leadT1ad

একটি দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ খুঁজছে: সালাহউদ্দিন আহমেদ

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর না করলেও এখন সেই সুযোগ খুঁজছে একটি দল— এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, দলটি কিছু দাবি-দাওয়া তুলেছে, যেগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে এবং শিগগিরই যৌক্তিক সমাধান হতে পারে।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘চব্বিশোত্তর বাংলাদেশে তারুণ্যের ভাবনায় শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গতকাল একটি রাজনৈতিক দল বলেছে, জনমতের চাপে অবশেষে গণভোট মেনে নিচ্ছে বিএনপি। রাজনীতিতে কেউ মনে মনে সুখ অনুভব করলে অসুবিধা নেই। আমরা সেটিকে স্বাগত জানাই। কিন্তু ঐকমত্য কমিশনের রেকর্ড ও জাতির সামনে যে বক্তব্য আমরা দিয়েছি, তাতে আমরা বলেছি জুলাই জাতীয় সনদ প্রণীত হয়েছে। সেটি স্বাক্ষর হওয়ার পরে এটি বাস্তবায়নে আমরা জনগণের সম্মতি নেবো, যাতে তার ওপর আর কোনো আইনি ভিত্তি বলার সুযোগ না থাকে।

‘সেই হিসেবে আমরা বলেছি, জনগণের কাছে যাবো, তারা যদি হ্যাঁ বলে—তাহলে বাস্তবায়িত হবে, না বললে হবে না। আর সে জন্যই বলেছি, জাতীয় নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে একটি গণভোটের আয়োজন করা যেতে পারে ছোট্ট একটি ব্যালট পেপারে। এই প্রস্তাব তো আমাদের। আর তাতে দুটি রাজনৈতিক দল ছাড়া বাকি সবাই একমত হয়েছে। তারা সনদে স্বাক্ষরও করেছে,’ যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ওই দুটি রাজনৈতিক দলের একটি সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে গিয়ে স্বাক্ষর করেছে, অন্যটি (এনসিপি) স্বাক্ষর করার জন্য সুযোগ খুঁজছে। তাদের কিছু দাবি-দাওয়া আছে। সে বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হবে। হয়তো তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে একটি যৌক্তিক সমাধান আসবে।

‘কিন্তু কেউ যদি অযৌক্তিকভাবে বলেন যে এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল অর্ডার করে এই সনদ জারি করতে হবে এবং প্রধান উপদেষ্টা সেটা জারি করতে পারেন, কিন্তু সরকার প্রধানকে সেই অধিকার আমাদের সংবিধানে দেয়নি। সরকারের পক্ষে, সরকারের অনুমোদনে, মন্ত্রিসভার অনুমোদনে—ইন অবসেন্স অব পার্লামেন্ট—প্রেসিডেন্ট সেই আইনগুলো পাস করে থাকেন। সরকার কেবল প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আদেশ জারি করতে পারেন, এমন কথা কেউ যদি বলেন, সেটা বৈপ্লবিক কথা, আবেগী কথা। রাষ্ট্র কোনো আবেগী কথার ওপর চলে না। রাষ্ট্র চলে আইন-কানুন ও বিধি-বিধানের মধ্য দিয়ে। তবুও আমরা স্বাগত জানাই যে তারা গণতান্ত্রিকভাবে তাদের প্রস্তাবগুলো পেশ করছেন।

রাষ্ট্রীয় স্বার্থকে দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আমি এই আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা যেন সাংবিধানিকতাকে নষ্ট না করি, যেহেতু আমরা একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি।

‘ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠতে পারে, আদালতে যেতে পারে এমন কোনো আদেশ জারি না করে, সবার মতামতের ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে যেভাবে জুলাই সনদের গেজেট নোটিফিকেশনটা করা যায়, সেভাবে করতে হবে। কারণ, এটা জনগণের মতামত নিয়েই বাস্তবায়ন করতে হবে,’ যোগ করেন সালাহউদ্দিন।

এর আগে বুধবার (২২ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কীভাবে হবে সে সম্পর্কে নিশ্চয়তা পাওয়ার পর জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সনদ স্বাক্ষর করবে।

তিনি বলেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি সেখানে অংশগ্রহণ করেনি। ফলে আমরা আমাদের অবস্থান সরকারের কাছেও তুলে ধরেছি। জুলাই সনদে শুধু কাগজের মূল্যে আমরা বিশ্বাসী নই, ফলে জুলাই সনদ বাস্তবায়নটা কীভাবে হবে সেটার সম্পর্কে নিশ্চয়তা পাওয়ার পরে আমরা স্বাক্ষর করব।

নাহিদ বলেন, সেক্ষেত্রে জুলাই সনদ আমরা একটি সাংবিধানিক আদেশের কথা বলছি, যে আদেশটা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান হিসেবে জারি করবেন। গণঅভ্যুত্থানে জনগণের যে সার্বভৌম ক্ষমতা, সেটার একমাত্র বৈধতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আছে, সেটা প্রেসিডেন্টের নেই।

১৭ অক্টোবর জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর তা বাস্তবায়নের পথ নিয়ে দলগুলোর মতভিন্নতার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছেন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে থাকলেও এনসিপি সনদে সই করেনি মতভিন্নতার কারণে।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান। আর বুধবার এনসিপির সঙ্গে বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

Ad 300x250

সম্পর্কিত