নারী শিক্ষার্থীদের ‘যৌন হয়রানি’, ‘বডি শেমিং’, ‘অনৈতিক প্রস্তাব’ ও ‘মামলার হুমকি’র অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানজিল ভুঁইয়ার স্থায়ী বহিষ্কার দাবি জানিয়েছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনে তানজিল ভুঁইয়ার চেম্বারে তালা ঝুলিয়ে বিকেল পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক তানজিল ভুঁইয়া নারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য ও আচরণ করে আসছেন। পাশাপাশি অনৈতিক প্রস্তাব, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কটূ মন্তব্যেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাজমহল আকতার তিথি বলেন, ‘উনি নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কটূ মন্তব্য করেন। যেমন, তোমার কোমর তো ভালো দোলে, রাতের রানি, রাতের গার্ড; প্রথম ব্যাচ থেকে শুরু করে এখন সপ্তম ব্যাচ পর্যন্ত অনেকে উনার এমন আচরণের শিকার হয়েছেন। আগের এক ঘটনায় তিনি শিক্ষার্থীদের মারতেও এসেছিলেন, সেই ভিডিওও আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উনার কু-প্রস্তাবে রাজি না হলে উনি ওই শিক্ষার্থীদের নম্বর ছড়িয়ে দেন। এমনকি তাকানোর ভঙ্গিতেও ভয় লাগে। আমরা ক্লাসে যেতেও ভয় পাচ্ছি। তাই আমরা উনার স্থায়ী বহিষ্কার চাই।’
আরেক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘তানজিল ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি অশোভন আচরণ ছাড়াও শিক্ষার্থীদের মারতে আসা ও মামলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি এক সময় নিজের বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে বিয়ে করেন; এরপর তার স্ত্রীও সহপাঠীদের নানা হুমকি দেন। এসব ঘটনায় আমরা বিভাগের পক্ষ থেকে তার স্থায়ী বহিষ্কার দাবি করছি।’
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে তানজিল ভুঁইয়া বলেন, ‘ওরা যে অভিযোগ করেছে তার একটিও সত্য নয়। এগুলো সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার সূত্রপাত আমাদের প্রথম ব্যাচের এক নারী শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে। এক ট্যুরে ওই শিক্ষার্থী মেয়েদের রুমে কয়েকজন ছেলে নিয়ে মাদক সেবন করছিল। আমি গিয়ে বাধা দিই। সেই ঘটনার পর থেকেই সে আমার নামে এসব ছড়াচ্ছে। এখন সিনিয়র কয়েকজন শিক্ষার্থী বিভাগের অন্যদের উসকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে ফাঁসাতে চাইছে। যদি প্রমাণ থাকে, তাহলে সেটা সামনে নিয়ে আসুক।’