.png)
আজ শহীদ নূর হোসেন দিবস
আজ ১০ নভেম্বর। শহীদ নূর হোসেন দিবস। ১৯৮৭ সালের এই দিনে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন এই অকুতোভয় বীর। রাজপথে নূর হোসেনের বুকে-পিঠে লেখা ছিল ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’।

হুমায়ূন শফিক

‘যুদ্ধ শুরু হলে রাজনীতিবিদেরা অস্ত্র দেয়, ধনীরা রুটি দেয়, কিন্তু গরিবেরা দেয় তাদের ছেলেদের। যুদ্ধ শেষ হলে রাজনীতিবিদেরা হাত মেলায়, ধনীরা রুটির দাম বাড়ায়, আর গরিবেরা তাদের ছেলেদের কবর খোঁজে।’ শহীদ নূর হোসেনের ক্ষেত্রেও এই সার্বিয়ান এই প্রবাদ যেন সত্য।
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকার রাজপথে নূর হোসেনের বুকে-পিঠে লেখা ছিল ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’। সেই বুকটাই হয়ে উঠেছিল একটি যুগের অগ্নিসাক্ষী, এক সময়ের প্রতিবাদের প্রতীক। সেদিন রাজপথে নূর হোসেনের শরীর যেন সমগ্র জাতির বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছিল। তিনি হয়ে উঠেছিলেন জীবন্ত পোস্টার, গণতন্ত্রের জন্য আত্মত্যাগের প্রতিমূর্তি।

কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় হলো—তাঁর মৃত্যুর ৩৮ বছর পেরিয়ে গেলেও শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে আমাদের সাহিত্য, ইতিহাস কিংবা গবেষণার ভুবন প্রায় শূন্য। হাতে গোনা দুই-একটি বই ছাড়া নূর হোসেনকে নিয়ে গভীরভাবে কাজ হয়নি। ব্যতিক্রম একমাত্র কবি শামসুর রাহমান ও সাংবাদিক ও প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের যৌথ বই শহীদ নূর হোসেন। যেখানে নূর হোসেনকে দেখা হয়েছে শ্রমজীবী মানুষের আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে। সাম্প্রতিক সময়ে তরুণ লেখক ইমরান আকন্দ নূর হোসেনকে নিয়ে লিখেছেন দুটি বই—বিপ্লবী নূর হোসেন ও শহীদ নূর হোসেন এক জীবন্ত পোস্টার। বই দুটির সাহিত্যমান যাই হোক, লেখক অন্তত স্মৃতিচর্চার দায়িত্বটি নিয়েছেন। এই সময়ের প্রেক্ষাপটে সেটিই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতি বছর ১০ নভেম্বর এলে সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও সামাজিক মাধ্যমে ভুরি ভুরি কলাম প্রকাশিত হয় শহীদ নূর হোসেনকে স্মরণ করে। কিন্তু বছরজুড়ে তাঁর কথা প্রায় কেউ বলে না। যেন এই দিনটিই তাঁকে স্মরণ করার আনুষ্ঠানিক দায়। এ বাস্তবতা আমাদের সমাজের রাজনৈতিক চেতনার দুর্বলতাকেই স্পষ্ট করে।
নূর হোসেন রাষ্ট্রের কোনো কেউকেটা নন। পেশায় ছিলেন এক সাধারণ মোটরশ্রমিক। শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তবু তিনি স্বৈরাচারবিরোধী মিছিলে নিজের বুক-পিঠে লিখেছিলেন প্রতিবাদের অগ্নিবাণী—‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’। সেই মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ দেন তিনি। বয়স ছিল সর্বোচ্চ ২৫। তাঁর এই আত্মত্যাগ তাঁকে পরিণত করেছে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীকে।
যে স্থানে তিনি শহীদ হয়েছিলেন, সেই জিরো পয়েন্টের নাম রাখা হয়েছে ‘নূর হোসেন চত্বর’। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এখনো জায়গাটিকে পুরোনো নামেই চেনে। তাঁর আত্মত্যাগের দিনটি আজ ‘শহীদ নূর হোসেন দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। কিন্তু তা অনেকাংশেই আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ। নূর হোসেনের জীবন, সামাজিক পটভূমি, শ্রমজীবী পরিচয়, রাজনৈতিক চেতনা কিংবা তাঁর পরিবারের সংগ্রামী ইতিহাস নিয়ে এখনো কোনো পূর্ণাঙ্গ গবেষণা হয়নি।
ইতিহাসের বইয়েও উল্লেখ নেই শহীদ নূর হোসেনের
সেই সময়ে এরশাদ সরকারের উপ–প্রধানমন্ত্রী মওদুদ আহমেদ তাঁর বই ‘চলমান ইতিহাস: জীবনের কিছু সময় কিছু কথা (১৯৮৩–১৯৯০)’–এ ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বরের আন্দোলন ও গুলির ঘটনার কথা উল্লেখ করলেও নূর হোসেনের নাম লেখেননি।

তিনি লিখেছেন, অক্টোবর নাগাদ আন্দোলন গতি পায়। দুই প্রধান জোট ১০ নভেম্বর ঢাকায় ১০ লাখ লোকের সমাবেশের ঘোষণা দেয়। সরকার জরুরি অবস্থা জারি করে, মিছিল–সমাবেশ নিষিদ্ধ করে, গ্রাম থেকে শহরে লোক আসা ঠেকাতে লঞ্চ–ট্রেন বন্ধ রাখে এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করে।
বইতে মওদুদ বলেন, বিরোধীরা পর্যাপ্ত জনসমর্থন আনতে পারেনি, তাই আন্দোলন সরকারের চোখে ব্যর্থ হয়। তবে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের গতি থামেনি, বরং আরও তীব্র হয়েছে।
তৎকালীন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ২০২০ সালে বিবিসিকে বলেন, নূর হোসেনের মৃত্যু নিয়ে সরকারে কোনো আলোচনা বা প্রতিক্রিয়া হয়নি। তিনি জানান, বিরোধী দল আগে বলেছিল শুধু মিছিল করে চলে যাবে, কিন্তু তারা অবস্থান নেয়, সংঘর্ষ হয়, নূর হোসেন কোথা থেকে এলেন তা তিনি জানেন না।
প্রথম দিকে নূর হোসেনের নাম অজানা ছিল। পরে তাঁর বুক–পিঠে লেখা স্লোগানের ছবি ছড়িয়ে পড়লে তিনি গণতন্ত্র আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠেন।
১১ নভেম্বর দৈনিক বাংলার শিরোনাম ছিল, ‘ঢাকায় মিছিল সংঘর্ষ, পুলিশের গুলিতে নিহত ৪’। বাংলাদেশ টাইমস লিখেছিল, ‘থ্রি কিলড, হানড্রেড হার্ট’।
তবে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকায় শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে প্রচ্ছদ করে। এটি প্রকাশিত হয় ১৫ নভেম্বর ১৯৮৭ সালে। সেই সংখ্যায় ‘১৪৪ ধারা, ঢাকা কর্মসূচী, হরতাল, গুলী, দুই নেত্রীর অন্তরীণ এবং সর্বশেষ পরিস্থিতি’ শিরোনামে একটি লেখা লেখেন শেখ মহিউদ্দিন। তাঁর লেখায় ১০ নভেম্বরের আন্দোলনের ইতিহাস পাওয়া যায়। সেই লেখায় নিহতদের পরিচয় উল্লেখ করা হয়। সেখানকার প্রথম নামটিই নূর হোসেনের।
নূর হোসেনের কবরও দেওয়া হয় তাড়াহুড়ো করে
‘শহীদ নূর হোসেন’ গ্রন্থে মতিউর রহমান লিখেছেন, জুরাইন কবরস্থানের কবরখোদক আলমগীর জানান—পুলিশ ও বিডিআর তাড়াহুড়ো করে নূর হোসেনকে দাফন করতে বলে। তাঁর বুকে-পিঠে লেখা ঘষে তুলতে চাইলেও পারেননি।
আলমগীর বলেন, ‘পুলিশ-বিডিআর খুব তাড়াতাড়ি কবর দিতে কইছিল। তখন জানতাম না ওটা নূর হোসেনের লাশ। পরে জানতে পারি, ওই দেয়ালের পাশের কবরটাই নূর হোসেনের।’
বইয়ের তথ্যমতে, ১০ নভেম্বর রাতে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের গাড়িতে তিনজনের লাশ আনা হয়। সঙ্গে ছিল পাঁচ-ছয় ট্রাক পুলিশ ও বিডিআর। তাঁদের চাপের কারণে ধর্মীয় রীতি সম্পূর্ণভাবে মানা যায়নি।
নূর হোসেনের পিতা মজিবুর রহমান পরে পত্রিকায় খবর পড়ে ১৩ নভেম্বর জুরাইনে যান। গোরখোদকদের বর্ণনা অনুযায়ী ছেলের কবর শনাক্ত করেন।
তথ্যসূত্র: শামসুর রাহমান ও মতিউর রহমানের লেখা বই ‘শহীদ নূর হোসেন’; সাপ্তাহিক বিচিত্রা; বিবিসি।

‘যুদ্ধ শুরু হলে রাজনীতিবিদেরা অস্ত্র দেয়, ধনীরা রুটি দেয়, কিন্তু গরিবেরা দেয় তাদের ছেলেদের। যুদ্ধ শেষ হলে রাজনীতিবিদেরা হাত মেলায়, ধনীরা রুটির দাম বাড়ায়, আর গরিবেরা তাদের ছেলেদের কবর খোঁজে।’ শহীদ নূর হোসেনের ক্ষেত্রেও এই সার্বিয়ান এই প্রবাদ যেন সত্য।
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকার রাজপথে নূর হোসেনের বুকে-পিঠে লেখা ছিল ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’। সেই বুকটাই হয়ে উঠেছিল একটি যুগের অগ্নিসাক্ষী, এক সময়ের প্রতিবাদের প্রতীক। সেদিন রাজপথে নূর হোসেনের শরীর যেন সমগ্র জাতির বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছিল। তিনি হয়ে উঠেছিলেন জীবন্ত পোস্টার, গণতন্ত্রের জন্য আত্মত্যাগের প্রতিমূর্তি।

কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় হলো—তাঁর মৃত্যুর ৩৮ বছর পেরিয়ে গেলেও শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে আমাদের সাহিত্য, ইতিহাস কিংবা গবেষণার ভুবন প্রায় শূন্য। হাতে গোনা দুই-একটি বই ছাড়া নূর হোসেনকে নিয়ে গভীরভাবে কাজ হয়নি। ব্যতিক্রম একমাত্র কবি শামসুর রাহমান ও সাংবাদিক ও প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের যৌথ বই শহীদ নূর হোসেন। যেখানে নূর হোসেনকে দেখা হয়েছে শ্রমজীবী মানুষের আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে। সাম্প্রতিক সময়ে তরুণ লেখক ইমরান আকন্দ নূর হোসেনকে নিয়ে লিখেছেন দুটি বই—বিপ্লবী নূর হোসেন ও শহীদ নূর হোসেন এক জীবন্ত পোস্টার। বই দুটির সাহিত্যমান যাই হোক, লেখক অন্তত স্মৃতিচর্চার দায়িত্বটি নিয়েছেন। এই সময়ের প্রেক্ষাপটে সেটিই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতি বছর ১০ নভেম্বর এলে সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও সামাজিক মাধ্যমে ভুরি ভুরি কলাম প্রকাশিত হয় শহীদ নূর হোসেনকে স্মরণ করে। কিন্তু বছরজুড়ে তাঁর কথা প্রায় কেউ বলে না। যেন এই দিনটিই তাঁকে স্মরণ করার আনুষ্ঠানিক দায়। এ বাস্তবতা আমাদের সমাজের রাজনৈতিক চেতনার দুর্বলতাকেই স্পষ্ট করে।
নূর হোসেন রাষ্ট্রের কোনো কেউকেটা নন। পেশায় ছিলেন এক সাধারণ মোটরশ্রমিক। শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তবু তিনি স্বৈরাচারবিরোধী মিছিলে নিজের বুক-পিঠে লিখেছিলেন প্রতিবাদের অগ্নিবাণী—‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’। সেই মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ দেন তিনি। বয়স ছিল সর্বোচ্চ ২৫। তাঁর এই আত্মত্যাগ তাঁকে পরিণত করেছে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীকে।
যে স্থানে তিনি শহীদ হয়েছিলেন, সেই জিরো পয়েন্টের নাম রাখা হয়েছে ‘নূর হোসেন চত্বর’। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এখনো জায়গাটিকে পুরোনো নামেই চেনে। তাঁর আত্মত্যাগের দিনটি আজ ‘শহীদ নূর হোসেন দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। কিন্তু তা অনেকাংশেই আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ। নূর হোসেনের জীবন, সামাজিক পটভূমি, শ্রমজীবী পরিচয়, রাজনৈতিক চেতনা কিংবা তাঁর পরিবারের সংগ্রামী ইতিহাস নিয়ে এখনো কোনো পূর্ণাঙ্গ গবেষণা হয়নি।
ইতিহাসের বইয়েও উল্লেখ নেই শহীদ নূর হোসেনের
সেই সময়ে এরশাদ সরকারের উপ–প্রধানমন্ত্রী মওদুদ আহমেদ তাঁর বই ‘চলমান ইতিহাস: জীবনের কিছু সময় কিছু কথা (১৯৮৩–১৯৯০)’–এ ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বরের আন্দোলন ও গুলির ঘটনার কথা উল্লেখ করলেও নূর হোসেনের নাম লেখেননি।

তিনি লিখেছেন, অক্টোবর নাগাদ আন্দোলন গতি পায়। দুই প্রধান জোট ১০ নভেম্বর ঢাকায় ১০ লাখ লোকের সমাবেশের ঘোষণা দেয়। সরকার জরুরি অবস্থা জারি করে, মিছিল–সমাবেশ নিষিদ্ধ করে, গ্রাম থেকে শহরে লোক আসা ঠেকাতে লঞ্চ–ট্রেন বন্ধ রাখে এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করে।
বইতে মওদুদ বলেন, বিরোধীরা পর্যাপ্ত জনসমর্থন আনতে পারেনি, তাই আন্দোলন সরকারের চোখে ব্যর্থ হয়। তবে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের গতি থামেনি, বরং আরও তীব্র হয়েছে।
তৎকালীন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ২০২০ সালে বিবিসিকে বলেন, নূর হোসেনের মৃত্যু নিয়ে সরকারে কোনো আলোচনা বা প্রতিক্রিয়া হয়নি। তিনি জানান, বিরোধী দল আগে বলেছিল শুধু মিছিল করে চলে যাবে, কিন্তু তারা অবস্থান নেয়, সংঘর্ষ হয়, নূর হোসেন কোথা থেকে এলেন তা তিনি জানেন না।
প্রথম দিকে নূর হোসেনের নাম অজানা ছিল। পরে তাঁর বুক–পিঠে লেখা স্লোগানের ছবি ছড়িয়ে পড়লে তিনি গণতন্ত্র আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠেন।
১১ নভেম্বর দৈনিক বাংলার শিরোনাম ছিল, ‘ঢাকায় মিছিল সংঘর্ষ, পুলিশের গুলিতে নিহত ৪’। বাংলাদেশ টাইমস লিখেছিল, ‘থ্রি কিলড, হানড্রেড হার্ট’।
তবে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকায় শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে প্রচ্ছদ করে। এটি প্রকাশিত হয় ১৫ নভেম্বর ১৯৮৭ সালে। সেই সংখ্যায় ‘১৪৪ ধারা, ঢাকা কর্মসূচী, হরতাল, গুলী, দুই নেত্রীর অন্তরীণ এবং সর্বশেষ পরিস্থিতি’ শিরোনামে একটি লেখা লেখেন শেখ মহিউদ্দিন। তাঁর লেখায় ১০ নভেম্বরের আন্দোলনের ইতিহাস পাওয়া যায়। সেই লেখায় নিহতদের পরিচয় উল্লেখ করা হয়। সেখানকার প্রথম নামটিই নূর হোসেনের।
নূর হোসেনের কবরও দেওয়া হয় তাড়াহুড়ো করে
‘শহীদ নূর হোসেন’ গ্রন্থে মতিউর রহমান লিখেছেন, জুরাইন কবরস্থানের কবরখোদক আলমগীর জানান—পুলিশ ও বিডিআর তাড়াহুড়ো করে নূর হোসেনকে দাফন করতে বলে। তাঁর বুকে-পিঠে লেখা ঘষে তুলতে চাইলেও পারেননি।
আলমগীর বলেন, ‘পুলিশ-বিডিআর খুব তাড়াতাড়ি কবর দিতে কইছিল। তখন জানতাম না ওটা নূর হোসেনের লাশ। পরে জানতে পারি, ওই দেয়ালের পাশের কবরটাই নূর হোসেনের।’
বইয়ের তথ্যমতে, ১০ নভেম্বর রাতে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের গাড়িতে তিনজনের লাশ আনা হয়। সঙ্গে ছিল পাঁচ-ছয় ট্রাক পুলিশ ও বিডিআর। তাঁদের চাপের কারণে ধর্মীয় রীতি সম্পূর্ণভাবে মানা যায়নি।
নূর হোসেনের পিতা মজিবুর রহমান পরে পত্রিকায় খবর পড়ে ১৩ নভেম্বর জুরাইনে যান। গোরখোদকদের বর্ণনা অনুযায়ী ছেলের কবর শনাক্ত করেন।
তথ্যসূত্র: শামসুর রাহমান ও মতিউর রহমানের লেখা বই ‘শহীদ নূর হোসেন’; সাপ্তাহিক বিচিত্রা; বিবিসি।
.png)

১৮৭৭ সালের ৯ নভেম্বর মুহাম্মদ ইকবাল জন্মেছিলেন, পাঞ্জাবের সিয়ালকোটে—যা বর্তমানে পাকিস্তানের পশ্চিম পাঞ্জাব অঞ্চলে অবস্থিত। তাঁর পূর্বপুরুষেরা ছিলেন কাশ্মীরি ব্রাহ্মণ। পরে সপ্তদশ শতকে মুঘল আমলে তাঁরা ইসলামে ধর্মান্তরিত হন।
১৫ ঘণ্টা আগে
ফেসবুকে নতুন গৃহযুদ্ধের সূচনা যেন একদম দরজায় এসে থেমে আছে। এখনও সবার জন্য সেই ভয়ঙ্কর অস্ত্র কমেন্টে ‘ডিসলাইক’ বাটন চালু হয়নি। খুব শিগগিরই হয়ত একদিন সকালে চা হাতে ফোন খুলে দেখবেন, কমেন্টের নিচে একটা ছোট্ট থাম্বস নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
২০ ঘণ্টা আগে
আজকাল প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা দেখার কথা ভাবলেই নাকে এসে লাগে গরম পপকর্নের ঘ্রাণ। দুনিয়াজুড়েই এই খাবার ছাড়া আজকের সময়ে সিনেমা দেখাটা অসম্পূর্ণ মনে হয়। কিন্তু কীভাবে ভুট্টার খই কীভাবে হয়ে উঠল সিনেমা-সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ? এর পেছনের গল্প কিন্তু সিনেমার কাহিনীর চেয়ে কম আকর্ষণীয় নয়।
১ দিন আগে
এমনও অনেক মানুষ আছেন যারা গভীর দুঃখ, কষ্ট বা মানসিক আঘাতে চাইলেও কাঁদতে পারেন না। কিন্তু কেন এমন হয়? এই বিষয়টিকে শারীরবৃত্তীয়, মানসিক ও সামাজিক নানা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার সুযোগ রয়েছে।
২ দিন আগে