leadT1ad

শীতের ছুটি শেষে নালন্দা বিদ্যালয় খুলতে চায় কর্তৃপক্ষ

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

নালন্দা বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষ। নালন্দার ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবরে সৃষ্ট ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের ভবনে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনের শ্রেণিকক্ষসহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি কাটিয়ে বিদ্যালয়টি জানুয়ারিতেই শ্রেণি কার্যক্রম চালু করতে চায়।

এ দিকে ঘটনার পর শুক্রবার ভোররাত পৌনে চারটার দিকে ছায়ানট অনির্দিষ্টকালের জন্য তাদের সব কার্যক্রম স্থগিত করার ঘোষণা দেয়। এতে নালন্দা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম যথাসময়ে শুরু হবে কি না, এ নিয়ে অনেক অভিভাবক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

তবে ছায়ানটের সংস্কৃতি-সমন্বিত সাধারণ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকারী নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের বিদ্যালয়ে শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) থেকে শীতকালীন অবকাশ শুরু হয়ে গেছে। বিদ্যালয় খুলবে ৭ ডিসেম্বর। এই সময়ের মধ্যেই ক্ষতি সারিয়ে পাঠদান শুরু করার বিষয়ে তারা আশাবাদী।

শুক্রবার ছায়ানট ভবনের সামনে নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবকের উপস্থিতি দেখা যায়। এমনই একজন অভিভাবক আফরোজা খাতুন। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তান তো এখানে লেখাপড়া করে। এটা একটা স্কুল। সেই স্কুলেই আগুন দেওয়া হয়েছে, এটা ভাবতেই খুব খারাপ লেগেছে।’

আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, ‘আজ আমার মেয়ের মনে যে ক্ষোভ জন্ম নিল, তা কি তার জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে? আমার মনে হয় না। যদি বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হতে দেরি হয়, তাহলে এই ক্ষোভ আরও গাঢ় হবে। এই সহিংসতা কি তার মানসিক বিকাশে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না? আর এই ঘটনা দেখে সে কী শিখল, এই হামলার মধ্য দিয়ে কী বার্তা দেওয়া হলো?’

তবে সব অভিভাবকের মনোভাব যে একই রকম, তা নয়। দশম শ্রেণিতে ওঠা এক শিক্ষার্থীর মা ইশিকা রায় মনে করেন, এমন হামলায় ছায়ানট হার মানবে না এবং শিক্ষা কার্যক্রমে কোনো ঘাটতি আসতে দেবে না।

এ বিষয়ে ছায়ানটের নালন্দা উপ-সংসদের সদস্য ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসচিব সুমনা বিশ্বাস বলেন, নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। সিদ্ধান্ত নিতে আরও দু-একদিন সময় লাগতে পারে।

সুমনা বিশ্বাস জানান, অংকুর থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল এরইমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা সারা বছরের মূল্যায়নপত্র ও খাতা নিয়ে বাড়ি গেছে। তবে বিদ্যালয়ে সংরক্ষিত কিছু নথি ও উপকরণের বর্তমান অবস্থা যাচাই করা প্রয়োজন রয়েছে।

সুমনা বিশ্বাস বলেন, টেস্ট পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের নির্ধারিত তারিখ ২৩ ডিসেম্বর। শিক্ষকরা অনলাইনে দক্ষ হওয়ায় ফলাফল সময়মতো প্রস্তুত করা সম্ভব হবে বলে তারা আশাবাদী। প্রয়োজনে অভিভাবকদের অনলাইনের মাধ্যমেই ফলাফল জানানো হতে পারে।

আজ সন্ধ্যায় ছায়ানটের সভাপতি সারওয়ার আলী ও সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ছায়ানট একটি স্বেচ্ছাসেবী ও স্বনির্ভর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। ছায়ানট কোনো সরকার, বিদেশি সংস্থা বা করপোরেট অনুদান গ্রহণ করে না। সুতরাং ছায়ানট আত্মশক্তিতে বলিয়ান হয়ে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে। সংগীত ও শিশুদের সাধারণ শিক্ষায় সৃষ্ট এই সাময়িক বিঘ্ন দ্রুত দূর করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’

বিষয়:

Ad 300x250

সম্পর্কিত