leadT1ad

আমির হামজাকে নিয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে জামায়াত

স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা
আমির হামজা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বক্তব্য দিয়ে সম্প্রতি আলোচনায় আসা ইসলামি বক্তা মুফতি আমির হামজার ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। মুফতি আমির হামজা কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে জামায়াতের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী। জানা গেছে, বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামে রয়েছেন। সেখান থেকে ফিরলে আগামীকাল সোমবার তাঁকে নিয়ে বসবে জামায়াতের একটি শীর্ষ পর্যায়ের দল। এরপরেই তাঁর ব্যাপারে শক্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে কুষ্টিয়া জামায়াতে ইসলামীর একজন শীর্ষ নেতা স্ট্রিমকে জানান, গত রাতেই কেন্দ্র থেকে এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে। আমির হামজা এখন চট্টগ্রামে অন্য একটি মাহফিলে রয়েছেন। ফিরলেই তাঁর বক্তব্য শুনবেন জামায়াতের উর্ধ্বতন নেতারা। সূত্রটি জানিয়েছে, এ ব্যাপারে কেন্দ্র থেকে জামায়াতের কুষ্টিয়া-যশোর অঞ্চলের পরিচালককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি আমির হামজার সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামায়াতের সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের পরিচালক মোবারাক হোসাইনও। জামায়াতের কেন্দ্রীয় এই নির্বাহী পরিষদ সদস্য স্ট্রিমকে বলেন, ‘সংগঠন ও নীতি-নৈতিকতার বাইরে কেউ কিছু করলে সেটা কে করলো তা দেখা হয় না, জামায়াত দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। আমির হামজার ব্যাপারেও সংগঠনে আলোচনা হয়েছে। কাউকে ওপেন লাইসেন্স দেওয়া হয় না কথা বলার জন্য। আমাদের লোক বলে আমরা যে কোনো অ্যাকশনে যাই না, তা না। এইটা নিয়ে আলোচনা আছে। উনি ফিরলেই উনার সঙ্গে বসবো।’

মুফতি আমির হামজাকে নিয়ে আগামীকাল সোমবার বৈঠকে বসার কথা রয়েছে জানিয়ে মোবারাক হোসাইন বলেন, বৈঠকের পর পর্যালোচনাটি দলের নীতিনির্ধাকদের সামনে উপস্থাপন করা হবে। সেখান থেকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।

এসব ক্ষেত্রে সংগঠন কী ব্যবস্থা নিয়ে থাকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এইটা আলোচনা না করে বোঝা যাবে না। যেকোনো অপরাধের ক্ষেত্রেই প্রথম বিধান হলো আত্মপক্ষ সমর্থন। এইটাতো আর রিফিউজ করারও কিছু নেই, নিউজ মিডিয়াতে সবই আসছে। এরপরও এটা কেউ টুইট করলো কি না, ওখানে স্পটে আমাদের যারা ছিল তাঁরাও রেকর্ড করেছে।’ এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।

আমির হামজার বক্তব্য নিয়ে আগেও সমালোচনা তৈরি হয়েছিল। এ নিয়ে জামায়াত তাঁকে সতর্কও করে। এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জামায়াতের এই কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য বলেন, ‘এইসব ক্ষেত্রে আমরা সংশোধনের চেষ্টাও করি, সাংগঠনিক সিদ্ধান্তও নিই। সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট করে জাতি ও ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু করলে জামায়াত কাউকে বহিষ্কার করতে কার্পণ্যবোধ করে না, তবে সেটা প্রমাণিত হলে।’

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলে এই ১৬ বছর আজান দিতে দেয়নি জালেমরা। ছাত্রলীগের ভাইদের নাকি ঘুমের ডিস্টার্ব হবে, এ জন্য ফজরের আজান হইতো না। এবার ডাকসুতে শিবির প্যানেল পাস করার পরের দিন মাইকে আজান আরম্ভ হয়েছে। আল্লাহু আকবার।’ আমির হামজার এমন বক্তব্য নিয়ে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সমালোচনা শুরু হয়। মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে এই বক্তব্য ভিত্তিহীন বলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

অন্যদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ও আমির হামজার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে। আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমির হামজা তাঁর বক্তব্যে দাবি করেছেন, তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন এবং আবাসিক হলে সকালে ‘মদ’ দিয়ে কুলি করতে দেখেছেন। তিনি আরও বলেছেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে পেটায়। প্রকৃতপক্ষে তাঁর কোনো বক্তব্যই সত্য নয়।

এর আগে শনিবার আমির হামজার বক্তব্য নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের স্ট্রিমকে বলেন, আমির হামজার বক্তব্যটি তাঁর ব্যক্তিগত। কোনোভাবেই সেটি জামায়াতের সাংগঠনিক বক্তব্য নয়।

Ad 300x250

সম্পর্কিত