leadT1ad

অপতথ্য রোধে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি ব্যবস্থার আহ্বান সিইসির

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১৩: ৫৭
অপতথ্য রোধে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি ব্যবস্থার আহ্বান সিইসির। স্ট্রিম ছবি

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার এখন একটি বৈশ্বিক উদ্বেগে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘যেকোনো যন্ত্রের মতো, এটি (এআই) ভালো কাজের জন্য যেমন ব্যবহার করা যায়, তেমনি খারাপ কাজের জন্যও করা যায়। একজন চিকিৎসক এটি জীবন রক্ষায় ব্যবহার করতে পারেন, আবার একজন ডাকাত অপরাধ করতেও ব্যবহার করতে পারে।’

আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বিশেষজ্ঞদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সিইসি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য মোকাবিলায় ‘নির্দিষ্ট ও বাস্তবভিত্তিক সুপারিশ’ দিতে এবং এর জন্য একটি ২৪ ঘণ্টা কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

‘ইন্টিগ্রেশন অব আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইন আপকামিং ন্যাশনাল পার্লামেন্ট ইলেকশন টু কাউন্টার মিসইনফরমেশন অ্যান্ড ডিজইনফরমেশন’ শীর্ষক এই সেমিনারটি আয়োজন করে ইসির আইডিয়া প্রজেক্ট ও সিবিটিইপি প্রজেক্ট। সিইসিসহ চারজন নির্বাচন কমিশনারসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে সিইসি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার রোধ ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন এআই প্রযুক্তি একীভূত করার উদ্যোগ নিচ্ছে। এই ব্যবস্থাটি এমন হতে হবে যা গভীর রাতেও উদ্ভূত মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য শনাক্ত ও মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে।

‘এটি হবে ২৪ ঘণ্টার কাজ’, উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে ঠিক করতে হবে কী ধরনের পেশাজীবী এতে যুক্ত হবেন, কত দ্রুত তথ্য যাচাই করা যাবে এবং কোন সংস্থা এতে সহায়তা করবে।’

নাসির উদ্দিন বলেন, ‘তথ্য যাচাই সেলের কাঠামো, জনবল, প্রতিটি শিফটে প্রয়োজনীয় কর্মীর সংখ্যা, তাদের পটভূমি এবং সমন্বয় প্রক্রিয়া সম্পর্কে নির্দিষ্ট প্রস্তাব প্রয়োজন।’

তিনি পাহাড়ি অঞ্চল বা দুর্গম দ্বীপাঞ্চলের মতো প্রত্যন্ত এলাকা থেকে উদ্ভূত ভুল তথ্য মোকাবিলার চ্যালেঞ্জের কথাও উল্লেখ করেন। বলেন, ‘এই দূরবর্তী এলাকার সঙ্গে কেন্দ্রীয় সেলের সংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘আমি শুধু নীতিগত দিকনির্দেশনা চাই না। আমাদের দরকার বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা—কারা কাজ করবে, কতজন লাগবে, এবং কীভাবে আমরা দূরবর্তী এলাকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করব। এই কর্মশালার মাধ্যমে নির্বাচনী ভুল তথ্য মোকাবিলায় কার্যকর সুপারিশ পাওয়া যাবে, যা আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে আরও সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য করতে সহায়তা করবে।’

আলোচনায় ইসি সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সটা আমাদের বিভিন্নভাবে জীবনের পর্যায়ে প্রভাবিত করছে প্যাসিভ ওয়েতে নেগেটিভ। যেটাকে আমরা পরিভাষায় বলছি মিসনফরমেশন। এটার নাশকতা, ভয়াবহতা এবং এটার পরিসীমা সম্পর্কে আসলে একটা নির্দিষ্ট ক্ষেত্র নির্ধারণ করা যেমন একদিকে অসুবিধাজনক, আবার এটা যদি না করি তাহলে দেখা যাচ্ছে আমাদের কার্যক্রমগুলোকে ব্যহত হচ্ছে।’

আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করি, নির্বাচন পরিচালনা নিয়ে কাজ করি, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। কিন্তু নির্বাচন সুষ্ঠু অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়ার যতই প্রাসঙ্গিকতা থাকুক না কেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যে ভয়াবহতা তার প্রেক্ষাপটে দেখা যায় যে বিশ্বে ৯২ শতাংশ নির্বাচন-ই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।’

‘আমরা একটা ভালো অংশগ্রহণমূলক এবং সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্যে এই অপপ্রযুক্তি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সটাকে একটু ব্যঙ্গ করে বলছি, অপপ্রযুক্তির রোধের ক্ষেত্রে আপনাদের সবার সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়’, যোগ করেন ইসি সচিব।

Ad 300x250

সম্পর্কিত