স্ট্রিম ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষার্থীদের চার্লস ডিকেন্সের ‘ব্লিক হাউস’ উপন্যাসের প্রথম কয়েকটি অনুচ্ছেদ পড়তে ও ব্যাখ্যা করতে দেওয়া হয়েছিল। অন্যভাবে বললে: ইংরেজি সাহিত্যের কিছু শিক্ষার্থীকে উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের ইংরেজি সাহিত্যের একটি উৎকৃষ্ট নিদর্শন পড়তে বলা হয়েছিল। কাজটা আর এমন কী কঠিন?
কিন্তু দেখা গেল, কাজটি অতিশয় কঠিন। উপন্যাসটির আইনি পরিভাষায় তারা হতবুদ্ধি আর রূপকের ব্যবহারে বিভ্রান্ত। ডিকেন্সের কুয়াশার বর্ণনা তাদের আরও বেশি বিভ্রমে ফেলে দিয়েছিল। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা সাধারণ শব্দের অর্থ বুঝতেও সক্ষম হচ্ছিল না। একজন ছাত্রের ধারণা, কোনো পুরুষের ‘হুইস্কার্স’ (whiskers) আছে বলার অর্থ হলো, তিনি ‘বোধহয় কোনো পশুর সঙ্গে এক ঘরে আছেন… সম্ভবত একটি বিড়াল?’ ভাবনার বিষয় আসলে সাহিত্যের শিক্ষার্থীদের এই সাহিত্যবিমুখতা নিয়ে নয়, বরং তাদের ন্যূনতম অক্ষরজ্ঞান না থাকা নিয়ে।
পড়ার অভ্যাস বর্তমানে একেবারেই কমে যাচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় পরিচালিত একাধিক সমীক্ষায় একই চিত্র ফুটে উঠছে। প্রাপ্তবয়স্করা কম পড়ছে, শিশুরা কম পড়ছে। কিশোর-কিশোরীরা পড়ছে আরও অনেক কম। খুব ছোট শিশুদের বই পড়ে শোনানোও কমে গেছে; অনেককে তো শোনানোই হয় না। বয়স, শ্রেণি, ভূগোল নির্বিশেষে সর্বত্র পড়ার অভ্যাস কমছে।
আধুনিক বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা জার্নাল আইসাইন্স-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে গত ২০ বছরে আনন্দের জন্য বই পড়া মানুষের সংখ্যা দুই-পঞ্চমাংশ (২/৫ অংশ) কমে গেছে। ইউগভ নামক একটি পোলিং সংস্থার গবেষণায় জানা গেছে, ২০২৪ সালে ৪০ শতাংশ ব্রিটিশ কোনো বই পড়েননি বা শোনেননি। নিরানন্দে পড়ার অবস্থাও খুব ভালো নয়: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক স্যার জোনাথন বেটস বলেন, তিন সপ্তাহে একটি উপন্যাস শেষ করতেও হিমশিম খায় শিক্ষার্থীরা। আরেকজন প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, এমনকি শিক্ষিত তরুণদেরও ‘একাগ্রতা ও মনোযোগের কোনো অভ্যাসই নেই’।
এ ধরনের হাহাকারকে অবশ্য কিছুটা সতর্কতার সঙ্গেই গ্রহণ করা উচিত। বইপ্রেমী মানুষেরা বইয়ের চেয়ে যদি কিছু বেশি ভালোবেসে থাকে, তবে তা হলো ‘বই না পড়া’ নিয়ে অভিযোগ করা। তারা বরাবরই এমনটা করে এসেছে। ওপরে যে প্রবীণ ব্যক্তির কথা বলা হলো, তিনি ছিলেন স্বয়ং ডিকেন্স। পরিহাস করে ‘ব্লিক হাউস’ উপন্যাসেই এই কথাটি বলেছিলেন তিনি।
মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক অদ্ভূত বৈপরীত্য দেখা যায়—একটা সময় ছিল যখন পড়ার অভ্যাস চালু হওয়াটাকেই দেখা হতো সংকট হিসেবে। গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিস যেমন বই পড়ার অভ্যাসের কারণে স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার আশঙ্কা করতেন। অন্যদিকে মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কারের আগে পুঁথি লেখার সময়ে অধিক বই লেখাকে এক প্রকার তথ্যের বিস্ফোরণ ও সমাজের জন্য ভার হিসেবে দেখা হতো। কিন্তু সময়ের ধারাবাহিকতায় মানুষ এখন আর বইয়ের আগমন নয়, বরং বিলুপ্তি নিয়েই বেশি চিন্তিত।
কিন্তু তর্কসাপেক্ষে বলা যায়, এখন যা ঘটছে, তা আসলেই নতুন। কেবল পড়ার পরিমাণই কমছে না; যা পড়া হচ্ছে, তার প্রকৃতিও বদলে যাচ্ছে। বাক্য ছোট ও সরল হয়ে আসছে। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এর শত শত বেস্টসেলার বই বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১৯৩০-এর দশকের তুলনায় জনপ্রিয় বইগুলোর বাক্য প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সংকুচিত হয়েছে।
ভিক্টোরীয় যুগের বেস্টসেলার জন রাসকিনের ‘মডার্ন পেইন্টার্স’-এর প্রথম বাক্যটিই ১৫৩ শব্দের। বইটিতে ‘ভ্রান্ত মতামত’ বিশ্বাস না করতে উপদেশ দেওয়া হয়েছে এবং বইয়ের একটি উপশিরোনামে বলা হয়েছে ‘জনমত উৎকর্ষের মাপকাঠি নয়’। অন্যদিকে, অ্যামাজনের বর্তমান নন-ফিকশন বেস্টসেলার মেল রবিনসের ‘দ্য লেট দেম থিওরি’র প্রথম বাক্যটি মাত্র ১৯ শব্দের। একটি উপশিরোনাম হলো ‘আমি যেভাবে আমার জীবন বদলেছি’। কোনো কাজ সম্পন্ন করতে হলে নাসার রকেট উৎক্ষেপণের মতো করে পেছন দিকে গণনা করা উচিত। কারণ ‘একবার আপনি কাউন্টডাউন শুরু করলে, ৫-৪-৩-২-১, আর পেছনে ফেরার পথ থাকে না’, এমন উপদেশ দেওয়া হয়েছে বইটিতে। এই তুলনাটিই আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, রাসকিন দু-একটি বিষয় সত্যিই জানতেন।
পড়ার অভ্যাস কমে যাওয়ার জন্য স্মার্টফোনকে দায়ী করা হয়। বর্তমান সময়ে নিঃসন্দেহে মনোযোগ সরানোর উপকরণের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু বইপড়া বরাবরই একটি ঝামেলার কাজ ছিল। প্রাচীন গ্রিক কবি ক্যালিমাকাস বলেছিলেন, ‘বড় বই মানেই বড় আপদ।’ এই কথাটি দুপুরের খাওয়াদাওয়ার পর বিশেষভাবে সত্য। এই ব্যাপারটি একজন লেখক ব্যাখ্যা করে বলেন, পাঠক পড়তে বসল, তারপর সূর্যের আলো এসে ঘরে ঢুকল, দিনটাকে ‘৫০ ঘণ্টা দীর্ঘ’ মনে হতে লাগল, পাঠক ‘চোখ রগড়াতে’ শুরু করল এবং অবশেষে বইটি মাথার নিচে রেখে… হালকা ঘুমে ঢলে পড়ল।’ এই পাঠক চতুর্থ শতকের সন্ন্যাসী ও তপস্বী হলে ঘুমে ঢলে পড়বেন। আর একুশ শতকের হলে স্ন্যাপচ্যাট কিংবা ইনস্টাগ্রাম নিয়ে মগ্ন হবে।
তবে মনোযোগ সরানোর উপকরণই যে বেড়েছে তা নয়; বরং পড়ার অদম্য ইচ্ছাই যেন কমে গেছে। ভিক্টোরীয় যুগে আত্ম-উন্নয়ন সমিতিগুলোর রমরমা অবস্থা ছিল। জোনাথন রোজ তাঁর অনবদ্য গ্রন্থ ‘দ্য ইনটেলেকচুয়াল লাইফ অব দ্য ব্রিটিশ ওয়ার্কিং ক্লাসেস’-এ লিখেছেন, স্কটল্যান্ডের পাহাড়ি অঞ্চলের মেষপালকেরা ‘এক ধরনের ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার’ চালু রেখেছিল। প্রত্যেক মেষপালক দেয়ালের ফাটলে অন্য মেষপালকদের পড়ার জন্য বই রেখে যেত। ভিক্টোরীয় যুগের কারখানা শ্রমিকেরা বই কেনার জন্য পয়সা জমাত। স্কটল্যান্ডে এক ছেলেকে থুসিডাইডিসের লেখা বই উপহার দিয়েছিলেন একজন ফেরিওয়ালা। ছেলেটি ব্রিটেনের প্রথম লেবার পার্টির প্রধানমন্ত্রী র্যামসে ম্যাকডোনাল্ড।
বই পড়ার মধ্য দিয়ে আত্মউন্নয়নের চর্চা বর্তমানে একদম কমে এসেছে। বইয়ের উচ্চমূল্য ও গ্রন্থাগারের অভাবকে অনেকেই পঠনপাঠনের চর্চা কমে যাওয়ার জন্য দায়ী করেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বইয়ের দাম এত সস্তা আগে কখনো ছিল না। রোমান যুগে একটি বইয়ের দাম ছিল একটি উটের তিন-চতুর্থাংশ। ভিক্টোরীয় যুগে লর্ড বায়রনের ‘চাইল্ড হ্যারল্ড’স পিলগ্রিমেজ’-এর একটি কপির দাম ছিল একজন শ্রমিকের প্রায় অর্ধ-সপ্তাহের আয়ের সমান। আজ ‘চাইল্ড হ্যারল্ড’স পিলগ্রিমেজ’ অনলাইনে বিনামূল্যে পাওয়া যায় এবং পাঠকেরা এক কাপ কফির চেয়েও কম দামে আরও অনেক বই খুঁজে নিতে পারেন। কিন্তু পড়ার হার ক্রমাগত কমছেই।
এর একটি সোজাসাপটা ব্যাখ্যা হলো, মানুষ আর এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে চায় না। অধ্যাপক বেটস ছাত্রদের বই না পড়ার অভ্যাস নিয়ে মন্তব্য করে সবাইকে রাগিয়ে তুলেছিলেন। যদিও তিনি স্বীকার করেন, এখনকার প্রজন্মকে নিয়ে বারবার এমন অভিযোগ হয়তো সেকেলে বুড়োর মতো শোনাতে পারে। কিন্তু বাস্তবে শুধু বেটস নন, যেকোনো অধ্যাপকের সঙ্গে কথা বললেই দেখবেন, তাঁরা ছাত্রদের মনোযোগ কমে যাওয়া নিয়ে আক্ষেপ করেন। অধ্যাপক বেটস যখন শিক্ষকতা শুরু করেন, তখন তিনি কোর্সে ‘ব্লিক হাউস’ পড়াতেন। আজ তিনি সেই চেষ্টাও করবেন না, কারণ একদিকে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ‘পড়ার পরিমাণ কমানোর জন্য অবিরাম চাপ’ রয়েছে, তেমনই অন্যদিকে শিক্ষার্থীদেরও এসব বই পড়তে আগ্রহ নেই। একাধিক সমীক্ষায় তরুণরা পড়াকে ‘বিরক্তিকর’ ও ‘উপায় না থাকায়, বাধ্যতামূলক কাজ’ আখ্যায়িত করেছেন।
প্রশ্ন তোলা যেতেই পারে: তাতে কী? ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপকেরা সাক্ষরতার হার কমে যাওয়া নিয়ে আক্ষেপ করতেই পারেন। কিন্তু এর পেছনে আছে নিছকই ব্যক্তিস্বার্থ। সংস্কৃতির অবক্ষয় নিয়ে তাঁদের দুশ্চিন্তা যতখানি, তার চেয়ে বেশি চিন্তা হয়তো নিজেদের শিক্ষার্থী বা ‘গ্রাহকের’ সংখ্যা কমে যাওয়া নিয়ে।
কিন্তু বাস্তবে সাক্ষরতার প্রভাব কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যতালিকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। সাহিত্যবোধ বা পঠন-পাঠনের অভ্যাসের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক প্রজ্ঞাও বৃদ্ধি পায় বলে মনে করা হয়। এর সবচেয়ে সরল উদাহরণটি হলো খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকের এথেন্স; সেখানকার অধিবাসীরা ভাঙা মাটির পাত্রের টুকরোর ওপর কোনো ব্যক্তির নাম লিখে তাকে নির্বাসিত করার জন্য ভোট দেওয়ার একটি প্রক্রিয়া চালু করেছিল, যাকে বলা হত অস্ট্রাসিজম। শিক্ষাবিদ উইলিয়াম হ্যারিসের মতে, তারা এই গণতান্ত্রিক কাজটি করতে সক্ষম হয়েছিল। কারণ সমাজের মধ্যে একটি ন্যূনতম পর্যায়ের সাক্ষরতা অর্জিত হয়েছিল।
অন্যদিকে, সাহিত্যিক পরিশীলতার হ্রাস হয়তো রাজনৈতিক পরিশীলতা হ্রাসের দিকেই পরিচালিত করে। ব্রিটেনের সংসদীয় বক্তৃতার ওপর বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, এক দশকে বক্তব্যের দৈর্ঘ্য এক-তৃতীয়াংশ কমেছে। প্রায় ২৫০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতিদের উদ্বোধনী ভাষণ ‘ফ্লেশ-কিনকেইড রিডেবিলিটি টেস্ট’ ব্যবহার করে বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জর্জ ওয়াশিংটনের স্কোর ছিল ২৮ দশমিক ৭, যা স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়ার স্তর নির্দেশ করে। আর ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্কোর ছিল ৯ দশমিক ৪, যা একজন হাইস্কুল পড়ুয়ার পড়ার স্তরের সমান।
অবশ্য এটি সবসময় খারাপ কিছুই ইঙ্গিত করে এমন নয়। প্রায়শই সরল গদ্যই ভালো গদ্য এবং খুব কম মানুষই রাজনীতিবিদদের দীর্ঘ ভাষণ পছন্দ করে। অধ্যাপক বেটস অবশ্য আরও হতাশাবাদী। তিনি আশঙ্কা করেন, জটিল গদ্য পড়ার ক্ষমতা হারালে আপনি হয়তো জটিল চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতাও হারাবেন। জটিল চিন্তা আপনাকে ‘সূক্ষ্ম তারতম্য দেখতে এবং দুটি পরস্পরবিরোধী চিন্তাকে একসঙ্গে ধারণ করতে’ সাহায্য করে।
পড়ার অভ্যাস কমে যাওয়ার ফলে আরও অনেক ক্ষতি হবে। স্কটিশ মেষপালকদের উদাহরণ থেকেই বুঝতে পারবেন সামাজিক গতিশীলতার জন্য বই পড়ার চেয়ে কার্যকর পদ্ধতি খুব কমই আছে। বৃত্তবান পরিবারের বাচ্চাদের বই পড়ার সুযোগ হয়ত বেশি। কিন্তু অক্ষরজ্ঞান আছে এমন যে কারোরই বইয়ের রাজ্যে প্রবেশের অধিকার আছে। এক্ষেত্রে বই পড়াকে একটা সাম্যবাদী চর্চা বলাই যায়। আপনার আয়া, আপনার গৃহশিক্ষক, আপনার বন্ধু বা আপনার অভিজাত স্কুল— কেউই আপনাকে বই পড়তে বাধ্য করতে পারে না, আপনি নিজে ছাড়া। পড়া কেবল একটি হাতিয়ার নয়, বরং এটি জীবনের অন্যতম সেরা আনন্দও বটে। ডিকেন্সের ‘গ্রেট এক্সপেকটেশনস’ উপন্যাসের কামার জো যেমনটা বলে, ‘আমাকে একটি ভালো বই দাও… আর আরামদায়ক একটা জায়গায় বসিয়ে দাও, এর চেয়ে বেশি কিছু আমি চাই না।’ মানুষ যখন এই আনন্দ ভুলে যাবে, তখন চারপাশটা সত্যিই ‘ব্লিক’ বা নিরানন্দের মনে হবে।
দ্য ইকোনমিস্ট থেকে অনুবাদ করেছেন তুফায়েল আহমদ
যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষার্থীদের চার্লস ডিকেন্সের ‘ব্লিক হাউস’ উপন্যাসের প্রথম কয়েকটি অনুচ্ছেদ পড়তে ও ব্যাখ্যা করতে দেওয়া হয়েছিল। অন্যভাবে বললে: ইংরেজি সাহিত্যের কিছু শিক্ষার্থীকে উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের ইংরেজি সাহিত্যের একটি উৎকৃষ্ট নিদর্শন পড়তে বলা হয়েছিল। কাজটা আর এমন কী কঠিন?
কিন্তু দেখা গেল, কাজটি অতিশয় কঠিন। উপন্যাসটির আইনি পরিভাষায় তারা হতবুদ্ধি আর রূপকের ব্যবহারে বিভ্রান্ত। ডিকেন্সের কুয়াশার বর্ণনা তাদের আরও বেশি বিভ্রমে ফেলে দিয়েছিল। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা সাধারণ শব্দের অর্থ বুঝতেও সক্ষম হচ্ছিল না। একজন ছাত্রের ধারণা, কোনো পুরুষের ‘হুইস্কার্স’ (whiskers) আছে বলার অর্থ হলো, তিনি ‘বোধহয় কোনো পশুর সঙ্গে এক ঘরে আছেন… সম্ভবত একটি বিড়াল?’ ভাবনার বিষয় আসলে সাহিত্যের শিক্ষার্থীদের এই সাহিত্যবিমুখতা নিয়ে নয়, বরং তাদের ন্যূনতম অক্ষরজ্ঞান না থাকা নিয়ে।
পড়ার অভ্যাস বর্তমানে একেবারেই কমে যাচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় পরিচালিত একাধিক সমীক্ষায় একই চিত্র ফুটে উঠছে। প্রাপ্তবয়স্করা কম পড়ছে, শিশুরা কম পড়ছে। কিশোর-কিশোরীরা পড়ছে আরও অনেক কম। খুব ছোট শিশুদের বই পড়ে শোনানোও কমে গেছে; অনেককে তো শোনানোই হয় না। বয়স, শ্রেণি, ভূগোল নির্বিশেষে সর্বত্র পড়ার অভ্যাস কমছে।
আধুনিক বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা জার্নাল আইসাইন্স-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে গত ২০ বছরে আনন্দের জন্য বই পড়া মানুষের সংখ্যা দুই-পঞ্চমাংশ (২/৫ অংশ) কমে গেছে। ইউগভ নামক একটি পোলিং সংস্থার গবেষণায় জানা গেছে, ২০২৪ সালে ৪০ শতাংশ ব্রিটিশ কোনো বই পড়েননি বা শোনেননি। নিরানন্দে পড়ার অবস্থাও খুব ভালো নয়: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক স্যার জোনাথন বেটস বলেন, তিন সপ্তাহে একটি উপন্যাস শেষ করতেও হিমশিম খায় শিক্ষার্থীরা। আরেকজন প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, এমনকি শিক্ষিত তরুণদেরও ‘একাগ্রতা ও মনোযোগের কোনো অভ্যাসই নেই’।
এ ধরনের হাহাকারকে অবশ্য কিছুটা সতর্কতার সঙ্গেই গ্রহণ করা উচিত। বইপ্রেমী মানুষেরা বইয়ের চেয়ে যদি কিছু বেশি ভালোবেসে থাকে, তবে তা হলো ‘বই না পড়া’ নিয়ে অভিযোগ করা। তারা বরাবরই এমনটা করে এসেছে। ওপরে যে প্রবীণ ব্যক্তির কথা বলা হলো, তিনি ছিলেন স্বয়ং ডিকেন্স। পরিহাস করে ‘ব্লিক হাউস’ উপন্যাসেই এই কথাটি বলেছিলেন তিনি।
মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক অদ্ভূত বৈপরীত্য দেখা যায়—একটা সময় ছিল যখন পড়ার অভ্যাস চালু হওয়াটাকেই দেখা হতো সংকট হিসেবে। গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিস যেমন বই পড়ার অভ্যাসের কারণে স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার আশঙ্কা করতেন। অন্যদিকে মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কারের আগে পুঁথি লেখার সময়ে অধিক বই লেখাকে এক প্রকার তথ্যের বিস্ফোরণ ও সমাজের জন্য ভার হিসেবে দেখা হতো। কিন্তু সময়ের ধারাবাহিকতায় মানুষ এখন আর বইয়ের আগমন নয়, বরং বিলুপ্তি নিয়েই বেশি চিন্তিত।
কিন্তু তর্কসাপেক্ষে বলা যায়, এখন যা ঘটছে, তা আসলেই নতুন। কেবল পড়ার পরিমাণই কমছে না; যা পড়া হচ্ছে, তার প্রকৃতিও বদলে যাচ্ছে। বাক্য ছোট ও সরল হয়ে আসছে। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এর শত শত বেস্টসেলার বই বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১৯৩০-এর দশকের তুলনায় জনপ্রিয় বইগুলোর বাক্য প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সংকুচিত হয়েছে।
ভিক্টোরীয় যুগের বেস্টসেলার জন রাসকিনের ‘মডার্ন পেইন্টার্স’-এর প্রথম বাক্যটিই ১৫৩ শব্দের। বইটিতে ‘ভ্রান্ত মতামত’ বিশ্বাস না করতে উপদেশ দেওয়া হয়েছে এবং বইয়ের একটি উপশিরোনামে বলা হয়েছে ‘জনমত উৎকর্ষের মাপকাঠি নয়’। অন্যদিকে, অ্যামাজনের বর্তমান নন-ফিকশন বেস্টসেলার মেল রবিনসের ‘দ্য লেট দেম থিওরি’র প্রথম বাক্যটি মাত্র ১৯ শব্দের। একটি উপশিরোনাম হলো ‘আমি যেভাবে আমার জীবন বদলেছি’। কোনো কাজ সম্পন্ন করতে হলে নাসার রকেট উৎক্ষেপণের মতো করে পেছন দিকে গণনা করা উচিত। কারণ ‘একবার আপনি কাউন্টডাউন শুরু করলে, ৫-৪-৩-২-১, আর পেছনে ফেরার পথ থাকে না’, এমন উপদেশ দেওয়া হয়েছে বইটিতে। এই তুলনাটিই আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, রাসকিন দু-একটি বিষয় সত্যিই জানতেন।
পড়ার অভ্যাস কমে যাওয়ার জন্য স্মার্টফোনকে দায়ী করা হয়। বর্তমান সময়ে নিঃসন্দেহে মনোযোগ সরানোর উপকরণের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু বইপড়া বরাবরই একটি ঝামেলার কাজ ছিল। প্রাচীন গ্রিক কবি ক্যালিমাকাস বলেছিলেন, ‘বড় বই মানেই বড় আপদ।’ এই কথাটি দুপুরের খাওয়াদাওয়ার পর বিশেষভাবে সত্য। এই ব্যাপারটি একজন লেখক ব্যাখ্যা করে বলেন, পাঠক পড়তে বসল, তারপর সূর্যের আলো এসে ঘরে ঢুকল, দিনটাকে ‘৫০ ঘণ্টা দীর্ঘ’ মনে হতে লাগল, পাঠক ‘চোখ রগড়াতে’ শুরু করল এবং অবশেষে বইটি মাথার নিচে রেখে… হালকা ঘুমে ঢলে পড়ল।’ এই পাঠক চতুর্থ শতকের সন্ন্যাসী ও তপস্বী হলে ঘুমে ঢলে পড়বেন। আর একুশ শতকের হলে স্ন্যাপচ্যাট কিংবা ইনস্টাগ্রাম নিয়ে মগ্ন হবে।
তবে মনোযোগ সরানোর উপকরণই যে বেড়েছে তা নয়; বরং পড়ার অদম্য ইচ্ছাই যেন কমে গেছে। ভিক্টোরীয় যুগে আত্ম-উন্নয়ন সমিতিগুলোর রমরমা অবস্থা ছিল। জোনাথন রোজ তাঁর অনবদ্য গ্রন্থ ‘দ্য ইনটেলেকচুয়াল লাইফ অব দ্য ব্রিটিশ ওয়ার্কিং ক্লাসেস’-এ লিখেছেন, স্কটল্যান্ডের পাহাড়ি অঞ্চলের মেষপালকেরা ‘এক ধরনের ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার’ চালু রেখেছিল। প্রত্যেক মেষপালক দেয়ালের ফাটলে অন্য মেষপালকদের পড়ার জন্য বই রেখে যেত। ভিক্টোরীয় যুগের কারখানা শ্রমিকেরা বই কেনার জন্য পয়সা জমাত। স্কটল্যান্ডে এক ছেলেকে থুসিডাইডিসের লেখা বই উপহার দিয়েছিলেন একজন ফেরিওয়ালা। ছেলেটি ব্রিটেনের প্রথম লেবার পার্টির প্রধানমন্ত্রী র্যামসে ম্যাকডোনাল্ড।
বই পড়ার মধ্য দিয়ে আত্মউন্নয়নের চর্চা বর্তমানে একদম কমে এসেছে। বইয়ের উচ্চমূল্য ও গ্রন্থাগারের অভাবকে অনেকেই পঠনপাঠনের চর্চা কমে যাওয়ার জন্য দায়ী করেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বইয়ের দাম এত সস্তা আগে কখনো ছিল না। রোমান যুগে একটি বইয়ের দাম ছিল একটি উটের তিন-চতুর্থাংশ। ভিক্টোরীয় যুগে লর্ড বায়রনের ‘চাইল্ড হ্যারল্ড’স পিলগ্রিমেজ’-এর একটি কপির দাম ছিল একজন শ্রমিকের প্রায় অর্ধ-সপ্তাহের আয়ের সমান। আজ ‘চাইল্ড হ্যারল্ড’স পিলগ্রিমেজ’ অনলাইনে বিনামূল্যে পাওয়া যায় এবং পাঠকেরা এক কাপ কফির চেয়েও কম দামে আরও অনেক বই খুঁজে নিতে পারেন। কিন্তু পড়ার হার ক্রমাগত কমছেই।
এর একটি সোজাসাপটা ব্যাখ্যা হলো, মানুষ আর এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে চায় না। অধ্যাপক বেটস ছাত্রদের বই না পড়ার অভ্যাস নিয়ে মন্তব্য করে সবাইকে রাগিয়ে তুলেছিলেন। যদিও তিনি স্বীকার করেন, এখনকার প্রজন্মকে নিয়ে বারবার এমন অভিযোগ হয়তো সেকেলে বুড়োর মতো শোনাতে পারে। কিন্তু বাস্তবে শুধু বেটস নন, যেকোনো অধ্যাপকের সঙ্গে কথা বললেই দেখবেন, তাঁরা ছাত্রদের মনোযোগ কমে যাওয়া নিয়ে আক্ষেপ করেন। অধ্যাপক বেটস যখন শিক্ষকতা শুরু করেন, তখন তিনি কোর্সে ‘ব্লিক হাউস’ পড়াতেন। আজ তিনি সেই চেষ্টাও করবেন না, কারণ একদিকে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ‘পড়ার পরিমাণ কমানোর জন্য অবিরাম চাপ’ রয়েছে, তেমনই অন্যদিকে শিক্ষার্থীদেরও এসব বই পড়তে আগ্রহ নেই। একাধিক সমীক্ষায় তরুণরা পড়াকে ‘বিরক্তিকর’ ও ‘উপায় না থাকায়, বাধ্যতামূলক কাজ’ আখ্যায়িত করেছেন।
প্রশ্ন তোলা যেতেই পারে: তাতে কী? ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপকেরা সাক্ষরতার হার কমে যাওয়া নিয়ে আক্ষেপ করতেই পারেন। কিন্তু এর পেছনে আছে নিছকই ব্যক্তিস্বার্থ। সংস্কৃতির অবক্ষয় নিয়ে তাঁদের দুশ্চিন্তা যতখানি, তার চেয়ে বেশি চিন্তা হয়তো নিজেদের শিক্ষার্থী বা ‘গ্রাহকের’ সংখ্যা কমে যাওয়া নিয়ে।
কিন্তু বাস্তবে সাক্ষরতার প্রভাব কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যতালিকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। সাহিত্যবোধ বা পঠন-পাঠনের অভ্যাসের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক প্রজ্ঞাও বৃদ্ধি পায় বলে মনে করা হয়। এর সবচেয়ে সরল উদাহরণটি হলো খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকের এথেন্স; সেখানকার অধিবাসীরা ভাঙা মাটির পাত্রের টুকরোর ওপর কোনো ব্যক্তির নাম লিখে তাকে নির্বাসিত করার জন্য ভোট দেওয়ার একটি প্রক্রিয়া চালু করেছিল, যাকে বলা হত অস্ট্রাসিজম। শিক্ষাবিদ উইলিয়াম হ্যারিসের মতে, তারা এই গণতান্ত্রিক কাজটি করতে সক্ষম হয়েছিল। কারণ সমাজের মধ্যে একটি ন্যূনতম পর্যায়ের সাক্ষরতা অর্জিত হয়েছিল।
অন্যদিকে, সাহিত্যিক পরিশীলতার হ্রাস হয়তো রাজনৈতিক পরিশীলতা হ্রাসের দিকেই পরিচালিত করে। ব্রিটেনের সংসদীয় বক্তৃতার ওপর বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, এক দশকে বক্তব্যের দৈর্ঘ্য এক-তৃতীয়াংশ কমেছে। প্রায় ২৫০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতিদের উদ্বোধনী ভাষণ ‘ফ্লেশ-কিনকেইড রিডেবিলিটি টেস্ট’ ব্যবহার করে বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জর্জ ওয়াশিংটনের স্কোর ছিল ২৮ দশমিক ৭, যা স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়ার স্তর নির্দেশ করে। আর ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্কোর ছিল ৯ দশমিক ৪, যা একজন হাইস্কুল পড়ুয়ার পড়ার স্তরের সমান।
অবশ্য এটি সবসময় খারাপ কিছুই ইঙ্গিত করে এমন নয়। প্রায়শই সরল গদ্যই ভালো গদ্য এবং খুব কম মানুষই রাজনীতিবিদদের দীর্ঘ ভাষণ পছন্দ করে। অধ্যাপক বেটস অবশ্য আরও হতাশাবাদী। তিনি আশঙ্কা করেন, জটিল গদ্য পড়ার ক্ষমতা হারালে আপনি হয়তো জটিল চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতাও হারাবেন। জটিল চিন্তা আপনাকে ‘সূক্ষ্ম তারতম্য দেখতে এবং দুটি পরস্পরবিরোধী চিন্তাকে একসঙ্গে ধারণ করতে’ সাহায্য করে।
পড়ার অভ্যাস কমে যাওয়ার ফলে আরও অনেক ক্ষতি হবে। স্কটিশ মেষপালকদের উদাহরণ থেকেই বুঝতে পারবেন সামাজিক গতিশীলতার জন্য বই পড়ার চেয়ে কার্যকর পদ্ধতি খুব কমই আছে। বৃত্তবান পরিবারের বাচ্চাদের বই পড়ার সুযোগ হয়ত বেশি। কিন্তু অক্ষরজ্ঞান আছে এমন যে কারোরই বইয়ের রাজ্যে প্রবেশের অধিকার আছে। এক্ষেত্রে বই পড়াকে একটা সাম্যবাদী চর্চা বলাই যায়। আপনার আয়া, আপনার গৃহশিক্ষক, আপনার বন্ধু বা আপনার অভিজাত স্কুল— কেউই আপনাকে বই পড়তে বাধ্য করতে পারে না, আপনি নিজে ছাড়া। পড়া কেবল একটি হাতিয়ার নয়, বরং এটি জীবনের অন্যতম সেরা আনন্দও বটে। ডিকেন্সের ‘গ্রেট এক্সপেকটেশনস’ উপন্যাসের কামার জো যেমনটা বলে, ‘আমাকে একটি ভালো বই দাও… আর আরামদায়ক একটা জায়গায় বসিয়ে দাও, এর চেয়ে বেশি কিছু আমি চাই না।’ মানুষ যখন এই আনন্দ ভুলে যাবে, তখন চারপাশটা সত্যিই ‘ব্লিক’ বা নিরানন্দের মনে হবে।
দ্য ইকোনমিস্ট থেকে অনুবাদ করেছেন তুফায়েল আহমদ
সালমান শাহ ছিলেন নব্বই দশকের তরুণ প্রজন্মের কাছে আদর্শ ও অনুপ্রেরণার নাম। স্মার্টনেস, আধুনিক মনন আর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব তাঁকে তরুণদের আইকনে পরিণত করেছিল।
১ দিন আগেআজ গিটার-জাদুকর জিমি হেনড্রিক্সের মৃত্যুদিন। রক আইকন জিমির মৃত্যুদিনে আমরা ফিরে দেখব ১৯৬৭ সালের মন্টেরি পপ ফেস্টিভ্যালের মঞ্চে তাঁর পারফরম্যান্সের দিকে। সেদিন কেন তিনি নিজের গিটারে আগুন ধরিয়েছিলেন? সেই মুহূর্তের ছবিকে আজও রক ইতিহাসের সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে মনে করা হয়।
২ দিন আগেগত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে আইফোন ১৭, আইফোন ১৭ প্রো, আইফোন ১৭ প্রো ম্যাক্স এবং আইফোন এয়ার নামের ৪টি মডেলের আইফোনের ঘোষণা এসেছে। এ নিয়ে টেক দুনিয়ায় চলছে নানা আলোচনা। আইফোন ১৭ সিরিজের ফোন নতুন কী নিয়ে এল? কেন কিনবেন অ্যাপলের নতুন সিরিজের ফোন? আর কেনই বা কিনবেন না?
৩ দিন আগে২০২৪ সালের শেষের দিকে কলকাতার শিয়ালদহ রেল স্টেশনের কাছে ছোট একটি খাবারের দোকান দক্ষিণ এশিয়ার লাখ লাখ মানুষের নজর কাড়ে। এর মালিক রাজু দাস, তবে তিনি রাজুদা নামেই বেশি পরিচিত।
৩ দিন আগে