আজ বিশ্ব হার্ট দিবস
রাতুল আল আহমেদ
আজকাল ফেসবুক খুললেই পাওয়া যায় হার্ট অ্যাটাকে অল্পবয়সী তরুণের মৃত্যু সংবাদ—যাদের বয়স ৩০ বা ৪০এর কোটায়। ফলে এ প্রশ্ন মাথায় আসা অস্বাভাবিক নয় যে বাংলাদেশের তরুণেরা এত হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে কেন?
এর একটা উত্তর লুকিয়ে আছে এখানকার মানুষদের জিনগত বৈশিষ্ট্যের ভেতর। ওয়াশিংটন হেলথের এক গবেষণায় দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৩ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশীয়দের ভেতর করোনারি ধমনি রোগে (করোনারি আর্টারি ডিজিজ) মৃত্যুহার সর্বোচ্চ ছিল। আর এটিই একমাত্র গোষ্ঠী যাদের মধ্যে এই হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে হার্টের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ইউরোপীয়দের তুলনায় দ্বিগুণ, জাপানিদের তুলনায় ছয় গুণ এবং চীনাদের তুলনায় বিশ গুণ বেশি। সাধারণত, অন্যান্য জনগোষ্ঠীর তুলনায় দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে হার্টের সমস্যা আট থেকে দশ বছর আগেই দেখা দেয়।
আইআইটি মাদ্রাজের এক গবেষণা অনুযায়ী, প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ দক্ষিণ এশীয়রা এমন একটি জেনেটিক মিউটেশনের বাহক যার ফলে তাদের হৃদরোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় । এসবের কারণ হিসেবে অনেক গবেষকই ঔপনিবেশিক শাসনের সময়কার দুর্ভিক্ষের ফলে জিনগত পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।
তরুণদের মধ্যে হৃদরোগ বৃদ্ধি পাওয়ার একটি কারণ হলো একটানা মানসিক চাপ এবং যথাযথ ঘুমের অভাব। বর্তমান সময়ের অস্বাস্থ্যকর কর্পোরেট সংস্কৃতি তরুণ এ প্রজন্মকে সবসময় মানসিক চাপের মধ্যে রাখছে। ভারতের একটি সমীক্ষা থেকে জানা যায়, প্রায় নয় জন ভারতীয়ের মধ্যে দশজন কর্মক্ষেত্র সম্পর্কিত উচ্চ মাত্রার চাপের কথা জানায়। দীর্ঘস্থায়ী উদ্বেগ প্রায়শই তাদের ঘুমের অবনতি ঘটায়।
জনস্বাস্থ্য গবেষক রুবিনা হক স্ট্রিমের সঙ্গে আলাপচারিতায় বলেন, ‘দীর্ঘস্থায়ী চাপ, অপর্যাপ্ত ঘুম ও অস্বাস্থ্যকর রুটিন তরুণ হার্টের নীরবে ক্ষতি করে চলছে। আমরা আধুনিক জীবনের ফলস্বরূপ তরুণদের শরীরকে আগের চেয়ে দ্রুত প্রভাবিত হতে দেখছি। গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলির মধ্যে রয়েছে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অপর্যাপ্ত শারীরিক কার্যকলাপ ও দীর্ঘস্থায়ী চাপ। আজকের তরুণরা প্রায়শই তাদের পেশাগত, আর্থিক ও সামাজিক জীবনে চাপের সম্মুখীন হয়, যা সরাসরি কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে।’
খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চা
খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চার ধরনেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। ঘরোয়া খাবারের পরিবর্তে প্রক্রিয়াজাত খাবার, মিষ্টি পানীয় এবং কার্বোহাইড্রেট-প্রধান ফাস্ট ফুড বেশি পরিমাণে খাওয়া হচ্ছে। প্রোটিনের গ্রহণ কমছে, কিন্তু চিনির ব্যবহার আকাশচুম্বী হয়েছে। শারীরিক কার্যকলাপও কমেছে, দীর্ঘ কর্মঘণ্টা, ডিজিটাল জীবনধারা এবং অলস রুটিন শরীরচর্চার জন্য খুব কমই অবকাশ রাখছে।
ধূমপানের মতো অভ্যাস সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ধূমপান হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে তোলে। এনার্জি ড্রিঙ্কস, যেগুলোতে প্রায়শই উচ্চমাত্রার ক্যাফেইন থাকে তা হার্টকে অতিরিক্ত উদ্দীপিত করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করতে পারে।
কোভিড অতিমারীর ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সম্ভাবনাও বাড়িয়ে তুলেছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে অতীতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ব্যক্তিদের সুস্থ হওয়ার আট মাসের মধ্যে গুরুতর কার্ডিয়াক জটিলতা বিকাশের সম্ভাবনা তিনগুণ বেশি।
এমনকি সুস্থ তরুণরাও সংক্রমণের পরে রক্তনালি ও হার্টের ক্ষতির কারণে হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হয়েছেন। রুবিনা হক একে ব্যাখ্যা করেছেন, ‘চিকিৎসা না করার ফলে যেসব হার্টের সমস্যা ডায়াগনোজ হয়নি সেসব অনেক তরুণের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে, বিশেষত কোভিড-১৯ এর পরে।’
জিমে ওয়ার্কআউট এবং হার্টের সমস্যার মধ্যে যোগসূত্র নিয়েও জনসাধারণের উদ্বেগ রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে ভয়টি অমূলক। ফিটনেস বিশেষজ্ঞ আতিকুর রহমান বলেছেন, ‘নিয়মিত জিম ব্যায়াম সরাসরি হার্টের সমস্যার কারণ হয় এমন কোনও প্রমাণ নেই। যে কেউ হার্ট অ্যাটাক হতে পারে, সে জিমে যাক বা না যাক। সন্দেহ মূলত এই কারণে তৈরি হয় যে বিশ্বের কিছু পেশাদার বডিবিল্ডার অল্প বয়সে মারা গেছেন। কিন্তু এটি সাধারণ ওয়ার্কআউটের চেয়ে ড্রাগ অপব্যবহারের সাথে বেশি সম্পর্কিত।’ আতিকুর রহমান জোর দিয়ে বলেছেন যে স্টেরয়েড ও গ্রোথ হরমোনের মতো ওষুধগুলি হার্টসহ অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোকে বিপজ্জনকভাবে বড় করতে পারে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এটি জিম সম্পর্কে নয়—এটি ওষুধের অপব্যবহার সম্পর্কে।’
আতিকুর রহমান সঠিক ব্যায়াম কৌশলের গুরুত্বও তুলে ধরেছেন। ‘ওয়ার্ম-আপ মানে কেবল আপনার শরীরের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়িয়ে এটিকে প্রস্তুত করা—যেমন দড়ি লাফানো, ট্রেডমিলে হাঁটা বা সাইকেল চালানো—যতক্ষণ না হালকা ঘাম হয়। কুলিং ডাউনও সমান গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি এই মৌলিক বিষয়গুলি অনুসরণ করেন, তবে জিম নিজেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি তৈরি করে না।’
রহমান জানান, জিম সামগ্রিক সুস্থতার একটি হাতিয়ার। ‘ফিটনেস মানে স্ট্যামিনা, শক্তি, নমনীয়তা, ওজন এবং মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখা। ব্যায়াম ডোপামিন ও সেরোটোনিনের মতো হরমোন নিঃসরণ করে চাপ কমাতেও সাহায্য করে। ওয়ার্কআউটের পরে সেই ভালো অনুভূতি হার্ট ও মন উভয়ের উপর জিমের ইতিবাচক প্রভাবের প্রমাণ।’
আশাব্যঞ্জক খবর হল যে বেশিরভাগ কার্ডিয়াক ঘটনা প্রতিরোধযোগ্য। বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা ক্লান্তির মতো প্রাথমিক সতর্কতামূলক লক্ষণগুলি চিনতে পারলে জীবন বাঁচানো যেতে পারে। নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখা, ফল, সবজি ও প্রোটিন সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য গ্রহণ করা, অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন গ্রহণ সীমিত করা, ধূমপান ত্যাগ করা, মানসম্মত ঘুম ও মানসিক চাপ মোকাবিলা করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া ইত্যাদি উল্লেখযোগ্যভাবে ঝুঁকি কমাতে পারে। ওয়ার্কআউট শুরু করার আগে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এখনকার তরুণদের মধ্যে হার্টের রোগ একটি চিকিৎসার চেয়েও মূলত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চ্যালেঞ্জ। জিনগত কারণগুলো সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে, তবে জীবনযাত্রার মান, চাপ ও অপর্যাপ্ত প্রতিরোধমূলক যত্ন তরুণদের সমস্যাগুলোকে আরও প্রভাবিত করছে। রুবিনা হক সতর্ক করে বলছেন, "আমরা তরুণ প্রজন্মের হৃদরোগের গুরুত্ব উপেক্ষা করতে পারি না। যদি আমরা এই পথে চলতে থাকি, তবে আমরা এমন একটি প্রজন্ম দেখতে পাব যারা হার্টের রোগে জর্জরিত।"
ফলে এই বিশ্ব হৃদরোগ দিবসে, বার্তাটি স্পষ্ট—তরুণদের হৃদয়ের স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। সচেতনতা, প্রতিরোধমূলক যত্ন এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনগুলি ঐচ্ছিক নয়, বরং এগুলো পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য অপরিহার্য।
আজকাল ফেসবুক খুললেই পাওয়া যায় হার্ট অ্যাটাকে অল্পবয়সী তরুণের মৃত্যু সংবাদ—যাদের বয়স ৩০ বা ৪০এর কোটায়। ফলে এ প্রশ্ন মাথায় আসা অস্বাভাবিক নয় যে বাংলাদেশের তরুণেরা এত হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে কেন?
এর একটা উত্তর লুকিয়ে আছে এখানকার মানুষদের জিনগত বৈশিষ্ট্যের ভেতর। ওয়াশিংটন হেলথের এক গবেষণায় দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৩ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশীয়দের ভেতর করোনারি ধমনি রোগে (করোনারি আর্টারি ডিজিজ) মৃত্যুহার সর্বোচ্চ ছিল। আর এটিই একমাত্র গোষ্ঠী যাদের মধ্যে এই হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে হার্টের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ইউরোপীয়দের তুলনায় দ্বিগুণ, জাপানিদের তুলনায় ছয় গুণ এবং চীনাদের তুলনায় বিশ গুণ বেশি। সাধারণত, অন্যান্য জনগোষ্ঠীর তুলনায় দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে হার্টের সমস্যা আট থেকে দশ বছর আগেই দেখা দেয়।
আইআইটি মাদ্রাজের এক গবেষণা অনুযায়ী, প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ দক্ষিণ এশীয়রা এমন একটি জেনেটিক মিউটেশনের বাহক যার ফলে তাদের হৃদরোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় । এসবের কারণ হিসেবে অনেক গবেষকই ঔপনিবেশিক শাসনের সময়কার দুর্ভিক্ষের ফলে জিনগত পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।
তরুণদের মধ্যে হৃদরোগ বৃদ্ধি পাওয়ার একটি কারণ হলো একটানা মানসিক চাপ এবং যথাযথ ঘুমের অভাব। বর্তমান সময়ের অস্বাস্থ্যকর কর্পোরেট সংস্কৃতি তরুণ এ প্রজন্মকে সবসময় মানসিক চাপের মধ্যে রাখছে। ভারতের একটি সমীক্ষা থেকে জানা যায়, প্রায় নয় জন ভারতীয়ের মধ্যে দশজন কর্মক্ষেত্র সম্পর্কিত উচ্চ মাত্রার চাপের কথা জানায়। দীর্ঘস্থায়ী উদ্বেগ প্রায়শই তাদের ঘুমের অবনতি ঘটায়।
জনস্বাস্থ্য গবেষক রুবিনা হক স্ট্রিমের সঙ্গে আলাপচারিতায় বলেন, ‘দীর্ঘস্থায়ী চাপ, অপর্যাপ্ত ঘুম ও অস্বাস্থ্যকর রুটিন তরুণ হার্টের নীরবে ক্ষতি করে চলছে। আমরা আধুনিক জীবনের ফলস্বরূপ তরুণদের শরীরকে আগের চেয়ে দ্রুত প্রভাবিত হতে দেখছি। গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলির মধ্যে রয়েছে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অপর্যাপ্ত শারীরিক কার্যকলাপ ও দীর্ঘস্থায়ী চাপ। আজকের তরুণরা প্রায়শই তাদের পেশাগত, আর্থিক ও সামাজিক জীবনে চাপের সম্মুখীন হয়, যা সরাসরি কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে।’
খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চা
খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চার ধরনেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। ঘরোয়া খাবারের পরিবর্তে প্রক্রিয়াজাত খাবার, মিষ্টি পানীয় এবং কার্বোহাইড্রেট-প্রধান ফাস্ট ফুড বেশি পরিমাণে খাওয়া হচ্ছে। প্রোটিনের গ্রহণ কমছে, কিন্তু চিনির ব্যবহার আকাশচুম্বী হয়েছে। শারীরিক কার্যকলাপও কমেছে, দীর্ঘ কর্মঘণ্টা, ডিজিটাল জীবনধারা এবং অলস রুটিন শরীরচর্চার জন্য খুব কমই অবকাশ রাখছে।
ধূমপানের মতো অভ্যাস সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ধূমপান হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে তোলে। এনার্জি ড্রিঙ্কস, যেগুলোতে প্রায়শই উচ্চমাত্রার ক্যাফেইন থাকে তা হার্টকে অতিরিক্ত উদ্দীপিত করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করতে পারে।
কোভিড অতিমারীর ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সম্ভাবনাও বাড়িয়ে তুলেছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে অতীতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ব্যক্তিদের সুস্থ হওয়ার আট মাসের মধ্যে গুরুতর কার্ডিয়াক জটিলতা বিকাশের সম্ভাবনা তিনগুণ বেশি।
এমনকি সুস্থ তরুণরাও সংক্রমণের পরে রক্তনালি ও হার্টের ক্ষতির কারণে হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হয়েছেন। রুবিনা হক একে ব্যাখ্যা করেছেন, ‘চিকিৎসা না করার ফলে যেসব হার্টের সমস্যা ডায়াগনোজ হয়নি সেসব অনেক তরুণের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে, বিশেষত কোভিড-১৯ এর পরে।’
জিমে ওয়ার্কআউট এবং হার্টের সমস্যার মধ্যে যোগসূত্র নিয়েও জনসাধারণের উদ্বেগ রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে ভয়টি অমূলক। ফিটনেস বিশেষজ্ঞ আতিকুর রহমান বলেছেন, ‘নিয়মিত জিম ব্যায়াম সরাসরি হার্টের সমস্যার কারণ হয় এমন কোনও প্রমাণ নেই। যে কেউ হার্ট অ্যাটাক হতে পারে, সে জিমে যাক বা না যাক। সন্দেহ মূলত এই কারণে তৈরি হয় যে বিশ্বের কিছু পেশাদার বডিবিল্ডার অল্প বয়সে মারা গেছেন। কিন্তু এটি সাধারণ ওয়ার্কআউটের চেয়ে ড্রাগ অপব্যবহারের সাথে বেশি সম্পর্কিত।’ আতিকুর রহমান জোর দিয়ে বলেছেন যে স্টেরয়েড ও গ্রোথ হরমোনের মতো ওষুধগুলি হার্টসহ অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোকে বিপজ্জনকভাবে বড় করতে পারে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এটি জিম সম্পর্কে নয়—এটি ওষুধের অপব্যবহার সম্পর্কে।’
আতিকুর রহমান সঠিক ব্যায়াম কৌশলের গুরুত্বও তুলে ধরেছেন। ‘ওয়ার্ম-আপ মানে কেবল আপনার শরীরের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়িয়ে এটিকে প্রস্তুত করা—যেমন দড়ি লাফানো, ট্রেডমিলে হাঁটা বা সাইকেল চালানো—যতক্ষণ না হালকা ঘাম হয়। কুলিং ডাউনও সমান গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি এই মৌলিক বিষয়গুলি অনুসরণ করেন, তবে জিম নিজেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি তৈরি করে না।’
রহমান জানান, জিম সামগ্রিক সুস্থতার একটি হাতিয়ার। ‘ফিটনেস মানে স্ট্যামিনা, শক্তি, নমনীয়তা, ওজন এবং মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখা। ব্যায়াম ডোপামিন ও সেরোটোনিনের মতো হরমোন নিঃসরণ করে চাপ কমাতেও সাহায্য করে। ওয়ার্কআউটের পরে সেই ভালো অনুভূতি হার্ট ও মন উভয়ের উপর জিমের ইতিবাচক প্রভাবের প্রমাণ।’
আশাব্যঞ্জক খবর হল যে বেশিরভাগ কার্ডিয়াক ঘটনা প্রতিরোধযোগ্য। বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা ক্লান্তির মতো প্রাথমিক সতর্কতামূলক লক্ষণগুলি চিনতে পারলে জীবন বাঁচানো যেতে পারে। নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখা, ফল, সবজি ও প্রোটিন সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য গ্রহণ করা, অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন গ্রহণ সীমিত করা, ধূমপান ত্যাগ করা, মানসম্মত ঘুম ও মানসিক চাপ মোকাবিলা করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া ইত্যাদি উল্লেখযোগ্যভাবে ঝুঁকি কমাতে পারে। ওয়ার্কআউট শুরু করার আগে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এখনকার তরুণদের মধ্যে হার্টের রোগ একটি চিকিৎসার চেয়েও মূলত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চ্যালেঞ্জ। জিনগত কারণগুলো সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে, তবে জীবনযাত্রার মান, চাপ ও অপর্যাপ্ত প্রতিরোধমূলক যত্ন তরুণদের সমস্যাগুলোকে আরও প্রভাবিত করছে। রুবিনা হক সতর্ক করে বলছেন, "আমরা তরুণ প্রজন্মের হৃদরোগের গুরুত্ব উপেক্ষা করতে পারি না। যদি আমরা এই পথে চলতে থাকি, তবে আমরা এমন একটি প্রজন্ম দেখতে পাব যারা হার্টের রোগে জর্জরিত।"
ফলে এই বিশ্ব হৃদরোগ দিবসে, বার্তাটি স্পষ্ট—তরুণদের হৃদয়ের স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। সচেতনতা, প্রতিরোধমূলক যত্ন এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনগুলি ঐচ্ছিক নয়, বরং এগুলো পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য অপরিহার্য।
সম্প্রতি তামিলনাড়ুর করুরে থালাপতি বিজয়ের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়ে পদদলিত হয়ে প্রায় ৪০ জন ভক্তের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় দক্ষিণ ভারতে তারকাখ্যাতি ও রাজনৈতিক সমাবেশের বিস্ফোরক শক্তি আবারও আলোচনায় এসেছে।
৭ ঘণ্টা আগেসমাবেশে হঠাৎ ভিড়ের চাপে পদদলিত হয়ে অন্তত ৪০ জন মারা যান। নিহতদের ১০ জন শিশু ও ১৭ জন নারী। এতে আহত হন আরও প্রায় ৮০ জন।
১ দিন আগেবাংলাদেশে ‘তথ্য অধিকার আইন’ কার্যকর হওয়ার পনেরো বছর পেরিয়ে গেছে। গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হিসেবে তথ্যপ্রাপ্তির অধিকারকে সংবিধান স্বীকৃতি দিয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই অধিকার কি বাস্তবে নাগরিকের জীবনে কোনো মৌলিক পরিবর্তন আনতে পেরেছে?
১ দিন আগেবিশ্বজুড়ে মেধাবী তরুণদের অন্যতম এক স্বপ্নের নাম আমেরিকার এইচ-ওয়ান-বি ভিসা। এর মাধ্যমে তাঁরা আমেরিকায় গিয়ে বৈধভাবে বসবাস ও পড়াশোনা বা গবেষণার কাজ এগিয়ে নিতে পারেন। যুগে যুগে এই প্রথা মেধাবী তরুণ বা উদ্যোক্তাদের যেমন সাহায্য করছে, তেমনি আমেরিকাও বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হচ্ছে বলে এত দিন ধারণা ছিল। এর জন্য
১ দিন আগে