বেসরকারি স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য নতুন জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সুযোগ রাখা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির সূচকে পরিবর্তন আনাসহ বেশকিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।
আজ রোববার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২৫’ প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করে। প্রজ্ঞাপনটি গত ৪ ডিসেম্বর জারি করার কথা বলা হয়েছে।
নতুন নীতিমালায় উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদ বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতায় বড় ধরনের সংশোধন আনা হয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে দুই বছরের অভিজ্ঞতা এবং ১৩ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকলে কিংবা সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থাকলে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ থাকবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, অনুমতি ছাড়া ৬০ দিন বা তার বেশি সময় অনুপস্থিত থাকলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক এমপিও সুবিধা থেকে বাদ পড়বেন। এমন ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময় পূর্ণ হওয়ার পর পদটি শূন্য ঘোষণা করে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
নতুন জনবল কাঠামোয় একাদশ শ্রেণিতে বিভাগ খোলার ক্ষেত্রেও নতুন শর্ত যোগ হয়েছে। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ন্যূনতম ৩৫ জন এবং বিজ্ঞান বিভাগে ২৫ জন শিক্ষার্থী থাকলে নতুন শাখা খোলা যাবে। মফস্বলে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় ৩০ জন এবং বিজ্ঞানে ২০ জন শিক্ষার্থীর শর্ত রাখা হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এমপিওভুক্ত কোনো সহকারী প্রধান শিক্ষক/প্রধান শিক্ষক/অধ্যক্ষ/উপাধ্যক্ষ অন্য কোনো এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমপদে/উচ্চতর পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য বিধি মোতাবেক আবেদন করলে তাঁকে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে গণ্য করা হবে। এক্ষেত্রে তাঁকে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে এবং যথাযথ প্রক্রিয়ায় নতুন প্রতিষ্ঠানে আবেদনকৃত পদে নির্বাচিত হলে যোগদানের পূর্বে পূর্বোক্ত প্রতিষ্ঠানের না-দাবিপত্র ও ছাড়পত্র নিতে হবে। তবে এক প্রতিষ্ঠান হতে অন্য প্রতিষ্ঠানে যোগদানের মধ্যবর্তী সময় সর্বোচ্চ ২ (দুই) বছর পর্যন্ত তাঁর ইনডেক্স বহাল থাকবে। দুই বছরের অধিক হলে চাকরির বিরতি (ব্রেক অব সার্ভিস) বলে গণ্য হবে এবং এক্ষেত্রে পূর্বের ইনডেক্সের কোনো সুবিধাদি দাবি করা যাবে না এবং ঐ ইনডেক্সের কোনো অভিজ্ঞতা গণনাযোগ্য হবে না এবং ইনডেক্স পূর্নবহাল করা যাবে না।
যদি কোন শিক্ষক-কর্মচারীর নিয়মতান্ত্রিক ইনডেক্স কর্তন করা হয় তাহলে তিনি প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকাণ্ড হতে বিরত/অব্যাহতি পাবেন এবং তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি/এডহক কমিটির অংশ হতে পারবেন না। জোরপূর্বক দায়িত্ব পালন করলে তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান প্রধান/কমিটি ফৌজদারী মামলা রুজু করবেন।
এমপিওভুক্তির জন্য প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এমপিওভুক্তির লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় একজন অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে সরকারি আদেশ জারি করবে।