leadT1ad

নিউইয়র্ক পুলিশের গার্ড অব অনার

যেভাবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ‘বীর’ দিদারুলকে বিদায় জানাল নিউইয়র্ক পুলিশ

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৫, ১২: ২৩
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৫, ১২: ৩৫
নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ অফিসার দিদারুলকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানিয়েছে। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি

নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত মার্কিন পুলিশ সদস্য বাংলাদেশি অভিবাসী দিদারুল ইসলামের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) পার্কচেস্টার জামে মসজিদে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইউএসএ টুডে জানিয়েছে, নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ অফিসার দিদারুলকে গার্ড অব অনার জানিয়েছে।

নিউইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত মার্কিন পুলিশ সদস্য বাংলাদেশি অভিবাসী দিদারুল ইসলাম। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি
নিউইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত মার্কিন পুলিশ সদস্য বাংলাদেশি অভিবাসী দিদারুল ইসলাম। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি

গত ২৮ জুলাই ৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউতে কর্মরত ছিলেন দিদারুল। ওই দিন এক বন্দুকধারীর গুলিতে দিদারুলসহ আরও অন্তত চারজন নিহত হন।

দিদারুল ছিলেন একজন ‘দ্বায়িত্বশীল স্বামী, পিতা ও নিবেদিতপ্রাণ কর্মকর্তা’

দিদারুলের জানাজার আগে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, ৩৬ বছর বয়সী দিদারুল ইসলাম একজন বাংলাদেশি অভিবাসী ছিলেন এবং সাড়ে ৩ বছর ধরে এই বিভাগে কাজ করছিলেন। তিনি ৪৭তম প্রিসিঙ্কটের সদস্য ছিলেন।

দিদারুলকে নিউইয়র্ক পুলিশের শ্রদ্ধা। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি
দিদারুলকে নিউইয়র্ক পুলিশের শ্রদ্ধা। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি

প্রিসিঙ্কটের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পেজে নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল এক বিবৃতিতে বলেছেন, দিদারুল ইসলাম ছিলেন একজন দায়িত্বশীল স্বামী, পিতা ও নিবেদিতপ্রাণ কর্মকর্তা। তাঁর দুটি ছোট ছেলে ও স্ত্রী রয়েছে। তাঁর স্ত্রী তৃতীয় সন্তানের অপেক্ষা করছেন।

নিউইয়র্ক সিটির পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা তাকে যে কাজ করতে বলেছিলাম, তিনি সেই দায়িত্ব পালন করেই মারা গেছেন। তিনি নিজেকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছেন, চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তিনি একজন বীর।’

দিদারুলের মরদেহে গভর্নর ক্যাথি হোচুলের শ্রদ্ধা

দিদারুলের মরদেহ নিউইয়র্ক পুলিশের পতাকায় ঢেকে একটি গাড়িতে করে পার্কচেস্টার জামে মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গার্ড অব অনারসহ তাঁর মরদেহ হস্তান্তর করা হয় জানাজার জন্য। হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল।

মরদেহবাহী গাড়ির সঙ্গে নিউইয়র্ক পুলিশের শোকযাত্রা। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি
মরদেহবাহী গাড়ির সঙ্গে নিউইয়র্ক পুলিশের শোকযাত্রা। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি

হোচুল বলেন, ‘আমাদের হৃদয়ে অফিসার দিদারুলের মতো ব্যক্তিদের জন্য কৃতজ্ঞতা থাকা উচিত, যারা তাদের পরিবারকে আরও উন্নত জীবন দিতে এই দেশে এসেছিলেন।’

মরণোত্তর পদোন্নতি পেলেন দিদারুল

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, ‘আমি এখানে মেয়র হিসেবে নই, আমি এখানে একজন অভিভাবক হিসেবে, একজন পিতা হিসেবে এসেছি। একজন পিতার জন্য সন্তানকে কবর দেওয়ার চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না।’

পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ বলেন, দিদারুল বাংলাদেশের সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০ বছর বয়সে ‘একটি উন্নত জীবনের জন্য’ নিউ ইয়র্কে চলে আসেন। ২০১৯ সালে তিনি স্কুল সেফটি এজেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং দুই বছর পর ব্রঙ্কসের ৪৭তম প্রিসিঙ্কটে চলে যান।

দিদারুলকে নিউইয়র্ক পুলিশের শ্রদ্ধ। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি
দিদারুলকে নিউইয়র্ক পুলিশের শ্রদ্ধ। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি

এ সময় তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে দিদারুল ইসলামকে মরণোত্তর প্রথম শ্রেণির গোয়েন্দা হিসেবে উল্লেখ করেন।

‘সে ছিল আমাদের পৃথিবী’

দিদারুলের পরিবারের পক্ষ থেতে তাঁর শ্যালক ও নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা কামরুল হাসান একটি মর্মস্পর্শী বার্তা পড়ে শোনান।

কামরুল হাসান বলেন, তিনি ছিলেন একজন গর্বিত বাবা, একজন চাচা একজন ভাই। তিনি সবার কাছেই ছিলেন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি। তিনি সবার প্রয়োজন মেটাতেন এবং সবাইকে সাহায্য করতেন।

দিদারুলের স্ত্রী বলেন, ‘আজ আমি আপনাদের সামনে আমার প্রিয় স্বামীর মৃত্যুতে শোকাহত হৃদয় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। সে ছিল একজন নিবেদিতপ্রাণ পুত্র, প্রিয় ভাই এবং সবচেয়ে স্নেহশীল বাবা। পরিবারের কাছে সে ছিল আমাদের পৃথিবী।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত