leadT1ad

আন্ডারওয়ার্ল্ডে আধিপত্যের দ্বন্দ্বে খুন মামুন, দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৯
নরসিংদী ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ফারুক, রবিন, শামীম, রুবেল ও আরও এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সংগৃহীত ছবি

পুরান ঢাকায় আন্ডারওয়ার্ল্ডের নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শীর্ষ সন্ত্রাসী তারেক সাঈদ মামুনকে হত্যা করা হয়েছে। খুনের পর খুনিদের দেওয়া হয় দুই লাখ টাকা। হত্যা মিশনের সমন্বয়ক ছিলেন রনি নামে এক সন্ত্রাসী।

আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) মিন্টো রোডের ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম।

গত ১০ নভেম্বর পুরান ঢাকার ন্যাশনাল হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে গুলিতে আহত হন মামুন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, মামুন হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, ছয় রাউন্ড গুলি, একটি মোটরসাইকেল ও দেড় লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের শনাক্ত করা হয়। পরে নরসিংদী ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ফারুক, রবিন, শামীম, রুবেল ও আরও এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ফারুক ও রবিনের কাছ থেকে এক লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ টাকা উদ্ধার করা হয়, যা খুনের পারিশ্রমিক হিসেবে সন্ত্রাসী রনি সরবরাহ করেছিলেন।

অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, রনি আগে মুদি দোকানি ছিলেন, পরে একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতা হন। আন্ডারওয়ার্ল্ডের দ্বন্দ্ব থেকেই মামুনকে হত্যা করা হয়েছে। রনিকে গ্রেপ্তার করা গেলে খুনের পেছনে আর কারা আছে, তা জানা যাবে।

পুলিশের সংবাদ সম্মেলন। সংগৃহীত ছবি
পুলিশের সংবাদ সম্মেলন। সংগৃহীত ছবি

তিনি আরও বলেন, একসময় রনি, ইমন ও মামুন একসঙ্গে কাজ করতেন। কেউ কারাগারে গেলে অন্যজন নিয়ন্ত্রণ নিতেন। মামুন জেল থেকে বের হয়ে পুনরায় দখল নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ নিয়েই দ্বন্দ্ব হয়। হত্যার পর খুনিদের দুই লাখ টাকা দেওয়া হয়।

গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, হত্যার পর ফারুক ও রবিন তাদের অস্ত্র ও গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রাখে। পরে রুবেল তা মোবাইলফোনে রনিকে নিশ্চিত করে। এরপর রুবেলকে নিয়ে রায়েরবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইউসুফকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ি থেকে ১১ নভেম্বর বিকেলে দুটি বিদেশি পিস্তল, ছয় রাউন্ড গুলি ও দুটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রনির নির্দেশে মামুনকে হত্যার জন্য একাধিকবার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। আগের পরিকল্পনা ব্যর্থ হলে ১০ নভেম্বর দিনটি নির্ধারণ করা হয়, যেদিন মামুনের হাজিরা ছিল।

রনি সেদিন সকালে রবিনকে ফোনে নির্দেশ দেন জজকোর্ট এলাকায় যেতে। পরে রবিন তার বন্ধু শামীমের মোটরসাইকেলে করে সেখানে যান। ‘রনি সুমনের কাছ থেকে দুটি পিস্তল নিয়ে একটি ফারুক ও অন্যটি রবিনকে দেন’, বলেন কর্মকর্তা।

পুলিশ জানায়, মামুনের গতিবিধি নজরদারির দায়িত্বে ছিলেন পলাতক সন্ত্রাসী কামাল। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ফারুক ও রবিন মামুনকে গুলি করে হত্যা করেন এবং পরে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এরপর রনির নির্দেশে রুবেল অস্ত্র দুটি সংগ্রহ করে ইউসুফের কাছে জমা রাখেন। পরে ফারুক ও রবিনকে এক লাখ টাকা করে দেওয়া হয়।

ডিবি প্রধান বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে চুল বড় যিনি, তিনি ফারুক। ক্যাপ পরা ব্যক্তি রবিন। ২৬ ঘণ্টার মধ্যে তাদের চিহ্নিত করে ৩২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং পলাতক রনিসহ অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে, বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম, ডিবি দক্ষিণ বিভাগের যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম, ডিবি উত্তর বিভাগের যুগ্ম কমিশনার রবিউলি হোসেন ভুইয়া প্রমুখ।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত