leadT1ad

চেয়ারম্যানের স্ত্রী ও মেয়ের অতিরিক্ত ডলার খরচ, ব্যাংক এশিয়াকে জরিমানা

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

ব্যাংকের চেয়ারম্যান রোমো রউফ চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী ফারহানা করিম। ছবি: ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে

চেয়ারম্যানের দ্বিতীয় স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়মের বাইরে দেশের বাইরে অতিরিক্ত ডলার খরচের সুযোগ দিয়েছে বেসরকারি খাতের ব্যাংক এশিয়া। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগের এক পরিদর্শনে বিষয়টি ধরা পড়েছে। এই ঘটনায় ব্যাংক এশিয়াকে ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়া সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

নথিপত্র অনুযায়ী, কোন গ্রাহক বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার খরচ করতে পারেন। তবে ব্যাংক এশিয়ার দুজন গ্রাহক এক বছরে এর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি অর্থ খরচ করেন। পাশাপাশি দেশের খোলা বাজার থেকে নগদ ডলার কিনে ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। যা বিদেশে খরচ করেন তাঁরা। দুই বিশেষ গ্রাহক হলেন ব্যাংকটি বর্তমান চেয়ারম্যান রোমো রউফ চৌধুরীর স্ত্রী ফারহানা করিম ও রোমো রউফ চৌধুরীর কন্যা আলায়না চৌধুরী। ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে নিয়মবহির্ভূতভাবে তাঁরা ব্যাংক হিসাবে নগদ ডলার জমা করেন এবং সেই অর্থ বিদেশে ব্যবহার করেন।

বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনা বিধান অনুযায়ী, একজন বাংলাদেশি নাগরিক প্রতিবছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার পর্যন্ত বিদেশে ব্যয় খরচ করতে পারেন। তবে রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট বা আরএফসিডি হিসাবে জমা করার অর্থের পুরোটা বিদেশে ব্যবহার করা যায়। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বিদেশ ভ্রমণ শেষে দেশে ফেরার সময় সঙ্গে সঙ্গে আনা ডলার যদি ১০ হাজার ডলারের কম হয়, তবে তার বিভিন্নভাবে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। তিনি নিজের কাছে রাখতে পারেন, ব্যাংকে বা অনুমোদিত মানি চেঞ্জারে কাছে বিক্রি করতে পারেন ও আরএফসিডি হিসাবে জমা রাখতে পারেন। কিন্তু ১০ হাজার ডলারের বেশি দেশে আনলে নির্দিষ্ট ফরমে ঘোষণা দিতে হয় এবং দেশে আসার ৩০ দিনের মধ্যে তা ব্যাংকে জমা দিতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে তদন্তে দেখা গেছে, এই দুই গ্রাহকেরা নিয়ম লঙ্ঘন করে আরএফসিডি হিসাবে দফায় দফায় নগদ ডলার জমা করেছেন, যা পরে বিদেশে খরচ করা হয়। ফারহানা করিম প্রায় এক বছর আগের বিদেশ ভ্রমণের তারিখ দেখিয়ে একাধিকবার ও কখনো একই দিনে কয়েকবার ১০ হাজার ডলার বা তার বেশি নির্দিষ্ট ফরমে ঘোষণা ছাড়াই জমা দিয়েছেন। এসব লেনদেনে অন্য ব্যক্তি তাঁর হয়ে ব্যাংকে ডলার জমা করেছে। যা সব মিলিয়ে দাঁড়ায় প্রায় দেড় লাখ ডলার। তিনি বিদেশে অবস্থানকালেও দেশের ভেতর থেকে ডলার জমা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে এসব অর্থ তার আরএফসিডি হিসাবের বিপরীতে ইস্যুকৃত কার্ড ব্যবহার করে বিদেশে খরচ করা হয়েছে।

তদন্তে আরও উঠে আসে, আলায়না চৌধুরী বিদেশে অবস্থানকালে অন্য একজনের মাধ্যমে নগদ মোট ৬৮ হাজার ডলার তাঁর আরএফসিডি হিসাবে জমা করিয়েছেন। পরে সেই অর্থও উক্ত হিসাবের বিপরীতে ইস্যুকৃত কার্ড ব্যবহার করে বিদেশে বায় করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকের সহায়তা ছাড়া এভাবে নিয়ম ভেঙে ধারাবাহিকভাবে বড় অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা জমা করে বিদেশে খরচ করা সম্ভব নয়। চেয়ারম্যানের স্ত্রী ও কন্যা হওয়ার সুবাদে তাঁরা এই সুবিধা পেয়েছেন। এ জন্য নীতিমালা মেনে ব্যাংকটিকে জরিমানা করা হয়েছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত