leadT1ad

হাসিনার পতনের দুই দিন আগে শহীদ মিনারে যা বলেছিলেন মাহফুজ আলম

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১২: ০৩
হাসিনার পতনের দুই দিন আগে শহীদ মিনারে বক্তব্য দিয়েছিলেন মাহফুজ আলম। ফেসবুক থেকে নেওয়া

গত বছরের ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের’নেতারা আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা করেছিলেন। ওইদিনের একটি ভিডিও নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শনিবার (২ আগস্ট) শেয়ার করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম।

ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা বিচ্ছিন্নভাবে কিছু করতে চাইনি। আমরা ছাত্ররা শুধু দেশের পরিবর্তন করতেই চাইনি, আমরা চেয়েছি, জনগণের-ছাত্র-নাগরিকের এক সাথে আসা।’

ভিডিওতে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ছাত্রনেতা উমামা ফাতেমা, আছাদুজ্জামান ভূঁইয়া, আবু বাকের মজুমদার, আইনজীবী মানজুর আল মতিনসহ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের। ‘আন্দোলন আদায় হয় দায় ও দরদের ভিত্তিতে’বলে ভিডিওটিতে মন্তব্য করেন মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব নিয়েছেন আপনারা, এই জন্য গণভবন কেঁপে ওঠেছে। …মানবাধিকার-অধিকারের রাজনীতি আর নেই এদেশে, এদেশে দায়িত্বের রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে। এ দেশে বিভাজন ভুলে দরদের রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে।’

৩ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের ভিডিওটির শুরুতে মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবে নাহিদ, আসিফ, বাকেরসহ অন্য যারা আছে, জাতি তাদের নেতৃত্ব মেনে নেবে। আমরা আমাদের কাজ করবো, সিভিল সোসাইটি তাদের এনগেজমেন্টের জায়গা থেকে কাজ করবে।’

নতুন করে সামনে আসা এ ভিডিওতে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিচ্ছিন্নভাবে কিছু করতে চাইনি। আমরা ছাত্রেরা শুধু দেশের পরিবর্তন করতে চাইনি, আমরা চেয়েছি, জনগণের-ছাত্র-নাগরিকের এক সাথে আসা। এক সাথে স্বৈরাচার—এই ফ্যাসিবাদী রেজিম— যেটা ২০০৭ এর ১/১১ জরুরি অবস্থা থেকে আজ পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে, সেটাকে নস্যাৎ করা। সেই পলিটিক্যাল সেটেলমেন্টকে নস্যাৎ করা। এই স্বৈরাচারী রেজিমকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে, ইন্টেলেকচুয়ালি পরাজিত করা। আমরা সেই কাজে আমাদের ছাত্রদেরকে হয়তোবা সহযোগিতা করতে পেরেছি। আজ আমি একা নই, আমার বন্ধুগণ একা নয়। আজ আমাদের সাথে সারা বাংলাদেশের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন যত শিক্ষক, সমাজকর্মী, সংস্কৃতিকর্মী ডান-বামের বিভাজন ছেড়ে, শাপলা-শাহবাগের বিভাজন ছেড়ে এক অনন্য মুহূর্ত বাংলাদেশের জন্য।’

মাহফুজ আলম এসময় দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আজ এই ছাত্র-নাগরিকের গণ-অভ্যুত্থানের এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে আমার বন্ধু আমার পরিচয় ফাঁস করে দিয়েছে। ভুল করেছে কি সঠিক করেছে আমি জানি না, তারা আমাকে কী করবে আমি জানি না। কিন্তু আমি আমার কাজ করে গেছি। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো, ততদিন এই দেশে নতুন পলিটিক্যাল সেটেলমেন্ট হবেই হবে। সেই সেটেলমেন্ট এই দেশে কখনো কোনও চেতনার নামেই ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে দিবে না।’

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ২ আগস্ট রাত ১২টায় একটি অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘সমন্বয়কেরা কে কোন দলের, গোয়েন্দা নজরে “ইন্টেলেকচুয়াল এক তরুণ’” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তাতে বলা হয় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এর সদস্যদের রাজনৈতিক পরিচয় বা ব্যাকগ্রাউন্ড খুঁজে দেখেছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।

প্রতিবেদনে গোয়েন্দা সংস্থার নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকে পেছন থেকে একজন ইন্টেলেকচুয়াল তরুণ গভীরভাবে আন্দোলনে যুক্ত বলে তাদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক এই তরুণের সঙ্গে একটি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক ও দেশের খ্যাতনামা একজন চিন্তকের যুক্ততাও গভীরভাবে খুঁজে দেখা হচ্ছে। তবে প্রতিবেদনে ওই তরুণের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

Ad 300x250

সম্পর্কিত