leadT1ad

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে ফাঁসির কাষ্ঠে আসাদুজ্জামান

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সংগৃহীত ছবি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন– বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির অপরাধ প্রমাণিত। একটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড ও আরেকটি অভিযোগ তাঁকে স্বাভাবিক মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একটি শাস্তি পেয়েছেন আসাদুজ্জামান খান কামাল।

সাজার পাশাপাশি তাদের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। দুজনই পালিয়ে বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন।

আসাদুজ্জামান খান ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ২০০৮ সালে ঢাকা-১১ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১২ আসনে বিনাভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি আসাদুজ্জামানকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী করা হয়।

২০১৫ সালের ১৪ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পান আসাদুজ্জামান। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের আগ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন আসাদুজ্জামান।

এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস. এইচ. তামিম শুনানি করেন। এছাড়া শুনানিতে বি এম সুলতান মাহমুদ, শাইখ মাহদি, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যান্য প্রসিকিউটরা উপস্থিত ছিলেন।

২০১৫ সালের ১৪ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পান আসাদুজ্জামান। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের আগ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তিনি।

পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আর রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের অনেকে। এছাড়া স্টার উইটনেস হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। মোট ৫৪ জন এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এক পর্যায়ে দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে (অ্যাপ্রুভার) রাজসাক্ষী হন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় নেতাকর্মী ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। এখন দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সে সব অভিযোগের বিচার চলছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত