leadT1ad

সরাসরি হত্যার নির্দেশই হাসিনার অপরাধ প্রমাণে যথেষ্ট: চিফ প্রসিকিউটর

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ৫৩
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অপরাধ প্রমাণে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সারাদেশে ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগত হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দেওয়ার বিষয়টিই যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মামলায় তৃতীয় দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা গণআন্দোলনের সময়ে ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, হাসানুল হক ইনু ও ঢাবির তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ কামালের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনের অডিও বিশ্লেষণ করে তাজুল ইসলাম বলেন, তাপসের সঙ্গে কথোপকথনে লেথাল উইপন ব্যবহারের নির্দেশ, লেথাল উইপন দিয়ে এবং হেলিকপ্টার ব্যবহার করে হত্যা এবং ড্রোন ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের অবস্থান নির্ণয় করার বিষয়গুলো এসেছে। হাসিনার যে কমান্ড রেসপনসিবিলিটি (আদেশের দায়) সেটি বাদ দিলেও পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সরাসরি হত্যার নির্দেশই তাঁর অপরাধ প্রমাণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট। বিটিভি ও ইন্টারনেট সংক্রান্ত ভবন পোড়ানোকে ‘ভালো হয়েছে’ বলার মানেই হচ্ছে এগুলো তাদের ইচ্ছায় হয়েছে, কিন্তু দায় চাপানো হয়েছে অন্যদের উপরে।

তিনি আরও বলেন, জাসদ সভাপতি ইনুর সঙ্গে কথোপকথনে কারফিউয়ের পরে যেন আন্দোলনকারীরা মাঠে নামতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য দলগুলোকে মাঠে নামানো; আন্দোলনকারীদের জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করা, বিদেশি রাষ্ট্রগুলোকে যুক্ত করার চেষ্টা, গত সাড়ে ১৫ বছরের মতো জঙ্গি কার্ডকে ব্যবহার ও ষড়যন্ত্র করা; এই সুযোগে জামায়াত-শিবিরকে যা পারো ধরে ফেল মর্মে ইনুকে নির্দেশ দেওয়া– এসব বিষয়ের মাধ্যমে হাসিনার সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি বোঝা যায়। এসব তথ্য-উপাত্ত থেকে তার নির্দেশের বিষয়টি প্রমাণিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মাকসুদ কামালের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনের বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, সেখানে শেখ হাসিনা বলেছেন, র‌্যাব ও বিজিবিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তার যে নির্দেশ এবং পরবর্তীকালে র‌্যাব ও বিজিবির অ্যাকশনগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে বোঝা যায় র‌্যাব ও বিজিবির হাতে সংঘটিত হত্যাগুলোও হাসিনার নির্দেশে হয়েছে। এই কথোপকথনে ছাত্রদের রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত করে রাজাকারদের মতো ছাত্রদেরও ফাঁসি দেওয়া বা হত্যা করার কথাও বলা হয়েছে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এটিই প্রথম মামলা। এ মামলায় বাকি দুই আসামি হলেন– সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তবে চৌধুরী মামুন এতে রাজসাক্ষী হয়েছেন।

গত ৮ অক্টোবর এ মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে সর্বশেষ সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরকে আসামিপক্ষের জেরা শেষ হয়। এরপর ১২ অক্টোবর থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। আজ তৃতীয় দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আগামীকাল নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন বিচারক।

Ad 300x250

সম্পর্কিত