leadT1ad

সিলেটে ১৩ এসআইসহ ৩৫ পুলিশ সদস্য বদলি, আরও বদলির সম্ভাবনা

বদলি হওয়া ৩৫ পুলিশ সদস্যের মধ্যে ১৩ জন এসআই, ৭ জন এএসআই, ২ জন কনস্টেবল ও ১৩ জন ড্রাইভার রয়েছেন। পাথর লুটপাটের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই বদলি হয়েছে। সেখানে থানা-পুলিশের ‘রহস্যজনক’ ব্যবহার ও সদস্যদের সাযুজ্যও ছিল।

স্ট্রিম সংবাদদাতাসিলেট
প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১৬: ৪৫
আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ০৭
সিলেটে ১৩ এসআইসহ ৩৫ পুলিশ সদস্য বদলি, আরও বদলির সম্ভাবনা। স্ট্রিম গ্রাফিক

সিলেটে আলোচিত পাথর লুটকাণ্ডে প্রশাসনের পর এবার একসঙ্গে ১৩ উপপরিদর্শক (এসআই)সহ জেলার ৩৫ পুলিশ সদস্যকে বদলি করা হয়েছে। তাঁরা ছয়টি থানা, একটি তদন্তকেন্দ্র ও জেলা মোটরযান শাখায় কর্মরত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে পাথর লুটকাণ্ডে আলোচিত কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট থানায় কর্মরত ১১ জন উপপরিদর্শক (এসআই) ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রয়েছেন।

চলতি সপ্তাহের সোমবার (২৫ আগস্ট) জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাঁদের দলী করা হয়। বদলি হওয়া ৩৫ জনের মধ্যে ১৩ জন এসআই, ৭ জন এএসআই, ২ জন কনস্টেবল ও ১৩ জন ড্রাইভার রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত ‍পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রাসেলুর রহমান।

এর আগে চলতি আগস্টের ১৮ তারিখে সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) শের মাহবুব মুরাদকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে ভেজালবিরোধী অভিযানে আলোচিত কর্মকর্তা মো. সারওয়ার আলমকে ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। একই দিনে এক প্রজ্ঞাপনে জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুন্নাহারকে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার। এবার সিলেটে একযোগে ৩৫ পুলিশ সদস্যদের বদলি করা হলো।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার ৭ জন, গোয়াইনঘাট থানার ৭ জন, বালাগঞ্জ থানার ২ জন, ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ২ জন, বিয়ানীবাজার থানার ২ জন, গোলাপগঞ্জ থানার ১ জন, গোলাপগঞ্জের কুশিয়ারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ২ জন ও জেলার মোটরযান শাখার ১২ জন ড্রাইভারকে জেলার বিভিন্ন থানায় বদলি করা হয়েছে।

জেলার অতিরিক্ত ‍পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রাসেলুর রহমান বলেন, ‘এটা স্বাভাবিক বদলিরই একটা অংশ। এখানে শুধু গোয়াইনঘাট কিংবা কোম্পানীগঞ্জের না, অনেক থানাই আছে।’

তবে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বাংলা স্ট্রিমকে বলেছেন, এই বদলি হয়েছে মূলত সিলেটের পাথর লুটপাটের ঘটনায় পরিপ্রেক্ষিতে হয়েছে। সেখানে থানা-পুলিশের ব্যবহার ‘রহস্যজনক’ হওয়ায় পাথর লুটপাট ঘটেছে, অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের সাযুজ্যও ছিল। ওই ঘটনায় আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট থানার আরও পুলিশ কর্মকর্তার বদলির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তাঁরা জানা যায়।

এর আগে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর ও জাফলংয়ে অবাধে লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সংবাদমাধ্যমে এর খবর প্রচার হলে দেশব্যাপী শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এ ঘটনা তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জেলা প্রশাসন, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগসহ (সিআইডি) বিভিন্ন বাহিনী।

চলতি আগস্টে ১৩ তারিখে সাদাপাথরে অভিযান চালায় দুদক। এতে সাদা-পাথরে লুটপাটে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও আওয়ামী লীগের ৪২ জন রাজনীতিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া পায়। এ ছাড়া লুটের টাকার ভাগ স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি পেত বলেও সংস্থাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়। ওই প্রতিবেদনে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যরা অবৈধ পাথর উত্তোলনের সিন্ডিকেটে জড়িত বলেও উল্লেখ করা হয়।

Ad 300x250

সম্পর্কিত