ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সোনালি সময়ে রূপালি পর্দার জীবন থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে ভক্তদের একরকম ধাক্কাই দিয়েছিলেন দক্ষিণ ভারতের সুপারস্টার বিজয় থালাপতি। তবে সেই ধাক্কা ছাপিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছেন রাজনীতিবিদ হিসেবে। নিজের গঠিত নতুন রাজনৈতিক দলের জমকালো রাজ্য সম্মেলনের অনুষ্ঠানের লাখো ভক্তের সামনে থালাপতির দেওয়া বক্তব্য রীতিমতো ঝড় তুলেছে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে। সিনেমাজগতের জনপ্রিয় নায়ক এবার বাস্তব রাজনীতির ময়দানে নামতে চলেছেন পূর্ণ সময়ের যোদ্ধা হয়ে। প্রশ্ন জাগে— কেন এই সিদ্ধান্ত, তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ কতটা আলাদা, আর নিজের ক্যারিয়ারের সোনালি সময়ে রাজনীতির ঝুঁকিপূর্ণ পথে হাঁটার রহস্যই বা কী! চলুন, খোঁজা যাক।
তুফায়েল আহমদ
গত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) তামিলগা ভেট্টি কাজাগমের (টিভিকে) রাজ্য সম্মেলনে দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সুপারস্টার বিজয় দাবি করেন, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) একদিকে ধর্মকে ব্যবহার করছে বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে, অন্যদিকে গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এই মুহূর্তে ফ্যাসিবাদী বিজেপি তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় আদর্শিক শত্রু।
এমন মন্তব্যের পরপরই বিজয়কে নিয়ে ভারতের রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। তামিলনাড়ু রাজ্যের বিজেপির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়েও বিজয়ের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন অনেকে। এমনকি তামিলনাড়ুর ক্ষমতাসীন দ্রাবিড় মুনেত্র কড়গমের (ডিএমকে) নেতাকর্মীরাও যোগ দিয়েছেন এই সমালোচনার মিছিলে। তবে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভারতের সিনেমাপ্রেমী ও তরুণদের মধ্যে বিজয়ের এই বক্তব্য দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশেও সিনেমার সুপারস্টার বিজয়ের ফ্যান রয়েছেন। এই বক্তব্যের পর তাই খুব দ্রুতই বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই বিজয়কে নিয়ে আলোচনার জোয়ার উঠেছে। তবে এবার তাঁর সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত কোনো সিনেমা কিংবা তাঁর কোনো ভালো সিনেমার আলোচনা-সমালোচনা নিয়ে নয়, বরং রাজনীতির মাঠে বিজয়ের ভবিষ্যৎ এবং রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শুরুতেই এমন দীপ্ত কণ্ঠে ভারতের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধারী প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার সাহসেরই প্রশংসা করছেন সবাই।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিজয় আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন এবং নিজের রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেট্টি কাজাগম (টিভিকে) গঠন করেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তামিলনাড়ুতে তাঁর এই দল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অদূর ভবিষ্যতে টিভিকে অন্যান্য প্রতিবেশী রাজ্যেও তাদের প্রভাব প্রসারিত করতে পারে এমন সম্ভাবনা দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
ভারতে বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতে সিনেমার পর্দা থেকে রাজনৈতিক ময়দানে পা রাখার নজির অসংখ্য। বলিউড তারকা অক্ষয় কুমারের মতো বিজেপিকে কুসুমকুসুম কিংবা অনুপম খেরের মতো পরোক্ষ সমর্থন নয়, বরং সরাসরি রাজনীতিতে অংশ নেওয়া তারকাদের তালিকাও নেহায়েত ছোট নয়। এম জি রামচন্দ্রন, কমল হাসান, জয়ললিতার মতো অনেক জনপ্রিয় তারকাও আছেন এই তালিকায়। তামিলনাড়ুর সবচে কমবয়সী বর্তমান উপ-মুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্ট্যালিনও ছিলেন তামিল সিনেমার উঠতি এক জনপ্রিয় তারকা।
এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বিজয়ের রাজনীতিতে যোগ দেওয়া, সরাসরি রাজ্য ও জাতীয় পর্যায়ের ক্ষমতাসীন দলের বিরোধিতা করার তাৎপর্য বোঝার জন্য, কেন তিনি রাজনীতিতে এলেন, তাঁর আদর্শ কী, ও দক্ষিণ ভারতের অন্য মহাতারকাদের থেকে তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা আলাদা কোথায়? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জরুরি হয়ে ওঠে।
কেন রাজনীতিতে এলেন বিজয়?
গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বিজয় তামিল সিনেমার শীর্ষ তারকাদের একজন। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিজয় ঘোষণা করেন, যে দুটি সিনেমা তাঁর হাতে আছে, এর শ্যুটিং হয়ে গেলে তিনি আর সিনেমা করবেন না। সম্পূর্ণভাবে রাজনীতিতে মনোনিবেশ করবেন। বিজয়ের এমন ঘোষণা অনেকেই অবাক করে দিলেও একদম আকস্মিক ছিল না। ২০০৯ সালে গঠিত বিজয়ের ফ্যানক্লাব বিজয় মক্কাল আইয়াক্কম (ভিএমআই) তামিলনাড়ুতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহায়তা থেকে শুরু করে শিক্ষাক্ষেত্রে উদ্যোগসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিত। ২০২১ সালে এই সংগঠনের সদস্যরা তামিলনাড়ুর স্থানীয় সরকার নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে ১৬৯টির মধ্যে ১১৫টি আসনে জয়ী হন। এরপর থেকেই তামিলনাড়ুর সাধারণ মানুষের আলোচনায় বারবার বিজয়ের সিনেমার জনপ্রিয়তাকে ভোটে রূপান্তর করার দাবি ওঠে। তামিলনাড়ুর আর্থসামাজিক উন্নয়নে শুধু সিনেমা দিয়ে নয়, সরাসরি অংশ নেওয়ার অনুরোধ করতে থাকেন তাঁর ভক্তরা।
বিজয় নিজেই বলেছেন, রাজনীতিতে তাঁর কাছে ‘তামিল জনগণের কৃতজ্ঞতার ঋণ শোধ’ করার পথ। দুর্নীতি, বিভাজন ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার সময় তিনি আর নীরব দর্শক হয়ে থাকতে চাননি। তাই স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত শাসনের লক্ষ্যে তিনি গড়ে তুলেছেন একটি নতুন রাজনৈতিক দল। অন্য তারকাদের মতো সিনেমার পাশাপাশি রাজনীতিকে শখের মতো না নিয়ে বিজয় জানিয়ে দিয়েছেন, এটাই তাঁর পূর্ণকালীন ও আন্তরিক যাত্রা।
২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘সরকার’-এ বিজয় অভিনয় করেছিলেন ভোট জালিয়াতির কারণে নিজের ভোট দিতে পারেননি- এমন এক নাগরিকের ভূমিকায়। পরবর্তী সময়ে নিজের ভোটের অধিকারের দাবিতে আন্দোলনে নেমে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলকে পরাজিত করার পাশাপাশি খোদ রাজনীতিতে যে নিয়ে আসে যুগান্তকারী কিছু পরিবর্তন। সিনেমার শেষ দৃশ্যে, নিজের গঠিত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে জয়ী হওয়া সত্ত্বেও বিজয় অভিনীত সুন্দর রামাস্বামী চরিত্রটি সিদ্ধান্ত নেয় মুখ্যমন্ত্রী না হয়ে, বরং সে বিরোধী দলে যোগ দেবে। কারণ, গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ক্ষমতাসীন দলকে সবসময় প্রশ্ন ও জবাবদিহির মুখোমুখি রাখা।
অনেকেই দাবি করেন, তামিল সমাজে এমন নির্মল, সৎ রাজনীতির প্রচার এবং প্রথাগত ক্ষমতার বলয়কে ভেঙে দিতেই রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন বিজয়।
তামিলাগা ভেট্ট্রি কাজাগমের (টিভিকে) ঘোষণাপত্র অনুযায়ী, দলটির রাজনীতির ভিত্তি হচ্ছে সেক্যুলারিজম (ইহজাগতিকতাবাদ) ও সামাজিক ন্যায়বিচার। ধর্ম, জাত, ভাষাসহ কোনো ধরনের পরিচয়ভিত্তিক বিদ্বেষ বা সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বিরুদ্ধে দলটি সরাসরি অবস্থান নেবে। বিশ্লেষকদের দাবি, দলটির আদর্শিক কাঠামোতে ভারতীয় সমাজ সংস্কারক ভীমরাও রামজি আম্বেদকরের ‘আম্বেদকরবাদ’, ভারতে দ্রাবিড়িয়ান রাজনীতির প্রভাবশালী নেতা পেরিয়ার ই ভি রামাস্বামীর ‘পেরিয়ারবাদের’ পাশাপাশি কিছু কিছু ক্ষেত্রে জার্মান দার্শনিক কার্ল মার্ক্সের সমাজতান্ত্রিক ভাবনার প্রভাবও স্পষ্ট।
বর্ণসমতা, যুক্তিবাদ ও সামাজিক সমঅধিকারকে কেন্দ্র করেই দলটি রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেছে। বিজয়ের ভাষ্যমতে, দ্রাবিড়িয়ান চেতনা ও তামিল জাতীয়তাবাদ হলো ‘একই মাটির দুই নয়ন’। তিনি যেমন তামিল গৌরবের রক্ষক, তেমনি সামাজিক সংস্কারেরও বিশ্বাসী।
বাস্তব রাজনীতিতে এর মানে দাঁড়ায় শিক্ষা, তরুণদের ক্ষমতায়ন, কৃষকের কল্যাণ ও দুর্নীতিমুক্ত শাসনে টিভিকে গুরুত্ব দিতে চায়। বিজয় বারবার বলেছেন, তিনি রাজনীতিকে শখ বা খ্যাতির বিস্তার হিসেবে দেখেন না; বরং দেখেন জনগণের অধিকারের জন্য লড়াইয়ের এক যুদ্ধক্ষেত্র। সম্প্রতি বিজেপির সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দেওয়া দলটির সেক্যুলার অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।
দক্ষিণ ভারতের তারকাদের রাজনীতিতে প্রবেশের ইতিহাস
দক্ষিণ ভারত তথা তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, কেরালা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্ণাটকে সিনেমার রূপালি পর্দা থেকে রাজনীতির মাঠে আসা সুপারস্টার বিজয়ই প্রথম নন। তামিল রাজনীতিকে তো বহু দশক ধরেই গড়ে তুলেছে সিনেমা। এম জি রামাচন্দ্রন (এমজিআর) নিজের বিপুল জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ১৯৭২ সালে এআইএডিএমকে গড়ে তুলেছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে এক অদম্য রাজনৈতিক শক্তি হয়ে ওঠেন। তাঁর শিষ্য জয়ললিতাও একই পথ ধরে বহু মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী হন।
সাম্প্রতিক সময়ে অনেকেই এই ধারা অনুসরণের চেষ্টা করেছেন। দক্ষিণের আরেক সুপারস্টার রজনীকান্ত ২০১৭ সালে রাজনীতিতে নামার ঘোষণা দিলেও পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্যগত কারণে পিছিয়ে আসেন। কমল হাসান ২০১৮ সালে গড়ে তোলেন মক্কাল নীধি মাইয়াম, তবে এখনো বড় কোনো সাফল্য পাননি। প্রতিবেশী অন্ধ্রপ্রদেশে চিরঞ্জীবী ২০০৮ সালে প্রজা রাজ্যম পার্টি গড়লেও শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেন। তাঁর ভাই পবন কল্যাণ এখনো জনসেনা পার্টি চালিয়ে যাচ্ছেন।
অভিনয় থেকে পাওয়া জনপ্রিয়তা নিঃসন্দেহে রাজনীতিতে প্রবেশের পথ খুলে দেয়। তবে কেবল ভক্তশ্রেণি দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য সম্ভব নয়, বরং প্রয়োজন সংগঠন, আদর্শ ও রাজনৈতিক সক্ষমতা।
বিজয়ের রাজনৈতিক যাত্রায় দুটি বিষয় বিশেষভাবে আলাদা। প্রথমত, বিজয় সিনেমা ছেড়ে রাজনীতিতে এসেছেন ক্যারিয়ারের শীর্ষ সময়ে। এম জি আর বা জয়ললিতা ধীরে ধীরে সিনেমা থেকে রাজনীতিতে পা বাড়ান। রজনীকান্ত কিংবা চিরঞ্জীবীও একই সময় সিনেমা আর রাজনীতি দুই দিক সামলেছেন। কিন্তু বিজয় সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, সিনেমা নয়, রাজনীতিই এখন তাঁর একমাত্র পূর্ণকালীন পথ।
দ্বিতীয়ত, আদর্শিক স্বচ্ছতা। রাজ্য ও কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়ে বিজয় তাঁর রাজনীতি শুরু করেছেন সেক্যুলারিজম ও সামাজিক ন্যায়ের আদর্শ থেকে। বিজয় নিজেকে শুধু ডিএমকে কিংবা এআইএডিএমকের বিকল্প হিসেবে নয়, বরং দ্রাবিড়িয়ান রাজনৈতিক ধারার উত্তরসূরি ও নতুন এক সম্ভাবনা হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন।
ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে সিনেমা ছেড়ে কেন রাজনীতিতে
বিজয়ের গল্পের সবচেয়ে নাটকীয় দিক হলো, ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উৎকর্ষতার সময়ে এসে সিনেমা ছেড়ে দেওয়া। ভারতের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া ও সর্বাধিক জনপ্রিয় তারকাদের একজন ছিলেন বিজয়। তাঁর ছবি একের পর এক রেকর্ড ভাঙছিল। তবু তিনি ঘোষণা করলেন, ব্যক্তিগত গৌরব আর বিপুল অর্থের লোভ ছেড়ে তিনি রাজনীতিতে আসবেন।
তাঁর ভাষায়, এই ত্যাগই তাঁর আন্তরিকতার প্রমাণ। সিনেমা করে রাজনীতিকে পার্শ্বপথে চালানোর কোনো ইচ্ছে নেই তাঁর। তিনি বিশ্বাস করেন, রাজনীতি হলো সেবা, আর সেবা আংশিকভাবে করা যায় না। তাই সিনেমা ছাড়াটা শুধু ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, প্রতীকী বার্তাও। মানুষ যাতে নিশ্চিত হয়, তিনি রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য সত্যিই আন্তরিক।
থালাপতি বিজয়ের রাজনীতিতে আগমন নিছক জনতুষ্টিমুলক সিদ্ধান্ত নয়, বরং তামিল সমাজে স্বচ্ছ, সাম্যভিত্তিক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির নতুন সম্ভাবনা। সিনেমার হিরো এবার বাস্তবের ময়দানে ভিন্ন এক লড়াই শুরু করেছেন। তিনি সাফল্য পাবেন কি না, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ক্যারিয়ারের শীর্ষ সময়ে সিনেমা ছেড়ে জনগণের সেবায় নামার এই সাহসী পদক্ষেপই অনেকের থেকে তাঁকে ব্যতিক্রম করে তুলেছে।
গত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) তামিলগা ভেট্টি কাজাগমের (টিভিকে) রাজ্য সম্মেলনে দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সুপারস্টার বিজয় দাবি করেন, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) একদিকে ধর্মকে ব্যবহার করছে বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে, অন্যদিকে গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এই মুহূর্তে ফ্যাসিবাদী বিজেপি তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় আদর্শিক শত্রু।
এমন মন্তব্যের পরপরই বিজয়কে নিয়ে ভারতের রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। তামিলনাড়ু রাজ্যের বিজেপির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়েও বিজয়ের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন অনেকে। এমনকি তামিলনাড়ুর ক্ষমতাসীন দ্রাবিড় মুনেত্র কড়গমের (ডিএমকে) নেতাকর্মীরাও যোগ দিয়েছেন এই সমালোচনার মিছিলে। তবে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভারতের সিনেমাপ্রেমী ও তরুণদের মধ্যে বিজয়ের এই বক্তব্য দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশেও সিনেমার সুপারস্টার বিজয়ের ফ্যান রয়েছেন। এই বক্তব্যের পর তাই খুব দ্রুতই বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই বিজয়কে নিয়ে আলোচনার জোয়ার উঠেছে। তবে এবার তাঁর সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত কোনো সিনেমা কিংবা তাঁর কোনো ভালো সিনেমার আলোচনা-সমালোচনা নিয়ে নয়, বরং রাজনীতির মাঠে বিজয়ের ভবিষ্যৎ এবং রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শুরুতেই এমন দীপ্ত কণ্ঠে ভারতের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধারী প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার সাহসেরই প্রশংসা করছেন সবাই।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিজয় আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন এবং নিজের রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেট্টি কাজাগম (টিভিকে) গঠন করেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তামিলনাড়ুতে তাঁর এই দল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অদূর ভবিষ্যতে টিভিকে অন্যান্য প্রতিবেশী রাজ্যেও তাদের প্রভাব প্রসারিত করতে পারে এমন সম্ভাবনা দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
ভারতে বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতে সিনেমার পর্দা থেকে রাজনৈতিক ময়দানে পা রাখার নজির অসংখ্য। বলিউড তারকা অক্ষয় কুমারের মতো বিজেপিকে কুসুমকুসুম কিংবা অনুপম খেরের মতো পরোক্ষ সমর্থন নয়, বরং সরাসরি রাজনীতিতে অংশ নেওয়া তারকাদের তালিকাও নেহায়েত ছোট নয়। এম জি রামচন্দ্রন, কমল হাসান, জয়ললিতার মতো অনেক জনপ্রিয় তারকাও আছেন এই তালিকায়। তামিলনাড়ুর সবচে কমবয়সী বর্তমান উপ-মুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্ট্যালিনও ছিলেন তামিল সিনেমার উঠতি এক জনপ্রিয় তারকা।
এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বিজয়ের রাজনীতিতে যোগ দেওয়া, সরাসরি রাজ্য ও জাতীয় পর্যায়ের ক্ষমতাসীন দলের বিরোধিতা করার তাৎপর্য বোঝার জন্য, কেন তিনি রাজনীতিতে এলেন, তাঁর আদর্শ কী, ও দক্ষিণ ভারতের অন্য মহাতারকাদের থেকে তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা আলাদা কোথায়? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জরুরি হয়ে ওঠে।
কেন রাজনীতিতে এলেন বিজয়?
গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বিজয় তামিল সিনেমার শীর্ষ তারকাদের একজন। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিজয় ঘোষণা করেন, যে দুটি সিনেমা তাঁর হাতে আছে, এর শ্যুটিং হয়ে গেলে তিনি আর সিনেমা করবেন না। সম্পূর্ণভাবে রাজনীতিতে মনোনিবেশ করবেন। বিজয়ের এমন ঘোষণা অনেকেই অবাক করে দিলেও একদম আকস্মিক ছিল না। ২০০৯ সালে গঠিত বিজয়ের ফ্যানক্লাব বিজয় মক্কাল আইয়াক্কম (ভিএমআই) তামিলনাড়ুতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহায়তা থেকে শুরু করে শিক্ষাক্ষেত্রে উদ্যোগসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিত। ২০২১ সালে এই সংগঠনের সদস্যরা তামিলনাড়ুর স্থানীয় সরকার নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে ১৬৯টির মধ্যে ১১৫টি আসনে জয়ী হন। এরপর থেকেই তামিলনাড়ুর সাধারণ মানুষের আলোচনায় বারবার বিজয়ের সিনেমার জনপ্রিয়তাকে ভোটে রূপান্তর করার দাবি ওঠে। তামিলনাড়ুর আর্থসামাজিক উন্নয়নে শুধু সিনেমা দিয়ে নয়, সরাসরি অংশ নেওয়ার অনুরোধ করতে থাকেন তাঁর ভক্তরা।
বিজয় নিজেই বলেছেন, রাজনীতিতে তাঁর কাছে ‘তামিল জনগণের কৃতজ্ঞতার ঋণ শোধ’ করার পথ। দুর্নীতি, বিভাজন ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার সময় তিনি আর নীরব দর্শক হয়ে থাকতে চাননি। তাই স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত শাসনের লক্ষ্যে তিনি গড়ে তুলেছেন একটি নতুন রাজনৈতিক দল। অন্য তারকাদের মতো সিনেমার পাশাপাশি রাজনীতিকে শখের মতো না নিয়ে বিজয় জানিয়ে দিয়েছেন, এটাই তাঁর পূর্ণকালীন ও আন্তরিক যাত্রা।
২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘সরকার’-এ বিজয় অভিনয় করেছিলেন ভোট জালিয়াতির কারণে নিজের ভোট দিতে পারেননি- এমন এক নাগরিকের ভূমিকায়। পরবর্তী সময়ে নিজের ভোটের অধিকারের দাবিতে আন্দোলনে নেমে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলকে পরাজিত করার পাশাপাশি খোদ রাজনীতিতে যে নিয়ে আসে যুগান্তকারী কিছু পরিবর্তন। সিনেমার শেষ দৃশ্যে, নিজের গঠিত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে জয়ী হওয়া সত্ত্বেও বিজয় অভিনীত সুন্দর রামাস্বামী চরিত্রটি সিদ্ধান্ত নেয় মুখ্যমন্ত্রী না হয়ে, বরং সে বিরোধী দলে যোগ দেবে। কারণ, গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ক্ষমতাসীন দলকে সবসময় প্রশ্ন ও জবাবদিহির মুখোমুখি রাখা।
অনেকেই দাবি করেন, তামিল সমাজে এমন নির্মল, সৎ রাজনীতির প্রচার এবং প্রথাগত ক্ষমতার বলয়কে ভেঙে দিতেই রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন বিজয়।
তামিলাগা ভেট্ট্রি কাজাগমের (টিভিকে) ঘোষণাপত্র অনুযায়ী, দলটির রাজনীতির ভিত্তি হচ্ছে সেক্যুলারিজম (ইহজাগতিকতাবাদ) ও সামাজিক ন্যায়বিচার। ধর্ম, জাত, ভাষাসহ কোনো ধরনের পরিচয়ভিত্তিক বিদ্বেষ বা সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বিরুদ্ধে দলটি সরাসরি অবস্থান নেবে। বিশ্লেষকদের দাবি, দলটির আদর্শিক কাঠামোতে ভারতীয় সমাজ সংস্কারক ভীমরাও রামজি আম্বেদকরের ‘আম্বেদকরবাদ’, ভারতে দ্রাবিড়িয়ান রাজনীতির প্রভাবশালী নেতা পেরিয়ার ই ভি রামাস্বামীর ‘পেরিয়ারবাদের’ পাশাপাশি কিছু কিছু ক্ষেত্রে জার্মান দার্শনিক কার্ল মার্ক্সের সমাজতান্ত্রিক ভাবনার প্রভাবও স্পষ্ট।
বর্ণসমতা, যুক্তিবাদ ও সামাজিক সমঅধিকারকে কেন্দ্র করেই দলটি রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেছে। বিজয়ের ভাষ্যমতে, দ্রাবিড়িয়ান চেতনা ও তামিল জাতীয়তাবাদ হলো ‘একই মাটির দুই নয়ন’। তিনি যেমন তামিল গৌরবের রক্ষক, তেমনি সামাজিক সংস্কারেরও বিশ্বাসী।
বাস্তব রাজনীতিতে এর মানে দাঁড়ায় শিক্ষা, তরুণদের ক্ষমতায়ন, কৃষকের কল্যাণ ও দুর্নীতিমুক্ত শাসনে টিভিকে গুরুত্ব দিতে চায়। বিজয় বারবার বলেছেন, তিনি রাজনীতিকে শখ বা খ্যাতির বিস্তার হিসেবে দেখেন না; বরং দেখেন জনগণের অধিকারের জন্য লড়াইয়ের এক যুদ্ধক্ষেত্র। সম্প্রতি বিজেপির সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দেওয়া দলটির সেক্যুলার অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।
দক্ষিণ ভারতের তারকাদের রাজনীতিতে প্রবেশের ইতিহাস
দক্ষিণ ভারত তথা তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, কেরালা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্ণাটকে সিনেমার রূপালি পর্দা থেকে রাজনীতির মাঠে আসা সুপারস্টার বিজয়ই প্রথম নন। তামিল রাজনীতিকে তো বহু দশক ধরেই গড়ে তুলেছে সিনেমা। এম জি রামাচন্দ্রন (এমজিআর) নিজের বিপুল জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ১৯৭২ সালে এআইএডিএমকে গড়ে তুলেছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে এক অদম্য রাজনৈতিক শক্তি হয়ে ওঠেন। তাঁর শিষ্য জয়ললিতাও একই পথ ধরে বহু মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী হন।
সাম্প্রতিক সময়ে অনেকেই এই ধারা অনুসরণের চেষ্টা করেছেন। দক্ষিণের আরেক সুপারস্টার রজনীকান্ত ২০১৭ সালে রাজনীতিতে নামার ঘোষণা দিলেও পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্যগত কারণে পিছিয়ে আসেন। কমল হাসান ২০১৮ সালে গড়ে তোলেন মক্কাল নীধি মাইয়াম, তবে এখনো বড় কোনো সাফল্য পাননি। প্রতিবেশী অন্ধ্রপ্রদেশে চিরঞ্জীবী ২০০৮ সালে প্রজা রাজ্যম পার্টি গড়লেও শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেন। তাঁর ভাই পবন কল্যাণ এখনো জনসেনা পার্টি চালিয়ে যাচ্ছেন।
অভিনয় থেকে পাওয়া জনপ্রিয়তা নিঃসন্দেহে রাজনীতিতে প্রবেশের পথ খুলে দেয়। তবে কেবল ভক্তশ্রেণি দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য সম্ভব নয়, বরং প্রয়োজন সংগঠন, আদর্শ ও রাজনৈতিক সক্ষমতা।
বিজয়ের রাজনৈতিক যাত্রায় দুটি বিষয় বিশেষভাবে আলাদা। প্রথমত, বিজয় সিনেমা ছেড়ে রাজনীতিতে এসেছেন ক্যারিয়ারের শীর্ষ সময়ে। এম জি আর বা জয়ললিতা ধীরে ধীরে সিনেমা থেকে রাজনীতিতে পা বাড়ান। রজনীকান্ত কিংবা চিরঞ্জীবীও একই সময় সিনেমা আর রাজনীতি দুই দিক সামলেছেন। কিন্তু বিজয় সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, সিনেমা নয়, রাজনীতিই এখন তাঁর একমাত্র পূর্ণকালীন পথ।
দ্বিতীয়ত, আদর্শিক স্বচ্ছতা। রাজ্য ও কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়ে বিজয় তাঁর রাজনীতি শুরু করেছেন সেক্যুলারিজম ও সামাজিক ন্যায়ের আদর্শ থেকে। বিজয় নিজেকে শুধু ডিএমকে কিংবা এআইএডিএমকের বিকল্প হিসেবে নয়, বরং দ্রাবিড়িয়ান রাজনৈতিক ধারার উত্তরসূরি ও নতুন এক সম্ভাবনা হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন।
ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে সিনেমা ছেড়ে কেন রাজনীতিতে
বিজয়ের গল্পের সবচেয়ে নাটকীয় দিক হলো, ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উৎকর্ষতার সময়ে এসে সিনেমা ছেড়ে দেওয়া। ভারতের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া ও সর্বাধিক জনপ্রিয় তারকাদের একজন ছিলেন বিজয়। তাঁর ছবি একের পর এক রেকর্ড ভাঙছিল। তবু তিনি ঘোষণা করলেন, ব্যক্তিগত গৌরব আর বিপুল অর্থের লোভ ছেড়ে তিনি রাজনীতিতে আসবেন।
তাঁর ভাষায়, এই ত্যাগই তাঁর আন্তরিকতার প্রমাণ। সিনেমা করে রাজনীতিকে পার্শ্বপথে চালানোর কোনো ইচ্ছে নেই তাঁর। তিনি বিশ্বাস করেন, রাজনীতি হলো সেবা, আর সেবা আংশিকভাবে করা যায় না। তাই সিনেমা ছাড়াটা শুধু ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, প্রতীকী বার্তাও। মানুষ যাতে নিশ্চিত হয়, তিনি রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য সত্যিই আন্তরিক।
থালাপতি বিজয়ের রাজনীতিতে আগমন নিছক জনতুষ্টিমুলক সিদ্ধান্ত নয়, বরং তামিল সমাজে স্বচ্ছ, সাম্যভিত্তিক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির নতুন সম্ভাবনা। সিনেমার হিরো এবার বাস্তবের ময়দানে ভিন্ন এক লড়াই শুরু করেছেন। তিনি সাফল্য পাবেন কি না, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ক্যারিয়ারের শীর্ষ সময়ে সিনেমা ছেড়ে জনগণের সেবায় নামার এই সাহসী পদক্ষেপই অনেকের থেকে তাঁকে ব্যতিক্রম করে তুলেছে।
দুঃখপ্রকাশের এই ঘটনাগুলোকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কখনোই আনুষ্ঠানিক ক্ষমাপ্রার্থনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি। বাংলাদেশ বহু বছর ধরেই দাবি করে আসছে যে পাকিস্তানের উচিত ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীদের হাতে সংঘটিত গণহত্যা, ধর্ষণ এবং অন্যান্য যুদ্ধাপরাধের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া।
৩ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ ও পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদারের লক্ষ্যে একটি নতুন যৌথ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কমিশন গঠনে সম্মত হয়েছে। একই সঙ্গে একটি প্রেফারেনশিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ) প্রণয়ন এবং যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি) পুনরুজ্জীবিত করার পরিকল্পনাও করছে।
৭ ঘণ্টা আগেপাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন। শনিবার দুপুরে তিনি ঢাকায় পৌঁছান। গত তিন দশকে পাকিস্তানের কোনো উপপ্রধানমন্ত্রী এই প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে বাংলাদেশে এলেন। আর ১৩ বছরে পাকিস্তানের কোনও পররাষ্ট্রমন্ত্রীরও বাংলাদেশে প্রথম সফর এটি।
১০ ঘণ্টা আগেএই মুহূর্তে ঢাকায় অবস্থান করছেন পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান। এদিকে, শনিবার ঢাকায় আসছেন দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। সরকারের উপদেষ্টা ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথা রয়েছে।
২ দিন আগে