leadT1ad

সচিবালয় কর্মচারীদের বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ, চারজনকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

ঝুঁকি ভাতা দাবিতে সচিবালয়ে কর্মচারীদের বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে চারজনকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। স্ট্রিম ছবি

ঝুঁকি ভাতা দাবিতে সচিবালয়ে কর্মচারীদের বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে চারজনকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বলছে, অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (কেপিআই) এলাকা হিসেবে সচিবালয়ে মিছিল-মিটিং করার অনুমতি নেই। তবুও আইন লঙ্ঘন করে তারা বিক্ষোভ করেছেন। এ জন্য চারজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বাদিউল কবীর ও সহসভাপতি গোলাম রাব্বানী শাহীনসহ চারজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে, সচিবালয়ে এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো প্রশাসনিক বা ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকে বাইরে যেতে দেখা যাচ্ছে না। সবাইকে কাজে ফিরে যেতে অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে, দুপুর থেকেই সচিবালয়ের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামনে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা জড়ো হতে থাকেন। মন্ত্রণালয়ে ঢোকার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করেন তারা। এরপর বিকাল ৩টার দিকে ছয় ও সাত নম্বর ভবনের মাঝে বাদামতলায় এসে জড়ো হন সচিবালয় কর্মচারীরা।

সেখান থেকে মিছিল নিয়ে তারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অতিক্রম করে সামনে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময়ে চারজনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।

প্রিজনভ্যান থেকে বাদিউল কবীর বলেন, ‘কর্মচারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। সবাই আগামী রবিবার কর্মবিরতি পালন করবেন। অধিকার আদায়ের আগে আমরা থেমে যাব না।’

ডিএমপির ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি ডিভিশনের যুগ্ম কমিশনার সানা শামীনুর রহমান বলেন, রোববার থেকে সচিবালয় বন্ধের একটা হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিক চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি—এটা আপনারাও দেখেছেন। এখানে আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখব—কার কতটুকু দায়-দায়িত্ব রয়েছে।

হেফাজতে নেওয়া ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা­ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আপাতত হেফাজতে নিয়েছি। যাচাই-বাছাই করে ভিডিও ফুটেজ দেখে পরে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সানা শামীনুর রহমান বলেন, এটি (সচিবালয়) বাংলাদেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র। এখানে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং করার অনুমতি নেই।

তিনি বলেন, কেপিআই হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সার্কুলারে সচিবালয়, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন–এলাকায় মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা গতকাল (বুধবার) এবং আজও তাদেরকে এই মেসেজটি দেওয়ার চেষ্টা করেছি—যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটে।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বলেন, গতকাল তারা আইন ভঙ্গ করে উপদেষ্টাকে জিম্মি করে তাদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার চেষ্টা করেছেন। এটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কোনোভাবেই বেআইনি কর্মকাণ্ড মেনে নেবে না। যানবাহন চলাচল বন্ধ করা, পথচারীদের বিঘ্ন সৃষ্টি করা, বিশৃঙ্খলা তৈরি করা—এসব করলে আইন তার নিজস্ব পথে চলবে।

এদিকে, অর্থ উপদেষ্টার কাছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মচারীদের সমান ঝুঁকি ভাতা দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন সচিবালয়ে কর্মরত কর্মচারীরা। কিন্তু সেই দাবি পূরণ না হওয়ায় তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। দুদক কর্মচারীদের ঝুঁকি ভাতা তাদের মূল বেতনের ৩০ শতাংশ।

ভাতার দাবি আদায়ে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা আড়াইটা থেকে রাত সোয়া আটটা পর্যন্ত অর্থ উপদেষ্টাকে কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন সচিবালয়ের নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রায় সাত ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর রাত সাড়ে ৮টায় অর্থ উপদেষ্টা পুলিশি সহায়তায় সচিবালয় থেকে বের হন।

এ ছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা চালুর আশ্বাস দিয়েও পরে তা কার্যকর করেনি সরকার। নতুন বেতন কমিশনের কাজ শেষ পর্যায়ে। অর্থ উপদেষ্টা কয়েকবার বলেছেন, বেতন কমিশন বাস্তবায়ন করবে নির্বাচিত সরকার। এর আগে ২২ জুন সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতেও অর্থ বিভাগের সামনে অবস্থান ও বিক্ষোভ করেছিলেন কর্মচারীরা।

Ad 300x250

সম্পর্কিত