leadT1ad

চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করতে বিদেশি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন: নৌ উপদেষ্টা

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক

প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ১৭
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে বিদেশি ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় লালদিয়া চর কনটেইনার ইয়ার্ড উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বন্দর নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলবে। কিন্তু উন্নতি করতে হলে প্রযুক্তি, অর্থ ও দক্ষতা প্রয়োজন। বন্দর ঘিরে চার-পাঁচ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে বেশিরভাগ বন্দর বেসরকারি অপারেটররা পরিচালনা করে। আমরাও সেভাবে এগিয়ে যেতে চাই।

দেশের স্বার্থের ক্ষতি করে কাউকে বন্দর অপারেশন করতে দেওয়া হবে না জানিয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার রাখার সক্ষমতা ৫৬ হাজার টিইউএস থেকে ১০ হাজার বেড়ে ৬৬ হাজারে উন্নীত হবে। যারা বিজনেস করে তাদের জন্য লালদিয়ার চর টার্মিনাল বড় সুযোগ। ১০ হাজার কনটেইনার রাখার ক্যাপাসিটি বাড়বে।’

তিনি বলেন, বন্দরকে গতিশীল করতে যে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হবে, সেই প্রতিষ্ঠানই কাজের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে। সবক্ষেত্রেই দেশের স্বার্থ প্রাধান্য পাবে। বন্দর নিয়ে জাতীয় স্বার্থবিরোধী কোনো কাজ করবে না সরকার।

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের ক্ষতি করে কোন সিদ্ধান্ত হবে না। ব্যবসায়ীরা যেন সুযোগ পায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

উপদেষ্টা বলেন, দেশের ঊর্ধ্বমুখী আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের চাপ সামলাতে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই এবং অন্তর্বর্তী সরকার সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে।

লালদিয়ার চরের পরিত্যক্ত এই টার্মিনাল বাস্তবায়ন হলে বন্দরের কার্যক্রমও গতিশীল হবে। বন্দরের ভেতরে অব্যবহৃত পরিত্যক্ত স্থানগুলো কাজে লাগানো হবে। চট্টগ্রামে ট্রাক টার্মিনাল না থাকায় নগরী ও জেলায় যানজট বাড়ছে বলেও চিহ্নিত করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মূলত ৩২ একর জায়গার উপর কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। যার মধ্যে ১৪ একর জায়গায় ইয়ার্ড করা হয়েছে। ফলে ১০ হাজার একক কন্টেইনার ধারণ ক্ষমতা এবং ১ হাজার ৫০০ ট্রাক রাখার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া ৮ একর জায়গায় হেভি লিফট কার্গো জেটির ব্যাকআপ ও ১০ একর জায়গায় এপিএম টার্মিনাল এলাকা তৈরি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের ট্যারিফ বাড়ানো প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ৩৭ বছর পর এটি করা হচ্ছে, তাই বিরোধিতা করা অযৌক্তিক। ব্যবসায়ীরাই ব্যবসা করবে। ১৯৮৪ সালে নির্ধারিত ট্যারিফ হালনাগাদের সময় হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা আয় করছেন ১ হাজার টাকা, অথচ বন্দর পাচ্ছে ৫০০ টাকা। সব ক্ষেত্রে বন্দরের পরিচালনা ব্যয় বেড়েছে।

তিনি বলেন, চীনের বন্দরে মানুষ নেই, অটোমেটিক চলছে। আমরা জনবল দিয়ে চালাচ্ছি, তাই ট্যারিফ সংস্কার প্রয়োজন। যদিও বর্ধিত মাশুল এক মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে এবং আদালতে মামলা হয়েছে, তবে বন্দরের সেবার মান বাড়াতে হলে মাশুল সমন্বয় করা প্রয়োজন।

উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন এরপর বে টার্মিনাল এলাকায় পরিবহন টার্মিনাল, তালতলা কনটেইনার ইয়ার্ড (ইস্ট কলোনি সংলগ্ন) উদ্বোধন করেন এবং এক্সওয়াই শেড ও কাস্টমস অকশন শেড পরিদর্শন করেন।

বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন ট্যারিফ ও পোর্ট চার্জেস সংক্রান্ত সভায় উপদেষ্টার অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম মনিরুজ্জামানসহ বন্দর ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত