leadT1ad

পুলিশকে মানবাধিকার প্রশিক্ষণে আগ্রহ কমনওয়েলথের

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৫৩
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ইএসএসের প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ বাহিনীকে মানবাধিকার বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে কমনওয়েলথ নির্বাচনি সহায়তা বিভাগ (ইএসএস)-এর প্রতিনিধি দল।

আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকে তারা এমন অভিব্যক্তি জানান।

এ সময়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সরকারের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

দুই সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন কমনওয়েলথ ইএসএসের আইন উপদেষ্টা ন্যান্সি কান্যাগো। সঙ্গে ছিলেন বিভাগটির নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাডোনা লিঞ্চ। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সম্পূর্ণভাবে নির্বাচনমুখী এবং এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হবে। প্রায় আট লাখ সদস্য নির্বাচনি দায়িত্বে থাকবেন। পাশাপাশি প্রায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যও নির্বাচনি কাজে অংশ নেবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্য নির্বাচনি মহড়া ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।’

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর বলেন, ‘প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের সঙ্গে সুষ্ঠু ও সময়োপযোগী যোগাযোগের জন্য পুলিশ সদর দপ্তর এবং প্রতিটি জেলায় “নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ কক্ষ” স্থাপন করা হবে। ভোটকেন্দ্রে সম্ভব হলে সিসিটিভি ক্যামেরা, দায়িত্বে থাকা পুলিশের জন্য শরীরে ধারণযোগ্য ক্যামেরা এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে। গণমাধ্যমকে অবাধে সংবাদ সংগ্রহের সুযোগ দেওয়া হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক দলকে অনুমতি দেওয়া হবে। এছাড়া নির্বাচনি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হবে।’

এ সময় কমনওয়েলথের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে ন্যান্সি কান্যাগো বলেন, ‘স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশ কমনওয়েলথের সদস্যপদ লাভ করে। কমনওয়েলথের একটি নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল রয়েছে। বাংলাদেশ আমন্ত্রণ জানালে তারা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বাচনি দায়িত্ব পালনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে তাদের অনেক সদস্য বিভিন্ন দেশে নির্বাচনি দায়িত্ব পালন করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে কমনওয়েলথের কাছ থেকে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সহযোগিতার চেয়ে আর্থিক সহযোগিতা বেশি প্রয়োজন। কমনওয়েলথ চাইলে সিসিটিভি, শরীরে ধারণযোগ্য ক্যামেরা ও অন্যান্য নির্বাচনি সরঞ্জাম সরবরাহের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে।’

জবাবে প্রতিনিধিদল জানায়, তারা পুলিশ সদস্যদের মানবাধিকার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে পারে।

ন্যান্সি কান্যাগো নির্বাচনি সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে নতুন নিয়োগ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালনের জন্য নতুন করে ১০ হাজার ২৬৪ জন পুলিশ, ২ হাজার ১৪৫ জন আনসার ও ভিডিপি, ৫ হাজার ৫১৩ জন বিজিবি এবং ৬৩৪ জন কোস্টগার্ড সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’

জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারে শহীদ পরিবারের দাবির বিষয়ে প্রশ্ন করলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয় চাইলে এ বিষয়ে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারে। তবে জুলাই হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।’

শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ অবাধে, নির্ভয়ে ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে কেন্দ্রে আসবে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত