বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে জনগণের কাছে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করলে আমাদের সব কাজের জবাব জনগণের কাছেই দিতে হবে।’
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্য বিএনপির আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার বিদায় হয়েছে জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এবং এই অর্জনের কৃতিত্ব কোনো একক দলের নয়। তাঁর ভাষায়, ‘এই বিজয় পুরোপুরি সাধারণ মানুষের।’ বিজয় অর্জনের চেয়ে তা ধরে রাখা বেশি কঠিন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বক্তব্যে তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, একটি নিরাপদ ও স্বচ্ছ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ যেন নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সে জন্য সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
বিএনপির ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র পরিচালনার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, দলটি স্বপ্ন নয়, বাস্তবসম্মত পরিকল্পনার ভিত্তিতে দেশ চালাতে চায়। তিনি জানান, বিএনপির ‘৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি’ই হবে রাষ্ট্র পরিচালনার মূল রূপরেখা।
তিনি সামাজিক সুরক্ষার বিষয়ে বলেন, ‘ফ্যামিলি কার্ড’ ব্যবস্থার মাধ্যমে নারীর হাতে সরাসরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা দেওয়া হবে এবং দেশের প্রায় চার কোটি পরিবারের একটি বড় অংশকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। একই সঙ্গে ‘কৃষক কার্ড’ চালুর মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো ও খাদ্যদাম নিয়ন্ত্রণের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
শিক্ষা খাতে সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তারেক রহমান বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় না করলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিক্ষক প্রশিক্ষণ জোরদার করা, খেলাধুলা ও সংস্কৃতিকে শিক্ষার অংশ করা এবং ভোকেশনাল ও ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
স্বাস্থ্য খাতে তিনি বলেন, চিকিৎসার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধে গুরুত্ব দেওয়া হবে এবং গ্রামভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা শক্তিশালী করে বড় হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজগুলোর ওপর চাপ কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বক্তব্যের শুরুতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে প্রবাসীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি অতীতের রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামের কথা স্মরণ করে বলেন, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষায় ত্যাগ ও সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।