leadT1ad

বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত উপনিবেশায়ন, বদল কীভাবে সম্ভব

প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ১৩

বাংলাদেশের অপেক্ষাকৃত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রভাষক। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে যুক্ত হয়ে আমি খুশিই ছিলাম। কারণ, এখানে নতুন করে গড়ার সুযোগ ও স্বাধীনতা নিশ্চয়ই বেশি। কিন্তু, এরই মধ্যে আবিষ্কার করলাম, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিসর ছোট, তবে তার সমস্যাগুলো অনেক বড়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোর গল্প সাংবাদিকরা প্রায়ই বলেন। ফলে সেই পুরোনো গল্প আমি বলতে চাই না। আমি বরং এর বিদ্যায়তনিক দ্বৈত উপনিবেশায়নের গল্প বলতে চাই।

দ্বৈত উপনিবেশায়ন

বাংলাদেশ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের একটি প্রাক্তন উপনিবেশ। সেই উপনিবেশায়নের ফল আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার রন্ধ্রে রন্ধ্রে। এই নিয়ে অনেক আলাপ হয়েছে, হচ্ছে; আশা করি, আরও হবে। এটি হলো প্রথম উপনিবেশায়ন—যা আমরা আজ পর্যন্ত কাটিয়ে উঠতে পারিনি। দ্বিতীয় উপনিবেশায়নটি আরও মারাত্মক। এটি ঘটে যখন আপনি আপনার নিজের মানুষ দ্বারা আরেক দফা উপনিবেশিত হন।

বাংলাদেশের নবীন ও ‘ছোট ছোট’ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো নামকরা বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপনিবেশ। গবেষণার অভাবে এই দাবির পক্ষে সরাসরি উপাত্ত এই লেখায় আনা কঠিন। তবে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে আমি কিছু উপাত্তের দিকে ইঙ্গিত করব যার মাধ্যমে আমার এই দাবি সত্য নাকি অসত্য, তা নিশ্চয় নির্ণয় করা যাবে। আমি মোট তিনটি বিষয় ধরে এই দাবির পক্ষে অবস্থান নেব–কারিকুলাম, শিক্ষক নিয়োগ ও মানসিকতা এবং পরীক্ষা পদ্ধতি।

সারা দেশেই বাংলার কারিকুলামের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই কোনো বৈপ্লবিক চেহারা নেই। দুনিয়ার এতো এতো বিশ্ববিদ্যালয় এতো এতো পদ্ধতি, কিন্তু আমরা কেন ঢাবি, জাবি, রাবি, চবিতেই আমাদের চাবি হারিয়ে ফেলি?

কারিকুলাম

কারিকুলাম আসলে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লুপ্রিন্ট, তার ম্যাপ, তার নিজস্বতার স্বাক্ষর। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয় বা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ পৃথক হবে মূলত তার কারিকুলামের ভিত্তিতে। কিন্তু নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম হাতে নিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তুলনা করুন। চিত্র একদম পরিষ্কার হয়ে যাবে। এই দুইয়ের মধ্যে এতই মিল যে একটা আরেকটার ফটোকপি বললে ভুল হয় না।

সারা দেশেই বাংলার কারিকুলামের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই কোনো বৈপ্লবিক চেহারা নেই। দুনিয়ার এতো এতো বিশ্ববিদ্যালয় এতো এতো পদ্ধতি, কিন্তু আমরা কেন ঢাবি, জাবি, রাবি, চবিতেই আমাদের চাবি হারিয়ে ফেলি?

কারিকুলাম তৈরি করার জন্য একটা লক্ষ্য, উদ্দেশ্য থাকতে হয়। সেখানেই তৈরি হবে তার স্বতন্ত্রতা। উদাহরণ দিই। যেমন ধরুন, ঢাবি বাংলা হয়তো জোর দিল সমকালীন সাহিত্যের ওপর, জাবি বাংলা হয়তো জোরারোপ করল সাহিত্য রাজনৈতিক পাঠের ওপর। নেত্রকোণা আরেকটু ইন্টারডিসিপ্লিনারি হিসেবে সাহিত্য ও মিডিয়ার প্রতিফলন রাখল তার কারিকুলামে। তখন এই স্বতন্ত্রতাকে কেন্দ্র করে কী ধরনের কোর্স নেয়া হবে এবং তাতে কী ধরনের টেক্সট থাকবে তা নির্ধারণ করা যৌক্তিক ও সহজ হয়।

ধরুন, আমি জোরারোপ করতে চাই রাজনৈতিক সাহিত্যের ওপর। তাহলে অবশ্যই আমি রবীন্দ্রনাথের ‘চোখের বালি’ নেব না, কিন্তু ‘গোরা’ বা ‘ঘরে বাইরে’ নেব। এখন আমার যদি কোনো লক্ষ্য, কোনো স্বতন্ত্রতা না থাকে তখন এই বিষয়গুলো হয়ে যায় অন্য কোনো শিক্ষক বা মূল্যায়কারীর ওপর নির্ভরশীল—অনেকটা ‘এক্সটার্নাল স্যার’ যা বলেন, তা-ই ঠিক। অথবা আমি যে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে এসেছি সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ছিল তারই দুর্বল বা সবল প্রতিলিপি। অথবা দেখা দেয় সেই তর্ক, ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ না পড়ে বাংলা সাহিত্য হয় নাকি! ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ অসাধারণ উপন্যাস, সন্দেহ নেই। কিন্তু আপনার জন্য তা কেন প্রাসঙ্গিক হলো?

বাংলা সাহিত্যে অসাধারণত্বের অভাবই নেই, এর স্বতঃসিদ্ধ নিক্তিও নেই। তাহলে পাঠ্যভুক্ত হওয়ার অবশ্যই যুক্তি থাকতে হবে। কিন্তু, এই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তার কোনো সুযোগ কাজে লাগাতে পারে না, চায়ও না। ঠিক উপনিবেশিতের যে দশা৷ গুগলের এক ক্লিকে যেখানে সিডনি/শিকাগো/রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম পাওয়া যায়, সেখানে আমরা হাতড়াচ্ছি ঢাবি, জাবি, রাবি ইত্যাদি।

সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের যে মেধাবী শিক্ষার্থীরা ‘ছোট’ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে আসেন, তাঁরা সহসা মানিয়ে নিতে পারেন না এইসব 'ছোট' বিশ্ববিদ্যালয়ে। এদের অনেকেই বিভোর থাকেন রোমান্টিকদের রোমে ফেরার মতো তাঁর বিদ্যালাভের সেইসব বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যেতে৷

শিক্ষক নিয়োগ ও মানসিকতা

নবীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌক্তিক কারণেই একদম শুরুর দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তি থেকে শুরু করে প্রশাসনিক পদে একটা বড় অংশের নিয়োগ হয় ‘বড়’ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে। এরপর তাঁদের ছাপ পড়তে থাকে সেই ছোট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। বহিস্থ পরীক্ষক, নিয়ম-কানুন, রীতিনীতি হতে থাকে এই বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিলিপি। এখানে অবশ্যই ব্যতিক্রম আছে। তবে সেটাকে আপাত উপেক্ষা করছি একটা বৃহত্তর প্রবণতা ধরার স্বার্থে। এরপর বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখানে শিক্ষক নিয়োগ হয়ে থাকে। সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের যে মেধাবী শিক্ষার্থীরা ‘ছোট’ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে আসেন, তাঁরা সহসা মানিয়ে নিতে পারেন না এইসব 'ছোট' বিশ্ববিদ্যালয়ে। এদের অনেকেই বিভোর থাকেন রোমান্টিকদের রোমে ফেরার মতো তাঁর বিদ্যালাভের সেইসব বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যেতে৷

এই দূর কুয়োয় বসে এইসব দিবাস্বপ্ন বাস্তবায়নের একটা পথ হলো আগের বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্গে একটা সুসম্পর্ক ধরে রাখা। গোপন অভিসন্ধিনির্ভর সুসম্পর্ক আর সহকর্মীর সুসম্পর্ক থাকে না৷ তা অনেকটা প্যাট্রোন-ক্লায়েন্টের সম্পর্ক হয়ে যায়। সিদ্ধিলাভের আশা না থাকলেও ‘প্রান্তিক’ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ‘কেন্দ্রীয়’ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সম্পর্ক অনেকটা সাহিত্য ও ফোকলোরের মতো হয়ে ওঠে। ফোক তো আমাদের ধন। তাকে আমরা আদর করব, কিন্তু সে মেইনস্ট্রিম না। মাঝেমাঝে ভাগ্যবান কারও কোকস্টুডিওতে ওঠা-ই তার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি। ফলে নেত্রকোনার কারিকুলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কখনো মান্য নিদর্শন হবে না, তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম নেত্রকোনার জন্য প্রায় বেদবাক্য হয়ে উঠবে।

পরীক্ষা কমিটির সদস্য হওয়ার যোগ্যতা কী? প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেলেই কি সে যোগ্যতা অর্জিত হয়ে যায়? আবার অধ্যাপক হওয়ার পথে একজন শিক্ষক এই বিষয়ে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ছাড়া কোন প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান অর্জন করেন? কোন জ্ঞান তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই কাজের উপযোগী করে তোলে?

পরীক্ষা পদ্ধতি

বাংলাদেশের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশ্নপত্র মডারেশন বোর্ডের মাধ্যমে চূড়ান্ত হয়। যেহেতু তেমন কোনো প্রশিক্ষণ ও প্রশ্নপত্রবিষয়ক পঠন-পাঠন ছাড়াই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয়। তাই প্রশ্ন ভুলভাল বা দুর্বল হওয়া স্বাভাবিক। এটা মডারেশন বোর্ড সংশোধন ও পরিমার্জন করে। কিন্তু মডারেশন বোর্ড কোন মানদণ্ডের ভিত্তিতে সেটা করে? তারা কি প্রশ্নকর্তাকে কোনো রিপোর্ট করে? মানে, তার কী কী উন্নয়ন ঘটানো উচিত—এটা চিহ্নিত করে দেয়? যদি না করে তাহলে ওই প্রশ্নকর্তা কিসের ভিত্তিতে উন্নয়ন ঘটাবে?

আবার, যদি মডারেশন বোর্ডের এমন নির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকে, তাহলে একেক বোর্ড একেকভাবে প্রশ্ন মডারেট করবে। প্রকাশ্য মানদণ্ড নেই মানে আসলে এটা চলে গুপ্ত মানদণ্ডের ভিত্তিতে। আমরা আমরাইতো। একজনকে মুরুব্বি মেনে এগোলেই হয়। কিন্তু, এতে পুরো ব্যবস্থাটাই ভয়ংকর স্বেচ্ছাচারী হয়ে দাঁড়ায়।

পরীক্ষা কমিটির সদস্য হওয়ার যোগ্যতা কী? প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেলেই কি সে যোগ্যতা অর্জিত হয়ে যায়? আবার অধ্যাপক হওয়ার পথে একজন শিক্ষক এই বিষয়ে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ছাড়া কোন প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান অর্জন করেন? কোন জ্ঞান তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই কাজের উপযোগী করে তোলে?

কোনো নীতিমালা বা মানদণ্ড না থাকলে একজনের প্রশ্ন এক কমিটি ঠাওরাবে মানহীন বলে। আর সেই একজন আবার স্বয়ং অন্য কমিটিতে গিয়ে আরেকজনের প্রশ্নকে বলবে মানহীন। এক্ষেত্রে বহিস্থ পরীক্ষক আমাদের মর্ত্যের দেবতা।

মনে রাখা প্রয়োজন সারা দেশের নানাপ্রান্তের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নানামাত্রিক কারণেই এই বহিস্থ পরীক্ষকদের বেশির ভাগ আসেন দেশীয় ‘উপনিবেশক’ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে। অথচ এই মডারেশনের পুরো প্রক্রিয়াটিই লিখিত হতে পারত। অর্থাৎ বহিস্থ পরীক্ষকও লিখিত মত দিতে পারেন। নাহলে আমরা তুচ্ছরা ভুলভ্রান্তি জানব কোত্থেকে?

এখন কেউ হয়তো বলতে পারেন ব্লুমস ট্যাক্সোনমি আছে। কিন্তু সেটা কি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বীকৃত? মানে শিক্ষককে তা অনুসরণ করার কোনো নির্দেশানা দেওয়া হয়? কেন এই ব্যাপারে লিখিত ও মৌখিক কোনো আলাপই নেই? অথবা নেই কোনো প্রয়োজনীয় বিতর্ক? আমার এক্সটার্নাল, তার এক্সটার্নাল, উনার এক্সটার্নাল—এগুলো একটা চূড়ান্ত ইন্টারনাল ম্যানুপুলেশন। এক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাথা আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাতার নিচে দিয়ে নিজস্বতা হয় না। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকর্মীর সাহায্য অবশ্যই লাগে। কিন্তু সেটা মতামত, সহযোগিতা পর্যন্ত হতে পারে, কিন্তু মাথা বর্গা দেওয়া হলে তাকে উপনিবেশ ছাড়া অন্য কিছু বলা মুশকিল।

আরেকটা সমস্যার কথা বলি। সেটা হলো দ্বিতীয় পরীক্ষক। এই পরীক্ষক জানেন না শিক্ষার্থীদের কীভাবে পড়ানো হচ্ছে। মানে কোন বিষয়ের ওপর জোর দিয়ে বা কোন পদ্ধতি ধরে পাঠদান করা হচ্ছে। ধরুন, আমি বাংলা ছন্দ পড়াতে গিয়ে জোর দিলাম ছন্দের প্রায়োগিক দিকে। দ্বিতীয় পরীক্ষক জোর দিলেন সংজ্ঞা জানার দিকে। সমস্যাটা আরও ব্যাপক হতে পারে এই দুই শিক্ষকের দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ ভিন্ন হলে।

যুক্তরাষ্ট্রের একই বিশ্ববিদ্যালয়ে, প্রায় একই ধরনের দুটি কোর্সের পরীক্ষা পদ্ধতি হতে পারে সম্পূর্ণ ভিন্ন। একটিতে মিড পরীক্ষা হতে পারে প্রচলিত অ্যাসাইনমেন্ট, আর অন্যটিতে বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত সাম্প্রতিক কোনো বইয়ের রিভিউ। দুজন শিক্ষকের মধ্যে এতটাই পার্থক্য হতে পারে যদি না তারা একই গ্রুপ বা গুরু পরম্পরার মানুষ না হন।

দ্বিতীয় পরীক্ষক জানেন শুধু একটা কোর্সের সিলেবাস নামক কয়েকটি বইয়ের তালিকা। ফলে সব মিলিয়ে দুই পরীক্ষকের মধ্যে সফলভাবে ক্রসফায়ারের শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

একই সমস্যা খাতা দেখার বেলায়। দ্বিতীয় পরীক্ষক না জানেন শিক্ষার্থীদের মান, না জানেন পড়ানোর ধরন, মানে ঐ কোর্সে কীভাবে পড়ানো হয়েছে। এই উদ্ভট পদ্ধতি দুনিয়ার কোনো দেশই অনুসরণ করে না। এদিক থেকে আমরা অদ্বিতীয়। আমাদের অভিনন্দন। ইংল্যান্ড জাতীয় মানদণ্ডের স্বার্থে দ্বিতীয় পরীক্ষক রাখে, কিন্তু তাঁর কাজ প্রশ্ন করা বা খাতা দেখা নয়। তিনি শুধু দৈবচয়নের ভিত্তিকে একটি বা দুটি খাতা দেখে মূল্যায়ন করেন, দেখেন নম্বর দেওয়াটা ঠিক আছে কিনা। আর আমেরিকাসহ অনেক দেশে তো আমাদের মতো কারিকুলামই নাই৷ শিক্ষকই ঠিক করেন তিনি কী পড়াবেন। এমনকি নতুন কোর্স অফার করতেও তাঁদের বাধা নেই।

শিক্ষার বিউপনিবেশায়নের আলাপ করার সময় এই ‘ছোট’, নবীন, প্রান্তিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আমি আলাদাভাবে দেখতে চাই। কারণ, তাকে দুই ধরনের উপনিবেশায়নের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। যা তার দুর্বল পেশিতে প্রায় অসম্ভব। আমি তবুও আশাবাদী হতে চাই। কারণ, ভয় ও হতাশা মূলত ক্ষমতাবানদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করে ও লাভবান করে। এর বিপরীতে ক্ষমতাহীনদের প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হচ্ছে আশা অব্যাহত রাখা। আমি বিশ্বাস করি নতুন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রের চেয়ে প্রান্ত থেকেই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

Ad 300x250

সম্পর্কিত