্রেসিডেন্ট পুতিনের লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে।
রাশিয়া চাইলে অপরিশোধিত তেল রপ্তানি বন্ধ করতে পারে। তবে এতে চীনসহ তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্ররা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর মূল লক্ষ্য—রুশ রাজস্ব ও যুদ্ধ তহবিল কমিয়ে আনা—আংশিকভাবে সফল হবে।
অন্য বিকল্প হিসেবে রাশিয়া সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, প্যালাডিয়াম বা টাইটানিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্য রপ্তানি বন্ধ করতে পারে। তবে তাতে রাশিয়ার নিজস্ব অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আরেকটি সম্ভাবনা হলো, চীনের সঙ্গে রেয়ার আর্থ বা বিরল ধাতু খাতে সহযোগিতা বাড়ানো। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম বিরল ধাতু মজুতের দেশ। চীনের সঙ্গে এ ক্ষেত্রে অংশীদারত্ব গড়লে, বেইজিংয়ের আধিপত্য ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টায় বাধা তৈরি হবে।
রাশিয়ার পশ্চিমা তেল কোম্পানিগুলোর ওপরও কিছুটা চাপ সৃষ্টির ক্ষমতা রয়েছে। কৃষ্ণসাগরের রপ্তানি রুট কাস্পিয়ান পাইপলাইন কনসোর্টিয়ামের নিয়ন্ত্রণে রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই পাইপলাইন মূলত কাজাখস্তানের তেল পরিবহন করে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই কোম্পানি—শেভরন ও এক্সনমোবিল—অংশীদার।
তবে এই রপ্তানি সীমিত করলে কাজাখস্তানও ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যে দেশের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক রয়েছে।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান, ব্লুমবার্গ, সিএনএন, আল-জাজিরা
ইসরায়েলকে সতর্ক করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, দখলকৃত পশ্চিম তীরকে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করার যেকোনো প্রচেষ্টা চালালে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সমর্থন হারাতে পারে।
২০ মিনিট আগেবিশিষ্ট ইসলামী পণ্ডিত শেখ সালেহ আল-ফাওজান সৌদি আরবের নতুন গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের সুপারিশ নিয়ে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে তাঁকে নিয়োগ দেন সৌদি বাদশা সালমান।
১৩ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে বৈঠকের সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। মঙ্গলবার ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ‘বর্তমান সীমান্তে স্থগিত’ রাখার আহ্বান
১৩ ঘণ্টা আগেইসরায়েলের পার্লামেন্ট ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব আরোপের একটি বিলের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড সংযুক্ত করার সমান, যা আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হবে।
১৪ ঘণ্টা আগে