leadT1ad

৯ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি: বিটিআরসির সাবেক ৩ চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৩২
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) লোগো। ছবি: সংগৃহীত

বেআইনিভাবে আন্তর্জাতিক ইনকামিং কল টার্মিনেশন রেট ও রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের (রাজস্ব ভাগাভাগি) হার কমিয়ে সরকারের ৯ হাজার ১০ কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সাবেক তিন চেয়ারম্যানসহ মোট ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।

আজ বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির পরিচালক মো. জালাল উদ্দীন আহমেদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন—বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, সাবেক চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, সাবেক কমিশনার ও চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক। অন্য আসামিরা হলেন—সাবেক কমিশনার মো. রেজাউল কাদের এবং সাবেক কমিশনার মো. আমিনুল হাসান।

ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে আইজিডব্লিউ (ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে) অপারেটরদের অবৈধ সুবিধা দিয়ে আসামিরা রাষ্ট্রের এই বিপুল ক্ষতি করেছেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

দুদকের নথিপত্র ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আন্তর্জাতিক ইনকামিং কল আনার ক্ষেত্রে ২০১৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে কল টার্মিনেশন রেট ও রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের হার পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছিল।

ওই সময় প্রতি কল মিনিট টার্মিনেশন রেট ০.০৩ মার্কিন ডলারের স্থলে কমিয়ে ০.০১৫ মার্কিন ডলার করা হয়। একই সঙ্গে সরকারের রেভিনিউ শেয়ারিং ৫১.৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪০ শতাংশ এবং আইজিডব্লিউ অপারেটরদের শেয়ারিং ১৩.২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারের অনুমোদন ছাড়াই এবং সরকারি আদেশ লঙ্ঘন করে ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ২৮ মাস এই পরীক্ষামূলক হার বেআইনিভাবে বহাল রাখেন।

বিটিআরসি কর্তৃপক্ষের এই বেআইনি কর্মকাণ্ডের ফলে তিনটি খাতে সরকারের মোট ৯০১০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৮ হাজার ৮৫ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এর মধ্যে সরকারের প্রাপ্য রেভিনিউ শেয়ারিং ৫১.৭৫ শতাংশের বদলে ৪০ শতাংশ নেওয়ায় ক্ষতি হয়েছে ৩৮৩ কোটি ৭৩ লাখ ৮৩ হাজার ৪৩৬ টাকা এবং নির্ধারিত রেটের চেয়ে কম রেটে কল আনায় ক্ষতি হয়েছে ২ হাজার ৯৪১ কোটি ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার ৬৭৪ টাকা।

এছাড়া নির্ধারিত হারের চেয়ে কম রেটে কল আসায় রাষ্ট্র মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে বঞ্চিত হয়েছে, যার পরিমাণ ৭২ কোটি ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯ মার্কিন ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ হাজার ৬৮৫ কোটি ১ লাখ ২৪ হাজার ৯৭৫ টাকা।

রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির দায়ে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলাটি রুজু করা হয়েছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত