.png)

স্ট্রিম ডেস্ক

এই মাসে প্রথমবারের মতো আইসল্যান্ডে মশা শনাক্ত হয়েছে। এর ফলে দেশটি পৃথিবীর মশামুক্ত স্থানগুলোর তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। সোমবার আইসল্যান্ডের জাতীয় বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ঘটনাটি এমন এক গ্রীষ্মের পর ঘটল, যখন দেশটিতে রেকর্ড তাপমাত্রা দেখা গেছে এবং হিমবাহ গলন প্রক্রিয়া দ্রুততর হয়েছে।
পোকামাকড়প্রেমী বিয়র্ন হ্যালটাসন গত ১৬ অক্টোবর ফেসবুক গ্রুপ ‘ইনসেক্টস ইন আইসল্যান্ড’-এ জানান, তিনি কিয়োস অঞ্চলের কিডাফেল এলাকায় গোধূলির সময় মশা দেখেছেন।
তিনি মিষ্টি ওয়াইন ব্যবহার করে তৈরি ফাঁদে কয়েকটি মশা ধরেন। কিয়োস হলো একটি হিমবাহ উপত্যকা, যা রাজধানী রেইকজাভিক থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে।
হ্যালটাসন তার ফাঁদে ধরাপড়া মশাগুলো পাঠান আইসল্যান্ডের ন্যাচারাল সায়েন্স ইনস্টিটিউটে। সেখানে কীটতত্ত্ববিদ ম্যাথিয়াস আলফ্রেডসন নিশ্চিত করেন—সেগুলো সত্যিই মশা।
আলফ্রেডসন জানান, মশাগুলো কুলিসেটা অ্যানুলাটা প্রজাতির। এই প্রজাতি ঠান্ডা-সহনশীল এবং সাধারণত ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা ও এশিয়ার উত্তরাঞ্চলে দেখা যায়।
এই মশাগুলো কোনো রোগ বহন করে না, তবে সাধারণত বিরক্তিকর হিসেবে বিবেচিত।
ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, ‘এই মশা ঠান্ডা আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। শীতে তারা প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় টিকে থাকে এবং ঘরবাড়ি বা বেসমেন্টের মতো স্থানে আশ্রয় নেয়। তারা কামড়ায়, তবে কোনো সংক্রামক রোগ ছড়ায় না।’
ব্রিটিশ কীটতত্ত্ববিদ লুক টিলির মতে, ঠান্ডা অঞ্চলের মশাগুলো সাধারণত রোগবিহীন। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘এদের সংখ্যা বাড়ার গতি ধীর, সক্রিয়তার মৌসুম ছোট। আর ঠান্ডা শুরু হওয়ার আগে বেশিরভাগ উষ্ণমণ্ডলীয় রোগের জীবচক্র সম্পূর্ণ হয় না। ফলে ঠান্ডা অঞ্চলে মশা থাকলেও সংক্রমণের ঝুঁকি খুব কম।’
বিশ্বে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ প্রজাতির মশা আছে এবং তাদের প্রায় সর্বত্রই পাওয়া যায়—কেবল আইসল্যান্ড ও অ্যান্টার্কটিকার মতো কয়েকটি স্থান ছাড়া।
মশারা সাধারণত স্থির পানিতে ডিম পাড়ে। আর আইসল্যান্ডে এমন জলাশয় প্রচুর থাকলেও সেখানে আগে কখনো মশা দেখা যায়নি।
এর প্রধান কারণ, মশা ঠান্ডা-রক্তের প্রাণী এবং উষ্ণ পরিবেশে ভালোভাবে বাঁচে। পুরুষ মশা ফুলের রস খায়, যা উষ্ণ তাপমাত্রায় বেশি পাওয়া যায়।
টিলি বলেন, ‘উষ্ণ বায়ু ও পানি মশার সংখ্যাবৃদ্ধি, খাদ্যগ্রহণ ও প্রজনন ত্বরান্বিত করে। দীর্ঘ উষ্ণ মৌসুম মানে প্রতি বছরে বেশি প্রজন্ম। আবার বৃষ্টিপাতের ধরণ বদলালে নতুন জলাশয় তৈরি হয়, যা প্রজননের সুযোগ বাড়ায়।’
আইসল্যান্ডের জলবায়ু সারা বছরই ঠান্ডা। গড় তাপমাত্রা শীতে প্রায় মাইনাস ১ ডিগ্রি সেলাসিয়াস এবং গ্রীষ্মে প্রায় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মশা সাধারণত শীতে ডিম পাড়ে এবং বরফ গলে গেলে লার্ভা ফুটে বের হয়। কিন্তু আইসল্যান্ডে পানি বছরে বহুবার জমে ও গলে, ফলে মশার জীবনচক্র টিকে থাকা কঠিন হয়।
এর আগে আইসল্যান্ডে মশা দেখা গিয়েছিল কেবল একবার—১৯৮০-র দশকে। তখন জীববিজ্ঞানী গিসলি মার গিসলাসন গ্রিনল্যান্ড থেকে আসা একটি বিমানে একটি মশা দেখতে পান। সেটি এখনো আইসল্যান্ডের প্রাকৃতিক ইতিহাস ইনস্টিটিউটে সংরক্ষিত আছে।
আইসল্যান্ডের ন্যাচারাল সায়েন্স ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, মশাগুলো কীভাবে সেখানে এসেছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সম্ভবত এগুলো পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে এসেছে। স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছে কি না, তা নিশ্চিত নয়। তবে সবকিছু ইঙ্গিত দেয় যে তারা আইসল্যান্ডের আবহাওয়ায় টিকে থাকতে পারে।’
ইনস্টিটিউট আরও জানায়, উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং পরিবহনের পরিমাণ বাড়ার কারণে দেশটিতে নতুন নতুন পোকামাকড়ের প্রজাতি দেখা যাচ্ছে।
আইসল্যান্ড বর্তমানে নজিরবিহীন গতিতে উষ্ণ হচ্ছে। চলতি বছরের মে মাসে দেশটিতে ও প্রতিবেশী গ্রিনল্যান্ডে রেকর্ড গরম পড়েছিল। দক্ষিণ দিক থেকে উষ্ণ বায়ু আসার কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
মে মাসে আইসল্যান্ডের তাপমাত্রা ছিল ১৯৯০-২০২০ সালের গড়ের তুলনায় প্রায় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এটি বৈশ্বিক গড় উষ্ণতা বৃদ্ধির তুলনায় প্রায় দশগুণ।
দেশটির হিমবাহ দ্রুত গলছে। ভাটনায়োকুল ন্যাশনাল পার্কের তথ্য অনুযায়ী, ২১০০ সালের মধ্যে আইসল্যান্ডের হিমবাহের অর্ধেক বরফ গলে যেতে পারে।
হ্যাঁ, বিশ্বজুড়েই তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মশার আচরণ ও বিস্তারে পরিবর্তন ঘটছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পোকা-বাহিত রোগ বৃদ্ধি মানবস্বাস্থ্যের অন্যতম বড় হুমকি হয়ে উঠছে।
ব্রিটিশ কীটতত্ত্ববিদ লুক টিলি বলেন, ‘উষ্ণ আবহাওয়া মশা ও তাদের বহন করা জীবাণুকে নতুন অঞ্চলে টিকে থাকতে সহায়তা করে। এর ফলে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসের মতো রোগের বিস্তার ঘটছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ভ্রমণ, বাণিজ্য ও ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তনও এই বিস্তারে ভূমিকা রাখছে। তাই স্থানীয় পর্যায়ে সংক্রমণ রোধে সতর্ক নজরদারি ও প্রস্তুতি জরুরি।’
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যে প্রথমবার অ্যাডিস ইজিপ্টাই প্রজাতির মশার ডিম শনাক্ত হয় হিথ্রো বিমানবন্দরের কাছে।
এরপর ২০২৪ সালের আগস্টে কেন্ট অঞ্চলে অ্যাডিস অ্যালবোপিকটাস মশার চারটি ডিম পাওয়া যায়। যদিও পরবর্তী অনুসন্ধানে আর কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি।
অ্যাডিস ইজিপ্টাই ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস ছড়ায়। আর অ্যাডিস অ্যালবোপিকটাস ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া ছড়াতে পারে।
ইউরোপে সম্প্রতি মশাবাহিত রোগের সংখ্যা বেড়েছে। গত বছর ইতালিতে স্থানীয়ভাবে ছড়ানো ডেঙ্গুর ২০০টির বেশি ঘটনার খবর পাওয়া যায়। ফ্রান্স ও স্পেনেও একই রোগ শনাক্ত হয়েছে।
এই বছর ফ্রান্সে চিকুনগুনিয়ার ৫০০টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
যেসব দেশ আগে থেকেই মশাবাহিত রোগে ভুগছে, সেখানে সংখ্যাটি আরও বেড়েছে।
২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে একদিনে ডেঙ্গুতে ১২ জন মারা যান এবং ২৪ ঘণ্টায় ৭৪০ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন—এটি ছিল একদিনে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের ঘটনা।
বেশি বৃষ্টিপাত মশার ডিম, লার্ভা ও পিউপাকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে দেয়, ফলে নতুন প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি হয়।
যদি বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত না হয়, তবে তা অগভীর স্থির পানির পুকুর তৈরি করে—যা মশার আদর্শ প্রজননক্ষেত্র।
টিলি বলেন, মশার সংখ্যা বাড়লে তা বাস্তুতন্ত্রেও প্রভাব ফেলে। তারা ভাষায়, ‘বেশি মশা বাদুড়, ফড়িং ও পাখির মতো শিকারিদের জন্য খাদ্য বাড়ায়, তবে বন্যপ্রাণীর মধ্যেও রোগ বাড়তে পারে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘মশা কেবল রোগবাহক নয়, তারা পরিবেশগত পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ সূচকও। মশার উপস্থিতি ও আচরণের পরিবর্তন দেখে বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।’
সূত্র: আল-জাজিরা

এই মাসে প্রথমবারের মতো আইসল্যান্ডে মশা শনাক্ত হয়েছে। এর ফলে দেশটি পৃথিবীর মশামুক্ত স্থানগুলোর তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। সোমবার আইসল্যান্ডের জাতীয় বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ঘটনাটি এমন এক গ্রীষ্মের পর ঘটল, যখন দেশটিতে রেকর্ড তাপমাত্রা দেখা গেছে এবং হিমবাহ গলন প্রক্রিয়া দ্রুততর হয়েছে।
পোকামাকড়প্রেমী বিয়র্ন হ্যালটাসন গত ১৬ অক্টোবর ফেসবুক গ্রুপ ‘ইনসেক্টস ইন আইসল্যান্ড’-এ জানান, তিনি কিয়োস অঞ্চলের কিডাফেল এলাকায় গোধূলির সময় মশা দেখেছেন।
তিনি মিষ্টি ওয়াইন ব্যবহার করে তৈরি ফাঁদে কয়েকটি মশা ধরেন। কিয়োস হলো একটি হিমবাহ উপত্যকা, যা রাজধানী রেইকজাভিক থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে।
হ্যালটাসন তার ফাঁদে ধরাপড়া মশাগুলো পাঠান আইসল্যান্ডের ন্যাচারাল সায়েন্স ইনস্টিটিউটে। সেখানে কীটতত্ত্ববিদ ম্যাথিয়াস আলফ্রেডসন নিশ্চিত করেন—সেগুলো সত্যিই মশা।
আলফ্রেডসন জানান, মশাগুলো কুলিসেটা অ্যানুলাটা প্রজাতির। এই প্রজাতি ঠান্ডা-সহনশীল এবং সাধারণত ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা ও এশিয়ার উত্তরাঞ্চলে দেখা যায়।
এই মশাগুলো কোনো রোগ বহন করে না, তবে সাধারণত বিরক্তিকর হিসেবে বিবেচিত।
ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, ‘এই মশা ঠান্ডা আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। শীতে তারা প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় টিকে থাকে এবং ঘরবাড়ি বা বেসমেন্টের মতো স্থানে আশ্রয় নেয়। তারা কামড়ায়, তবে কোনো সংক্রামক রোগ ছড়ায় না।’
ব্রিটিশ কীটতত্ত্ববিদ লুক টিলির মতে, ঠান্ডা অঞ্চলের মশাগুলো সাধারণত রোগবিহীন। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘এদের সংখ্যা বাড়ার গতি ধীর, সক্রিয়তার মৌসুম ছোট। আর ঠান্ডা শুরু হওয়ার আগে বেশিরভাগ উষ্ণমণ্ডলীয় রোগের জীবচক্র সম্পূর্ণ হয় না। ফলে ঠান্ডা অঞ্চলে মশা থাকলেও সংক্রমণের ঝুঁকি খুব কম।’
বিশ্বে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ প্রজাতির মশা আছে এবং তাদের প্রায় সর্বত্রই পাওয়া যায়—কেবল আইসল্যান্ড ও অ্যান্টার্কটিকার মতো কয়েকটি স্থান ছাড়া।
মশারা সাধারণত স্থির পানিতে ডিম পাড়ে। আর আইসল্যান্ডে এমন জলাশয় প্রচুর থাকলেও সেখানে আগে কখনো মশা দেখা যায়নি।
এর প্রধান কারণ, মশা ঠান্ডা-রক্তের প্রাণী এবং উষ্ণ পরিবেশে ভালোভাবে বাঁচে। পুরুষ মশা ফুলের রস খায়, যা উষ্ণ তাপমাত্রায় বেশি পাওয়া যায়।
টিলি বলেন, ‘উষ্ণ বায়ু ও পানি মশার সংখ্যাবৃদ্ধি, খাদ্যগ্রহণ ও প্রজনন ত্বরান্বিত করে। দীর্ঘ উষ্ণ মৌসুম মানে প্রতি বছরে বেশি প্রজন্ম। আবার বৃষ্টিপাতের ধরণ বদলালে নতুন জলাশয় তৈরি হয়, যা প্রজননের সুযোগ বাড়ায়।’
আইসল্যান্ডের জলবায়ু সারা বছরই ঠান্ডা। গড় তাপমাত্রা শীতে প্রায় মাইনাস ১ ডিগ্রি সেলাসিয়াস এবং গ্রীষ্মে প্রায় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মশা সাধারণত শীতে ডিম পাড়ে এবং বরফ গলে গেলে লার্ভা ফুটে বের হয়। কিন্তু আইসল্যান্ডে পানি বছরে বহুবার জমে ও গলে, ফলে মশার জীবনচক্র টিকে থাকা কঠিন হয়।
এর আগে আইসল্যান্ডে মশা দেখা গিয়েছিল কেবল একবার—১৯৮০-র দশকে। তখন জীববিজ্ঞানী গিসলি মার গিসলাসন গ্রিনল্যান্ড থেকে আসা একটি বিমানে একটি মশা দেখতে পান। সেটি এখনো আইসল্যান্ডের প্রাকৃতিক ইতিহাস ইনস্টিটিউটে সংরক্ষিত আছে।
আইসল্যান্ডের ন্যাচারাল সায়েন্স ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, মশাগুলো কীভাবে সেখানে এসেছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সম্ভবত এগুলো পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে এসেছে। স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছে কি না, তা নিশ্চিত নয়। তবে সবকিছু ইঙ্গিত দেয় যে তারা আইসল্যান্ডের আবহাওয়ায় টিকে থাকতে পারে।’
ইনস্টিটিউট আরও জানায়, উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং পরিবহনের পরিমাণ বাড়ার কারণে দেশটিতে নতুন নতুন পোকামাকড়ের প্রজাতি দেখা যাচ্ছে।
আইসল্যান্ড বর্তমানে নজিরবিহীন গতিতে উষ্ণ হচ্ছে। চলতি বছরের মে মাসে দেশটিতে ও প্রতিবেশী গ্রিনল্যান্ডে রেকর্ড গরম পড়েছিল। দক্ষিণ দিক থেকে উষ্ণ বায়ু আসার কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
মে মাসে আইসল্যান্ডের তাপমাত্রা ছিল ১৯৯০-২০২০ সালের গড়ের তুলনায় প্রায় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এটি বৈশ্বিক গড় উষ্ণতা বৃদ্ধির তুলনায় প্রায় দশগুণ।
দেশটির হিমবাহ দ্রুত গলছে। ভাটনায়োকুল ন্যাশনাল পার্কের তথ্য অনুযায়ী, ২১০০ সালের মধ্যে আইসল্যান্ডের হিমবাহের অর্ধেক বরফ গলে যেতে পারে।
হ্যাঁ, বিশ্বজুড়েই তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মশার আচরণ ও বিস্তারে পরিবর্তন ঘটছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পোকা-বাহিত রোগ বৃদ্ধি মানবস্বাস্থ্যের অন্যতম বড় হুমকি হয়ে উঠছে।
ব্রিটিশ কীটতত্ত্ববিদ লুক টিলি বলেন, ‘উষ্ণ আবহাওয়া মশা ও তাদের বহন করা জীবাণুকে নতুন অঞ্চলে টিকে থাকতে সহায়তা করে। এর ফলে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসের মতো রোগের বিস্তার ঘটছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ভ্রমণ, বাণিজ্য ও ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তনও এই বিস্তারে ভূমিকা রাখছে। তাই স্থানীয় পর্যায়ে সংক্রমণ রোধে সতর্ক নজরদারি ও প্রস্তুতি জরুরি।’
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যে প্রথমবার অ্যাডিস ইজিপ্টাই প্রজাতির মশার ডিম শনাক্ত হয় হিথ্রো বিমানবন্দরের কাছে।
এরপর ২০২৪ সালের আগস্টে কেন্ট অঞ্চলে অ্যাডিস অ্যালবোপিকটাস মশার চারটি ডিম পাওয়া যায়। যদিও পরবর্তী অনুসন্ধানে আর কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি।
অ্যাডিস ইজিপ্টাই ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস ছড়ায়। আর অ্যাডিস অ্যালবোপিকটাস ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া ছড়াতে পারে।
ইউরোপে সম্প্রতি মশাবাহিত রোগের সংখ্যা বেড়েছে। গত বছর ইতালিতে স্থানীয়ভাবে ছড়ানো ডেঙ্গুর ২০০টির বেশি ঘটনার খবর পাওয়া যায়। ফ্রান্স ও স্পেনেও একই রোগ শনাক্ত হয়েছে।
এই বছর ফ্রান্সে চিকুনগুনিয়ার ৫০০টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
যেসব দেশ আগে থেকেই মশাবাহিত রোগে ভুগছে, সেখানে সংখ্যাটি আরও বেড়েছে।
২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে একদিনে ডেঙ্গুতে ১২ জন মারা যান এবং ২৪ ঘণ্টায় ৭৪০ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন—এটি ছিল একদিনে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের ঘটনা।
বেশি বৃষ্টিপাত মশার ডিম, লার্ভা ও পিউপাকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে দেয়, ফলে নতুন প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি হয়।
যদি বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত না হয়, তবে তা অগভীর স্থির পানির পুকুর তৈরি করে—যা মশার আদর্শ প্রজননক্ষেত্র।
টিলি বলেন, মশার সংখ্যা বাড়লে তা বাস্তুতন্ত্রেও প্রভাব ফেলে। তারা ভাষায়, ‘বেশি মশা বাদুড়, ফড়িং ও পাখির মতো শিকারিদের জন্য খাদ্য বাড়ায়, তবে বন্যপ্রাণীর মধ্যেও রোগ বাড়তে পারে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘মশা কেবল রোগবাহক নয়, তারা পরিবেশগত পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ সূচকও। মশার উপস্থিতি ও আচরণের পরিবর্তন দেখে বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।’
সূত্র: আল-জাজিরা
.png)

আওয়ামী লীগ শাসনামলে জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, মীর কাসেম আলী ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ অনেক আলেম-ওলামাকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
৩৩ মিনিট আগে
চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের অর্থ হলো, নির্বাচন পরিচালনার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের মানসিকতা নিরপেক্ষ থাকা এবং কার্যক্রমে তার প্রতিফলন থাকা। মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের মানসিকতা গঠন হয় সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির ওপরে।
৩৮ মিনিট আগে
জুলাই জাতীয় সনদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে এ বৈঠক শুরু হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে