আরাকান আর্মির দৃষ্টিভঙ্গি জটিল। বাণিজ্য ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাস্তববাদী সহযোগিতা থাকলেও, তাদের অভিযোগ, রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে বাংলাদেশ সহায়তা দেয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতি সন্দেহ রয়েছে, যা বাংলাদেশ সবসময়ই অস্বীকার করে আসছে।
স্ট্রিম ডেস্ক
ইউনাইটেড লিগ অব আরাকান (ইউএলএ)-এর সশস্ত্র শাখা আরাকান আর্মি (এএ)। সংগঠনটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অধিক স্বায়ত্তশাসন বা স্বাধীনতার দাবির পাশাপাশি দেশে পুরো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যও লড়ছে। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি ২০২১ সালে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর আরও জনপ্রিয়তা পায় এবং দ্রুত শক্তিশালী হয়ে ওঠে। বর্তমানে তারা রাখাইনের উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকা, এমনকি মিয়ানমার-বাংলাদেশের ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তের পুরো অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। এর ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগে আসে আরাকান আর্মি। বাংলাদেশ রাখাইন থেকে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর ভার বহন করছে।
আরাকান আর্মির দৃষ্টিভঙ্গি জটিল। বাণিজ্য ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাস্তববাদী সহযোগিতা থাকলেও, তাদের অভিযোগ, রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে বাংলাদেশ সহায়তা দেয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতি সন্দেহ রয়েছে, যা বাংলাদেশ সবসময়ই অস্বীকার করে আসছে। এর সঙ্গে যুক্ত আছে দীর্ঘদিনের নৃতাত্ত্বিক-জাতীয়তাবাদী বিরোধ। একদিকে তারা ঢাকাকে স্থিতিশীলতা ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাব্য সহযোগী হিসেবে দেখে, অন্যদিকে বাংলাদেশকে ‘রোহিঙ্গা জঙ্গিবাদ’-এর পৃষ্ঠপোষক ও হস্তক্ষেপকারী শক্তি হিসেবে অভিযোগ করে। সাম্প্রতিক সময়ে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টতার সরাসরি অভিযোগ ও সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনায় সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।
সম্প্রতি দ্য ইরাবতীতে প্রকাশিত আরাকান আর্মিপ্রধান তুন মিয়াত নাইং এর এক সাক্ষাতকারে এই টানাপোড়েন স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়। সাক্ষাতকারে রাখাইন দৃষ্টিকোণ থেকে দুই দেশের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার আহ্বান জানান তিনি। তবে এতে পারস্পরিক সন্দেহের মাঝেও ঐতিহাসিক সম্পর্কের উল্লেখ ও উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বানও রয়েছে। রাখাইন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে তাদের চেষ্টার কথাও বলেন তিনি।
ঐতিহাসিক ও মতাদর্শিক প্রেক্ষাপট
আরাকান আর্মির (এএ) দৃষ্টিভঙ্গি গঠিত হয়েছে রাখাইন জাতীয়তাবাদ ও দুটি মূল মতাদর্শ—‘আরাকান ড্রিম’ এবং ‘ওয়ে অব রাখিতা’-র ওপর ভিত্তি করে। এই ধারণাগুলো রাখাইন জাতির জন্য বামার (বার্মিজ) প্রভাব ও ঔপনিবেশিক নিয়ন্ত্রণমুক্ত একটি সার্বভৌম রাখাইন রাষ্ট্রের স্বপ্ন তুলে ধরে।
আরাকান আর্মির অনেক কঠোরপন্থি নেতা রাখাইনে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের ‘বাঙালি অনুপ্রবেশকারী’ বা ‘অবৈধ অভিবাসী’ হিসেবে দেখে। এটি মূলত মিয়ানমারের সামরিক জান্তার প্রচারের প্রতিধ্বনি। যদিও আরাকান আর্মি আনুষ্ঠানিকভাবে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরিয়ে নেওয়ার পক্ষে, তারা নিরাপত্তার অজুহাতে প্রত্যাবাসনপ্রত্যাশীদের যাচাই করার দাবি জানায়। তাদের আশঙ্কা, বাংলাদেশ এই শরণার্থী সংকটকে রাখাইনের সার্বভৌমত্ব দুর্বল করার উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। বাংলাদেশ সবসময়ই এই ধরনের ধারনা অহেতুক বলে জানিয়ে আসছে।
এই ধারণা থেকেই রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে হামলা ও অভিযান চালানোর ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকে প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার নতুন রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। আরাকান আর্মি এসব অভিযানের যুক্তি হিসেবে বলে, তারা ‘বাংলাদেশি সন্ত্রাসীদের’ মোকাবিলা করছে, যারা নাকি মিয়ানমারের জান্তা সরকারের (এসএসি) মিত্র। অথচ তাদের এসব পদক্ষেপই রাখাইনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা আরও বাড়াচ্ছে।
প্রধান বিরোধের ক্ষেত্র: হস্তক্ষেপের অভিযোগ
আরাকান আর্মি বাংলাদেশকে এক প্রকার অস্থিতিশীলতা তৈরিকারী শক্তি হিসেবে দেখে। তাদের অভিযোগ, ঢাকা রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী যেমন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)-র প্রতি নানাভাবে সহায়তা দিচ্ছে। যদিও বাংলাদেশ এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
বিদ্রোহীগোষ্ঠীকে সমর্থন: আরাকান আর্মির নেতাদের দাবি, বাংলাদেশ ২০২২ সাল থেকে এসব গোষ্ঠীকে পুনরায় সক্রিয় করছে, যাতে আরাকান আর্মি-কে চাপের মুখে ফেলে গণপ্রত্যাবাসনে রাজি করানো যায়। কক্সবাজারের শিবিরে ২০২৪ সালের শেষ দিকে এসব গোষ্ঠীর খোলাখুলি সমাবেশ ও নিয়োগ কার্যক্রমের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করে। এসব গোষ্ঠী নাকি মংডু ও বুথিডং অঞ্চলে আরাকান আর্মি-র অবস্থানে হামলা চালিয়েছে।
২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে আরাকান আর্মি বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ‘রোহিঙ্গা হামলা উসকে দেওয়ার’ অভিযোগ তোলে এবং একে ‘বিপজ্জনক খেলা’ বলে অভিহিত করে। গত ১৩ অক্টোবর ইউনাইটেড লিগ অব আরাকান (ইউএলএ) বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-র বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলে। তাদের দাবি, বিজিবি রোহিঙ্গা যোদ্ধাদের অস্ত্র সরবরাহ করছে, যার মাধ্যমে তারা মংডু ও বুথিডং অঞ্চলে আরাকান আর্মি-র অবস্থানে হামলা চালাচ্ছে। এরপর ১৬ অক্টোবর তারা আরও দাবি করে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী সীমান্ত সংঘর্ষে জঙ্গিদের সহায়তা করছে এবং ‘অবৈধ কর্মকাণ্ড’ রোধে ঢাকাকে সতর্ক করে। বাংলাদেশ এসব অভিযোগ অমূলক বলে জানায়।
প্রত্যাবাসনকে চাপের হাতিয়ার হিসেবে দেখা: আরাকান আর্মি স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের পক্ষে অবস্থান নেয় এবং দাবি করে, তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় কিছু রোহিঙ্গা পরিবার ইতিমধ্যে ফিরেছে। কিন্তু তারা বাংলাদেশের প্রস্তাবিত ‘সেফ জোন’ পরিকল্পনাকে গোপন উদ্দেশ্য হিসেবে দেখে—যেন রাখাইনের ভেতরে রোহিঙ্গাদের আলাদা বসতি তৈরি হয়। কিন্তু বাংলাদেশ জানায়, আরাকান আর্মির এই ধারণাও ভ্রান্ত।
আরাকান আর্মি প্রধান তুন মিয়াত নাইং সাক্ষাতকারে বলেন, ‘আমরা সবসময় প্রত্যাবাসন সমর্থন করেছি। কিন্তু বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ এখন নানা রকম চাপ প্রয়োগ করছে, যা আগের প্রশাসনের সময় ছিল না।’তিনি মনে করেন, এই চাপ দুই পক্ষের পূর্ববর্তী অঘোষিত সম্পর্ক নষ্ট করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রাখাইন রাজ্যের মুসলিম নেতাদের ও তাদের সমাজপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। এসব বৈঠকে আমাদের সহযোদ্ধারা নাগরিকত্ব, অধিকার ও দায়িত্বের বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। তারা সবাইকে বর্তমান সংকটে ইতিহাসের সঠিক পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা আলোচনা করেছি কীভাবে সামরিক জান্তার শোষণ থেকে নিজেদের রক্ষা করা যায় এবং স্বাধীনতার সংগ্রামে ভুল পক্ষে না দাঁড়ানো যায়। আমরা তাদের বলেছি, যদি তারা দায়িত্বশীল আচরণ করতেন এবং নিজের কর্তব্য পালন করতেন, তবে তাদের অধিকার দাবি করতে হতো না—এই অধিকার স্বাভাবিকভাবেই তারা পেতেন। আমরা গত ৭০ বছরের রোহিঙ্গা মুসলমান ও রাখাইন জনগোষ্ঠীর মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বের কথাও তুলেছি, যা পারস্পরিক সন্দেহ ও ঘৃণার জন্ম দিয়েছে।’
তুন মিয়াত নাইং বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি, রাখাইন অঞ্চলে আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে এসব সমস্যা আর দেখা দেয়নি। বর্তমানে আমাদের মধ্যে আর কোনো জাতিগত বা ধর্মীয় সংঘাত নেই। শুধু সীমান্ত এলাকায় কিছু নিরাপত্তাজনিত বিধিনিষেধ রয়েছে, যাতে সশস্ত্র কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকে। আমরা রাখাইন রাজ্যের মধ্যাঞ্চলগুলোকেও গুরুত্ব দিতে বলেছি, যেখানে মুসলিম ও রাখাইন জনগোষ্ঠীর সহাবস্থান ও বাণিজ্য গড়ে উঠছে। আমরা সবাই একমত হয়েছি কেন এসব ঘটনা ঘটেছিল এবং ভবিষ্যতে কীভাবে আরও ভালোভাবে তা মোকাবিলা করা যায়। মুসলিম ধর্মীয় নেতারা যখন ধর্মীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন, তখন তারা মসজিদের বিষয়টি তোলেন। আমরা নাগরিক অধিকারের প্রসঙ্গ তুলে ধরি, যার মধ্যে মসজিদ থাকা ও তা খোলা রাখার অধিকারও অন্তর্ভুক্ত। তবে আমরা রাখাইন রাজ্যের ইসলামিক কমিটি ও মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের সতর্ক থাকতে বলেছি, যাতে উগ্রপন্থীরা মসজিদ পুনরায় খোলার সুযোগকে কাজে লাগাতে না পারে। এরপর আমরা অবশিষ্ট সব বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছি।’
সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন: আরাকান আর্মির টহলদল কখনও কখনও বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে—যেমন সম্প্রতি টেকনাফে সংঘটিত ঘটনা। আবার নাফ নদীতে বাংলাদেশি জেলেদের ওপর হামলার অভিযোগও আছে। আরাকান আর্মি এসব ঘটনাকে আত্মরক্ষামূলক প্রতিক্রিয়া বলে দাবি করে, কিন্তু বাংলাদেশে এগুলো নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এসব অনুপ্রবেশ প্রতিহত করে সতর্কবার্তা দিয়েছে। পাশাপাশি আরাকান আর্মি সীমান্ত বাণিজ্যে কমিশন দাবি করছে, যা অর্থনৈতিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। তাদের সঙ্গে মাদকপাচার নেটওয়ার্কের যোগসূত্রের কথাও উঠে এসেছে, যা বাংলাদেশের ভেতরে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এসব অভিযোগ একটি বিপজ্জনক চক্রের সৃষ্টি করতে পারে। আরাকান আর্মি-র অভিযানে আরও রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হচ্ছে, ফলে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে চাপ বাড়ছে।
বাস্তববাদী যোগাযোগ ও বৃহত্তর সম্পর্ক
তীর্যক বক্তব্য সত্ত্বেও, আরাকান আর্মি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। আরাকান আর্মি-র অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতি মূলত সীমান্ত বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল। তারা বাংলাদেশভিত্তিক বিদ্রোহী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে টেকনাফে আরাকান আর্মির ‘অভিযান’ নিয়ে গুজব ছড়ালেও পরে সেটি টহল কার্যক্রম হিসেবে প্রমাণিত হয়। সে সময় আরাকান আর্মি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার দিকে নজর রাখে এবং কথিত ‘জিহাদি হুমকি’ নিয়ে সতর্ক করে। এর মধ্য দিয়ে তারা নিজোদেরকে একধরনের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার পক্ষপাতী শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করতে চায়। যদিও তারা নিজেরাই রোহিঙ্গা ইস্যুতে অস্থিতিশীলতা জিইয়ে রাখছে।
প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পরিপ্রেক্ষিত
বিশ্লেষকদের মতে, আরাকান আর্মি-র বর্তমান অবস্থান রোহিঙ্গা বিদ্রোহকে উসকে দিতে পারে, যা মিয়ানমার-বাংলাদেশ সম্পর্কের ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে। এতে রাখাইনে নতুন করে সাম্প্রদায়িক সংঘাত ও শরণার্থী স্রোত সৃষ্টি হতে পারে।
আরাকান আর্মি ইতোমধ্যে শক্তিশালী অস্ত্রভাণ্ডার এবং মিয়ানমারের অন্যান্য জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জোট গড়ে তুলেছে, যা পার্বত্য চট্টগ্রামে (সিএইচটি) প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। তবুও দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য ও মাদকপাচার দমনসহ বাস্তব স্বার্থের ক্ষেত্রগুলো সংলাপের সুযোগ তৈরি করে।
তুন মিয়াত নাইং বলেন, পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়িত হলে আস্থা পুনর্গঠনের সুযোগ আছে।
ইউনাইটেড লিগ অব আরাকান (ইউএলএ)-এর সশস্ত্র শাখা আরাকান আর্মি (এএ)। সংগঠনটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অধিক স্বায়ত্তশাসন বা স্বাধীনতার দাবির পাশাপাশি দেশে পুরো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যও লড়ছে। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি ২০২১ সালে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর আরও জনপ্রিয়তা পায় এবং দ্রুত শক্তিশালী হয়ে ওঠে। বর্তমানে তারা রাখাইনের উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকা, এমনকি মিয়ানমার-বাংলাদেশের ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তের পুরো অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। এর ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগে আসে আরাকান আর্মি। বাংলাদেশ রাখাইন থেকে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর ভার বহন করছে।
আরাকান আর্মির দৃষ্টিভঙ্গি জটিল। বাণিজ্য ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাস্তববাদী সহযোগিতা থাকলেও, তাদের অভিযোগ, রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে বাংলাদেশ সহায়তা দেয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতি সন্দেহ রয়েছে, যা বাংলাদেশ সবসময়ই অস্বীকার করে আসছে। এর সঙ্গে যুক্ত আছে দীর্ঘদিনের নৃতাত্ত্বিক-জাতীয়তাবাদী বিরোধ। একদিকে তারা ঢাকাকে স্থিতিশীলতা ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাব্য সহযোগী হিসেবে দেখে, অন্যদিকে বাংলাদেশকে ‘রোহিঙ্গা জঙ্গিবাদ’-এর পৃষ্ঠপোষক ও হস্তক্ষেপকারী শক্তি হিসেবে অভিযোগ করে। সাম্প্রতিক সময়ে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টতার সরাসরি অভিযোগ ও সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনায় সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।
সম্প্রতি দ্য ইরাবতীতে প্রকাশিত আরাকান আর্মিপ্রধান তুন মিয়াত নাইং এর এক সাক্ষাতকারে এই টানাপোড়েন স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়। সাক্ষাতকারে রাখাইন দৃষ্টিকোণ থেকে দুই দেশের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার আহ্বান জানান তিনি। তবে এতে পারস্পরিক সন্দেহের মাঝেও ঐতিহাসিক সম্পর্কের উল্লেখ ও উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বানও রয়েছে। রাখাইন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে তাদের চেষ্টার কথাও বলেন তিনি।
ঐতিহাসিক ও মতাদর্শিক প্রেক্ষাপট
আরাকান আর্মির (এএ) দৃষ্টিভঙ্গি গঠিত হয়েছে রাখাইন জাতীয়তাবাদ ও দুটি মূল মতাদর্শ—‘আরাকান ড্রিম’ এবং ‘ওয়ে অব রাখিতা’-র ওপর ভিত্তি করে। এই ধারণাগুলো রাখাইন জাতির জন্য বামার (বার্মিজ) প্রভাব ও ঔপনিবেশিক নিয়ন্ত্রণমুক্ত একটি সার্বভৌম রাখাইন রাষ্ট্রের স্বপ্ন তুলে ধরে।
আরাকান আর্মির অনেক কঠোরপন্থি নেতা রাখাইনে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের ‘বাঙালি অনুপ্রবেশকারী’ বা ‘অবৈধ অভিবাসী’ হিসেবে দেখে। এটি মূলত মিয়ানমারের সামরিক জান্তার প্রচারের প্রতিধ্বনি। যদিও আরাকান আর্মি আনুষ্ঠানিকভাবে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরিয়ে নেওয়ার পক্ষে, তারা নিরাপত্তার অজুহাতে প্রত্যাবাসনপ্রত্যাশীদের যাচাই করার দাবি জানায়। তাদের আশঙ্কা, বাংলাদেশ এই শরণার্থী সংকটকে রাখাইনের সার্বভৌমত্ব দুর্বল করার উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। বাংলাদেশ সবসময়ই এই ধরনের ধারনা অহেতুক বলে জানিয়ে আসছে।
এই ধারণা থেকেই রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে হামলা ও অভিযান চালানোর ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকে প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার নতুন রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। আরাকান আর্মি এসব অভিযানের যুক্তি হিসেবে বলে, তারা ‘বাংলাদেশি সন্ত্রাসীদের’ মোকাবিলা করছে, যারা নাকি মিয়ানমারের জান্তা সরকারের (এসএসি) মিত্র। অথচ তাদের এসব পদক্ষেপই রাখাইনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা আরও বাড়াচ্ছে।
প্রধান বিরোধের ক্ষেত্র: হস্তক্ষেপের অভিযোগ
আরাকান আর্মি বাংলাদেশকে এক প্রকার অস্থিতিশীলতা তৈরিকারী শক্তি হিসেবে দেখে। তাদের অভিযোগ, ঢাকা রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী যেমন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)-র প্রতি নানাভাবে সহায়তা দিচ্ছে। যদিও বাংলাদেশ এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
বিদ্রোহীগোষ্ঠীকে সমর্থন: আরাকান আর্মির নেতাদের দাবি, বাংলাদেশ ২০২২ সাল থেকে এসব গোষ্ঠীকে পুনরায় সক্রিয় করছে, যাতে আরাকান আর্মি-কে চাপের মুখে ফেলে গণপ্রত্যাবাসনে রাজি করানো যায়। কক্সবাজারের শিবিরে ২০২৪ সালের শেষ দিকে এসব গোষ্ঠীর খোলাখুলি সমাবেশ ও নিয়োগ কার্যক্রমের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করে। এসব গোষ্ঠী নাকি মংডু ও বুথিডং অঞ্চলে আরাকান আর্মি-র অবস্থানে হামলা চালিয়েছে।
২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে আরাকান আর্মি বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ‘রোহিঙ্গা হামলা উসকে দেওয়ার’ অভিযোগ তোলে এবং একে ‘বিপজ্জনক খেলা’ বলে অভিহিত করে। গত ১৩ অক্টোবর ইউনাইটেড লিগ অব আরাকান (ইউএলএ) বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-র বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলে। তাদের দাবি, বিজিবি রোহিঙ্গা যোদ্ধাদের অস্ত্র সরবরাহ করছে, যার মাধ্যমে তারা মংডু ও বুথিডং অঞ্চলে আরাকান আর্মি-র অবস্থানে হামলা চালাচ্ছে। এরপর ১৬ অক্টোবর তারা আরও দাবি করে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী সীমান্ত সংঘর্ষে জঙ্গিদের সহায়তা করছে এবং ‘অবৈধ কর্মকাণ্ড’ রোধে ঢাকাকে সতর্ক করে। বাংলাদেশ এসব অভিযোগ অমূলক বলে জানায়।
প্রত্যাবাসনকে চাপের হাতিয়ার হিসেবে দেখা: আরাকান আর্মি স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের পক্ষে অবস্থান নেয় এবং দাবি করে, তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় কিছু রোহিঙ্গা পরিবার ইতিমধ্যে ফিরেছে। কিন্তু তারা বাংলাদেশের প্রস্তাবিত ‘সেফ জোন’ পরিকল্পনাকে গোপন উদ্দেশ্য হিসেবে দেখে—যেন রাখাইনের ভেতরে রোহিঙ্গাদের আলাদা বসতি তৈরি হয়। কিন্তু বাংলাদেশ জানায়, আরাকান আর্মির এই ধারণাও ভ্রান্ত।
আরাকান আর্মি প্রধান তুন মিয়াত নাইং সাক্ষাতকারে বলেন, ‘আমরা সবসময় প্রত্যাবাসন সমর্থন করেছি। কিন্তু বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ এখন নানা রকম চাপ প্রয়োগ করছে, যা আগের প্রশাসনের সময় ছিল না।’তিনি মনে করেন, এই চাপ দুই পক্ষের পূর্ববর্তী অঘোষিত সম্পর্ক নষ্ট করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রাখাইন রাজ্যের মুসলিম নেতাদের ও তাদের সমাজপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। এসব বৈঠকে আমাদের সহযোদ্ধারা নাগরিকত্ব, অধিকার ও দায়িত্বের বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। তারা সবাইকে বর্তমান সংকটে ইতিহাসের সঠিক পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা আলোচনা করেছি কীভাবে সামরিক জান্তার শোষণ থেকে নিজেদের রক্ষা করা যায় এবং স্বাধীনতার সংগ্রামে ভুল পক্ষে না দাঁড়ানো যায়। আমরা তাদের বলেছি, যদি তারা দায়িত্বশীল আচরণ করতেন এবং নিজের কর্তব্য পালন করতেন, তবে তাদের অধিকার দাবি করতে হতো না—এই অধিকার স্বাভাবিকভাবেই তারা পেতেন। আমরা গত ৭০ বছরের রোহিঙ্গা মুসলমান ও রাখাইন জনগোষ্ঠীর মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বের কথাও তুলেছি, যা পারস্পরিক সন্দেহ ও ঘৃণার জন্ম দিয়েছে।’
তুন মিয়াত নাইং বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি, রাখাইন অঞ্চলে আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে এসব সমস্যা আর দেখা দেয়নি। বর্তমানে আমাদের মধ্যে আর কোনো জাতিগত বা ধর্মীয় সংঘাত নেই। শুধু সীমান্ত এলাকায় কিছু নিরাপত্তাজনিত বিধিনিষেধ রয়েছে, যাতে সশস্ত্র কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকে। আমরা রাখাইন রাজ্যের মধ্যাঞ্চলগুলোকেও গুরুত্ব দিতে বলেছি, যেখানে মুসলিম ও রাখাইন জনগোষ্ঠীর সহাবস্থান ও বাণিজ্য গড়ে উঠছে। আমরা সবাই একমত হয়েছি কেন এসব ঘটনা ঘটেছিল এবং ভবিষ্যতে কীভাবে আরও ভালোভাবে তা মোকাবিলা করা যায়। মুসলিম ধর্মীয় নেতারা যখন ধর্মীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন, তখন তারা মসজিদের বিষয়টি তোলেন। আমরা নাগরিক অধিকারের প্রসঙ্গ তুলে ধরি, যার মধ্যে মসজিদ থাকা ও তা খোলা রাখার অধিকারও অন্তর্ভুক্ত। তবে আমরা রাখাইন রাজ্যের ইসলামিক কমিটি ও মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের সতর্ক থাকতে বলেছি, যাতে উগ্রপন্থীরা মসজিদ পুনরায় খোলার সুযোগকে কাজে লাগাতে না পারে। এরপর আমরা অবশিষ্ট সব বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছি।’
সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন: আরাকান আর্মির টহলদল কখনও কখনও বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে—যেমন সম্প্রতি টেকনাফে সংঘটিত ঘটনা। আবার নাফ নদীতে বাংলাদেশি জেলেদের ওপর হামলার অভিযোগও আছে। আরাকান আর্মি এসব ঘটনাকে আত্মরক্ষামূলক প্রতিক্রিয়া বলে দাবি করে, কিন্তু বাংলাদেশে এগুলো নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এসব অনুপ্রবেশ প্রতিহত করে সতর্কবার্তা দিয়েছে। পাশাপাশি আরাকান আর্মি সীমান্ত বাণিজ্যে কমিশন দাবি করছে, যা অর্থনৈতিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। তাদের সঙ্গে মাদকপাচার নেটওয়ার্কের যোগসূত্রের কথাও উঠে এসেছে, যা বাংলাদেশের ভেতরে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এসব অভিযোগ একটি বিপজ্জনক চক্রের সৃষ্টি করতে পারে। আরাকান আর্মি-র অভিযানে আরও রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হচ্ছে, ফলে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে চাপ বাড়ছে।
বাস্তববাদী যোগাযোগ ও বৃহত্তর সম্পর্ক
তীর্যক বক্তব্য সত্ত্বেও, আরাকান আর্মি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। আরাকান আর্মি-র অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতি মূলত সীমান্ত বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল। তারা বাংলাদেশভিত্তিক বিদ্রোহী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে টেকনাফে আরাকান আর্মির ‘অভিযান’ নিয়ে গুজব ছড়ালেও পরে সেটি টহল কার্যক্রম হিসেবে প্রমাণিত হয়। সে সময় আরাকান আর্মি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার দিকে নজর রাখে এবং কথিত ‘জিহাদি হুমকি’ নিয়ে সতর্ক করে। এর মধ্য দিয়ে তারা নিজোদেরকে একধরনের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার পক্ষপাতী শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করতে চায়। যদিও তারা নিজেরাই রোহিঙ্গা ইস্যুতে অস্থিতিশীলতা জিইয়ে রাখছে।
প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পরিপ্রেক্ষিত
বিশ্লেষকদের মতে, আরাকান আর্মি-র বর্তমান অবস্থান রোহিঙ্গা বিদ্রোহকে উসকে দিতে পারে, যা মিয়ানমার-বাংলাদেশ সম্পর্কের ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে। এতে রাখাইনে নতুন করে সাম্প্রদায়িক সংঘাত ও শরণার্থী স্রোত সৃষ্টি হতে পারে।
আরাকান আর্মি ইতোমধ্যে শক্তিশালী অস্ত্রভাণ্ডার এবং মিয়ানমারের অন্যান্য জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জোট গড়ে তুলেছে, যা পার্বত্য চট্টগ্রামে (সিএইচটি) প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। তবুও দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য ও মাদকপাচার দমনসহ বাস্তব স্বার্থের ক্ষেত্রগুলো সংলাপের সুযোগ তৈরি করে।
তুন মিয়াত নাইং বলেন, পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়িত হলে আস্থা পুনর্গঠনের সুযোগ আছে।
সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ‘নো কিং’ (কোনো রাজা মানি না) আন্দোলনের ব্যানারে দেশব্যাপী বিক্ষোভের এক জোয়ার দেখা গেছে। দেশটির ছোট-বড় শহরগুলোতে হাজার হাজার মানুষ একত্রিত হয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের স্বৈরাচারসদৃশ কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে।
১৯ ঘণ্টা আগেতিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার মশাল কর্মসূচি পালন করে রংপুর বিভাগের হাজার হাজার মানুষ। আগামী ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টা থেকে ১১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত ‘স্তব্ধ রংপুর’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি।
১ দিন আগে২০২৪ সালের শুরু থেকে জেনারেশন জেড বা জেন জিরা ১২টিরও বেশি দেশে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছে। এই প্রজন্ম সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে তরুণ-নেতৃত্বাধীন গণআন্দোলনের সূত্রপাত করে।
২ দিন আগেফিলিস্তিনের জনপ্রিয় কারাবন্দী নেতা মারওয়ান বারঘুতির পরিবার তার জীবন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি ইসরায়েলি কারারক্ষীদের হাতে বারঘুতি নির্মম প্রহারের শিকার হয়েছেন বলে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর এই আশঙ্কা আরও তীব্র হয়েছে। তাঁর ছেলে আরব বারঘুতি আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সরকার বন্দীদের,
২ দিন আগে