যৌতুকের জন্য সাধারণ জখমের মতো ফৌজদারি অপরাধ যখন আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির টেবিলে আসে, তখন প্রশ্ন ওঠে নির্যাতিতার অধিকার নিয়ে। একদিকে মামলার জট কমানোর আশা, অন্যদিকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয়। তাই, এই আইনের মুদ্রার দুই পিঠই খতিয়ে দেখা যাক।
শতাব্দীকা ঊর্মি
২০১২ সালের কথা। চট্টগ্রামে একজন নারী স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ ছিল যৌতুকের জন্য নির্যাতন। বিচার শেষে আদালত ওই নারীর স্বামীকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা করার রায় দেন। রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন স্বামী। তবে সেই আপিলের ফলাফলের আগেই বাদী ও বিবাদীর আপস হয়ে যায়। তাঁরা পুনরায় একসঙ্গে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলাগুলো আপস-অযোগ্য। তাই তাঁদের মধ্যে আইনগতভাবে সমঝোতার কোনো সুযোগ ছিল না। ভবিষ্যতে স্ত্রীকে নির্যাতন না করার অঙ্গীকারনামা নিয়ে হাইকোর্ট স্বামীর সাজা বাতিল করে।
এ ধরণের মামলাগুলোর মধ্যে দেখা গেল আপোষের সুযোগ না থাকাটা এক রকমের সীমাবদ্ধতা হিসেবে সামনে উঠে আসছে। ২০১৯ সালে আদালত এই আইনের ১১(গ) ধারাটি সংশোধন করে আপসের সুযোগ রাখার নির্দেশ দেন। ফলে এমন পারিবারিক বিরোধ আদালতে না গড়িয়েও সমাধান হতে পারে।
এরপর আসে বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০ আইনের একটি সংশোধনী ২১(খ) ধারা। ধারাটি কেন্দ্র করে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা। যেসব ক্ষেত্রে নারী যৌতুকের জন্য ‘সাধারণ জখম’-এর শিকার হন, সেসব মামলার ক্ষেত্রে মামলা দায়েরের আগে বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতার বিধান করেছে এই ধারা। এর ফলে আইনের মূল উদ্দেশ্য ও নির্যাতিতদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০ আইন একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। আইনটি নারী ও শিশুদের প্রতি সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধ ইত্যাদির বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রেখেছিল। সেসব অপরাধের মধ্যে আছে—ধর্ষণ, অপহরণ, যৌতুক, যৌন নিপীড়ন ইত্যাদি। আইনটির মূল উদ্দেশ্য ছিল নির্যাতিত নারী ও শিশুদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা ।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর বেশ কিছু সংশোধন এসেছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত হলো ২০২৫ সালের ২৫ মার্চের প্রজ্ঞাপিত ১১ নং অধ্যাদেশ। এর নাম ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২০’-এর ২১(খ) ধারা। ধারাটির শিরোনাম ‘কতিপয় ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতা (প্রি-কেস মেডিয়েশন) প্রক্রিয়ার উদ্যোগ গ্রহণ’।
ধারাটির মূল বক্তব্য হলো, মামলা করার আগে ‘সংক্ষুব্ধ পক্ষ’কে বাধ্যতামূলকভাবে আইনি সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করতে হবে। যদি এই মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়, তবেই কেবল ‘সংক্ষুব্ধ পক্ষ’ উপযুক্ত আদালতে মামলা করতে পারবে।
এই সংশোধনী ৯টি আইনের সুনির্দিষ্ট কিছু ধারার ওপর প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ১১(গ) ধারা এবং যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ এর ৩ ও ৪ ধারা। ১১(গ) ধারাটি যৌতুকের জন্য ‘সাধারণ জখম’ ঘটানোর অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত। অর্থাৎ, এখন থেকে যৌতুকের জন্য যদি কোনো নারীকে সাধারণ জখম করা হয়, তবে সরাসরি মামলা না করে প্রথমে মধ্যস্থতার জন্য লিগ্যাল এইড অফিসে যেতে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির দেহে ব্যথা, রোগ বা দুর্বলতা সৃষ্টি করে, তবে তাকে ‘সাধারণ জখম’ করা হয়েছে বলে গণ্য করা হবে।
সংশোধনীটির প্রভাব বুঝতে কথা হয় শিক্ষক ও লেখক মাজেদা মুজিবের সঙ্গে। তিনি স্ট্রিমকে জানান, ‘কাউকে মামলা দেওয়ার যোগ্য মনে করলে নির্যাতিতাকে মধ্যস্থতায় বসানোও একধরনের অবমাননা।’
একই প্রসঙ্গে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পাবলিক প্রসিকিউটর মোনাকেব বাহারের সঙ্গে কথা হয় স্ট্রিমের। তিনি জানান, ‘এই অধ্যাদেশের সংশোধন আমার মতে ভালো একটি পদক্ষেপ। মামলার ক্ষেত্রে ঝামেলা কমবে। ১১(গ) আইনের মাধ্যমে দাম্পত্য জীবনে ভুল বোঝাবুঝির সমাধান হবে। যদি সেটা না-ও হয়, তবে দেনা পাওনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হবে।’
তবে সংশোধনী নিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের উপদেষ্টা মাবরুক মোহাম্মদ বলেন, ‘সংশোধনীগুলো মামলার জট কমাতে সাহায্য করলেও এর কিছু সংকট আছে। যৌতুক চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্যাতনও চলতে থাকে। মধ্যস্থতায় বাধ্য করলে নির্যাতিতের বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিশেষত দরিদ্র নির্যাতিতরা বেশি ভুক্তভোগী হতে পারেন। চাপ প্রয়োগ করে আপোষ করতে বাধ্য করা হতে পারে।’
বিভিন্ন পক্ষ সংশোধনী নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। নারী অধিকার কর্মী, আইনজীবী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এই সংশোধনীকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মূল চেতনার পরিপন্থী বলে আখ্যায়িত করছেন। তাদের প্রধান উদ্বেগ হলো, এই ধারা নির্যাতিত নারীকে ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারে। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে নির্যাতনকারীকে আপস করতেও বাধ্য করতে পারে।
নারী অধিকার কর্মী মার্জিয়া প্রভার মতে, প্রস্তাবিত আইনটি ফৌজদারি অপরাধকে স্বাভাবিক করার ঝুঁকি তৈরি করে। ‘যৌতুকের জন্য সাধারণ জখম, যা দণ্ডবিধি অনুযায়ী একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ, একে বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতার আওতায় আনা হলে অপরাধের গুরুত্ব কমে যায়। তখন মনে হতে পারে, এটি শাস্তিযোগ্য নয়, বরং আপসযোগ্য।’ তিনি স্বীকার করেন যে, সালিশ-মামলার জট কমাতে পারে। কিন্তু তাঁর মতে দু’টি মূলনীতি মানা জরুরি— গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ (যেমন-ধর্ষণ, হত্যা) সালিশের অযোগ্য এবং মধ্যস্থতা সম্পূর্ণরূপে ভুক্তভোগীর ইচ্ছাধীন হওয়া উচিত।
এই সংশোধনী নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষের ভিন্ন ভিন্ন মতামত পাওয়া যাচ্ছে। উভয়পক্ষ স্বীকার করছেন, সংশোধনীর মধ্যে কিছু ইতিবাচক উপাদান রয়েছে। আছে নেতিবাচক উপাদানও। সব মিলিয়ে সংশোধনীটি যেন দ্বিমুখী তলোয়ার।
একদিকে, আদালতের মামলার জট কমানো এবং পারিবারিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার সদিচ্ছা প্রশংসা পাচ্ছে। সমর্থকদের মতে, এটি ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে দ্রুত বিরোধ নিষ্পত্তিতে সাহায্য করবে। অন্যদিকে, নারী অধিকারকর্মীরা আশঙ্কা করছেন, বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতা ফৌজদারি অপরাধকে লঘু করে ফেলবে। নির্যাতিতা বিচার চাইতে হয়ে যেতে পারেন নিরুৎসাহিত। নারীরা আমাদের সমাজে ক্ষমতায় দুর্বল। সাধারণত তাঁকে চাপের মুখে আপস করতে বাধ্য করা সহজ। অভিযুক্ত পক্ষ এর সুযোগও নিতে পারে।
২০১২ সালের কথা। চট্টগ্রামে একজন নারী স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ ছিল যৌতুকের জন্য নির্যাতন। বিচার শেষে আদালত ওই নারীর স্বামীকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা করার রায় দেন। রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন স্বামী। তবে সেই আপিলের ফলাফলের আগেই বাদী ও বিবাদীর আপস হয়ে যায়। তাঁরা পুনরায় একসঙ্গে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলাগুলো আপস-অযোগ্য। তাই তাঁদের মধ্যে আইনগতভাবে সমঝোতার কোনো সুযোগ ছিল না। ভবিষ্যতে স্ত্রীকে নির্যাতন না করার অঙ্গীকারনামা নিয়ে হাইকোর্ট স্বামীর সাজা বাতিল করে।
এ ধরণের মামলাগুলোর মধ্যে দেখা গেল আপোষের সুযোগ না থাকাটা এক রকমের সীমাবদ্ধতা হিসেবে সামনে উঠে আসছে। ২০১৯ সালে আদালত এই আইনের ১১(গ) ধারাটি সংশোধন করে আপসের সুযোগ রাখার নির্দেশ দেন। ফলে এমন পারিবারিক বিরোধ আদালতে না গড়িয়েও সমাধান হতে পারে।
এরপর আসে বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০ আইনের একটি সংশোধনী ২১(খ) ধারা। ধারাটি কেন্দ্র করে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা। যেসব ক্ষেত্রে নারী যৌতুকের জন্য ‘সাধারণ জখম’-এর শিকার হন, সেসব মামলার ক্ষেত্রে মামলা দায়েরের আগে বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতার বিধান করেছে এই ধারা। এর ফলে আইনের মূল উদ্দেশ্য ও নির্যাতিতদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০ আইন একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। আইনটি নারী ও শিশুদের প্রতি সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধ ইত্যাদির বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রেখেছিল। সেসব অপরাধের মধ্যে আছে—ধর্ষণ, অপহরণ, যৌতুক, যৌন নিপীড়ন ইত্যাদি। আইনটির মূল উদ্দেশ্য ছিল নির্যাতিত নারী ও শিশুদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা ।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর বেশ কিছু সংশোধন এসেছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত হলো ২০২৫ সালের ২৫ মার্চের প্রজ্ঞাপিত ১১ নং অধ্যাদেশ। এর নাম ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২০’-এর ২১(খ) ধারা। ধারাটির শিরোনাম ‘কতিপয় ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতা (প্রি-কেস মেডিয়েশন) প্রক্রিয়ার উদ্যোগ গ্রহণ’।
ধারাটির মূল বক্তব্য হলো, মামলা করার আগে ‘সংক্ষুব্ধ পক্ষ’কে বাধ্যতামূলকভাবে আইনি সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করতে হবে। যদি এই মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়, তবেই কেবল ‘সংক্ষুব্ধ পক্ষ’ উপযুক্ত আদালতে মামলা করতে পারবে।
এই সংশোধনী ৯টি আইনের সুনির্দিষ্ট কিছু ধারার ওপর প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ১১(গ) ধারা এবং যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ এর ৩ ও ৪ ধারা। ১১(গ) ধারাটি যৌতুকের জন্য ‘সাধারণ জখম’ ঘটানোর অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত। অর্থাৎ, এখন থেকে যৌতুকের জন্য যদি কোনো নারীকে সাধারণ জখম করা হয়, তবে সরাসরি মামলা না করে প্রথমে মধ্যস্থতার জন্য লিগ্যাল এইড অফিসে যেতে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির দেহে ব্যথা, রোগ বা দুর্বলতা সৃষ্টি করে, তবে তাকে ‘সাধারণ জখম’ করা হয়েছে বলে গণ্য করা হবে।
সংশোধনীটির প্রভাব বুঝতে কথা হয় শিক্ষক ও লেখক মাজেদা মুজিবের সঙ্গে। তিনি স্ট্রিমকে জানান, ‘কাউকে মামলা দেওয়ার যোগ্য মনে করলে নির্যাতিতাকে মধ্যস্থতায় বসানোও একধরনের অবমাননা।’
একই প্রসঙ্গে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পাবলিক প্রসিকিউটর মোনাকেব বাহারের সঙ্গে কথা হয় স্ট্রিমের। তিনি জানান, ‘এই অধ্যাদেশের সংশোধন আমার মতে ভালো একটি পদক্ষেপ। মামলার ক্ষেত্রে ঝামেলা কমবে। ১১(গ) আইনের মাধ্যমে দাম্পত্য জীবনে ভুল বোঝাবুঝির সমাধান হবে। যদি সেটা না-ও হয়, তবে দেনা পাওনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হবে।’
তবে সংশোধনী নিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের উপদেষ্টা মাবরুক মোহাম্মদ বলেন, ‘সংশোধনীগুলো মামলার জট কমাতে সাহায্য করলেও এর কিছু সংকট আছে। যৌতুক চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্যাতনও চলতে থাকে। মধ্যস্থতায় বাধ্য করলে নির্যাতিতের বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিশেষত দরিদ্র নির্যাতিতরা বেশি ভুক্তভোগী হতে পারেন। চাপ প্রয়োগ করে আপোষ করতে বাধ্য করা হতে পারে।’
বিভিন্ন পক্ষ সংশোধনী নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। নারী অধিকার কর্মী, আইনজীবী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এই সংশোধনীকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মূল চেতনার পরিপন্থী বলে আখ্যায়িত করছেন। তাদের প্রধান উদ্বেগ হলো, এই ধারা নির্যাতিত নারীকে ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারে। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে নির্যাতনকারীকে আপস করতেও বাধ্য করতে পারে।
নারী অধিকার কর্মী মার্জিয়া প্রভার মতে, প্রস্তাবিত আইনটি ফৌজদারি অপরাধকে স্বাভাবিক করার ঝুঁকি তৈরি করে। ‘যৌতুকের জন্য সাধারণ জখম, যা দণ্ডবিধি অনুযায়ী একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ, একে বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতার আওতায় আনা হলে অপরাধের গুরুত্ব কমে যায়। তখন মনে হতে পারে, এটি শাস্তিযোগ্য নয়, বরং আপসযোগ্য।’ তিনি স্বীকার করেন যে, সালিশ-মামলার জট কমাতে পারে। কিন্তু তাঁর মতে দু’টি মূলনীতি মানা জরুরি— গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ (যেমন-ধর্ষণ, হত্যা) সালিশের অযোগ্য এবং মধ্যস্থতা সম্পূর্ণরূপে ভুক্তভোগীর ইচ্ছাধীন হওয়া উচিত।
এই সংশোধনী নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষের ভিন্ন ভিন্ন মতামত পাওয়া যাচ্ছে। উভয়পক্ষ স্বীকার করছেন, সংশোধনীর মধ্যে কিছু ইতিবাচক উপাদান রয়েছে। আছে নেতিবাচক উপাদানও। সব মিলিয়ে সংশোধনীটি যেন দ্বিমুখী তলোয়ার।
একদিকে, আদালতের মামলার জট কমানো এবং পারিবারিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার সদিচ্ছা প্রশংসা পাচ্ছে। সমর্থকদের মতে, এটি ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে দ্রুত বিরোধ নিষ্পত্তিতে সাহায্য করবে। অন্যদিকে, নারী অধিকারকর্মীরা আশঙ্কা করছেন, বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতা ফৌজদারি অপরাধকে লঘু করে ফেলবে। নির্যাতিতা বিচার চাইতে হয়ে যেতে পারেন নিরুৎসাহিত। নারীরা আমাদের সমাজে ক্ষমতায় দুর্বল। সাধারণত তাঁকে চাপের মুখে আপস করতে বাধ্য করা সহজ। অভিযুক্ত পক্ষ এর সুযোগও নিতে পারে।
১৯৭২ সালে জাকসু প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৮ বার নির্বাচন হয়েছে। ১৯৯২ সালে সর্বশেষ জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
১৪ ঘণ্টা আগেজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হচ্ছে আজ। ১৯৯২ সালের পর এটাই প্রথম জাকসু নির্বাচন। গত ৩৩ বছর এই নির্বাচন হয়নি। তাই আজ মনে পড়ছে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতার সেই লাইন— তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি।
১৫ ঘণ্টা আগেইতিহাস বলছে, বিপ্লবের নেপথ্যে থাকে কোনো মহৎ সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার অভীপ্সা। আর সেই লড়াইয়ে পুরোভাগে নেতৃত্ব দেন বিদ্রোহী স্পার্টাকাস। একুশ শতকের অভ্যুত্থানের কোনো একক নায়ক নেই। কোনো একটি পক্ষ নেই, এমনকি কোনো সুপরিকল্পনাও হয়তো থাকে না।
২ দিন আগেতরুণেরা এখন বালেন্দ্রকে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর হিসেবে চাইছেন, দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্তমানে চলছে এমনই রব।
২ দিন আগে