leadT1ad

নৌ-বিমান বাহিনীর জ্যেষ্ঠ নেতৃত্ব নির্বাচনে পর্ষদ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৬: ১৬
আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৬: ১৮
নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী নির্বাচনী পর্ষদ-২০২৫ এর উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: আইএসপিআরের সৌজন্যে

নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর ভবিষ্যৎ জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তা নির্বাচন করতে ‘নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী নির্বাচনি পর্ষদ-২০২৫’ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। রবিবার (৩ আগস্ট) নৌবাহিনী সদর দপ্তরে পর্ষদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর জানিয়েছে, সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত এ পর্ষদ সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে বাহিনী দুটির ভবিষ্যৎ জ্যেষ্ঠ নেতৃত্ব নির্ধারণ করবেন।

এক বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর জানিয়েছে, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন হতে কমডোর, কমান্ডার হতে ক্যাপ্টেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হতে কমান্ডার এবং বিমান বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন হতে এয়ার কমডোর, উইং কমান্ডার হতে গ্রুপ ক্যাপ্টেন এবং স্কোয়াড্রন লিডার হতে উইং কমান্ডার পদবিতে কর্মকর্তাদের পদোন্নতির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সংঘটিত মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

নির্বাচনী পর্ষদ-২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর বীর সদস্য, সব শ্রেণি-পেশার মুক্তিকামী বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারী শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর গৌরবময় ইতিহাস, সংগ্রাম ও বীরত্বের কথা স্মরণসহ শান্তিকালীন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা এবং জাতীয় প্রয়োজনে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এছাড়াও, দেশের সার্বভৌমত্ত্ব রক্ষায় ও নানা সংকটে; বিশেষত ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশের নিরাপত্তা সংকটে দেশের আপামর জনসাধারণের পাশে দাঁড়িয়ে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, দেশ গঠনে উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করে দেশের মানুষের ভালোবাসা ও নির্ভরতা অর্জন করায় নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের সাধুবাদ ও অভিনন্দন জানান।

দেশের সমুদ্র সম্পদের সংরক্ষণ ও আহরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন, ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র গভীর সমুদ্রবন্দরের ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অবদান এবং সার্বিকভাবে সুনীল অর্থনীতির বিকাশে প্রয়োজনীয় দক্ষ মানবসম্পদ গড়ার ব্যাপারে নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা। পাশাপাশি তিনি দেশের সুনীল অর্থনীতির বিকাশে চলমান বিভিন্ন কর্মকাণ্ড, মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এমআইডিএ) প্রতিষ্ঠা, উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের আলোকপাত করেন এবং এক্ষেত্রে নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর অবদানের কথা উল্লেখ করেন। এছাড়াও নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী কর্তৃক দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানসহ দেশমাতৃকার সেবায় ও সুরক্ষায় বাহিনী দুটির ভূমিকা ও সর্বোপরি সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনী দেশের সংবিধান সমুন্নত রেখে যেকোনো রাষ্ট্রীয় সংকটে এবং দুর্যোগে আর্তমানবতার সেবায় জনগণের পাশে দাঁড়ানোর এই ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

পরিশেষে, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর নেতৃত্বে দেশপ্রেমিক, মেধাবী, দক্ষ, পেশাদার, সৎ, মানবিক এবং নৈতিক গুণাবলিসম্পন্ন যোগ্য কর্মকর্তাদের নির্বাচনের জন্য নির্বাচনি পর্ষদকে যথাযথ নির্দেশনা প্রদান করেন।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান। নির্বাচনি পর্ষদ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কর্মব্যস্ততার মাঝেও নৌবাহিনী সদর দপ্তরে উপস্থিত হয়ে নির্বাচনি পর্ষদে সদয় উপস্থিতির জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান নৌবাহিনী প্রধান এবং বিমান বাহিনী প্রধান।

নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর নির্বাচনী পর্ষদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সামরিক ও বেসামরিক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টা নৌবাহিনী সদর দপ্তর প্রাঙ্গনে একটি বৃক্ষ রোপণ করে নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী ও বাংলাদেশের সমৃদ্ধি কামনা করেন।

Ad 300x250

সম্পর্কিত